নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

।। ধুর, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ? ।। :( :(

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৫২

গতকাল নাকি পুরুষ দিবস ছিল !! হা হা হা, হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে (বাড়িয়ে বললাম যদিও) পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ? হ্যাঁ, সত্যিই তো, পুরুষদের আবার দিবস লাগে কি জন্য ? যত্তসব ন্যাকামি, ঢং...

জন্ম হওয়ার পর থেকেই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে এমন সিদ্ধান্ত যখন অনাগত ভবিষ্যৎ কে ধোঁয়াশা করে দেয়, তখনও প্রশ্ন একটাই, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

একটু বড় হতেই যখন স্কুলে যাওয়ার দিন শুরু হয়, তখন স্কুলে পড়াশুনার পাশাপাশি আরেকটি অধ্যায় শুরু হয় - ভালো দেখে বন্ধু বাছাই আর বাঁদরামি । একটু বড় হওয়া শুরু করতেই প্রতিটি পদক্ষেপে শুনতে হয়, ভালো করে পড়ো, জীবনে কিছু একটা করতে হবে । তুমি তো আর মেয়ে না যে পড়াশুনা শেষ করে কোন গতি করতে না পারলে কারও ঘাড়ে ঝুলে পড়বে, তাই না ? প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের চেয়েও যে প্রশ্নটা বড় হয়ে দাড়ায় সেটি হচ্ছে পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

উচ্চশিক্ষা গ্রহনের সময় চাপ আসতে থাকে কিছু একটা আসলেই করতে হবে । এই চাপটা মূলত মানসিক । তখনই জীবনের অসহায়ত্ব কাটাতে জড়িয়ে নিতে হয় বিপরীত লিঙ্গের কাউকে । আবেগের সহায় মেয়েটি হয়তো হাত ধরে হাঁটতে চায় অনেকদূর কিন্তু বেকার ছেলের ঘরে ওঠার প্রশ্নে নীরব ও আপসহীন । ছেলেটার মনে কি তখন এই প্রশ্ন আসে না যে পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

পড়াশুনা শেষ ? তাহলে আর কি জড়িয়ে যাও জীবনযুদ্ধে । বিসিএস, ব্যাংকজব, সরকারী, বেসরকারি, নয়তো বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য আইএলটিএস, জিআরই, টোফেল, জি-ম্যাট কতশত রাস্তার ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তেই জীবন তখন ঊর্ধ্বশ্বাস । সাথে তখনও যে মেয়েটি হাত ধরে আছে, তার টানও প্রকট হতে থাকে । তারও কি দোষ, এত ধারী মেয়ের এখন গতি না হলে আর কবে ? বেকার ছেলের হাতে বাধিয়ে দিতে তার বাড়ির লোকের বয়েই গেছে !! ছেলেটা গরমের তাপে ঘামতে থাকে আর শীতের সময় কাঁপতে কাঁপতেই ভাবতে থাকে, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

হ্যাঁ, কোনরকমে গতি একটা হয়েছে । সেই মেয়েটা না হলেও কপালে অবশেষে জুটেছে একজন । দায়িত্ব এখন অনেক । পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের কানাঘুষা তো সেই কবে থেকেই । ছেলে নির্ঘাত টাকা দিয়েই ঢুকেছে চাকরিতে !! আর এত চুলকানিই বা কেন, এত দ্রুত বিয়ে করতে হবে কেন ? মেয়ের বাবা-মা রীতিমত চাকরির ইন্টার্ভিউ এর মত ইন্টার্ভিউ নিয়েছে, তবেই না দিয়েছে মেয়েটাকে । নিজের বাবা-মা আবার ভেবেই নিয়েছে ছেলে এখন পর । নতুন বউয়ের কথায় উঠবে বসবে, আমাদেরকেই না বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় !! ছোট ভাই-বোনগুলোও ভয়তে আছে । নতুন ভাবি আবার সম্পত্তি বেশি করে ভাগিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র করবে না তো !! নতুন নার্ভাস বউটাকে সাহস দিতে দিতেই ছেলেটা ভাবে, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

সংসারে নতুন বাচ্চা এসেছে, অনেক সুন্দর, একটু কালো, বাবার সাথে নাকের মিল নেই, কানের মিল নেই, কোন গড়বড় নেই তো ? বউটা এত খাদক, বাচ্চা তো অনেকেরই হয়েছে কিন্তু এরকম খাবার সব একাই কেউ খেয়ে ফেলেনি । বাচ্চাটা ধীরে ধীরে বড় হয়েছে, এবার ওকে স্কুলে দিতে হবে । স্কুলের ভর্তিযুদ্ধে বাচ্চাটা শেষ !! লটারি করা হবে, ৭টা না ১০ টা সৃজনশীল উত্তর করতে হবে, বাসায় স্যার রাখতে হবে সব সাবজেক্টের, কোচিং এ দিতে হবে, ব্যাচে দিতে হবে !! ধুর, বাচ্চা-কাচ্চা মানুষ করতে গেলে কিপটামি চলে !!! ছেলেটা এখন একজন লোক । সেই লোকটাই ভাবতে থাকে, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

বাচ্চাটা ভালোই বড় হয়ে গেছে, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবে বলে আবদার !! একটা মাত্র ছেলে আবদার তো মেটাতেই হবে, তাই না ? গাড়ি নাকি একটা কিনতে হবে । আইফোন নাকি লাগবে, ১০ নাকি ১১ ? সুন্দরী একটা মেয়েকে পটিয়েছে প্রতিদিন হাতখরচই লাগবে ১০ হাজার টাকার মত । শুকনোমুখে সব আবদার মানতে হয় । পুরুষদের এত আপত্তি করলে কি চলে ? আচ্ছা, সত্যিই তো, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

ছেলেটার পড়াশুনা শেষ, জব করবে না, ব্যবসা করবে । ওকে ফাইন । টাকা লাগবে দুই লক্ষের মত । ওকে ফাইন । সুন্দরী গার্লফ্রেন্ডকেই বিয়ে করবে । ওকে ফাইন । মেয়ের বাবা দশ বছর আগেও রিকশা চালাতো, হঠাৎ হুন্ডি ব্যবসায় লাভে লাল হয়ে বড়লোক । ওকে ফাইন । আমাদের বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠালেই হয় খালি !! আমরা দুই বুড়ো-বুড়ি না হয় ঘরের এক কোণায় থেকে জীবন কাটিয়ে দেবো । আমার কথা শুনে আমার বউ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে শুকনো হাসি দেয় । তার নিরাপত্তার সব জায়গা এখন আমিই । আচ্ছা, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

বুড়ো হয়ে গেছি । ছেলেটা এখন বউকে নিয়ে আলাদা থাকে । একটা মেয়ে থাকলে তো সেও আলাদা হয়ে যেতো । বুড়ো-বুড়ি একাই থাকি । বেশিরভাগ সময় আমার কাটে মসজিদে আর তার ? হ্যাঁ, হাসপাতালে কিংবা ডাক্তারের কাছে । তবু যতটুকু পারা যায় প্যানসনের টাকায় চলছি । বাড়ি ভাড়া অর্ধেক ছেলে নেয়, অর্ধেক আমাকে দেয় । আমার তাতেও আপত্তি নেই, ওরা ভালো থাকলেই আমি ভালো । হে হে হে, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ?

শরীরটা এই কয়েকদিন ভালো যাচ্ছে না একবারেই, মনে হয় বাঁচবো না । ভাবতে ভাবতেই বিছানায় একটু গা এলিয়ে দিতেই বুকে প্রচণ্ড ব্যাথা উঠলো, বউকে চিৎকার করে ডাক দিলাম । সে দৌড়িয়ে আসলো । ছেলেটাকে ফোন দিতে বললাম । সেও অফিস থেকে দৌড়ে আসলো, সাথে পুত্রবধুও আছে । হ্যাঁ, ছোট দাদুভাইটাও ভয়ার্ত চোখে মায়ের আচলে লুকিয়ে লুকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আর কিছু বলারই শক্তি পেলাম না । দমটা বেরিয়ে গেলো অনেক ছটফট করেই । মরার ঠিক আগ মুহূর্তেই ভাবনা এলো হঠাৎ-ই, জানি না কেন, হয়তো আমার দোয়া কালাম পড়ার কথা । কিন্তু আমি পাগল ভাবছি, ধুর, পুরুষদের আবার দিবস লাগবে কি জন্য ? :`>

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:২৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এত অসহায় ভাবার কিছু নেই। আমরা পুরুষ। আমরা ঐ গুণ দিয়েই তৈরি। BSRM - কঠিন...

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫০

কামরুননাহার কলি বলেছেন: অসহয়তো ভাবতে হবেই কারণ এটাই জীবন এটাই নিয়ম। #তালগাছ আমার ভাইয়া আপনার প্রশ্নের উত্তর দিলাম আমি।

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৫২

কামরুননাহার কলি বলেছেন: আমারও হাসি পায় পুরুষদের আবার কিসের দিবস হাহাহাহাহ। যত্তসব নেকামি, যেহেতু সবাই একই পথে চলি একই গতিতে চলি একই নিয়মে চলি তা আবার আলাদা কি আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.