নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে বলার মত এখন ও অর্জন হয়নি কিছুই। তবে একটা অর্জন হয়েগেছে!! অন্যায় আর অন্যায়কারীর প্রতিবাদ করতে শিখেগেছি!!! সে যেই হোক।।

মি্রাজ

তানভীরুল হাকিম মিরাজের ব্লগ

মি্রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঐশীর ফাঁসি ও আমাদের বিচার!

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৪৬



একটা সুস্থ মানুষ কখনও তার বাবা মাকে খুন করে না, করতে পারেনা। শুধু বড় কোন অসুখ হলেই কেবল মানুষের পক্ষে খুন করা সম্ভব হয়। এই অসুখটা হল মনের। ঐশীর অনেক বড় একটা মনের অসুখ হয়েছিল! আমরা তার অসুখটা সারাতে চাইনি, চেষ্টাও করিনি।
আমাদের আচরণটা হল- যেহেতু অসুখটি আমরা সারিয়ে তুলতে পারবো না তাই রুগীকে মেরে ফেল। আমরা রুগীকে মেরে ফেলতে চাচ্ছি। অসুখ দূর করতে চেষ্টাও করলাম না।

গতকাল পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। অপরাধের বিচার অবশ্যই চাই। ঐশীর অপরাধ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত অপরাধ। কিন্তু সেই অপরাধের শাস্তি যদি মৃত্যুদন্ড দেয়া হয় তাহলে আদালতও ঐশীর অসুখেই অসুস্থ!

ঐশী এই অসুখ নিয়ে জন্মায়নি। ঐশীর সমাজ, পরিবেশ, পরিবার, মাদক ঐশীকে অসুস্থ করে তুলেছিল। কৈশোর পেরুবার আগেই মেয়েটিকে মাদক গ্রাস করলো। যৌবনে পা দেয়ার আগেই আমরা তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিচ্ছি। সব দোষ মেয়ের উপর দিয়ে দাঁয় এড়াতে চাচ্ছি।

তার বাবা পুলিশের ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ঐশীকে প্রতিমাসে হাতখরচ বাবদ লক্ষাধিক টাকা দিতেন। টাকা হাতে পেয়ে মেয়ে বখে গিয়েছে, খারাপ বন্ধু-বান্ধবদের পাল্লায় পড়ে আসক্ত হয়ে পড়ে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যে। একদিন হয়তো মাহফুজ সাহেব অথবা তার কোন সহকর্মীই এই মাদক বিস্তারে প্রতিরোধ করেননি। ব্যাপারটা যেন প্রতিদানের মত, মাহফুজ সাহেবরা মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে গ্রহন করা টাকা সন্তানকে দিয়েছিলেন হাত খরচের জন্য। আর ঐশীরা মাদকের বিনিময়ে সে টাকা তুলে দিচ্ছে মাদক কারবারিদের হাতে।

অথবা মাদক ব্যবসা করে কামানো অঢেল অর্থের কিছু অংশও যখন কোন এক মাদক কারবারি তার সন্তানকে দেন হাত খরচের জন্য। হয়তো তার সন্তানও তারই কোন সহকারবারির কাছে সে অর্থ তুলে দেন মাদকের জন্য। অর্থাৎ আমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে ধ্বংস করে দিচ্ছি।
স্কুলের বয়স রেকর্ড ও জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট থেকে আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত ঐশীর বয়স জানা গিয়েছিল ১৭ বছর। কিন্তু কোন এক অজানা কারনে এসব গায়েব করে তার বিচার হল সাধারণ আদালতে।

হয়তো আরও অনেক পুলিশ অফিসারই ঐশী আতঙ্কে ভুগছেন তাই তারা তাদের বখে যাওয়া সন্তানদের কোন এক বিশেষ ম্যাসেজ দিতে চাচ্ছেন।
ঐশীর লেখা সুইসাইড নোট পড়লে তার অসুখটা হয়তো কিছুটা হলেও বুঝতে পারবেন। বাবা মাকে নিয়ে লিখেছে- “তারা কোন দিনও আমাকে বুঝতে পারেনি। আমার অনেক খারাপ দিক আছে- সেই খারাপ দিকগুলো চালাকি করে বুঝে ফেলা ছাড়া ভালো দিক গুলো কখনোই তারা বোঝার চেষ্টা করেছে কিনা সন্দেহ”

যে ঐশীকে আমরা তৈরি করেছি সে তার বাবা মাকে খুন না করলে হয়তো নিজেকেই খুন করতো!
আমি বলছিনা ঐশী নির্দোষ। আদালতের রায়কেও অবজ্ঞা করছিনা, শুধু বলছি-একটা বাচ্চা মেয়ের ঐশী হয়ে ওঠার পেছনের নায়কদের বিচার করুন। আমাদের বিচার করুন।

একটা মানুষ কখনও তার বাবা মাকে খুন করতে পারেনা! বাবা মাকে শুধু ভালোবাসা যায়, শ্রদ্ধা করা যায়, খুন করা যায় না। যদি করে তাহলে বুঝতে হবে কোন সমস্যা আছে! আমরা সে সমস্যা দূর করার চেষ্টা না করে, তাকে সুস্থ করার চেষ্টা না করে নিজেরাও অসুস্থের মত তাকে ফাঁসিতে ঝুলাতে চাচ্ছি। একজন অপরাধীকে অপরাধ প্রবণ মানসিকতা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারার চেয়ে বড় সার্থকতা আর কি হতে পারে!

আসুন, সবার আগে আমরা সুস্থ হই। একটা সুস্থ পরিবেশ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যাই। সাধারণ একটি মেয়ের ঐশী হয়ে উঠার পেছনের নায়ক আমরাই। এ সমাজ ! এ দায় আমরা এড়াতে পারিনা কোনভাবেই। তাই আমাদের ও বিচার চাই। আমাদেরও চিকিৎসা চাই!

লেখকঃ তানভীরুল হাকিম মিরাজ
ফ্রিলান্স সাংবাদিক, ব্লগার

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:১২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমাদের কি করা উচিত ঐশীট জন্য?

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৯

মি্রাজ বলেছেন: আমিএখনও দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, কোন সুস্থ মানুষ তার বাবা মা কে হত্যা করতে পারেনা। যদি করে তবে সে মানুষ নয়! আর যদি সে মানুষ হয় তবে আমি মানুষ নই। বিড়াল প্রজাতির কোন নিরীহ প্রাণী হতেও আমার আপত্তি নেই।

তবে কি আমরা একজন অসুস্থ মানসিক রুগীর বিচার করেছি?
আমাদের অনেক কিছুই করার আছে-
তাকে সবার আগে সুস্থ করা প্রয়োজন, এই বোধটা আনা প্রয়োজন যে- সে যা করেছে তা পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধ।
এবং অবশ্যই সে কোন মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে আমি।

এখনও আমার মনে হয়, উচ্চ আদালত তার এই দন্ড ক্ষমা করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিবে।
কিন্তু তার আগ পর্যন্ত কনডেম সেলে তার সে কি মানসিক অবস্থা হবে তা শুধু যারা জানেন তারাই বুঝতে পারবেন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ চাঁদগাজী

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ ভোর ৪:২১

সৈয়দ জায়েদ আহমদ বলেছেন: কিচ্ছু করার নাই, দেশ এমনই জাতি বিবেক বুদ্ধি বিলুপ্ত!!

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৫

মি্রাজ বলেছেন: অনেক কিছুই করার আছে।
একজন ফরমালিন মেশানো ফল ব্যবসায়ীও যদি এ চিন্তা করতো তার এই ফলই তার সন্তান অথবা আত্মীয় কিনে খাবে তবে সে তা করতো না।
ব্যাপার গুলো এমন ই।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সৈয়দ জায়েদ আহমদ

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬

চলন বিল বলেছেন: আহ কি শুরু করছে পুরা ব্লগ জুরে ঐশী ঐশী রব
মাথাটা নষ্ট হই গেল
মাইয়াটা মরতাছে মরুক না, ওরেএকটু শান্তিতে মরতে দেন
আর চিল্লাচিল্লি না করে বাসায় গিয়া গরম সরিষার তৈল নাকে মাখিয়া ঘুম দেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.