![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একসময় আমি খুব স্মার্ট ছিলাম , আমার বয়স তখন ৬ মাস প্রতিদিন ৪-৫ বার পোশাক চেন্জ করতাম । এখন একই ড্রেস পড়ে ৪-৫ দিন কাটিয়েদেই । একসময় আমি খুব কিউট ছিলাম আমার বয়স তখন ৪ বছর :-" । আমার কিউট চেহারায় কুদৃষ্টিলাগার ভয়ে আমার আম্মু আমার কপালের বাঁ পাশে কালো টিপ দিয়ে দিতেন । এখন আর আমিকিউট নই তাই কালো টিপ দিতে হয় না । একদা আমি অনেক ভয়ংকর ছিলাম :-> ২ বছর বয়সে আমাদের পাশের বাড়ির আন্টির কোলে উঠে তার গালে থাপ্পর মেরেছিলাম । তিনি ভয়ে আমাকে কিছুই করার সাহস পান নি । এখন আর আমি ভয়ংকর নই। কাউকে থাপ্পর দিলেই পাল্টা থাপ্পর খেতে হয় । একদা আমার হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিল ।আমি প্রথম যেদিন'অ'(স্বরে অ) লিখেছিলাম, সবাইহাততালি দিয়েছিল । সবাই বলেছিল, কত্ত সুন্দর লেখা!! এরপর সারাজীবনে কত বার 'অ '(স্বরে অ) লেখলাম !! কেউ একটা হাততালি দিল না । একসময় আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম । আমার বয়স যখন ২, তখন আমাদের পাশের বাড়ির মেয়ের (দেড়বছর বয়স) গালে হামি খেয়েছিলাম । এরপর কত বছর কেটে গেল। হামি খাওয়া তো দূরের কথা,কোনমেয়ের হাতও ধরতে পারি নি ।।
কদম। কিংবা কদম আলী।চট্টগ্রামবাসী যেকারোরই সাথে মৃত্যর পর এই মানুষটির সাথে দেখা হয়ে যেতে পারে।
হ্যাঁ,Chittagong Medicl এর মর্গের ডোম কদমের কথাই
বলছি।ছোটখাটো বেঁটে সুগঠিত শক্ত মাসলের
অধিকারী কদম।প্রথম দেখায় মনে কেমন
জানি একটি ভীতি জাগানিয়া ব্যাপার কাজ করে।কিন্তু
অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখলে তার ভিতরের মায়া আর কষ্ট
স্পষ্ট ধরা পড়ে।
২০০০ সালের গোড়ার কথা। কদম আলীর বয়স ১২-১৩ বছর।
স্কুল ফাঁকি দিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াত
এনায়েতবাজারের বাটালি রোডে। সন্ধ্যায়
ভয়ে ভয়ে ফিরত খুপরি বাসায়। মা বকা দিলেও
তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসতেন বাবা গুনু মিয়া।গুনু
মিয়া কবর খুঁড়তেন। কেউ মরলেই ছুটে যেতেন কবর খুঁড়তে।
কাজ করতেন চৈতন্য গলির বাইশমহল্লা কবরস্থানে।
লাশগুলোকে পরম মমতায় শুইয়ে দিতেন কবরে। বখশিশ
হিসেবে যা পেতেন তা দিয়েই চলত সাত সদস্যের সংসার।
আয় কম হলেও চাইতেন ছেলে-মেয়েদের খুশি রাখতে।
সুখের সংসার ভেঙে গেল যখন মারা গেলেন গুনু মিয়া।
কদম আলীর বড় ভাই নাছির কাঁধে তুলে নিলেন বাবার
কাজ। ধার-দেনা করে বিয়ে দিলেন বড় বোনের। সময়ের
সঙ্গে সঙ্গে আর কোনোভাবেই যেন বিশাল এ সংসার
চলছিল না। কদম আলী ছাড়ল স্কুল। কাজ নিল কালু মিয়ার
চায়ের দোকানে। দু'মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে ছোট্টকদম
কখনও হয়েছিল চা বিক্রেতা, কখনও ঠেলাগাড়ির চালক
আবার কখনও বা রাখাল বালক। এই কালু মিয়ার চায়ের
দোকানেই পরিচয় হয় নেপাল নামের মধ্যবয়স্ক এক লোকের
সঙ্গে।চাকরি করেন আন্দরকিল্লা জেনারেল
হাসপাতালে। তিনি সেই হাসপাতালে লাশকাটেন।
ভাতের নিশ্চয়তা দিয়ে নেপাল নিয়ে গেলেন কদমকে।
প্রথমে সে নেপালের ঘরে থাকা গরু চরাত।
২০০৬ সালে কেডিএস গার্মেন্টসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের
দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল
হাসপাতালে জমতে থাকে লাশের সারি।এসব লাশ
একা সামাল দিতে পারছিলো না ডোম নেপাল।
তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে এলো কদম। লাশ
ধোয়া থেকে শুরু করে Autopsy, গাড়িতে তোলাসহ
যাবতীয়কাজে সহায়তা করলনেপালকে। রাতজুড়ে এ
শ্রমে রাতারাতি বদলে গেল তার পেশা। কদম এখন ডোম।
কাজ করেন চমেক হাসপাতালে।
প্রথম প্রথম লাশ
কাটা দেখে ভয়ে শিউরে উঠতেন কদম।এ কাজ
থেকে কতবার যে পালিয়ে এসেছিল সে তার কোন
ইয়ত্তা নেই!গুরু নেপাল বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আবার
নিয়ে আসতো কদমকে।লাশের ময়নাতদন্ত
করতে গিয়ে কোনো সময় খারাপ লেগেছিল কি-না এ
প্রশ্নে কদম বলেন- "ভাই, আমিও তো মানুষ। আমারওভালো-
খারাপ লাগা আছে। পেশারজন্যই আমাকে এসব করতে হয়।
পচা-গলা যে ধরনের লাশই আসুক না কেন,আমাকেই
দায়িত্ব নিতে হয়। একবার ছোট্ট একটি ছেলের লাশ
আনা হয়েছিল হাসপাতাল মর্গে। দেখে চোখের
পানি ধরে রাখতে পারিনি। ছোট্ট এছেলেটি কী দোষ
করেছে,যে তাকে মেরে ফেলতে হবে!!!"
সবাই কমবেশি ধরে নেন যে এসব কাজ
করতে নেশা আবশ্যক।কিন্তু কদমের স্পষ্ট জবাব-
"এটি বাজে কথা।ডাহা মিথ্যা কথা।এটি মানুষের ভুল
ধারণা। এটি একটি পবিত্র কাজ।ডাক্তারের সামনেই এ
কাজটি করতে হয়।অন্তত আমি নেশা করি না।"
মানুষ বিখ্যাত মানুষদের সফলগাঁথা নিয়ে কথা বলে,সমাজের নীচুলোকদের জীবনযাত্রা নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই,থাকার কথাও না।
রাজনৈতিক অঙ্গনে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছেলেটি বেশি মারামারি করতে পারে সে হয় ক্র্যাক!চুরি বা অস্ত্র চালনা করতে পারে যে লেয়াজু করতে চায় সবাই তার সাথে।কিন্তু মেডিকেলের মর্গে কিংবা এনাটমির ডিসেকশন হলের অন্ধকার কক্ষে যে মানুষটি বিশ্রি উৎকট গন্ধ সয়ে দিনরাত্রি অক্লান্ত কাজ করে যাচ্ছে সে হয় ডোম কিংবা জল্লাদ।এড়িয়ে চলতে চায় থাকে।একটু কোনা চোখে থাকায় তার দিকে।সে কোন পাপ করছে না;সে কোন খুনী নয়।তার সাথে একটু হেসে কথা বলে দেখুন।এক কাপ চা খান তার সাথে বসে।তার ভেতরের মায়া মনুষ্যত্বটুকু খুঁজে পাবেন।সরলতাটুকু আবিষ্কার করতে পারবেন।না পারলে আপনি 'মানুষ' নাকি সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠবে কিন্ত।
©somewhere in net ltd.