নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছবি ও মিলান উপাধ্যায় - বিদায় ক্ষণের ঘন্টা বাজে - পর্ব - ০২

০৪ ঠা জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫৮



এই লেখার আগের পর্বটি পড়তে ঘুরে আসুন লিংকে দেওয়া পোস্টটি থেকে ।
ছবি ও মিলান উপাধ্যায় - বিদায় ক্ষণের ঘন্টা বাজে - পর্ব - ০১

ছবি জানে তাদের সম্পর্কের হয়তো আজকেই শেষদিন আবার হয়তো না কিন্তু তাদের সম্পর্কে অব্যক্ত থাকা কোন কথা ছবি রাখতে চায় না । কিন্তু মিলান কি নিয়ে বলছে ছবি ধরতে পারছে না । মিলানের করা হঠাৎ এই প্রশ্ন যেন ছবিকে কিছুটা অতীতে নিয়ে গেলো । ভাবনার সাগরে অব্যক্ত কথামালাগুলো এখন বেছে বেছে বের করার চেস্টা করছে ছবি । ছবিকে চুপ থাকতে দেখে মিলানও যেন খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে গেলো । আশ্চর্য, আজকে কেন জানি তাদের মধ্যকার কোন হাসির কোন স্মৃতি তার মনে পড়ছে না । অদূর ভবিষ্যতটুকু কেমন জানি নিদারুণ ফাঁকা ফাঁকা লাগছে মিলানের । আচ্ছা, মিলান কি কখনও তার ভবিষ্যৎ ছবিকে ছাড়া চিন্তা করেছিল এই কয়েকটা বছর? তবু কেন নিয়তির খেলায় হেরে যেতে হয় কাউকে কাউকে, এটা সে জানে না ।

ছবি ভাবনার সাগরে ডুবে গিয়েও অনেকক্ষণ ধরে ভাবনার কোন কূল কিনারা করতে পারলো না । শেষে তার মনে হলো, নাহ, মিলানকেই জিজ্ঞেস করা উচিত তার...

- কোন কথাটা বলিনি তোমাকে?

মিলান হয়তো এরকম পালটা প্রশ্ন আসতে পারে সে জন্য প্রস্তুত ছিল । ছবি যে এতক্ষণ তার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপ করে ছিল, এটাকে বেশ স্বাভাবিক ধরে নিয়েই সে বলে উঠলো,

- আচ্ছা, আমি কি তোমার বাবার চোখে তোমার জন্য নিজেকে যোগ্য করতে পারবো না?
- হ্যা, পারবা । পারবা না কেন?
- কিন্তু তুমি আগে যে পথ দেখিয়েছিলে, সেটা তো আমার পছন্দ না
- তাহলে আবার পুরনো কথা উঠালে কেন?
- আচ্ছা, আমি মানছি যে তুমি কিংবা আমি কেউই সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে দুইজনে হারিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী নই, কিন্তু এই সমস্যার সমাধান তো অবশ্যই আছে, তাই না ?
- উমমমম (কিছুটা চিন্তা করে).. আমি তো দেখি না

ছবির কথায় মিলান আবার ছবির চোখের দিকে তাকালো । মিলানের দৃষ্টি থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ছবি তাকিয়ে আছে অজানার দিকে । এই তো অল্প কয়েকদিন আগেও যে দুইজন মানুষ অজানা থেকে খুব কাছের মানুষ হয়েছিল, আজকে তাদের সম্পর্ক আবার অজানাতেই হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে ।

- নাহ, কিচ্ছু বুঝি না। আমি এবার ঘটা করে প্রস্তাব পাঠিয়েই ছাড়বো ।

মিলানের কথা শুনে ছবি নিদারুণ অবাক হয়ে এবার মিলানের দিকে তাকালো । কি বলে ছেলেটা ! পাগল তো সে আছেই, তাই বলে কি বলা নেই, কওয়া নেই, হুটহাট এরকম একটা চিন্তা কিভাবে করে ফেললো সে! অবশ্য মিলানের এরকম হুটহাট পাগলামিগুলো ছবির কাছে নতুন তো আর কিছুই না । মিলানকে অবাক করে দিয়ে ছবি হঠাৎ করেই ফিক করে হেসে ফেললো । ছবি হেসে উঠতেই মিলান মুগ্ধ চোখে হাসিমাখা ছবিকে দেখতে লাগলো । হাসি কিছুটা থামিয়ে ছবি বলে উঠলো,

- কি বললে তুমি, ঘটা করে প্রস্তাব পাঠাবে?
- হ্যা, পাঠাবো । কেন, কি হয়েছে?
- মানে এবার একেবারে ঘটা করে রিজেক্টেড হওয়ার পায়তারা করা শুরু করলে
- রিজেক্টেড!! কেন? রিজেক্টেড হবো কেন?
- কেন, তুমি জানো না? তুমি তো সবই জানো
- দেখো, ছবি, আমি তোমার বাবাকে বুঝাবো । আমার উপর একটু ভরসা রাখতে অনুরোধ করবো উনাকে । আমি বলবো, ইনশাআল্লাহ্‌ আমিও একদিন উনার আকাঙ্ক্ষার চেয়েও উপরে উঠবো । উনি কি এই কথাগুলো শুনবেন না?
- তোমার কথাগুলো চমৎকার । কিন্তু তুমি একজন মেয়ের প্রেমিক হয়ে কথা বলছো, অথচ নিজেকে যদি আমার বাবার জায়গায় রাখতে, তাহলে হয়তো বুঝতে আমার বাবার কি বলার আছে!!

ছবির কথা শুনে মিলান মাথাটা নামিয়ে মাটিতে দৃষ্টি নিবন্ধ করলো । তার কান্না পাচ্ছে আবারও । সে চায় ছবি যেন তার চোখের জল না দেখে । ছবি বুঝতে পারলো, তার শেষের কথাটা মিলানকে অনেক কষ্ট দিয়েছে । মিলানকে অবাক করে দিয়ে সে মিলানের পিছন থেকে মাথায় হাত রাখলো । অমনি মিলান যেন বাচ্চাদের মত কাঁদতে শুরু করলো । মিলানের আচমকা এমন কাজ ছবিকে দারুন অপ্রস্তুত করে দিয়েছে । আগের সময় হলে হয়তো সে মিলানের কান্না থামাতো । কিন্তু এখন...!! মিলান কাঁদুক, চোখের পানিগুলো একটু একটু করে পুরনো স্মৃতিগুলোকে মুছে দিক ।

মিলান কিছু সময় পর চোখের পানি মুছে স্বাভাবিক হয়ে গেলো। তার চোখ যদিও কিঞ্চিত ফোলা এখনও । মিলান এবার ছবির দিকে তাকিয়ে বললো,

- চলো তাহলে, চলে যাই
- আচ্ছা, কিভাবে প্রস্তাব পাঠাবে? তোমার বাবা-মা কে পাঠাবে?

ছবির কথায় মিলান এবার বেশ অবাক হলো । এই মেয়েটা এতটা অদ্ভুত কেন?! মিলান যে কষ্টে এতক্ষণ কাঁদলো, তখনও তো সে কিছুই বলেনি। এখন যেন মনের সকল সাহস সঞ্চয় করে এক জায়গায় করেছে । এই সাহসটুকুর জোরেই তো তারা একে অন্যের হাত ছাড়েনি হাজারটা সমস্যার পরেও ।

(বাকিটা পরবর্তী পর্বে)

লেখাটির ১ম পর্বের প্রায় দেড় বছর পর ২য় পর্ব প্রকাশের জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত । মিলান আর ছবির উপাখ্যান যেন সর্বদাই শেষ হইয়াও হয় না শেষ । কথা দিচ্ছি, এর পরের পর্বগুলোর জন্য পাঠকদের বেশি অপেক্ষায় রাখবো না ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: মিলান নামটা সুন্দর।
ইটালির একটা শহর মিলান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.