নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৯ :( :(

২৩ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:০২

আগের পর্বগুলো হয়তো পড়েননি, আগের পর্বগুলো না পড়ে এই পর্ব থেকে গল্পটি পড়া শুরু করলে তেমন ভালো লাগবে না । তাই সামু ব্লগার ও পাঠকদের সুবিধার্থে আগের পর্বগুলোর লিংক শেয়ার দিলাম । নিচে ক্লিক করুনঃ
(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ১-৮

"আরে, ধৈর্য্য ধরেন, পুলিশ স্টেশনে আর কিছু পান আর না পান, সময় জিনিসটা খুব করে পাবেন । আপনার সময় কাটানোটাই এখানে বড় চ্যালেঞ্জ এখানে । আর যেহেতু আপনার বের হওয়ার সুযোগ এখনও তৈরি হয়নি, তাই আমার তো ধারণা আপনি হয়তো এখানে আজকের দিনটাও পার করবেন । কাল তো ব্যস্ততার কারণে আপনার সাথে কথা বলার সময়টুকুই পাইনি । আপনি এলেন মাঝ রাতে আর ওমনি আপনাকে সোজা হাজতে পাঠিয়ে দিলাম । আসলে বিষয়টা আজ সকালে আমার মাথায় এসেছে । আপনি তো সম্মানিত মানুষ । ঐ সব দাগী ক্রিমিনালগুলোর সাথে তো ভালোভাবেই এক রাত কাটিয়ে দিলেন । সবাই কিন্তু পারে না । তবে আমার উচিৎ ছিল রাতে আপনাকে যখন পুলিশ স্টেশনে আনা হলো, তখনই আপনার সাথে কথা বলা । কিছু মনে করবেন না, প্লিজ । আমরা যে জনগণের বন্ধুই, এটা জনগণকে বেঁধে পেটালেও মানাতে পারবো না । দোষ হয়তো আমাদেরই । জনগণের মধ্যেও ভালো-মন্দ আছে, সেখানে কোন দোষ নেই, অথচ আমাদের মধ্যে কেউ মন্দ হলেই জাত গেলো । পুরো পুলিশ জাত তখন খারাপ । শোনেননি, ঐ কথাটা, পুলিশের সাথে বন্ধুত্বও খারাপ আবার শত্রুতাও খারাপ । কেন ভাই, আমরা বাঘ না ভাল্লুক ? আমরাও তো মানুষ । আমাদেরও হাসি আছে, কষ্ট আছে, সুখ আছে, ভালোবাসা আছে, রাগ আছে, সহানুভূতি আছে, ইচ্ছা আছে, আশা আছি । আমাদের ভালো দিকটা কেউ দেখেও দেখে না আর খারাপ অল্প কিছু করলেই শেষ । তাল থেকে তিল খসলেই শেষ । কেন ভাই, আমাদের কি বাঁচার অধিকার নেই নিজেদের মত করে ? খুব কষ্ট হয় জানেন । খুব । মানুষ যখনই আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে খুব কষ্ট হয় কিন্তু কাউকে বুঝাতে পারি না । এমনকি আমাদের ঘরের বউ ছেলে-মেয়েগুলাকেও মানুষ যা-তা কথা বলে, এগুলো কি ঠিক, আপনিই বলেন ?"

বদরুল সাহেব কথাগুলো ছুঁয়ে গেলো আশেপাশের সবাইকে । আমি লক্ষ্য করলাম আমার চোখ ছলছল করছে । আশেপাশে নূপুরকে দেখলাম ওড়না দিয়ে চোখ মুছতেছে । সালামেরও একই অবস্থা । ও পকেট থেকে রুমাল বের করতেছে । এক পাশে দাড়িয়ে থাকা আসলাম শেখ দেখি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে । নেশা করার দায়ে যে লোকটিকে ধরে আনা হয়েছে, সে এতক্ষণ পর মাথা উঁচু করে তাকিয়েছে । তবে তার মুখ ভাবলেশবিহীন । কোন এক হাজতির সাথে দেখা করতে আসা চাচাও কাঁদছেন তবে মুখ লুকিয়ে । বৃদ্ধ বয়সেও মানুষ নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করতে ভয় পায়, পাছে তাকে কেউ অবজ্ঞা করা শুরু করে কিনা । তবে বদরুল সাহেব কাঁদলেন না, এমনকি তার চোখ ছলছলও করছে না । আশ্চর্য রকমের শক্ত মানুষ । তিনি তার টেবিলের উপর রাখা সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটি সিগারেট বের করে মুখে নিয়ে ধরালেন । সিগারেট ধরানো মাত্রই মুড পরিবর্তন হলো তার । আমি লক্ষ্য করলাম কেমন জানি মুখ শক্ত হয়ে গেছে তার । একটু আগেও আমার সাথে কথা বলার সময় যেমন ছিলেন এখন আর তেমন নেই তিনি । সিগারেট ধরিয়েই মুখ ঘুরিয়ে বসলেন বদরুল সাহেব । আর একটু পরই আসলাম শেখ কে হাত দিয়ে ইশারা করলেন যাতে আমাকে আবার ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়, তার কথা বলার আগ্রহ শেষ । ফেরত আর কোথায়ই বা, হয়তো হাজতেই । আমি দ্রুতই বুঝে গেলাম তিনি মনে হয় আর কথা বলার মুডে নেই । বুঝলাম না, স্বাভাবিক পরিস্থিতি এত দ্রুত ইমোশনাল পরিস্থিতিতে বদল হলো কিভাবে ?

(বাকীটা আগামী পর্বে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.