![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যে কোনো দেশের সুখ-সমৃদ্ধি নির্ভর করে সে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর। সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্থনৈতিক স্বাধীনতার অভাবে অনেক সময় অর্থহীন হয়ে পড়ে। তাই অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধনের মাধ্যমে দেশের মানুষের যথার্থ কল্যাণ সাধন করা সম্ভব। আমাদের বাংলাদেশে এই বৈশিষ্ট্য যথার্থ সত্য বলে বিবেচিত। সংগ্রামের মাধ্যমে ও বহু ত্যাগ স্বীকারের পর যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তা অর্থবহ করে তোলার জন্য অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন প্রয়োজন। ক্রমবর্ধমান বেকার সমস্যা আমাদের উন্নয়নের সেই সুন্দর স্বপ্নকে দুঃস্বপ্ন করে তুলেছে। বেকারত্বের দুর্বার গতি দেশের অতীতের সুখ-সমৃদ্ধি বিলুপ্ত করে দিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সৃষ্টি করছে। আশির দশকে আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের এক অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুঁজে পায় মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে কর্মঠ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে। যা বর্তমানে দেশের অর্থনীতিকে দিয়েছে প্রাণের সঞ্চালন। যা দেশের মোট জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশী জনশক্তি রপ্তানি বাজারে সৌদিআরব, কুয়েত, দুবাই, বাহ্রাইন, কাতার, মালয়েশিয়া গুরুত্বপূর্ণ শ্রম বাজার বলে বিবেচিত। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধুমাত্র কুয়েত থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছে প্রায় ৭৮০ কোটি মিলিয়ন ডলার। কিন্তু আজ আমরা কী দেখছি? সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের এই অমিত সম্ভাবনাময় আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বিরাট ধস নেমেছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, দুবাই, সৌদিআরব ও কুয়েত থেকে প্রবাসী কর্মীরা নির্যাতিত হচ্ছে, প্রতারিত হচ্ছে এবং শূন্য হাতে দেশে ফিরছে। শ্রম বাজারের প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের বেলায় তো এমন হচ্ছে না। তবে কেন এই বৈষম্য আমাদের শ্রম বাজারের ওপর। সময় এসেছে বিষয়টি নিয়ে ভাবার। পরিবারে একটু সুখ-সমৃদ্ধির আশায় জমি, ভিটে-মাটি বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি দেয়ার শুরুতে ভিসা প্রাপ্তি, মেডিক্যাল চেক-আপ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের নামে প্রতারিত হতে হয় এক শ্রেণীর লোভী প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সিদের দ্বারা। যা সত্যিই কষ্টকর ও অমানবিক। পরিবার স্বজন ছেড়ে বিদেশে থাকাটাই কষ্টকর। তারপর যদি কর্মক্ষেত্রে পোহাতে হয় কষ্টসাধ্য জীবন, যদি কাজ করতে হয় নামমাত্র বেতনে তবে সত্যিই বেদনাদায়ক।
সম্প্রতি শ্রম বাজারের নানা সমস্যার ওপর যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সচিত্র সংবাদ ও প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করে তাদের অর্পিত দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে পালন করতে সক্ষম হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে ধন্যবাদ জানাতে চাই এটিএন বাংলার মুন্নী সাহাকে, কুয়েতের ওপর সচিত্র প্রতিবেদনের জন্য। অন্যদিকে দেশের রাজনৈতিক ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে সহমর্মিতা কিংবা এ থেকে প্রতিকারের জন্য কোনো কথাই শোনা যায়নি। যা আমাদের জন্য দুঃখজনক। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই সমস্যার অবশ্যই সমাধান করা প্রয়োজন। সমস্যার জটিলতাকে ভয়াবহ বিবেচনা না করে এমন উপায় বের করতে হবে, যাতে আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে জনশক্তি রপ্তানি অধিক প্রসারিত হয় এবং এই সেক্টরের ছোট-বড় সমস্যাগুলো যেন দ্রুত অবসান হয়। এজন্য কিছু বিষয়ের ওপর জোর দেয়া একান্ত প্রয়োজন।।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিতকরণ ও তাদের তালিকা প্রণয়ন। তাদের স্থলে দক্ষ কর্মঠ তারুণ্য দীপ্ত লোক নিয়োগ প্রদান। এতে সমস্যার সমাধান হবে এবং বেকার সমস্যাও কিছুটা দূর হবে।
শ্রম বাজারের সমস্যাগুলোকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা। সেই সঙ্গে সমস্যাকাতর দেশগুলোর দূতাবাসে নতুন করে অধিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের নিয়োগ প্রদান ও শ্রম বাজার সমৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন কর্ম-কৌশল প্রণয়ন।
অধিক মুনাফালোভী দুর্নীতিবাজ ভণ্ড ট্রাভেল এজেন্সির কালো তালিকা প্রণয়ন। সেইসঙ্গে প্রতি রিক্রুট লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় আইন প্রয়োগ করা। যাতে দক্ষ ট্রাভেল মালিকরা কাজে উৎসাহ পায় এবং অসৎ দুর্নীতিবাজরা চিরতরে হারিয়ে যায়।
©somewhere in net ltd.