নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কাছে জীবন মানে হল বেঁচে থাকার এক নিরন্তড় লড়াই । আর বেঁচে থাকার এ লড়ায়ে টিকে থাকতে হলে বেশ কিছু জিনিস খুবই জরুরী । তার মধ্য যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি জরুরী, তার নাম ভালোবাসা

ছন্নছাড়া এক্সপ্রেস ঢাকা

আমার কাছে জীবন মানে হল বেঁচে থাকার এক নিরন্তড় লড়াই । আর বেঁচে থাকার এ লড়ায়ে টিকে থাকতে হলে বেশ কিছু জিনিস খুবই জরুরী । তার মধ্য যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি জরুরী, তার নাম ভালোবাসা । আর ভালোবাসা মানে হল প্রিয় মানুষের মন জয় করার আপ্রাণ চেষ্টা । ভালোবাসাহীন একজন মানুষের জীবন কতটা বিষাদময় হতে পারে, তা সে ব্যতীত আর কেউ বুঝতে পারবে না । ভালোবাসা যে কোন ধরনের হতে পারে । সৃষ্টিকর্তার ভালোবাসা, মা-বাবার ভলোবাসা, ভাই-বোনের ভালোবাসা, পরিবারের ভালোবাসা, আপনজনের ভালোবাসা, প্রতিবেশীর ভালোবাসা । তবে ভালোবাসা থাকতেই হবে । তাই আমি সবসময় অপরকে ভালোবাসা দিতে চেষ্টা করি, যাতে তাদের কাছ থেকেও ভালোবাসা পেতে পারি । আর সকলের কাছ থেকে পাওয়া এ ভালোবাসাকে সাথী করে নিয়েই আমি আমার জীবন যুদ্ধে এগিয়ে চলছি ।

ছন্নছাড়া এক্সপ্রেস ঢাকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা'য়ের সাথে রাগ করে থাকা যায় না....

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:২৮

আম্মুর সাথে রাগ করে সন্ধ্যা সময় ঘর থেকে বের হয়ে গেছিলাম :/ । বিকেলে ছোট খাট একটা কথা নিয়ে আম্মুর সাথে রাগ করি । আম্মুও আমার সাথে রাগ করে :/ ।



রাগের ঠেলায় এক বড় ভাইয়ের রুমে গিয়ে মোবাইল টিপতেছি । মাগরীবের আযান দিতেছে এমন সময় ঘরে এসে পানি মুখে দিয়ে রোজা ভাংলাম । শরবতটা মুখে দেওয়ার পর বুঝতে পারলাম আম্মু একটু পানি ছাড়া এখনো কিছু খায়নি । শরবতটা নিয়ে আম্মুর কাছে গেলাম । আম্মু তখনো রান্নাঘরে পেয়াঁজু ভাঁজতেছে ।



- শরবতটা খাও...



: সর এখান থেকে...



- খাও না...



: খাইতাম না ।



চলে আসলাম । দুইটা আলুর চপ মুখে দিয়ে বসে আছি । আম্মুর পেয়াঁজু ভাঁজা শেষ । ইফতার করতে না এসে পাশের রুম চলে গেলেন । আমিও পিছু পিছু গেলাম । গিয়েই পায়ে ধরে বসে পরলাম ।



- আম্মা আমার ভুল হইছে...



: পা ছাড়্ । রুবেলের মত পা ধরতে আসবি না (রুবেল নামে এলাকায় একজন ছিলেন যিনি প্রতিদিনই একটা না একটা অন্যায় করতেন আর মা'য়ের পা ধরে মাফ চাইতেন আবার পরেরদিনই একটা অন্যায় করতেন) ।



- ইফতার করবে চলো...



: তর হাতে আমি ইফতার খামু না । হাত ছাড়্ ।



ইমনকে বললাম আম্মুকে ইফতার খাওয়াতে আমি নামাজ পড়তে গেলাম ।



নামাজ পড়ে আবার আম্মুর কাছে গেলাম কিছু খাওয়ানোর জন্য ।



- আম্মা কিছু খাবে চলো...



: আমাকে ধরবি না । তর হাতে আমি কিচ্ছু খামু না ।



কিছু বললাম না । ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম । শিল্পকলার মেইন গেটের পাশে বসে আছি । ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম, "পরিচিতদের বৃত্ত ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করে দূরে, বহু দূরে ।



খুব ইচ্ছে করে ।"



একটু পর স্কুল লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড পলাশ কল দিল । রিসিভ করলাম না । চারবার কল দিল রিসিভ করলাম না । কল রিসিভ করি না দেখে পলাশ সম্ভবত বাসায় গেছে ।



বাসা থেকে একের পর এক আমাকে কল দিচ্ছে আমি কল রিসিভ করতেছি না । একবার আম্মু কল দিচ্ছে তো আরেকবার আব্বু । খানিকবাদে এলাকার এক বড় ভাই আর একটা ফ্রেন্ডও কল দিচ্ছে । কারো কলই রিসিভ করলাম না । একটা অপরিচিত বাংলালিংক নাম্বার থেকে কল আসলো বেশ কয়েকবার, রিসিভ করিনি ।



কাকরাইল মসজিদের দিকে হাটা দিলাম । একা একা হাটতেছি । আব্বু কল দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু আমি রিসিভ করতেছি না । হাটতে হাটতে বেইলি রোডের একটা মসজিদে গিয়ে এশার নামাজ পড়লাম । মোবাইল ভাইব্রেট হয়েই যাচ্ছে ।



নামাজ শেষ করে ভিকারুননিসা স্কুলের অপজিটে গিয়ে বসলাম । আব্বু কল দিয়েই যাচ্ছে । রিসিভ করলাম...



: মেহেদী তুই কই ?



- রাস্তায় বসে আছি । কেন ?



- কার সাথে বসে আছস ? বাসায় আসবি কখন ?



: একা । জানি না...



টুট টুট -_- ।



একটু পর আবার সেই অপরিচিত বাংলালিংক নাম্বার থেকে কল । রিসিভ করার পর বুঝতে পারলাম শশুড় বাড়ি থেকে বোন কল দিছে । দেখলাম জ্ঞান দেওয়া শুরু করছে । দিলাম লাইন কেটে । টুট টুট :/ ।



এলাকার বড় ভাই আবার কল দিছে । রাগের ঠেলায় হেতেরে কতক্ষণ ঝারলাম । তারপর লাইন কেটে দিলাম । টুট টুট টুট O.o ।



আবার আব্বু কল দিল...



: তুই কই ?



- রাস্তায়...



: পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাসায় আসবি । আর একটা কথাও কমু না । আসতে পারবি ?



- আসতেছি...



ফোনটা রেখে হাটতে হাটতে এলাকায় গেলাম । চেহারায় প্রচন্ড মেজাজী ভাব নিয়ে ঘরে ঢুকলাম -_- । আব্বু খাটে বসে আছে :/ । ওনার পাশেই বসলাম ।



আব্বু বুঝতে পারছেন প্রচন্ড রেগে আছি । তেমন কিছুই বললেন না । শুধু বললেন এত রাতে কেউ বাইরে থাকে ?



কোন উত্তর দিলাম না । চুপচাপ শুয়ে গেলাম । চোখে হালকা ঘুম চলে আসছে । আব্বু খাওয়ার জন্য ডাকতেছে । খাবো না বলে আবার ঘুমানোর চেষ্ট করতেছি ।



একটু পর আম্মু আসলেন...



: খাইতে যা...



- খাইতাম না...



: খাইতে যাইতে কইছি না ?



- খামু না, কইছি না :/ ?



: ইফতারে ঠিকমত খাছ নাই । খাইতে আয়...



আর শুয়ে থাকতে পারলাম না । উঠে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম । চেহারায় তখনো রাগ রাগ ভাব । এইবারের চেহারায় রাগ রাগ ভাবটা অবশ্য ইচ্ছে করেই আনছি । কারণ আমি জানি আম্মুর রাগ কমে গেছে আমাকে মাফ করেও দিছেন । কিন্তু এখন যদি আমি রাগ রাগ ভাব না দেখাই তাহলে ঠিকমত আম্মাজানের আদরটা পাবো না :D



ভাত খাচ্ছি আর আম্মু একটু পর পর আমার দিকে তাকাচ্ছে । আমি তো রাগ করে আছি তাই আম্মুর দিকে তাকাচ্ছি না । আসলে রাগ করার ভান করে আম্মাজানের লুকোচরি তাকানোটা দেখছি আর মনে মনে হাসতেছি :-) । নিজের অজান্তেই চোখের কোণে পানি চলে আসলো । তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে উঠে গেলাম । বুঝতে দিলাম না চোখের কোণে চলে আসা ওনার প্রতি মিষ্টি অভিমানের আবেগভরা অশ্রুর মানেটা । তবে আম্মু মানেটা বুঝে গেছেন এটা নিশ্চিত ।



চিত্‍কার করে বলতে ইচ্ছে করে, আম্মু তোমাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি <3 ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.