নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আততায়ী।

মেহরাব হাসান খান

আমি H2O,,,,Solid,Liquid & Gas.How do you deserve me?

মেহরাব হাসান খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইচ্ছে-পূরণ

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:০১

মানুষ নিজের জীবন-ভাগ্য লিখতে পারবে না, এটাই নিয়ম।কিন্তু অন্যেরটা কেন লিখতে পারবে না?কিছু কিছু লোক হয়তো পারে, যেমন কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী!তিনি চাইলে কি চট করে কারও জীবন বদলে দিতে পারেন না?
সবচেয়ে ভালো পারেন লেখকরা, মিথ্যে হোক পারেতো।এরা চাইলে অতিরূপবতী মেয়েটিকে কুৎসিত ছেলেটার প্রেমে হাবুডুবু খাওয়াতে পারে, যে কাউকে যখন ইচ্ছে বড়লোক বা গরীব বানিয়ে দিতে পারে।এরা আশ্চর্য সোনার কাঠি, রূপোর কাঠি হাতে নিয়ে জন্মায়।

আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী, লেখক বা সিনেমার চিত্রনাট্যকার নই।আমি একজন আজেবাজে টাইপের আইনজীবী, বড় কথা একজন অযোগ্য বাবা! একজন অযোগ্য স্বামী! ইচ্ছেমতো কোন কিছু ঘটিয়ে দেবার ক্ষমতা আমার নেই।

সৃষ্টিকর্তা যেহেতু সবকিছুর ঊর্ধ্বে, তিনি মানুষের মত চিন্তা করতে পারেন না।তাহলে তিনি তেমনি চিন্তা করতেন, যেমন রুহ-আত্মা চায়। সুযোগ থাকলে আমি আমার জীবন-ভাগ্য জয়া আখতারকে দিয়ে লিখাতাম।ইনি দারুণ চিত্রনাট্য লিখেন, তার সিনেমায় নায়ক নায়িকাদের হয়তো ভালোবাসার অভাব আছে কিন্তু টাকার অভাবটা নেই।

আমি ছেলে আহানের টেবিলে বসে মামলার আরজি লিখছিলাম। খুব ঝামেলার মামলা, আমার মাথা খারাপ অবস্থা! এরমাঝে আবার সায়মা আমার সাথে রাগ করে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে গেল, কারণ আমি ওর বোনের ম্যারিজ এনিভার্সারিতে যাইনি।আমার অত সময় নেই।অগত্যা ছেলের টেবিলে কাজ করছিলাম।

কেন জানি ছেলের লক ডাইরিটা খুললাম।আমার ছেলেটার সাথে অত কথা হয় না, যা দু'একটা কথা হয় তাও ও যখন আমার কাছে পড়তে আসে। আমি সারাদিন এতএত ক্লাইন্টের সাথে ডিল করে একটুও রাগি না, কিন্তু ছেলেকে পড়াতে বসলেই চত করে রাগ আলফা লেভেলে পৌছে যায়। আমি আবার টিপিকাল অভিভাবকদের মতই, আমার মতে পুলাপান মানুষ করার জন্য এখনো হিটলারি পদ্ধতিই ১০০% কার্যকর।

ছেলে ডাইরিতে অনেক ঘটনা লিখেছে। বেশির ভাগই ওর মাকে নিয়ে, মামা বাড়ির লোকজন নিয়ে। আমার পরিবার যে নেই তা না, কিন্তু যে ঘটনায় আছে সবই কষ্টের!আশ্চর্য! এতটুকু বাচ্চা কষ্টগুলো উপলব্ধি করতে পেরেছে। কয়েকটি লেখা আমার অক্ষমতা মারাত্মকভাবে প্রকাশ করেছে!

১৩.০২.১৮
আজ আমি শিশির ভাইয়াদের বাসায় খেলতে গিয়েছি।ওদের বাসার সামনে একটা ছোট একটা মাঠ আছে, ওখানে ক্রিকেট খেলা হয়।ভাইয়া আমাকে খেলায় নেয়নি। বাবা একদিন একটা বাড়ি কিনবে, সামনে থাকবে বড় মাঠ আর বারান্দায় বিলিয়ার্ড বোর্ড। আমি কিন্তু তখন শিশির ভাইয়াকেও খেলায় নিব।

১৭.০৫.১৮
আজ কথা নেই বার্তা নেই, ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল।আম্মু আমাকে নিতে এল না,নিশ্চয়ই ঘুমিয়ে পরেছে,আম্মু বাবা সাথে ঝগড়া করলেই রাগ করে ঘুমিয়ে পরে।আমি আর ইমু স্কুলের লবিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।ওদের গাড়িটা এল, আমি ভেবেছি ও আমাকে গাড়িতে চড়তে বলবে।ওদের বাসা আর আমাদের বাসা কাছেই। ও কিছুই বললো না।আমি নিজেই চড়তে গেলাম, ও আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।আমি কাদায় মাখামাখি, স্কুলের সবাই দেখলো।আমার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে হল।
ইমু খুব ভালো মেয়ে, ওর জন্মদিনে সবাইকে দাওয়াত দেয়।আমাদের ক্লাসের যে গরীব ছেলেটা আছে রাকিব তাকে ছাড়া।ইমুর বাবা পুলিশ, আমার বাবাকে স্যার স্যার বলেন। ওর বাবার এত টাকা, আমাদের কেন টাকা নেই কে জানে? বাবা একদিন লাল টকটকে একটা পাজেরো কিনবে।
আমি কিন্তু ইমুকে গাড়িতে নিব।

২৬.০৯.১৮
আজ আমার জন্মদিন। বাবা প্রতিদিনের মতই বই পড়ছে,আইনের মোটা বই।বড় করে লিখা সাক্ষ্য "আইনের ব্যাখ্যা"। বাবার কিছুই মনে থাকে না।এমন মন ভোলা বাবা কি করে এত আইন মনে রাখে?
ইমু আগেই বলেছে,"তোরা গরীব।তোর জন্মদিন কোনদিন পালন করা হবে না।"
সন্ধ্যায় বাবা আম্মুকে বললো, চল আমরা কোথাও খেতে যাই।আম্মু এত রেগে গেল, আমাদের বাইরে যাওয়া হল না।বাইরে গেলেই ভালো হত, আম্মুটা একটু বেশি বেশি!

৩.০৪.১৯
সবার দাদাবাড়ীর লোকজন বাসায় এলে কতকিছু আনেন, আমার কাকা,দাদা কেউ কখনো কিছুই আনেন না।ওরা বাবার কাছে টাকা চাইতে আসে।টাকা পেলেই চলে যান, আমার সাথে কথাও বলে না।তবে বড় চাচ্চু এলে অনেক আদর করে, আমরা ঘরেই ক্রিকেট খেলি,চাচ্চু আমাকে গোসল করিয়ে দেন,আমায় খাইয়ে দেন।চলে যাবার সময় বারবার পিছনে ফিরে তাকান, আমি সাথে যেতে চাই, আম্মু যেতে দেন না। আম্মু আমার দাদাবাড়ীর লোকজন পছন্দ করে না।দিদাকেতো একদম না, দিদা আসার সময় এতএত পিঠা বানিয়ে আনে।কেবল দিদা আসলেই বাবা বই না পড়ে গল্প করে।আমার ভালো লাগে।

১৮.০৮.১৯
লয়ার ইজ এ লাইয়ার!
এই কথাটা ঠিক।বাবা বলেছিল, একটা প্লে-স্টেশন কিনে দিবে।আমি ক্লাসে প্রথম হলাম, বাবা কিনে দিলো না।সবার বাসায় টিচার আছে, আমার নেই।ইদানীং বাবাও পড়াতে বসে না।আমি অংক পারি তবে মুনাফার অংক বুঝতে পারছি না।অবশ্য আমি হিসেব করেছি মুনাফার অংক ছাড়াও আমি পিএসসি'তে এ+ পেয়েই যাবো।

১৫.০৯.১৯
আজকে আমি নামাজ পড়ে দোয়া করেছি,"আল্লাহ বাবাকে একটা বড় মামলা জিতিয়ে দাও।"
আমাদের কবে বাড়ি হবে, লাল গাড়ি হবে কে জানে!ইশ!যদি এবার জন্মদিনে দিদা আসতো!

আমার হাতে যে মামলা আছে এটা দিয়েই ছেলে আহানের সব ইচ্ছে পূরণ করা যায়।
বিরোধীপক্ষ মেয়রপুত্র প্রথমে একটা ছেলেকে কুপিয়েছে,পরে রাস্তায় টেনে নিয়ে গাড়িতে পিষে খুন করেছে।ছেলেটার অপরাধ সে তাকে পরীক্ষায় দেখায়নি।
খুব সোজা মামলা! ওপেন এন্ড শাট কেস,দণ্ডবিধি ৩০২ ধারা মোতাবেক ফাসি না হলেও কমপক্ষে যাবৎজীবন কারাদণ্ড হয়ে যাবে।আমার কাছে চাক্ষুষ সাক্ষী আছে তিনজন।তারা দেখেছে, কিভাবে কুপিয়েছে আর টেনে হিচড়ে রাস্তায় নিয়ে গাড়িতে পিষিয়েছে।

ওরা আমার সাথে যোগাযোগ করেছে, ৩কোটি দিতে রাজি যাতে আমি কেসটা ঘুরিয়ে দেই।খুব সহজ, ধারাটা বদলে দণ্ডবিধির ধারা ৩০৪খ করে দিতে হবে।বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মাধ্যমে মানুষ খুন, শাস্তি সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড।
কথায় আছে "Good lawyer knows law,but a better lawyer knows the judge".
আমি কোন বিচারককে চিনি না।কিন্তু মেয়র সাহেব নিশ্চয়ই চিনেন!
দেখা গেল শাস্তিই হল না, বা হলেও ১-৫ মাসের বেশি না।সেটাও ছেলেটা রাজার হালে জেলে কাটাবে।সাক্ষীদের কিছু টাকা দিলেই হবে, টাকা সব রোগের মহৌষধ।

আমি সিন্ধান্ত নিতে পারছিলাম না।যার সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে, আমি আহানকে ঘুম থেকে জাগালাম। আহানের চোখে ঘুম নেই, সে ভীত চোখে বললো,"বাবা, বিশ্বাস কর।আমি মুনাফার অংক কিছুই পারি না।তোমাকে কতবার বললাম, শিখিয়ে দাও।দিলে না, পরিক্ষায় শুণ্য পাব না তো কি পাবো!শিখিয়ে দাও, পরিক্ষায় ফুল নাম্বার পাব।" আহান ভয়ে কাঁদতে শুরু করলো। ওর কান্নার শব্দে সায়মা এসে দরজায় দাঁড়ালো।

"আহান, আমি তোমাকে অংক শিখিয়ে দিব।আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শোন।তোমার সব ইচ্ছে পূরণ হবে, আমাদের মাঠ'অলা বাড়ি হবে, লাল গাড়ি হবে, তোমার প্লে-স্টেশন হবে,এবার তোমার জন্মদিনও ধুমধামে পালন করা হবে।তুমি আমার কথা আগে শোনো, তারপর উত্তর দাও।"
সায়মা গম্ভীর গলায় বললো,"আমাদের ইচ্ছের কোন দাম আছে তোমার কাছে?তুমি পরে থাকো তোমার আইন নিয়ে, সারাদিন ওগুলাই পড়,গিলে খাও।মাঝরাতে কেন ছেলেটাকে যন্ত্রণা করছো!ওকে ছেড়ে দাও।"
"সায়মা, সারা জীবন যন্ত্রণা ভোগ করার চাইতে আহান যদি আজ একঘন্টা কম ঘুমায় তাতে কিছু যাবে আসবে না।আহান তুমি আমার কথা শোনো।"

"একটা ছেলে তার বন্ধুকে কুপিয়েছে, তারপর গাড়িতে পিষে মেরে ফেলেছে।কারণ বন্ধুটি তাকে পরিক্ষায় দেখায়নি।
আমি ঐ মরে যাওয়া ছেলেটার পক্ষে মামলা লড়ছি।যে ছেলেটা মেরেছে তার বাবা বড়লোক। তিনি বলেছেন, যদি আমি মামলাটা না নেই, বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে খুনি ছেলেটাকে বাচিয়ে দেই তবে তিনি আমাকে ৩ কোটি টাকা দেবেন।আমাকে আদালতে মিথ্যে কথা বলতে হবে, মিথ্যে কেস সাজাতে হবে।
যে ছেলেটা মরে গেছে তারা গরীব, ওদের হয়ে কেস নিলে যদি জিতেও যাই ওরা আমাকে প্রায় কিছুই দিতে পারবে না, অল্প টাকা হয়তো দিলে দিতেও পারে।
এখন বল, তুমি কি চাও?আমি তিন কোটি টাকা নিয়ে খুনি ছেলেটাকে বাচিয়ে দেই?ঐটাকায় কেনা হবে তুমি যা চাও।
নাকি চাও, ছেলেটা খুনের শাস্তি পাক?বল তুমি কি চাও?"

সায়মা বললো,"সবাই তোমার মত মহাপুরুষ না।ও চায়, তুমি টাকাটা নাও।আর এটা সবাই করে, তুমি করলে কি হবে?ইমুর বাবা সামান্য একটা পুলিশ, কি নেই তাদের!একবার কর, এটাই প্রথমবার এটাই শেষবার। আর না হয়?......."
"তুমি চুপ কর।আহানকে বলতে দাও।আব্বু তুমি বল, তুমি কি চাও?তুমি যা বলবে, আমি তাই করবো।"
সায়মা রেগে চলে গেল।

আহান আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,"বাবা, আমি চাই খুনি ছেলেটা শাস্তি পাক।যাতে সে পরিক্ষার জন্য পড়ালেখা করে।আর গরীব লোকদের কাছে তুমি টাকা নিয়ো না।" আহান চাদর জড়িয়ে শুয়ে পরলো।
ছেলের জন্য ভালো লাগছে!হয়তো ছেলে না বুঝেই বলেছে, তাতে কি?ভুল করে ঠিক কাজটা করলেও সেটাই বা কম কি?

"কিন্তু বাবা, একটা ঝামেলা যে করে ফেলেছি।"
"আবার কি করেছ?"

"আমি আমার জন্মদিনে রাকিবকে আগেই দাওয়াত দিয়েছি।ওকে কেউ জন্মদিনে দাওয়াত দেয় না।তোমায় কেক কিনতে হবে না, সিপি থেকে চিকেন আনলেই হবে।ও কোনদিন চিকেন ফ্রাই খায়নি।আমার জন্যও না হয় এনো, ও একা একা খাবে?"

আমি ওর বিছানায় বসলাম। বললাম, আচ্ছা এনে দিবো।আমি ওর গায়ের চাদরটা সরাতেই ও বললো,"একদম চুমু খাবে না বাবা, মানুষের লালায় কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া থাকে।"
দরজায় দাঁড়ানো সায়মা, আমি আর আমাদের আহান একসাথে শব্দ করে হেসে উঠলাম।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২২

রাজীব নুর বলেছেন: ইচ্ছে-পূরণ নামে রবীন্দ্রনাথের একটা গল্প আছে।

ভালো লিখেছেন। সহজ সরল ভাষা। পড়তে আরাম লাগে।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমার সব গল্পের নামই রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, সুকান্ত বা জীবনানন্দ'র কাছ থেকে ধার করা।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:০৪

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার হয়েছে

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:০৭

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: কিছু মানুষ অভিভূত হবার বিরল গুণ নিয়ে জন্মায়, আপনি তাদের দলে।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:১০

ইসিয়াক বলেছেন: লেখক বলেছেন: কিছু মানুষ অভিভূত হবার বিরল গুণ নিয়ে জন্মায়, আপনি তাদের দলে।
কি যে বলেন ......।আমার সত্যি ভালো লেগেছে ।আপনি লিখতে থাকুন । কেউ না পড়ুক আমি পড়বো ।আমি আপনার পাশে আছি। আমার হাতটি ধরুন ...।
ও হ্যাঁ পোষ্টে ছবি দিবেন । ছবি না দিলে পোষ্ট নজরে আসে না ।
ধন্যবাদ । শুভকামনা রইলো ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ছবি দিয়ে পোস্ট আকর্ষণীয় করতে ইচ্ছে করে না।আর আমার কালেকশনে অত ছবি নেই, গুগল থেকে অন্যের ছবি নেয়া Intellectual Property Right লঙ্ঘন।
সারা বছর আইন পড়ে, একাজ করতে ইচ্ছে করে না।
ছবি না দিলেও আপনি আর রাজীব ভাই ঠিকই পড়বেন।এটাই কম কি?

ছোটবেলায় বন্ধুর সাথে হাতধরে নদীর পাড়ে হেটেছি, বেশ ভালো লাগতো।

৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৩

ইসিয়াক বলেছেন: +++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.