নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু বলেই দোষ ,নন্দ ঘোষ

কোর্পরে্ট শয়তান

কোনো কাজকর্ম তো নাই,খাচ্ছেন দাচ্ছেন, অার যখন যা চাচ্ছেন হাতের কাছে তাই পেয়ে যাচ্ছেন। - দাশবংশ

কোর্পরে্ট শয়তান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছুটি....

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬

ছুটি....

শান্তিপুর গ্রামের নাম, নামটা যেমন তেমন ই এর পরিবেশ নিরিবিলি চারদিক নিশ্চুপ মাঝে মাঝে টুপটাপ পানির শব্দ মাছরাঙা গুলো এদিক সেদিক তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মাছ শিকার করে। আঁকাবাকা পথ মাঝে মাঝে দুই একটা আম,কাঠাঁল গাছের ছায়া বিস্তর ধান ক্ষেত, চোখ জুরিয়ে যাওয়া ধানক্ষেত। শালিক আর বক গুলো উড়াউড়ি করে। মনে হয় শিল্পীর তুলির আচড়ে যত রং সবই দিয়ে দিয়েছে। দুরে মেঠো পথ পর হাট ছোট ছোট টং দোকান হরেক রকম পসরা পাতি আর গরম চায়ের ধোয়া উঠা কেতলি। শান্তিপুর নামের সাথে পরিবেশ মিল হলেও মানুষের মিল অনেক অমিল।

সাধারন বর্গা চাষী ছেলে "মিলণ" নেই আহামরি আবদার নেই কোন রাগ। এক ছেলে মিলণ কে নিয়েক কলিম ঊদ্দিন এর সংসার। ছোট বেড়ার ঘরে মা,বাবা,দাদি কে নিয়েই মিলণ এর ঘরজগত। কলিম ঊদ্দিন কোন দিন ই স্কুলের দৌড়গোড়া যায়নি তাই ছেলে কে নিয়মিত স্কুলে পাঠায়। প্রতি দিন ই বাজান বাজন করে ঢেকে চকচকে ১টাকা দেন, মনে মনে সুখ পান আর ভাবেন পোলাঠা লজেন্স খাইব। কলিমের বউ বউ করে চিল্লায়ে বলে আর কত কাম করবা গো বেডি মইরা যাইবা ত...

কলিম ঊদ্দিন যখন বিয়ে করে সরিফা খাতুন কে, তখন তার বয়স ১৫ কি ১৬ হবে, কি ফুটফুটে ছিল সরিফা গোলগাল চেহারা চ্যাপ্টা নাক তাই বাপে আদর করে নাম রাখছে সরিফা খাতুন।

সরিফা খাতুন জবাব দেয় মা কাম না করলে আমাগো মিলণ বড় সাব হইব কেমনে। সরিফা আর আগের মত নেই শকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে কালো রং হয়েছে তার দেহ, উঠানের কোনে শাকসবজি গাছ লাগায় আর স্বপ্ন দেখে ছেলে বড় হবে শিক্ষিত হবে। কলিম ঊদ্দিন খটখটে রোদে কাজ করতে করতে রক্ত কে লোনা পানির মত করে ফেলছে শুধু স্বপ্ন পোলাঠা বড় সাব হইব। মিলণ ও পড়াশুনা খারাপ নয় বরাবর ভালো ফল, মাষ্টার দের অাদরের মধ্যমনি। এভাবে চলছিল শান্তিপুরে মানুষের জীবন জীবিকা।

ডিসেম্বর মাস চারদিক শীতের অাবহ স্কুল যেতে হয় অনেক দুরের পথ পেরিয়ে, আসার সময় হৈ হুল্লর আর মজায় মজায় চলছিল স্কুল। নতুন ক্লাসে উঠবে নতুন বই পাবে অনেক অানন্দ কত কি?

এবার শীতটা যেন বেশীই গত কয়কটা দিন সরিফা খাতুনের শরীর টা ভাল যাচ্ছে না কাশি জ্বর দেহটা যেন কুকড়ে যায়, কলিম উদ্দিন শত বাড় বকে বউ এত কাম কইর না, কে শুনে কার কথা? কাজ করেই যাচ্ছে ত যাচ্ছে।

আজ কে সরিফা খাতুনের শরীর বেশি ই যেন খারাপ সকাল সকাল মিলণ ঢেকে বলছে বাজান পড়াশুনা মন দিয়া কইর। আইচ্ছা মা আইজকা ইস্কুল অনুষ্ঠান হইব বহুত বড় বড় লোক আইব মা অহন যাই,

সরিফা খাতুন বলল যাও বাজান তাড়াতাড়ি চইল্লা আইস। আইচ্ছা.....

স্কুলের সবাই ভীষণ ব্যাস্ত হেডমাষ্টার সবাইকে লাইনে ধরতে বলছে হাতে লাল সবুজ রং পতাকা দিয়ে বলেছে শুধু হাত নাড়বি। মিলণ অনেক বাড় চেষ্টা করল স্যার অাজকে ছুটি দেন না স্যার, স্যার হেয়ালি কণ্ঠে বলল না অাজকে না অন্য দিন। আজকে এমপি সাব আসব সবাই থাকতে হইব।

রাস্তার দু পাশে সারিসারি করে দাড়ানো সবাই কখন থেকেই হাত নাড়ছে যদি হঠ্যা এমপি সাহেব চলে আসে। রোদের তাপমাত্রা এতই কঠোর যেন আজকে প্রতিটা শিশু কে শুকিয়ে দিবে। সেই সকাল ১১টায় দাড়িয়েছে ওরা কখন আসবে দার ইয়তা নেই। অবশেষে সাদা রং গাড়িতে চলে গেলেন এমপি সাহেব। মাষ্টার সাহেব হাতে একটা কেক দিয়ে বললেন তোদের ছুটি...

দৌড়ে যাচ্ছে মিলণ এমন দৌড় মনটা কেমন যেন। সে যেন এক দৌড় প্রতিযোগিতা ৫০০ মিটার নাকি ১০০ মিটার দৌড় শেষ হচ্ছে না।

কলিম উদ্দিন ও মৌলভী সাহের কাছ থেকে পানি পড়া আনছিল এর কোন কিছুই হয় নাই। কলিম উদ্দিন মাথায় হাত নিরব চোখের পানি ফেলছে, বৃদ্ধা দাদি টা বিলাপ করছে.... বউ তুমি কই গেলা...

হাপঁতে হাপঁতে উঠানে কোনে থমকে দাড়িয়ে পড়ল মিলণ। ছুটি হয়ে গেল সবচেয়ে বড় ছটি... মিলণ যেন মিলিয়ে গেল সন্ধ্যার অাবাছা অালোয়

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

সোহানী বলেছেন: অসাধারন.......

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৯

কোর্পরে্ট শয়তান বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪২

কলমের কালি শেষ বলেছেন: গল্পে ভাল লাগলো ।

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

কোর্পরে্ট শয়তান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.