নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উঠন্ত মুলো পত্তনে চেনা যায়।

ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।

রাকিব জাভেদ মিন্টু

জ্ঞান অর্জন করাই আমার জীবনের মূল লক্ষ্য।

রাকিব জাভেদ মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরনিন্দা অথবা গিবতকারীর ভয়াবহ পরিণাম!

২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:১২

পরনিন্দা কি?



গিবত একটি সামাজিক অপরাধ। এ অপরাধের ক্ষতি অনেক দূর পর্যন্ত ব্যাপৃত। আজকাল খুব স্বাভাবিকভাবেই সমাজের সর্বত্র গিবত ছড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কি জানি গিবত একটি মারাত্মক অপরাধ এবং গোনাহের কাজ। আল্লাহপাক এ গিবতের অপকারিতা বর্ণনা করে তা ছেড়ে দিতে পবিত্র কোরআনের সূরা হুজরাতে নির্দেশ করেছেন। মানুষ সাধারণত যখন অলস সময় কাটায়,হাতে কোনো কাজ থাকে না তখন তারা অন্যের সমালোচনা ও পরনিন্দা করে,পরের দোষ বলে বেড়ায়। অসাক্ষাতে দুর্নাম বা কারও দোষ বলাকে শরিয়তের পরিভাষায় গিবত বলে। অর্থাৎ কোনো মানুষের অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমন কথা বলা,যা শুনলে সে মনে কষ্ট পায়,তাকেই গিবত বলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,‘যার মধ্যে কোনো দোষ-ত্রুটি আছে তা অপরের কাছে তার অগোচরে বর্ণনা করাই গিবত।’ তিনি আরও বলেন,‘তুমি যা বল তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তাহলেই সেটা হবে গিবত। আর যা বল তা যদি তার মধ্যে না থাকে,সে ক্ষেত্রে সেটা হবে বুহতান বা অপবাদ।’



পরনিন্দার কুফলঃ

এগুলো সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা,উন্নতি-অগ্রগতিকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করে। সমাজকে বিনষ্ট ও ধ্বংস করে ফেলে। গিবত সামাজিক শান্তি ব্যাহত করে। একজনের দোষ অন্যজনের কাছে বললে পরস্পর ভ্রাতৃত্ব বিনষ্ট হয় এবং সেখানে শত্রুতা, হিংসা,অনৈক্য বিদ্বেষ ইত্যাদি দেখা দেয়। এর দরুন সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং সমাজে শান্তি বিনষ্ট হয়। তাই গিবতের কুফল বর্ণনা করে গিবত না করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন,‘তোমরা একে অন্যের গিবত কর না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করতে পছন্দ করেন? বস্তুত, তোমরা তো একে ঘৃণাই কর’ (হুজরাত : ১২)। তাছাড়া গিবতকারী ব্যক্তি সমাজের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি। যিনি ভালো মানুষ তিনি সাধারণত অন্যের গুণ প্রকাশ করেন, দোষ বলে বেড়ান না। আর যারা খারাপ, নিকৃষ্ট মনের তারা অপরকে নিজেদের ন্যায় মনে করে। তারা অপরের কোনো গুণ প্রত্যক্ষ করতে সম্মত নয়। তারা কুৎসা করে বেড়ায় এবং সমাজের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে। এজন্য গিবতকারী কিয়ামতের দিবসেও অপমানিত হবে। তার জন্য রয়েছে সাংঘাতিক শাস্তি। গিবতের কুফল বর্ণনা করে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “মিরাজের রাতে আমি কিছু লোককে দেখলাম, তাদের তামার নখ রয়েছে এবং তা দিয়ে তারা নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুক আচড়াচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাইল, এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গিবত করত এবং তাদের ইজ্জত-সম্ভ্রম নিয়ে ছিনিমিনি খেলত” (আবু দাউদ)। গিবত পরিহার করার জন্য ইসলামে কঠোর নির্দেশ রয়েছে। কেননা, এটা এমন একটা কুঅভ্যাস, যা মানুষের নেক আমলগুলো ধ্বংস করে দেয়। হাদিস শরিফে হজরত রাসুল (সা.) গিবতকে জ্বলন্ত কাঠের সঙ্গে তুলনা করে এ গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, “আগুন যেমন কাঠ খণ্ডকে জ্বালিয়ে দেয়, হিংসা ও গিবত তেমনি নেকিগুলোকে জ্বালিয়ে দেয়”। শুধু তাই নয়, এ গিবত এমন একটি জঘন্য অপরাধ, যা প্রতিপক্ষের মাফ করে দেয়া ছাড়া মাফ হয় না। গিবতকারীর ইবাদত মহান আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। রোজা রেখে গিবত করলে তাতে সওয়াব নষ্ট হয়। ফলে গিবত ইবাদতের মারাত্মক ক্ষতি করে। এতে বান্দার নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়। তাই মহানবী (সা.) মুমিনদের গিবত ত্যাগ করে আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, “তোমরা গিবত করবে না, গুপ্তচরবৃত্তি করবে না। পরস্পর কলহ-বিবাদ করবে না। হিংসা-বিদ্বেষ করবে না। অন্যের ক্ষতি সাধনে কৌশল অবলম্বন করবে না। তোমরা মহান আল্লাহর প্রকৃত বান্দা ও পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও”। আসুন আমারা পরনিন্দা-গীবত এবং মিথ্যাচার থেকে নিজেদের বিরত রেখে ইহকাল ও পরকালে পরম শান্তি লাভ করি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:২৫

মনিরুল হাসান বলেছেন: ভালো পোস্ট। গীবত করাকে 'মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া'র সাথে তুলনা করা হয়েছে, এই জিনিসটা মাথায় রাখলেই মানুষ গীবত করা বন্ধ রাখতে পারে।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫৫

রাকিব জাভেদ মিন্টু বলেছেন: ভাই মনিরুল হাসান, আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অসখ্য সাদুবাদ রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.