নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সোজা কথা , সহজ করে বলি, সোজা পথে চলি

আবু মান্নাফ খান

সরল, সহজ, চিন্তার মানুষ

আবু মান্নাফ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নাবিক জীবনের প্রথম তিন মাস (কিস্তি৩)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:৫১

[লেখার শুরুতেই বলে নিচ্ছি লেখাটা পড়ে কেউ ভাববেন না প্রচণ্ড কষ্ট থেকে লিখছি। নাবিক দের জীবন নিয়ে সাধারন মানুষদের যেমন একটা আগ্রহ থাকে সেরকম আগ্রহ আর পৃথিবীকে ঘুরে অদেখা কে দেখার এক দুর্নিবার আকর্ষন থেকেই আমার নাবিক হওয়ার স্বপ্ন দেখা। স্বর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব আর প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ এর মুখমুখি হতে হতে দিনে দিনেএকজন শিক্ষানবিস নাবিক মনে প্রানে সমুদ্রচারী হয়ে ওঠে। নাবিকদের তাদের সমুদ্র জীবন শুরুর ধাপ গুলতে যে ব্যাপার গুলোর মুখোমুখি হতে হয় তা মাটির পৃথিবীর মানুষদের কাছে অন্যরকম বা খারাপ লাগার মনে হতে পারে।]



শুরু হল সাগরের জীবনঃ



১০ জানুয়ারি ২০১২। মূলত এদিনিই আমার জাহাজে একটি পুর্নাঙ্গ দিন শুরু হয়। সারা রাত ঘুম হয়েছে ভাঙ্গা ভাঙ্গা। একবার জেগে উঠি, ঘড়ি দেখি, আবার ঘুমাই এভাবে। সারাক্ষণই মাথায় একটা টেনশন কাজ করছিল। সকালে সময় মত ইঞ্জিন রুম এ যেতে হবে।আমি আবার সকালে ওঠ্যার ব্যাপারে একটু আলসে। যা হোক সকালে ৭ টার মাঝে ব্রেকফাস্ট শেষ করে সাড়ে সাতটার মাঝে ইঞ্জিন রুম এ চলে আসলাম। এসে দেখি 2nd ইঞ্জিনিয়ার আগেই এসেছে। আমাকে কাজের সিডিউল বুঝিয়ে দিল। ক্যাডেট দের প্রথম শুধু দৈনিক কাজ দেয়া হয়। কোন রুটিন কাজ দেয়া হয় না। কোন দায়িত্বপূর্ণ কাজও দেয়া হয় না। কয়েক মাস পর চিফ ইঞ্জিনিয়ার 2nd ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন ভাবে যাচাই করে কিছু কিছু দায়িত্বপূর্ন কাজ দেয়। কিন্তু সবই কোন ইঞ্জিনিয়ার এর তত্যাবধানে। তবে আমি ৬ মাস পর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সাইন অফ করলে সেখানে রুটিন ওয়াচ শুরু করি।জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এর যায়গায় কোম্পানি আমাকে রিপ্লেস করে যদিও এ জন্য কোম্পানি আমাকে কোন টাকা দিচ্ছে না। কারন আমার ওয়াচ কিপিং সার্টিফিকেট নাই। এক রকম বেগার খাটাচ্ছে। আমি কিছু মনে করছি না কারন এটা আমার প্রথম জাহাজ।



কিছুক্ষন পর 2nd ইঞ্জিনিয়ার আমাকে সাথে করে কয়েক টা কাপড় এর ন্যাকরা নিয়ে জাহাজ এর ইঞ্জিন রুম এর ১ম ফ্লোর এ যায়। এখানে মেইন ইঞ্জিন থাকে। ফ্লোর এর কয়েকটা প্লেট তুলে একটা টর্চ হাতে দিয়ে আমার পকেটে একটি গ্যাস ডিটেক্টর দিয়ে বলে নিচে গিয়ে ট্যাঙ্কটপ পরিষ্কার করতে। প্রথমে এ কথা শুনে আমি চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম এ কাজ আমাকে করতে হবে? কিছুই করার নাই। আমি নিচে চলে গেলে 2nd ইঞ্জিনিয়ার উপরে চলে যায়। প্রথমে প্রায় কেদেই দিয়েছিলাম। মানুষ বড় বড় অফিসার হয় আর আমি কি না এই রকম একটা কাজ বেছে নিলাম? মনে মনে ভাবছিলাম নাহ থাকব না। এ গুলো করার চেয়ে দেশে গিয়ে অন্য কিছু করা অনেক ভালো। মনে মনে কয়েক টা বিজনেস এর প্ল্যান ও মাথায় নিয়ে ফেললাম। আসল এ সবই হচ্ছিল আমি নতুন পরিবেশ কে বুঝতে না পারার কারনে। যারা মেরিন একডেমি থেকে আসেন তারা আগে থেকেই একটা ধারনা পেয়ে থাকেন । কিন্তু যারা ডাইরেক্ট এন্ট্রি হিসেবে আসেন তাদের ধারনা কিছুটা কম থাকে। প্রতিষ্ঠান গুলোতে ঐভাবে ধারনা দেয়া হয় না।



আসলে একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার কে সব কিছুই করতে হয়। পানির মাঝে একটুকরো পৃথিবী র মত এক টি জাহাজ। এখানে সর্বোচ্চ পদ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পদ পর্যন্ত সবাই এক পরিবার এর মত থাকে। আর প্রথমে ট্যাঙ্কটপ এ নামিয়ে দেয়ার আর একটা কারন হল জাহাজ এর যে কোন কাজ যেন সে নির্দিধায় করতে পারে তার একটা ট্রেনিং। এখানে কোন অফিসারই এমন না যে সে শুধু ওয়ার্ডার করবে আর অন্য রা কাজ করবে। চিফ ইঞ্জিনিয়ারও না না বিষয়ে নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি সে নিজেও যে কোন কাজ কোন অয়লারের সাথে হাত মিলিয়ে করতে দ্বিধা করে না। এখানে জাহাজ কে ভালো রাখতে সর্বপরি আমরা নিরাপদ থাকতে প্রতিটা সময় খুবই সতর্কতার সাথে সব কাজ নির্ভুল ভাবে করার চেষ্টা করা হয়। কোন কাজ এ রকম রাখা হয় না যে ঠিক আছে এটা কাল করব। যে কোন ছোট্ট একটা ভুলও অনেক গুলো মানুষ এর মৃত্যুর কারন হতে পারে।

১০ টায় কফি টাইম। সকাল এর কাজে মনটা বেশ খারাপ হয়ে ছিল। ইঞ্জিনরুম এ বসে সবাই গল্প করছিল সে সময়। আমি এক কোনায় বসে চুপচাপ শুনছিলাম। বুঝছিলাম না কিছুই। মাঝে মাঝে 3rd ইঞ্জিনিয়ার আমার সাথে না না কথা বলে। আমার ব্যাপারে অনেক প্রশ্ন করে। আমি দায়সারা ভাবে উত্তর দেই। কোন কিছুতেই মন বসছিল না। ১২ টার সময় লাঞ্চ ব্রেক। ১ টা পর্যন্ত। মেস রুমে গেলামনা খাওয়ার জন্য। কেবিনে গিয়ে চুপচাপ বসে ছিলাম কিছুক্ষন। তারপর একটা গল্পের বই যেটা আগের রাতে শুরু করেছিলাম সেটা পড়তে শুরু করলাম। ১ টার সময় আবার ইঞ্জিনরুম এ এসে ৫ টা পর্যন্ত না না কাজ করে পাচটায় কেবিনে গেলাম।

খাওয়া দাওয়া র প্রতি কোন আগ্রহ বোধ করছিলাম না। সবার প্রতি কি এক অভিমান কাজ করছিল। কাউকে কিছু বলতেও পারছিলাম না। আমার নিজের জেদ থেকে আমি এখানে এসেছি। সব মিলিয়ে পাগল হবার মত অবস্থা। রাতে প্রচণ্ড খুধা লাগলো। ভয়ে ভয়ে মেস রুমে গেলাম। জানি না রাতে খাবার থাকে কি না? গিয়ে দেখি খাবার আছে । প্লেট এ নিয়ে খেতে বসলাম। খেতে ইচ্ছে করছিল না, শুধু ক্ষুধার কারনে। একটু খেয়ে নষ্ট করলাম ভাত, যে কাজ আমি কখন করি না। মেস রুমে বসে গান শুনছিলাম। তখন রাত ১০ টার মত বাজে। 3rd ইঞ্জিনিয়ার একটু পর মেস রুমে আসল। আমার পাশে বসে জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার? মন খারাপ কি না। আমি একটু হেসে বললাম “না ঠিক আছি”। ওর বয়স ২৭। বেশ ফ্রেন্ডলী। আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল “তুমিত অনেক ভাগ্যবান। তুমি জান” ? “তুমি যে বেতন পাচ্ছ ক্যাডেট হিসেবে আমি তার অর্ধেকও পেতাম না”। আমি মাথা নিচু করে আছি। মনের অবস্থা তখন এমন “ধুর টাকা পয়সা গুল্লি মারি। বাড়ি গিয়া ভ্যান চালায়ে খামু তাও এখানে থাকমু না”। আমাকে বলল “সিগারেট খাও”? আমি বুঝতে পারছিলাম না কি বলব? হ্যা বললেই বা কি হয় আর খেতেও ইচ্ছে করছিল। হয়ত প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারনে। আমি একটু সলজ্জ্ব ভাবে মাথা নাড়লাম। সে বলল “ব্যাপার না তুমি আমার কাছ থেকে নিয়ে খেও। কেউ কিচ্ছু বলবে না শুধু ক্যাপ্টেন আর চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর থেকে লুকিয়ে খেলেই হল”। একটা সিগারেট এগিয়ে দিয়ে উনিই ধরিয়ে দিল। একটু সহজ লাগছিল তখন। সারাদিন গুম হয়ে ছিলাম তখন একটু ভালো লাগছিল।

না না কথার সাথে 3rd ইঞ্জিনিয়ার আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছিল কি করে মেশিনারিজ গুলো বুঝতে হবে কি করে সবার সাথে সহজ হতে হবে এসব। রাত ১১ তার দিকে কেবিনে এসে শুয়ে পরলাম। একটা বই নিয়ে মাথার কাছের লাইট টা জালিয়ে পড়তে লাগলাম। একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম বইটি বুকের উপর রেখে।



এখানে শুধু ক্যাপ্টেন আর আমিই বাংলাদেশী। কিছুটা ভয় এর কারনে তার সাথে আমি সহজ হতে পারছিলাম না। এক দিন সাহস করে স্যার এর কেবিনে গেলাম। স্যার আমাকে সোফায় বসিয়ে বললেন “বল কি বলবে”? আমি আমতা আমতা করছিলাম। বললাম “স্যার ভালো লাগছিল না। তাই ভাবলাম একটু কথাবলি আপনার সাথে”। স্যার বললেন “তোমার কম্পিউটার নেই”? আমি বললাম “স্যার বাসায় আছে আমি আনিনি। ভাবলাম প্রথম মাসের বেতন পেলে কিনব”। সে বলল “ঠিক আছে বেতন এলে আমি সাথে গিয়ে কিনে দেব”। তারপর আরো অনেক কথা বললাম। স্যার কে যতটা কঠিন ভেবেছিলাম সে ততটা না। বরং অনেক ফ্রেন্ডলি। সে এও বলল তুমি চাইলে আমার ল্যাপটপ নিয়ে যেতে পার মাঝে মাঝে। মাঝে মাঝে স্যারই আমাকে বলত নিয়ে যাও, কিন্তু আমি নিতাম না।

এভাবে ধিরে ধিরে জাহাজ এর নতুন পরিবেশ এর সাথে মানিয়ে নিচ্ছিলাম। কয়েকদিন পর শেভরন জেটিতে গেলাম লোডিং এর জন্য। লোডিং শেষ করে যাত্রা করলাম মালয়শিয়ার তাওয়াও বন্দরের দিকে। প্রথম সমুদ্র যাত্রা। অন্যরকম অনুভূতি। সাগর এর অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিল। রোলিং হচ্ছিল অল্প বিস্তর। ক্যাটেন স্যার জিজ্ঞেস করলেন “কি বমি টমি হচ্ছে না কি”? আমি বললাম “না স্যার। তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না”। বেশ ভালোই ছিলাম একদিন পরই আবার খারাপ লাগা কাজ করতে শুরু করল। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। নেট নাই, ফোনে কারো সাথে কথা বলার উপায় নাই। তার মাঝে চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর অজথা ঝারি সব মিলিয়ে এক জগাখিচুড়ি পরিবেশ। তবে পরে চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর ঝারি আর কিছু মনে হত না। কারন সে কোন কারন থাক আর না থাক ঝারি ছাড়া কথা বলে না। ইঞ্জিন রুম এর সব ইঞ্জিনিয়ারই তার উপর বিরক্ত। আমি ক্যাডেট তাই বিরক্তি প্রকাশ করারও উপায় নাই।



এর মাঝে খারাপলাগা এত বেশি চরম সীমায় পৌছাল যে আমি একদিন 4th ইঞ্জিনিয়ার কে বললাম আমি সিঙ্গাপুর এ এসে বাড়ি চলে যাব। থাকব না আর। ও বলল “কি চীফ ইঞ্জিনিয়ার কে বলব”? আমি বললাম “আগেই বল না”। কিন্তু সে বলে দিল। এক দিন চীফ ইঞ্জিনিয়ার আমাকে ডেকে বলল “আমি একটা খবর শুনলাম যে তুমি না কি সাইন অফ করতে চাচ্ছ”? আমি মাথা নিচু করলাম। তিনি বেশ নরম সুরেই বললেন “দেখ নাবিক হতে গেলে তোমাকে শক্ত হতে হবে। যতটা তুমি ভাবছ তার থেকে অনেক বেশি। তুমি এখানে এসেছ তোমার একটা ভবিষ্যত আছে। তোমার বাবা নেই, মা বোন কে তোমাকে দেখতে হবে। আর তুমি হয়ত ভাবছ তুমি নেই কি হবে না হবে অনেক কিছু। হ্যা একথা সত্য যে তুমি কিছু সময়, যেগুলো আগে হয়ত খুব পছন্দ করতে সেগুলো হারাবে কিন্তু তার বিনিময়ে অনেক কিছুই পাবে। তাই এ পেশার প্রতি প্যাশেন হও”। তার কথা গুলো পরে বুঝেছি। কিন্তু তখন মনে হচ্ছিল ধুর এসব প্যাচাল পারে ক্যান?

সাগরে দিন গুলো কাটছিল একরকম বিরক্তির সাথে। রাতে খোলা আকাশে এর দিকে চেয়ে বিশাল চাঁদ টা দেখার সময় শুধু যেন আমি সব কিছু ভুলে যেতাম। অসম্ভন সুন্দর সে দৃশ্য। দোলায়মান জাহাজ থেকে আকাশের দিকে তাকালে মনে হত অনেক গুলো তারা সহ চাঁদটা যেন পেন্ডুলামের মত দুলছে।

প্রায় সাত দিন আমি শুধু বিস্কিট খেয়ে ছিলাম। কিছুই ভালো লাগছিল না। ঢাকায়, বাড়িতে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় গুলো কে যেন মনে হচ্ছিল ওহ কি সময় ছিল সেগুলো। আবার ভাবি মালয়শিয়া গিয়ে সেখানে নামব, নতুন দেশ দেখব, সেটা আবার অন্যরকম রোমাঞ্চ। এ দুই রকম অনুভুতির মাঝে মালয়শিয়ার তাওয়াও তে পৌছলাম। আমি ত বাসায় কথা বলার জন্য মুখিয়ে আছি। ক্যাপ্টেন স্যার তার ফোন দিয়ে বললেন কথা বল। স্যার এর ফোন থেকে কয়েক মিনিট মা র সাথে কথা বলে রেখে দিলাম। মা র সাথে কথা বলার সময় মা ও কাদছিল আমিও ঠিক ভাবে কথা বলতে পারছিলাম না।



এরপর দিন জাহাজ জেটিতে গেল ডিসচার্জ এর জন্য। অনেকেই শহরে যাচ্ছে। আমিও মনে মনে খুব খুশি হয়ে আছি। নতুন একটা দেশের নতুন একটা বন্দর দেখব এই ভেবে। ক্যাপ্টেন স্যার বললেন সন্ধ্যায় তিনি শহরে যাবেন আমি যেন 2nd ইঞ্জিনিয়ার আর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কে বলে রাখি। আমি খুব এক্সাইটেড ছিলাম। 2nd ইঞ্জিনিয়ার কে বললাম স্যার বললেন ঠিক আছে চিফ ইঞ্জিনিয়ার কে বল। চিফ ইঞ্জিনিয়ার কে ভয়ে ভয়ে বললাম। উনি এমন ভাব করলেন যেন শুনতে পায়নি। আবার বললাম। সে বলল “না, তুমি ক্যাডেট। তুমি তিন মাস সোরে যেতে পারবে না। শুনে ত আমার মেজাজ চরম খারাপ। মনে হচ্ছিল ঐ বুড়ো কে ধাক্কা দিয়ে জাহাজ থেকে সাগরে ফেলে দেই। আমি আর একটু অনুরোধ করলাম, না তাতেও কাজ হল না। তার ওটাই শেষ কথা। সবাই আমার দিকে করুন চোখে তাকাচ্ছিল। আমি বললাম ওকে স্যার ঠিক আছে। 3rd ইঞ্জিনিয়ার আমার হয়ে একটু ওকালতি করতে গিয়ে ঝারি খেল।



কেবিনে এসে ত রাগে অন্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম। কান্না ক্ষোভ সব কিছু মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছিল। তিন মাস শুধু এ ১০১ মিটার জাহাজ আর আমার ছোট্ট কেবিনের মধ্যে থাকতে হবে সেটা যে জেলখানার চেয়েও কষ্টের। ক্যাপ্টেন স্যার কে বললাম “স্যার, আমি যেতে পারছি না”। স্যার বললেন “কেন”? জানালাম স্যার কে। ঐ চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর প্রতি জাহাজ এর সবারই কোন না কোন অভিযোগ ছিল। স্যার বললেন দেখ আমি বলতে পারি তোমার হয়ে কিন্তু ও তোমার ডিপার্ট মেন্টাল বস আর তোমার অনেক কাগজ পত্রে তার নিরিক্ষার দরকার হবে তাই বেটার তুমি তার কথাটাই শোন। আমিও চাচ্ছিলাম না যে আমার জন্য ক্যাপ্টেন স্যার তাকে বলুক।

শুরু হল পানি আর লোহার মাঝে নতুন এক জীবন। (চলবে)



মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:১৩

েশখ ইমরান আািজজ বলেছেন: ভাল লাগল, লিখতে থাকুন

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:১৭

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ।
চেষ্টা করছি লিখতে।

২| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৩০

বাংলার অপরূপ বলেছেন: আপনার প্রত্যেকটি লেখা প্রিয়তে রেখেছি। ভালো থাকবেন।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৩৭

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
আমার লেখা কেউ প্রিয় তে রাখছে জেনে খুব ভাললাগছে ।

৩| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৪৬

ব্লগার ইমরান বলেছেন: অনুসরন লিস্টে রাখলাম আপনাকে । ভালো লাগছে। নিয়মিত দিবেন আশা করি।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৫০

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: চেষ্টা করি লিখতে সময় গুলো কাটানোর জন্য
ধন্যবাদ ভালোথাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন

৪| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৫৬

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমি একজন ভূ-বিজ্ঞানী ।সমুদ্র বিজ্ঞান নিয়ে আমার দারুণ আগ্রহ। নাবিক লাইফ দারূণ। এডভ্যাঞ্চার আছে।সাথে পরিবার ছেড়ে থাকার কস্ট ও আছে।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৫৩

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ। একজন বিজ্ঞানী কে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে ভালোলাগছে।
সত্যি বলেছেন।
ভালোথাকবেন

৫| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:৪৩

শাহ মো. আরিফুল আবেদ বলেছেন: খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। সমুদ্রের বিশার জলরাশির মাঝে বসে দোলায়মান চাদেঁর সৌন্দর্য ভোগ করা পৃথিবীর খুব কম মানুষের ভাগ্যেই জোটে। আপনি বিশাল সৌভাগ্যবান। শুভকামনা আপনার নাবিক জীবনের। অনন্ত ভারলাগা রইল আপনার প্রতি।




অফটপিক: সদ্যপ্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন: পৃথিবীতে নিজের বউ এবং চাকুরী নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট নয়। শুধু মনে হয় এর চেয়ে ভাল কিছু পেতে পারতাম।-তাই বন্ধু, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কেউই তার অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আপনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি। বাকী পর্ব পড়ার আশায় রইলাম।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:৫২

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: আমি একাকি সেই খারাপ সময় গুলো পারকরেছি সুনিল গঙ্গোপাধ্যায় এর কয়েকটি বই পড়ে। আপনার কথা শুনে ভালোলাগলো।

ধন্যবাদ। আপনাকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে ভালোলাগছে।
হতাশ নই আমি। শুধু আমার সময় গুলোকে লেখার মাধ্যমে এনে বোঝাতে চেয়েছি কেমন হয় নাবিকের জীবন এই আর কি। প্রথম কর্ম জীবনে প্রবেশের শুরুতে যেকোন পেশাতেই একটু অন্যরকম লাগে। আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা আমাদের কে পেশাদারিত্ব কমই দেয়।

ঈদ মুবারক

৬| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:১৩

হাসান৭৭৭ বলেছেন: খুব ভাল লাগছে পড়তে। ভাল লিখেছেন। চালিয়ে যান।


কতদিন যাবত চাকরি করছেন?

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:২৯

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: আমি জয়েন করেছি ১০ মাস হচ্ছে।
এখনও ক্যাডেট। সী টাইম শেষ হতে আরো দেরি আছে। তবে সামনে জানুয়ারিতে দেশে যাব ভাবছি

ধন্যবাদ

৭| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৩

ইয়ার শরীফ বলেছেন: রোলিং এ ধরে নাই সেইতাই ভালো
!:#P !:#P !:#P

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১৬

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: সেটা ভালই ।
ভালো থাকবেন

৮| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:৫৯

দুঃখ বিলাসি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
অনুসরণ লিস্টে আছেন। :)

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১৪

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ভালো লাগল আপনাকে সঙ্গী হিসেবে পেয়ে।

৯| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৪:৪৭

নারিকেল-জিন্জিরা বলেছেন: আমার খুবই ইচ্ছে ছিল মেরিনের যাবার। চান্সও পেয়েছিলাম মেরিন এ্যাকােডমিতে। কিন্তু বাবা-মা'র মত না থাকাতে আর যাওয়া হয়নি। উনাদের ভ্রান্ত ধারনা, মেরিনে গেলে ছেলেরা নাকি খারাপ হয়ে যায় :( কিন্তু মেরিন জীবন যে কতটা চ্যালেন্জিং আর কতোটা কষ্টের তা আপনার মত যারা মেরিনে জব করছেন তাদের লিখা গুলো পড়লে স্পষ্টই বুঝা যায়।

ভালো লাগছে আপনার পর্ব গুলো। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইল। ভাল থাকবেন।পরের পর্বের জন্য প্রত্যাশায় রইলাম। ধন্যবাদ।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১৪

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: খারাপ হওয়াটা নির্ভর করে নিজের উপর।

ধন্যবাদ । চেষ্টা করব লিখতে।

১০| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:২৯

কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: অসাধারণ, ভাই দোয়া করি যাতে মন খারাপ না হয়। সবকিছুকে ছাপিয়ে যাতে জীবনটাকে সাজাতে পারেন।

আপনার লেখার নিয়মিত পাঠক হলাম। আগের গুলোও এক্ষণি পড়ব। শুভ কামনা রইল।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১০

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ ।
নিয়মিত পাঠক পেয়ে গর্বিত লাগছে নিজেকে।

১১| ২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:৩১

আহমাদ জাদীদ বলেছেন: ভালো লাগল.........

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১১

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:০১

নির্ভীক বিপ্লবী বলেছেন: ভাল লিখেছেন। চালিয়ে যান।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:০৬

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ বিপ্লবী।

চেষ্টা করব চালিয়ে যেতে।

১৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৯:০১

কালীদাস বলেছেন: শোরে যেতে না পারলে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক, তবুও বলব আপনি অনেক থ্রিলিং একটা লাইফ লিড করছেন :) ঈর্ষা জাগানোর মত ;)
দুনিয়ার সব জায়গাতেই কি ডিপার্টমেন্টাল বসগুলো একই রকম?!! :((

২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:০৪

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: আমারও তাই মনে হয়। ঐ বস রা কার ঝাল যে কার উপর মেটায় বলা মুশকিল।

ধন্যবাদ।

কিছুটা থ্রিলিং ত আছেই। তারপরও দেশের জন্য মনটা খারাপ হয় পায়ই।

১৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১১:৫৯

নিমপাতা১২ বলেছেন: যাক অনেক প্রতিক্ষার পর 2য় পর্ব টি লেখলেন, জাহাজী পোলা, মেরিনা এবং আপনার লেখা গুলি পড়ে সমুদ্রজীবনের স্বাদ পাই,

২৬ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:৪৯

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ।
প্রতিক্ষায় ছিলে যেনে ভালোলাগল

১৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:১৪

অনন্ত আরেফিন বলেছেন: ভালো লাগছে লেখা গুলো পড়ে, অনুসরণে নিলাম :)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:০৯

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ।

কারো ভালোলাগার কারন হতে পারলে ভালো লাগে।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য

১৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৫

বাঙাল শিক্ষক বলেছেন: অসাধারন। চালিয়ে যান। থামবেন না কিন্তু।

২৭ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:২১

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: ধন্যবাদ

চেষ্টা করব

১৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৯

অপ্রিয় বলেছেন: পানির জাহাজ একটি অস্বাভাবিক যায়গা। অল্প কয়েকজন মানুষ পরিবর্তনহীন এক ছোট্ট জগতে বাস করা। এর জন্য কঠিনভাবে নিজেকে প্রস্তুত করা প্রয়োজন ও তার জন্য কঠোর নিয়ম কানুনের ভেতর দিয়ে যাওয়া উচিৎ।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৫:৩৬

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: আসলেই তাই।
নিজেকে প্রস্তুত করতে না পারলে সেটা সবার জন্যই বিপদজনক হতে পারে।

নিয়ম গুলোকে কঠিনভাবে মেনে চলা অবশ্যই দরকার।

ধন্যবাদ ভালো থাকবেন

১৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:০৯

শহিদুল কাদের বলেছেন: বই এর নাম ঠিক কর

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৩৩

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: "অদেখা পৃথিবী"
কেমন হয়?

১৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৯

ইমরান খান সবুজ বলেছেন:
বয়স = ২৮
ডিগ্রী (পাস) ২০০৫
কম্পিউটার অপারেটর ৯ বছর (সরকারী)

খুবই ইচ্ছা শিপে চাকুরি করার (বেতন আর ভ্রমণ)
কিভাবে কোথায় কি কোর্স করলে শিপে জব করতে পারব?
কত টাকা খরচ পড়বে?


হতাশ করবেন না প্লিজ।

যদি ১০ বছর আগে আপনার লেখাটা পড়তাম
ইস..............................................................
....................................................................
..................................................................
...................................................................

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন।

২০| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১৮

আবু মান্নাফ খান বলেছেন: আমি খুবই দুঃখিত আপনাকে হতাস করতে হচ্ছে। আপনি যে পেশায় আছেন আশা করি ভাল করবেন।

ধন্যবাদ ভালথাকবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.