![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেয়েটার সাথে একবারই দেখা হয়েছে। তারপর থেকেই শুধু ভাবছি। কথাও হয়েছে; অনেক কথা। যদিও কথা হওয়ার কোনো কথা ছিলো না। ইচ্ছাও ছিলো না। তবু হয়ে গেলো, এবং সে কারণেই ভাবনাটা তাড়াতে পারছি না।
একটা শিপিং কোম্পানিতে অনলাইন সুপারভাইজর পদে সিভি ড্রপ করেছিলাম। ওরা যেতে বললো শুক্রবার সকাল এগারোটায়। এত সকালে তো আমার ঘুম ভাঙে না। তবু নাস্তা না সেরে কোনোমতে ছুটতে ছুটতে গিয়ে দেখি আমিই প্রথম, আর কোনো ক্যান্ডিডেট এখনো আসে নি। বেশ। কোটের পকেটে বই আছে, পড়তে থাকো, ব্যস। কয়েক মিনিট পরেই মেয়েটা এসে বসলো। একদম পাশের চেয়ারটায়।
ভাবছি, আজকালের মেয়েরা লাজ-সঙ্কোচের থোড়াই কেয়ার করে। যা-হোক, আমিও তাকাবো না। কথাও বলবো না। তা ছাড়া আমার যে গেটআপ তাতে তারও কথা বলতে বয়েই গেছে। বই পড়ছি, ঠিক পৌনে এক ঘণ্টা পড়ে রিসিপশনিস্ট নাম ও মোবাইল নম্বর জানতে চাওয়ার আগে আমার মনোযোগে কোনো ছেদ ঘটে নি। তারপরে আনমনেই বললাম— এগারোটায় আসতে বললো, বারোটা বেজে যাচ্ছে কারো খবর নাই।
মেয়েটা হয়তো এতক্ষণে বুঝতে পেরেছে আমি বোবা নই।
—আপনার হাতে কী বই এটা ? ওয়েস্টার্ন ?
স্বাভাবিক শুদ্ধ উচ্চারণ। বোঝা যায়, ইমপ্রেস করার জন্যে নয়, এভাবেই বলার অভ্যাস। তারপর এক কথা দুই কথায় বহু কথা। বাড়ি যশোরে। সুতরাং সাবলীল শুদ্ধ বলার রহস্যটা জানা গেলো। থাকে ছাত্রী হোস্টেলে, মোহাম্মদপুর এলএসবি-তে পড়ে। আমার কাছে জানতে চাইলো— এরা ফেক নয়তো ? জানালো, একটা পার্ট টাইম চাকরি সে খুঁজছে। কয়েকটা পত্রিকা অফিসেও ধর্ণা দিয়েছে। আমাকে জিজ্ঞেস করলো— পত্রিকা অফিসের পরিবেশ কেমন, জানেন ? মিডিয়া তো, ভয় হয়।
মেয়েটা নিখুঁত সুন্দর। নিষ্পাপ চেহারা। বয়স অল্প, কেবল ইন্টারে পড়ে। আমার সব ভাবনা আর আশঙ্কা এই সুন্দরে এসে কেন্দ্রীভূত হয়ে গেছে। কেনো মেয়েটা ঢাকায় পড়তে এসেছে ? পড়ালেখা করে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় ? ভালো পরিবারের মেয়েদের আজও বাবা-মা একা দূরদেশে পড়তে পাঠানোর সাহস রাখেন ? কতদূর যাবে মেয়েটা ? কোন দাগ শাণিয়ে আছে, তার প্রতীক্ষায় ?
ইন্টারভিউ বোর্ডে আমার ডাক পড়লো আগে। বইটা টেবিলে রেখে আমি ভেতরে চলে গেলাম। মিনিট দশেক পরে বেরিয়ে এসে দেখি, বইটা নেড়েচেড়ে দেখছে। এবার সে ভেতরে যাবে, বললো— আপনি কিন্তু চলে যাবেন না, আমার একা একা ভয় করবে।
ভয় করবে ? অবাক কাণ্ড ! ভয়ই যদি করবে, তাহলে এতদূর পথ পাড়ি দিয়েছিস কী করে বেটি। হাসলাম মনে মনে। তারপর ঠায় বসে রইলাম। আমার যেখানে দশ মিনিটে হয়ে গেছে, সেখানে মেয়েটাকে আটকে রাখলো তারা আধঘণ্টা। ওদিকে আমার জুমা ধরতে হবে। বেরিয়ে আসতেই বললাম— চলেন, আমার বাসা কাছেই, খেয়ে যাবেন। বউয়ের সঙ্গে পরিচিত হলে খারাপ লাগবে না।
ভাব দেখে মনে হলো, চলে আসবে। ওদিকে আমার ঘরে যে, সে-ও একটা মেয়ে বৈ নয় । মেয়েদের মন বড় বিচিত্র। আরেকবার সাধার রিস্কটা নেবার সাহস হলো না তাই। বারবার বলছিলো— আপনার কী মত, চাকরিটা করবেন ?
জানালাম— বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করে ডিসাইড করবো। যত্ন করে আমার ফোন নম্বরটা নিলো। আমার সিদ্ধান্ত জানতে ফোন দেবে। ভাবছি, ফোন দিলে ভুলভাল বলে ওখানে যেতে না করে দেবো। কিন্তু তাতে কি সে দমে যাবে ? আরেকটা চাকরির চেষ্টা করবে না ? আচ্ছা, চাকরিটা কেনো দরকার তার ? বাড়ি থেকে পাঠানো টাকায় চলে না ? নাকি বাবা-মা খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন ? তাহলে গ্রাম ছেড়ে এলো কেনো ? পড়ালেখা নিয়ে বাবার সঙ্গে বিবাদ হয়েছে ? কতটা পড়তে চায় সে ? এতদূর এসে পড়ে না থেকে যদি গ্রামেই ইন্টার শেষ করে কারো ঘরকন্যা করতো, তাহলে কি জীবনটা তার বরবাদ হয়ে যেতো ? নাকি সামনে যেই দাগ তাকে স্পর্শ করতে উন্মুখ, তাকেই সে পরশমণি ভেবে ছুঁয়ে দিতে চায় ?
আজ রবিবার। এখনো কোনো ফোন আসে নি। আমার ভাবনারও ক্ষান্তি হয় নি— কত দূর যেতে চায় মেয়ে, কত দূর...?
১৭-১-২০১৬
উত্তর বাড্ডা, ঢাকা
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬
মনযূরুল হক বলেছেন: আলবৎ, জানাবো ....।
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: ইন্টারে পড়া অবস্থায়ই জব খুঁজছে, তার মানে তাকে যুঝতে হচ্ছে অনেক। সামনে সুদীর্ঘ কন্টকাকীর্ণ পথ। জয়ী হোক সে।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬
মনযূরুল হক বলেছেন: সামনে সুদীর্ঘ কন্টকাকীর্ণ পথ। জয়ী হোক সে।
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১
সুমন কর বলেছেন: যতই দাগ শাণিয়ে থাকুন, তাঁকে যেতে হবে -- অনেক দূর। নতুবা, সে উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮
মনযূরুল হক বলেছেন: উঠে দাঁড়ানো এক বিশাল চ্যালেঞ্জ...। কোমল মন ও শরীরে সেই চ্যালেঞ্জের ধকল সইবে কেমনে ...। তবু জয়ী হোক নারী ?
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮
তার আর পর নেই… বলেছেন: লিখাটা খুব ভাল লাগলো। প্লাস প্লাস প্লাস
এইবার অন্যটা বলি, ঘরে একটা বউ আছে, তারপরওও কেন এত জানতে চান, কতদূর যেতে চায় মেয়ে!!
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২
মনযূরুল হক বলেছেন: ওয়াও ! বউ থাকলে অন্য কোনো মেয়ে সম্পর্কে কৌতূহল থাকা বারণ ? নাকি মেয়েদের প্রতি কৌতূহল কেবল বিয়েতেই সম্পর্ক ? নাকি বিবাহিত পুরষকে যা জানার সব বউ থেকেই জেনে নিতে হবে; কারণ তারা ইনভেলিড ?
প্লাসের জন্যে ধন্যবাদ...।
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১
শাহাদাত হোসেন বলেছেন: লেখা পড়ে মুগ্ধ ।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫২
মনযূরুল হক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ...।
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: যশোরের মেয়েদের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা খুউব খুউব খারাপ|
যাই হোক, বেস্ট অফ লাক মেয়েটার জন্য
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৪
মনযূরুল হক বলেছেন: কারো অভিজ্ঞতা খারাপ হওয়ার জন্যে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের মেয়ে কি দায়ী হতে পারে ?
৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: পারে হয়তো!
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪২
মনযূরুল হক বলেছেন: এই দৃষ্টিভঙ্গি শুভ নয়...।
৮| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ভাল থাকুক মেয়েটা। জয়ী হোক।
হামা ভাইয়ের মন্তব্যের সাথে একমত।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
মনযূরুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ...।
৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: লেখা ভালো লেগেছে।
জানার আগ্রহ থাকছে আমারো।
হামাভাইএর কমেন্টের সাথে একমত + ৪ নং প্রতিউত্তরে প্লাস।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৪
মনযূরুল হক বলেছেন: ৪ নং প্রতিউত্তরে প্লাস
ধন্যবাদ...। অনেক বড় প্রাপ্তি...।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ভাবনার সূতো বেশ শক্তিশালী! বুননেও বেশ!

অপেক্ষায় রইলাম! জানাবেন কিন্তু - কত দূর যেতে চায় মেয়ে, কত দূর...?
++