নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ জায়েদ আর শ্রাবন্তীর বিয়ে - ।। পর্ব -১ ।।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৬

হ্যাঁ, অনেক প্রতীক্ষার ফসল এই বিয়ে । জায়েদ আর শ্রাবন্তী এক সাথে আছে প্রায় ছয় বছর । এই ছয় বছরে তারা দুইজনই গ্রাজুয়েশন শেষ করে জায়েদ আজকে বেকার কিন্তু শ্রাবন্তী একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছে । অবশ্য তারা সমবয়সী নয় । জায়েদ শ্রাবন্তীর থেকে দুই বছরের বড় । জায়েদ অনেক ভদ্র, স্মার্ট, ভালো পরিবারের, পড়াশুনায়ও ভালো । শুধু একটাই সমস্যা একটু অলস । গ্রাজুয়েশন হয়ে যাবার পর হাতেগুনে মাত্র দুই জায়গায় চাকরীর ইন্টার্ভিউ দিতে গিয়েছিল তবু গাঁ ছাড়াভাবে । এখানেই শ্রাবন্তীর পরিবারের সমস্যা । একটি অলস, বেকার ছেলের কাছে কোন বাবা-মা তাদের একমাত্র মেয়েকে সপে দিবেন ? অবশ্য জীবন সম্পর্কে উদাসীন, এই সাধাসিধে ছেলেটাকে শ্রাবন্তী তার প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসে । অবশ্য সে এই ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ কদাচিৎ-ই করে । মোবাইল করেই কি খাইছ, কখন ঘুমাইছ, চাকরীর জন্য পড়াশুনা করতেছ কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্নই বেশিরভাগ করে শ্রাবন্তী । জায়েদ তখন কিছুই বলে না । তবে মাঝেমধ্যে সে শ্রাবন্তীর ফোন ধরে না । পরবর্তীতে ফোন ধরলে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তুমি আগে ফোন ধরনি কেন ? তাহলে উত্তর দেয় মোবাইল খুঁজে পাচ্ছিলাম না । কিন্তু শ্রাবন্তী সবই বোঝে । সে জায়েদকে রাগিয়ে নিজেও শান্তি পায় না ।

কিন্তু এভাবে আর কত দিন ? তাই তো অনেকটাই জোর করেই বাবা-মাকে বুঝিয়েছে শ্রাবন্তী । অবশ্য জায়েদের এত ঝামেলা নেই । এই দুনিয়ায় তার বাবা-মা নেই । ভাইবোন তো ছিল না কোনদিন । বাবা-মা মারা যাওয়ার পর কোন আত্মীয়স্বজন এসেও খোঁজ নেয়নি জায়েদের । তাই তো এই বিশাল পৃথিবীতে আজ শ্রাবন্তী ছাড়া আজ জায়েদের কেউ নেই । সে যে শ্রাবন্তীকে কতটা ভালবাসে, তা সে কখনই বুঝাতে পারবে না । তবুও জায়েদ তার এই দুরাবস্থার সময় শ্রাবন্তীকে বিয়ে করতে চায় না । তার আসলে চাকরীর প্রতি অনাসক্তি না, শুধু নিজ যোগ্যতার সমান চাকরীর অভাবেই সে আজও বেকার । এই কথাটি সে শ্রাবন্তীকে বোঝাতে পারেনি । শ্রাবন্তী শুধু বলে এই দুনিয়ায় সকল কাজ সমান । কোন কাজই ছোট-বড় নেই । সকল কাজই সম্মানের । কথাগুলো নীতিকথারূপেই শুনতে ভালো লাগে, বাস্তব জীবনে এই কথাগুলোর কোন অস্তিত্ব নেই ।

একটু আগে শ্রাবন্তী জায়েদকে ফোন দিয়ে বলেছে যে সে পার্লারে যাচ্ছে । জায়েদ অবশ্য শ্রাবন্তীকে আগেই একটা অনুরোধ করেছে বিয়েটা যেন অনাড়ম্বরভাবে হয় । মানে মাত্র অল্প কয়েকজন মানুষ নিয়ে ছোটপরিসরে যেন বিয়েটা হয় । শ্রাবন্তীর পরিবার এই কথাটিও তথা শর্তটিও মেনে নিয়েছে কিন্তু জীবনে বিয়ে নিয়ে প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন থাকে । তাই তো শ্রাবন্তী জায়েদকে বলে রেখেছে সে তার বিয়ের সাজ পার্লারে গিয়েই দেবে । জায়েদ অবশ্য এই কথাতে আর আপত্তি করতে পারেনি । হঠাৎ জায়েদের মোবাইলে অরুণের ফোন ।

- দোস্ত, অরুন বলছি, চিনতে পারছিস ?
- না, চেনার কি হল ? তোর নাম্বার তো সেভ করে রেখেছি সেই চার বছর আগে থেকেই । তুই নাম্বার তো আর চেঞ্জ করিসনি ।
- হুম, ঠিক । নাম্বার বারবার চেঞ্জ করতে আমার ভালো লাগে না । তা তুই কি কোন চাকরি বা ব্যাবসা করছিস ?
- না, রে, এখনও বেকার ।
- তাহলে তো তোর জন্য একটা সুসংবাদ আছে । আমার কোম্পানিতে একটি নতুন সেক্টরে এক্সকিউটিভ এমপ্লয়ি নেবে কয়েকজন । সেলারি কমপক্ষে ত্রিশের উপর বই কম হবে না । তুই কি এখন একটু গুলশান-২ এ আসতে পারিস ? যদি পারিস তাহলে আমি এক্স্যাক্ট ঠিকানা টেক্সট করছি ।
- কিন্তু.........
- কিন্তু কি ?
- না, কিছু না । তুই ঠিকানাটা টেক্সট করে পাঠা । আমি আসছি ।

গুলশান পৌঁছতে পৌঁছতেই দুপুর ২ টা বাজলো । ঢাকা শহরের রাস্তায় যে এত জ্যাম তা জায়েদ আগে জানতো না । কারণ সে বাড়ির বাইরে খুব কমই বের হয় । নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছিয়ে অরুণকে ফোন দিল জায়েদ । অরুণ এই কোম্পানির এ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার । ভালোই বেতন পায় । বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অরুণই ছিল জায়েদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু । অরুণ যে মেয়েটিকে ভালোবাসতো মানে রেখা, সেই মেয়েটিকেও অরুণের হয়ে প্রপোজ করেছিল জায়েদ । সেটি নিয়ে অবশ্য রেখা আর জায়েদ সবসময় অরুণকে ক্ষেপাতো । আর বেচারাও তখন কিছু বলতে না পেরে চুপ করে থাকতো । জায়েদ অবশ্য পরে আর খোঁজ নেয়নি, রেখা আর অরুণের বিয়ে হয়েছে কিনা । তবে অরুণের সাথে ওর এই যোগাযোগও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরুনোর পর প্রথম বার । এর মাঝে জায়েদ তার মোবাইল নাম্বার দুইবার চেঞ্জ করেছে । অরুণ কিভাবে জায়েদের নাম্বার ম্যানেজ করলো, আল্লাহ্‌ মালুম । ওকে একবার জিজ্ঞেস করতে হবে এই ব্যাপারে, জায়েদ মনে মনে ভাবে ।

(বাকীটা আগামী পর্বে)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০১

বাংলাদেশ টাইমস বলেছেন: পরের অংশও ভাল লাগবে আশা করি

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: পরের পর্বের লিংকঃ আজ জায়েদ আর শ্রাবন্তীর বিয়ে - ।। পর্ব - ২ ।। আশা করি ভালো লাগবে পরের পর্বটাও ।

ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য ।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: পরের পর্বের লিংকঃ আজ জায়েদ আর শ্রাবন্তীর বিয়ে - ।। পর্ব - ২ ।। আশা করি ভালো লাগবে পরের পর্বটাও ।

ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.