![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্ন দেখার অস ুখ টা আমার ছোটবেলা থেকেই ছিলো, স্বপ্নের মাঝেই আমি হারিয়ে যেতাম তারার দেশে -মেঘের ছোয়ায় একটু পুল কিত অনুভব করি-মেঘগুলো ও যেন হারিয়ে যায়- আমার ঐ কালো কুচকুচে ভালবাসার মানুষটির দিকে চেয়ে থাকি হাজার বছর-তাও আবার স্বপ্নের মাঝে- সেদিন স্বপ্নে পাহাড়ের ঢালুদেশ দিয়ে হাটছিলাম -- কারো অনুভবেই যেন হদয়ের গতি বেড়ে গেল- সেটা ভয় থেকে জন্ম নেয়নি- আবার কেন জানি ভয় পাই? দুনিয়ার সব মানুষকেই যেন মনে হয় অচল... তারা যেন কিছু একটা বুঝতে পারে না । .......................... [email protected]
অরিএী সুইসাইড করেনি, ওকে সুইসাইড করতে বাধ্য করা হয়েছিলো । বাবা, মা আমার জন্য অপমান হবেন, সেই আমি না থাকলেই ভালো । অরিএী কে বেত দিয়ে পিটিয়ে আধমরা করে ফেললেও সুইসাইড করতো না । এমনকি বিনা কারনেও যদি শিক্ষকরা ছাএ-ছাএীদের বকা দেন তবুও তারা মেনে নেয় । কিন্তু একজন ছাএ-ছাএীকে ওর অপরাধের জন্য যদি ওর সামনেই বাবা-মা কে অপমান করেন, সেটা অরিএীর বয়েসের ছেলে-মেয়েদের মেনে নেয়া খুবই কষ্টের ।
২০১৪ সাল । দেশে তখন হরতাল, অস্হিরতা বিরাজমান । আমার খুব আদরের, খুব নিকট আত্বীয়া, খুবই লক্ষী একটা মেয়ে ঢাকার এক নামকরা কলেজ "বীরশ্রেষ্ট মুন্সী আবদুর রউফ সরকারী কলেজ" থেকে এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিবে । ধরুন, ঐ ছাএীর নাম দিলাম অপরাজিতা । পাশের স্কুল থেকেই ভালো রেজাল্ট করেছিলো এস.এস.সি তে । বান্ধবীদের সাথে ভর্তি হয়েছিলো বীরশ্রেষ্ট মুন্সী আবদুর রউফ সরকারী কলেজে । পড়াশুনা মনযোগ দিয়েই করছিলো । সারারাত পড়াশুনা করে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার হলে গিয়ে আধাঘন্টা পরে সে অজ্ঞান হয়ে যায় । এক শিক্ষক অপরাজিতার আম্মুকে খুবই বকাঝকা করেন । কেন সে অজ্ঞান হয়ে পড়লো, এই অপরাধে । এরপর থেকেই ঐ ক্লাস টিচার অপরাজিতা কে সবসময় হেয় করে কথা বলতো । অপরাজিতা নিজেকে অপরাধী ভেবেই চুপচাপ পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছিলো ।
টেস্ট পরিক্ষা শেষ হলো । রেজাল্ট বের হলো । কেমেস্ট্রিতে ফেল করেছে । অনেকেই ফেল করেছে। অপরাজিতা ওর আম্মুকে বলেছে, সে পরিক্ষা ভালোই দিয়েছে । ফেল করার মতো পরিক্ষা সে দেয় নি । কিন্তু ঐ শিক্ষক যে হেয় করে কথা বলতো উনিই হলেন কেমেস্ট্রির শিক্ষক । কয়েকদিন পরে অপরাজিতা কলেজে যায় এবং সেই শিক্ষক ওকে জানিয়ে দেয় তুমি এই কলেজ থেকে পরীক্ষা দিতে পারবা না । গতকাল আমরা রিটেক পরীক্ষা নিয়ে নিছি এবং তুমি রিটেক দেওনি । এটাও বলেছিলেন, তুমি রিটেক দিলেও ফেল করবা, তুমি কেমেস্ট্রি পাশ করতে পারবা না । পরের দিন ওর আম্মু কে নিয়ে কলেজে যায়। কোন কথা নয়, আপনার মেয়েকে নিয়ে এই কলেজ থেকে চলে যান । টিসি নিয়ে নেন।
অপরাজিতার মা অনেক চেষ্টা করলেন । কেউ উনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন নাই । ফর্ম ফিলাপের শেষ সময়ে আমাকে জানালেন । আমি বললাম, কাল কে হরতাল তবুও আসো অপরাজিতা কে নিয়ে । অবসরপ্রাপ্ত এক আর্মি অফিসার আমাকে বললেন, আমি ও তোমার সাথে যাবো । দেশের অবস্হা ভালো না । ওরা তোমাকে ঢুকতে নাও দিতে পারে । উনাকে নিয়ে আমি ১০ টার দিকে কলেজে গেলাম। প্রিন্সিপাল একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল । অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার সরাসরি প্রিন্সিপালের রুমে গেলেন আর আমি সোফায় বসলাম ভাইস প্রিন্সিপালের রুমে অপরাজিতাদের নিয়ে । ভাইস প্রিন্সিপাল একটু বয়স্ক মানুষ । উনি ভেবেছেন, আমি ও উনার কলেজের ছাএ । উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এই তোমার কি সমস্যা ? স্যারের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম, স্যার আমার এই আত্বীয়ার সমস্যা নিয়ে আপনার কাছে এসেছি । স্যারকে বললাম, স্যার একটু বসতে পারি ? বিরক্ত হয়েই বললেন, বসো । ইতিমধ্যেই ঐ কেমেস্ট্রি শিক্ষক ভাইস প্রিন্সিপালের রুমে এসে অপরাজিতার মাকে বললেন, আপনারা কলেজে এসেছেন কেন? আপনাদের না বলছি, ও পরীক্ষা দিতে পারবে না । আজকে টি সি নিয়ে যাবেন । আরও কি কি যেন বলতে লাগলেন । আমি ঐ কেমেস্ট্রি শিক্ষক কে বললাম, স্যার আপনারা শিক্ষক । আপনারা যদি মনে করেন আপনার ছাএী পরীক্ষা দেবার মতো ফিট না, ঠিক আছে পরীক্ষা দিবে না । আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কে? আমি বললাম, আমি ওর গার্ডিয়ান । বিড়বিড় করতে করতে উনি ভাইস প্রিন্সিপালের রুম থেকে চলে গেলেন ।
এবার ভাইস প্রিন্সিপাল আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আমি কি করি । ইচ্ছে না থাকা সত্বেও বললাম, আমি ও একজন শিক্ষক । যখনই জানলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই । হটাৎ করে, তুমি থেকে আপনি তে চলে গেলেন । আমার ভিজিটিং কার্ড নিলেন । সবকিছু শুনলেন এবং বললেন আমি এ ব্যাপার টা নিয়ে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলবো । ভাইস প্রিন্সিপাল স্যার কে বললাম, স্যার আপনার শিক্ষকের ব্যবহারে আমি সত্যিই মর্মাহত । কিছুই বললেন না । বুঝলাম, ভাইস প্রিন্সিপালের চেয়েও ঐ কেমেস্ট্রি শিক্ষক বেশী প্রভাবশালী ।
যাইহোক, আমার আত্বীয়াকে ঐ কলেজ থেকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি কিন্তু ওর বান্ধবীরা অনেক টাকা ঘুষ দিয়ে ঠিকই পরীক্ষা দিয়েছিলো । পরে জানতে পারে অপরাধ ছিলো, ঐ কেমেস্ট্রি শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ার জন্য এমন শাস্তির ব্যবস্হা । আমার ঐ আত্বীয়া ঢাকার অন্য একটা কলেজের নামে রেজিস্ট্রেশন করে পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট করেছিলো এবং বর্তমানে সে ঢাকার নামকরা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ।
অপরাজিতা সেই দিন হেরে যায়নি । সামনের দিনগুলোতে ও হেরে যাবে না । তাই, ওর নাম দিলাম অপরাজিতা ।
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৭
ম. রহমান বলেছেন: বাস্তব ।
২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৪
নীল আকাশ বলেছেন: দুঃখজনক।
৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০২
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: অপরাজিতার জন্য শুভ কামনা। আর কেমিষ্ট্রি শিক্ষকের জন্য ধিক্কার।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: এটা কি গল্প না বাস্তব?