নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হে ঈশ্বর,মানুষের হৃদপিন্ড থেকে বলছি

একসময় আমি খুব স্মার্ট ছিলাম , আমার বয়স তখন ৬ মাস প্রতিদিন ৪-৫ বার পোশাক চেন্জ করতাম । এখন একই ড্রেস পড়ে ৪-৫ দিন কাটিয়েদেই । একসময় আমি খুব কিউট ছিলাম আমার বয়স তখন ৪ বছর :-" । আমার কিউট চেহারায় কুদৃষ্টিলাগার ভয়ে আমার আম্মু আমার কপালের বাঁ পাশে কালো

শাহীন সাহেব

একসময় আমি খুব স্মার্ট ছিলাম , আমার বয়স তখন ৬ মাস প্রতিদিন ৪-৫ বার পোশাক চেন্জ করতাম । এখন একই ড্রেস পড়ে ৪-৫ দিন কাটিয়েদেই । একসময় আমি খুব কিউট ছিলাম আমার বয়স তখন ৪ বছর :-" । আমার কিউট চেহারায় কুদৃষ্টিলাগার ভয়ে আমার আম্মু আমার কপালের বাঁ পাশে কালো টিপ দিয়ে দিতেন । এখন আর আমিকিউট নই তাই কালো টিপ দিতে হয় না । একদা আমি অনেক ভয়ংকর ছিলাম :-> ২ বছর বয়সে আমাদের পাশের বাড়ির আন্টির কোলে উঠে তার গালে থাপ্পর মেরেছিলাম । তিনি ভয়ে আমাকে কিছুই করার সাহস পান নি । এখন আর আমি ভয়ংকর নই। কাউকে থাপ্পর দিলেই পাল্টা থাপ্পর খেতে হয় । একদা আমার হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিল ।আমি প্রথম যেদিন'অ'(স্বরে অ) লিখেছিলাম, সবাইহাততালি দিয়েছিল । সবাই বলেছিল, কত্ত সুন্দর লেখা!! এরপর সারাজীবনে কত বার 'অ '(স্বরে অ) লেখলাম !! কেউ একটা হাততালি দিল না । একসময় আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম । আমার বয়স যখন ২, তখন আমাদের পাশের বাড়ির মেয়ের (দেড়বছর বয়স) গালে হামি খেয়েছিলাম । এরপর কত বছর কেটে গেল। হামি খাওয়া তো দূরের কথা,কোনমেয়ের হাতও ধরতে পারি নি ।।

শাহীন সাহেব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু রক্তাক্ত গোলাপ

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩

তেপায়া টেবিলটা জুড়ে কিছু বই,একটা অভিধান, আর কিছু
রংপেন্সিল ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় পড়ে আছে।
রকিং চেয়ারে বসে দুলছে অনিন্দ্য।তার সামনে কিছু
রঙিন পোস্টার মৃদু উড়ছে।পোস্টারগুলো একটা মার্কার
দিয়ে চাপা।শ্লোগান লিখছিল বোধহয়।বিদ্যুৎ গেছে বেশ
কিছুক্ষণ হচ্ছে।মোমবাতির মোমগুলো গলে দেয়াল
বেয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে পড়ছে। তিমিরাচ্ছন্ন ঘরটির অন্ধকার
দূরীকরণার্থে মোমবাতির সলিতাখানি যেন রীতিমত
প্রতিযোগিতার আসরে নেমে পড়েছে।আগুনটা বার বার
কম্পিত হচ্ছে। সারা ঘর জুড়ে পিন ড্রপ সাইলেন্ট।দেয়ালে
ঝুলন্ত ঘড়িটা অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।হঠাৎ
নীরবতা ভাঙে এক টিকটিকির টিক টিক শব্দে।
দখিনা বাতাসের আবেশে দরজাটাও মৃদু দুলছে।
পোস্টারগুলো পতপত উড়তে থাকে।মার্কার পেন
টা গড়িয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।প্রতিযোগিতায়
হেরে যায় জ্বলন্ত আগুন।ঘর জুড়ে গোরস্থানের অন্ধকার
বিরাজ করে।
সকাল হতেই পরিবেশটা গুমোট হয়ে আছে।
বেলা দ্বিপ্রহরের দিকে 'সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম
পরিষদ' আয়োজিত এক মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিল
অনিন্দ্য।এখন বেশ ক্লান্ত বোধ করছে।সারাটা দুপুর
"রাষ্ট্রভাষা বাংলা চায়/নুরুল আমিনের কল্লা চায়/
রাজবন্দীদের মুক্তি চায়"...-এই শ্লোগানে মুখরময় ছিল।
ক্রুদ্ধ জনতার জটলা আর মিছিলে প্রকম্পিত ছিল ঢাকার
রাজপথ।গলাটা প্রায় ভেঙ্গে গেছে অনিন্দ্যর।কাল আবার
এই কর্কশ কন্ঠে একটি মধুর ভাষার স্বীকৃতির জন্য
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করবে সে এবং আরো অনেকে।
সমাবেশ শেষে যখন ফিরছিল মেইনরাস্তার পাশের
নার্সারি থেকে কিছু লাল গোলাপ কিনেছিল অনিন্দ্য।
আনিকা কে দিবে বলে।আনিকার খুউব পছন্দ লাল
গোলাপ।সন্ধ্যা হয়ে যাওয়াতে কি মনে করে আর
যায়নি আনিকার বাসায়।গোলাপগুলি নিয়ে ফিরল
অনিন্দ্য মেসে।গোলাপগুলি দেরাজে পড়ে আছে।
কারেন্ট এসেছে কিছুক্ষণ হচ্ছে।অনিন্দ্য রকিং চেয়ার
হতে উঠে গোলাপগুলি পরখ করে দেখে-
পাঁপড়িগুলো নেতিয়ে পড়েছে।গন্ধটাও এখন আর তেমন
তীব্র না। না- এই বাসি ফুল আনিকাকে দেয়া যাবেনা।
কাল আবার কিনে নিবে গোলাপ ফুল।সবচেয়ে ভালো হত
যদি বাগান হতে ছিঁড়ে তাজা লাল গোলাপ দিতে পারত!
যাক কাল সকালে মিছিলে যাওয়ার পূর্বে আনিকার
সাথে একটু দেখা করে যাবে-
এমনটি পরিকল্পনা করে ঘুমোতে গেল অনিন্দ্য।
সবেমাত্র ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে অনিন্দ্য।
মাঝেমাঝে গ্রুপ থিয়েটার করে সে।শান্ত প্রকৃতির ছেলে।
খোঁচা খোঁচা দাড়ি।বুদ্বিজীবিদের মতন গোল ফ্রেমের
চশমা।সবসময় আনমনা আর উদাসীন থাকে।
রহস্যময়ী ক্যারেকটার!!
আনিকা ইন্টারমিডিয়েট দিয়েছে এবছর।হাতে এখন একটু
আধটু অবসর।ভালো রম্য গল্প আর রোমান্টিক
কবিতা লিখে সে।থিয়েটারেও যায় মাঝেমধ্যে।
ঘটনাসূত্রে কাকতালীয়ভাবে দুজনের পরিচয়-
যা ধীরে ধীরে প্রণয়ের দিকে এগোয়।
প্রত্যুষেই ঘুম হতে উঠে পড়ে অনিন্দ্য আজ। ব্রাশ
করতে করতে বারান্দায় এসে আড়মোড়া ভাঙে।পরমুহূর্তে
মনে পড়ে ক্যাম্পাসে ৯টায় উপস্থিত হওয়া লাগবে আবার
আনিকার সাথেও দেখা করতে হবে।তাড়াহুড়ো করে ফ্রেশ
হয়ে বেরিয়ে পড়ে।নাস্তা করার সময়টুকুনও নাই।।
আনিকা এখনো ঘুমোচ্ছে।সকালেই উঠে যাই মেয়েটা।আজ
অঘোরে ঘুমোচ্ছে।রাত জেগেছিল তো।নতুন
কবিতা একটা লেখা সবেমাত্র শুরু করেছে।জানালার
ফাঁক দিয়ে রোদ ঢুকে ঘুমটাই ভেঙ্গে দিল তার।
মনমরা হয়ে বসে আছে বারান্দায়।কেমন জানি লাগছে।
মাথাটা ধরে আছে।
এমন সময় বাইরের দিকে চোখ
যেতে অনিন্দ্যকে দেখতে পাই।
তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে গিয়ে শর্টকাট ফ্রেশ
হয়ে বাইরে বের হয়ে আসল।অনিন্দ্য মৃদু হাসছে।
-কি ব্যাপার,আজ এমন অসময়ে?আনিকা জিজ্ঞাসা করল।
-এদিকে যাচ্ছিলাম তো ভাবলাম একটু
দেখে যায়,অনিন্দ্য জবাব দিল।
-কোথায় যাচ্ছ এত সকাল সকাল??
-ভার্সিটি যাচ্ছি।বিশাল একটা সমাবেশ হবে তো!
-আজ না গেলে হয়না।ভালো লাগছে না একা একা।
তোমার সাথে একটু বের হতে চেয়েছিলাম।মোলায়েম
স্বরে বলল আনিকা।
-বলো কি?কোনমতেই পসিবল না।আজ একটা এসপার-
ওসপার হবে।বৃহৎ জমায়েত।আজ না গেলে হয়?বেশ
উত্তেজিত কন্ঠস্বর অনিন্দ্যর।
-না।এমনি বলছিলাম।একা লাগছিল তো।তোমার জন্য
একটা কবিতাও লিখেছি।দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল আনিকা।
-কাল আসতে চেয়েছিলাম তো।কিছু গোলাপ
নিয়েছিলেম।সন্ধ্যে হয়ে যাওয়াতে আসিনি আর।
-আজ নিয়ে এসেছো বুঝি।কই দাও...
-না।গোলাপগুলি মিইয়ে গেছিলো তো,আনিনি।এখন
যাবার পথে কিনে নিব।বিকালে এসে দিব,কেমন?রিকসায়
ও ঘুরব।কবিতাও শুনে নিব।রাগ করোনা।
বলতে বলতে আনিকার হাতটা ধরল অনিন্দ্য।
-আচ্ছা,মিছিল করো কেন?তোমাকেই বা যেতে হবে কেন?
দেশে আর লোক নেই?তোমার
উপস্থিতি মিছিলকে সাফল্যমণ্ডিত করলেও,
অনুপস্থিতি মিছিলকে অচল করে দিবেনা।ঠিক বলিনি??
একটানা প্রশ্ন করে গেল আনিকা।
-হাহাহাহা...এরকম সব প্রেয়সী যদি তার
প্রিয়জনকে ধরে রাখে তবে কে করবে আন্দোলন?বল....।
যে ভাষায় কবিতা লিখছ,কথা বলছ..ওই ভাষাটার জন্যই
তো মিছিল করি।
আনিকা চুপ হয়ে আছে।
যাও,ঘরে যাও,একটু বিশ্রাম নাও।আমার
দেরি হয়ে যাচ্ছে,এখুনি যেতে হবে।বিকালে দেখা হবে-এ
বলে অনিন্দ্য দ্রুতপ্রস্থান করল।
ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ,১৯৫২সাল।প্ল্যান মোতাবেক এদিন
সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে একত্রিত
হওয়া শুরু করছে।এখনো বাজে মাত্র সাড়ে আটটা।অনিন্দ্য
ঘড়ি দেখে।এরই মধ্যে সবাই চলেএসেছে।আসার সময়
পথেরধারে নার্সারি হতে কেনা গোলাপগুলি পকেটেই
রয়েছে।চশমটা একটু নেড়ে চারিপাশের
অবস্থা দেখে নিল সে।এখানে ওখানে ছোট ছোট জটলা।
গুনগুন কথা হচ্ছে।সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা।বিভিন্ন
অনুষদের ডীন ও উপাচার্যও চলে এসেছে ইতোমধ্যে।
আস্তে আস্তে সবাই জড়ো হয়ে ১৪৪ধারা ভঙ্গের শ্লোগান
দেওয়া শুরু করল।পুলিশ তাদের ঘেরাও করলে বিক্ষোভ শুরু
করে দেয় ছাত্ররা।তৎক্ষণাৎ পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ
করে বিক্ষোভ বন্ধের চেষ্টা করলে ভিসি সৈয়দ
মোয়াজ্জেম স্যার পুলিশদের অনুরোধ করেন কাঁদুনে গ্যাস
নিক্ষেপ বন্ধ করতে।কিন্তু পাকিস্তানি দোসর
পুলিশবাহিনী এসময় ছাত্রদের ১৪৪ধারা ভঙ্গের
অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।বেলা বাড়ার
সাথে সাথে অনিন্দ্য ও আরো অনেকে মিলে ডিসিশন নেই
আইনসভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবে।ছাত্ররা এই
উদ্দেশ্যে আইনসভার দিকে রওনা করলে বেলা ৩টার
দিকে পুলিশ শুরু করে নির্বিচারে গুলি বর্ষন।ছাত্ররাও
দমবার পাত্র না।উত্তেজিত জনতার
সাথে কাতারবন্দি হয়ে গ্রন্থিল পেশীর ক্ষিপ্ত
মুঠি উঠিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে সামনের
দিকে এগিয়ে চলে অনিন্দ্য।হঠাৎ!আকস্মিক!আচমকা!পি
ছন থেকে কি যেন এসে তার
পিঠে বিঁধল।বুঝতে বাকি রইল না অনিন্দ্য-তার সময় শেষ।
পিছনদিকে ফিরতেই বুক এসে ঝাঁঝড়া করে দেয়
আরো কিছু বুলেট।মুহূর্তেই মাটিতে পড়ে যায় সে।পকেটের
দিকে চোখ যায় অনিন্দ্যর।আনিকার জন্য
কেনা গোলাপগুলো আরো লাল হয়ে গেছে রক্তের স্পর্শে।
গোলাপগুলিকে এখন অনেক প্রাণবন্ত ও সতেজ দেখাচ্ছে।
তবুও দেয়া হল না আনিকাকে সে গোলাপ।
বিকেল প্রায় হয়ে এলো।অনিন্দ্য এখনো এলো না।
আনিকার মন কেমন জানি করছে।সে অনিন্দ্যের মেসের
দিকে আস্তে আস্তে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে।পথিমধ্যে
অনিন্দ্যরএক রুমমেটের সাক্ষাৎ পেল সে।
তাকে অনিন্দ্যের কথা জিজ্ঞেস করতে সে নেতিবাচক
উত্তর জ্ঞাপন করে চলে গেল।আনচান করছে আনিকার মন।
এত লেট হওয়ার তো কথা না।আস্তে আস্তে সে ভার্সিটির
দিকে হাঁটতে লাগল।সড়কের পাশের
নার্সারিটা চোখে পড়ল তার।'আজ অনিন্দ্য
আসলে তো আমাকে গোলাপ দিবে বলেছিল,আমিও
তাকে গোলাপ দিলে খুশি হবে।'-
এমনটি চিন্তা করে সে ফুল নেওয়ার জন্য
নার্সারি তে ঢুকল।কিন্তু ওখানে প্রায় সব ফুল বাসি।
সকালের ফুলগুলো সব কড়কড়ে হয়ে গেছে।তাই সে বের
হয়ে গেল ফুল না নিয়ে।হঠাৎ অনিন্দ্যর কিছু
ভার্সিটি ফ্রেন্ডদের দেখতে পায় আনিকা।বাট তাদের
মধ্যে অনিন্দ্য কে দেখতে না পেয়ে একটু দৌঁড়ে গেল।
একটু দূরে সে দেখল কিছু লোক
একজনকে ধরাধরি করে আনছে।পুরা রক্তমাখা নিথর দেহ।
জামার আস্তিন দেখে চিনতে এতটুকু ভুল হল না আনিকার।
তবু সে গিয়ে বন্ধুদের কাঁদতে কাঁদতে জিজ্ঞেস
করল,'অনিন্দ্য কই?'তার বন্ধুরা সবাই নিশ্চুপ।মাথা নিচু
করে ফুফিয়ে কাঁদছে।ততক্ষণে লাশ কাছে চলে এসেছে।
ইশারায় অনিন্দ্যর বন্ধুরা ডেডবডি নিচে নামাতে বলে।
আনিকা বাচ্ছার মতন সজোরে কাঁদছে অনিন্দ্যকে ধরে।
শরীর টা পুরোই শক্ত আর হিমশীতল
ঠান্ডা হয়ে গেছে অনিন্দ্যর।ওর মাথাটা শক্ত
করে বুকে পরম মমতায় ধরে রেখেছে আনিকা,মাথার
এলোচুলগুলোতে হাত বোলাচ্ছে।চোখ মুছতেই অনিন্দ্যর বুক
পকেটের দিকে নজর পড়ে।লাল গোলাপটাতে তাজা রক্ত
লেগে আরো লাল শুষ্ক হয়ে গেছে।
গোলাপগুলি সে আস্তে সাবধানে বের করে নিল।
পাপড়িগুলো পরখ করে দেখছে।বাসি গোলাপ দিলে রাগ
করবে বলে কালকের কেনা গোলাপগুলি আজ
সকালে দিলো না অনিন্দ্য, অথচ!এখন!গোলাপগু
লিকে তার রক্ত দিয়ে রক্তিম করে সে চলে গেল,দেওয়ার
সময়টুকুও হল না।
আনিকার লেখা কবিতাটাও শুনে গেল না।
আনিকা আস্তে আস্তে উঠে পড়ে।
গোলাপগুলি বুকে চেপে ধরে ওড়নার আস্তিন
দিয়ে চোখের জল মুছে সে বাসার দিকে দৌড় দিল।
সন্ধ্যা প্রায় শেষ হয়ে এল।আর কিছুক্ষণ পর তামাম জাহান
অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।দিগন্তে অংকিত গোধূলির
লালিমা ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে।অন্ধকার
রুমটাতে আনিকা শুয়ে আছে কপালে আড়াআড়ি হাত
দিয়ে।চোখের পাতাগুলি এখনো ভেজা।
কাদতে কাদতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আস্তে আস্তে সে জেগে উঠল।রুমটা অন্ধকার।কারেন্টও
নেই।হাতড়ে মোমবাতি একটা খুঁজে তাতে আগুন লাগায়।
রকিং চেয়ারে বসে পড়ে আনিকা।একটা করুণ
দীর্ঘশ্বাসের শব্দ শোনা যায়।সামনের
চোকা টেবিলটাতে বই আর একগাদা কলম।মোমবাতির
আগুনটা ডিব ডিব করে জ্বলছে।মোমগুলা দেয়াল
বেয়ে নিছে এসে জমা হচ্ছে।আনিকার সামনে কিছু কাগজ
উড়ছে।অনিন্দ্য কে নিয়ে লেখা কবিতার কাগজ।
কাগজগুলি অনিন্দ্যর রক্তিম গোলাপ দিয়ে চাপা।
দেওয়াল ঘড়িটা টিক টিক শব্দে অজানা ভবিষ্যতের
দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।দখিনা বাতাসের
আবেশে দরজাটা মৃদু দুলছে।ক্যালেন্ডারের
পাতাগুলি পতপত করে উড়ছে।ওইদিকে চোখ যায়
আনিকার।ফেব্রুয়ারি,২১তারিখ।রকিং চেয়ার
হতে উঠে আসল আনিকা।গোলাপগুলি হাতে নেয়।চোখের
পাতাগুলি কাঁপছে।পলক ফেলতেই একফোঁটা জল চিবুক
বেয়ে নিচে এসে পড়ল।হঠাৎ এক
দমকা বাতাসে কাগজগুলি উড়ে নিচে পড়ে গেল।
আগুনটাও নিভে গেল।ঘরজুড়ে গোরস্থানের অন্ধকার।
ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।
হয়তো কেউ কিছু নির্জীব রক্তাক্ত গোলাপ
বুকে চেপে ধরে কাদছে।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.