নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে নিজেকে সংশোধন করে নিলে তাকে পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে না। একই অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তিথি সরকারকে বহিষ্কার করে। সারাবিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাঙ্কিং কেন তলানির দিকে, তা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কর্মকাণ্ড থেকে বোঝা যায়। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এইসব শিক্ষকদের চিন্তাধারা মাদ্রাসার মাওলানাদের থেকে খুব বেশি উন্নত নয়, আদর্শগত কোনো অমিল নেই। আমাদের আদালত এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাহ্যিক রূপ পাশ্চাত্যের মতো হলেও, ভেতরটা মধ্যপ্রাচ্যের অন্ধকারে ঠাসা! অনেক লেখক-কবিরাও দেখি বলছেন- ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া কিংবা ধর্ম ও ধর্ম প্রবর্তকের সমালোচনা করা অপরাধ! কলসীতে আবদ্ধ চিন্তার লেখক-কবিদের পক্ষেই কেবল এমনটা ভাবা সম্ভব, যাদের লেখা মানুষকে কোনো দিশা দেয় না, সভ্যতাকে সামনে এগিয়ে দেয় না।
একসময় এই উপমহাদেশের মানুষ উন্মুক্ত চিন্তার মহাসমুদ্রে সাঁতার কাটতে পারত, কবি ও পুরাণকারগণ যেমন ইচ্ছে লিখতে পারতেন, কোনো বাধা ছিল না। তাই কালে কালে এক দেবতার সঙ্গে আরেক দেবতাকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে, যেমন রুদ্র ও শিবকে একীভূত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে শিব একটি পদ, বিভিন্নকালে বিভিন্নজন সেই পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। আবার একই দেবপদে অধিষ্ঠিত বিভিন্নকালের দু-চারজন দেবতা হয়ত ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছেন, কিন্তু পরবর্তীকালে ওই পদটিকেই একজন দেবতা হিসেবে উপস্থাপন করে ব্যভিচারী আখ্যা দিয়েছেন পুরাণকারগণ। যেমন ইন্দ্র ও বিষ্ণু। বিভিন্নকালে ইন্দ্র ও বিষ্ণুপদে অধিষ্ঠিত সকলেই নিশ্চয় ব্যভিচার করতেন না। কবি কল্পনার আতিশ্যয্যে ঈশ্বর এবং দেবতাদের বারবার পৃথিবীতে মনুষ্যগর্ভে অবতাররূপে জন্ম দেওয়া হয়েছে। বস্তুত ঈশ্বর কাল্পনিক; আর দেবতারা অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন কেউ নন, তারা মানুষই ছিলেন। বিভিন্নকালে রামায়ণ-মহাভারতের মধ্যে প্রক্ষিপ্ত আখ্যান ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মধ্যযুগের কবিগণ তো শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে কাল্পনিক রাধাকে জুড়ে দিয়ে কৃষ্ণকে রীতিমতো দুঃশ্চরিত্রের মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে! অথচ ভাগবত, মহাভারত এবং হরিবংশের কোথাও রাধার কোনো অস্তিত্ব নেই। প্রাচীন শাস্ত্রে শিবকে সংযমী দেবতা বলা হলেও, কবিগণ তাকে কোচপাড়ার কুচনীদের সঙ্গে প্রেম করিয়েছেন! আবার শিবপদে অধিষ্ঠিত সকলেই যে সংযমী ছিলেন, এমনটা নাও হতে পারে।
বিভিন্ন কালের কবি-লেখকগণ দেবতাদের নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছেন, যাত্রা ও পালাগানের মাধ্যমে তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে।
না, এজন্য কোনো পুরাণকারকে, কবি-লেখককে কারাভোগ করতে হয়নি, কাউকে খুনও হতে হয়নি। মানুষ নির্মল আনন্দলাভ করেছে। কিন্তু ইসলাম এই উপমহাদেশের এই চিরায়ত প্রথায় ছেদ ঘটিয়েছে। কোনো কাল্পনিক চরিত্রের সঙ্গে প্রেম নয়, স্ত্রী ও দাসীগণের সঙ্গে মুহাম্মদের সম্পর্কের রসায়ণ নিয়ে সাহিত্য সৃষ্টি করলেও বদরকাণ্ড ঘটে যাবে!
পৃথিবীতে কোনো ধর্ম বা মতবাদ, কোনো দর্শন, কোনো কবিতা বা সাহিত্য, কোনো কিছুই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় কোনো ধর্মপ্রবর্তক, দার্শনিক, কবি বা যে-কোনো ব্যক্তি। সকল ধর্ম, মতবাদ ও সৃষ্টির যেমনি সমালোচনা হবে; তেমনি ব্যক্তির কর্মেরও সমালোচনা হবে। এটাই পৃথিবীর চিরায়ত প্রথা।
বৈদিকযুগে ব্রাহ্মণ্য আধিপত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বহু ঋষি ও চিন্তাবিদ বৈদিক ধর্মের সমালোচনা করেছেন। বৈদিক ধর্মের শোষণ-শাসনের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বেদকে অস্বীকার পূর্বক বস্তুকে চরম সত্য জ্ঞান করে বস্তুবাদী দর্শনের প্রচার করেন বৃহস্পতি লৌক্য। যুক্তি-তর্ক হয়েছে, কিন্তু তার কণ্ঠ কেউ রোধ করেনি।
এই যুগেই বেদের অনুসারী ব্রাহ্মণ, ঋষি আর পুরোহিতদের চিন্তা এবং আধিপত্যে প্রবলভাবে ধাক্কা মারে চার্বাক দর্শন। যে যুগে প্রবল প্রতাপশালী ব্রাহ্মণরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ ও অন্যান্য বর্ণের মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে ‘কর্মফলবাদ’ ও ‘জন্মান্তরবাদ’ নামে নতুন এক আধ্যাত্মিক তত্ত্বের উন্মেষ ঘটায় এবং এই তত্ত্বের প্রচার করে মানুষের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় পরকালের ভয়। সেই যুগে দাঁড়িয়ে চার্বাকরা উচ্চারণ করেন বিশ্ব সৃষ্টিতে প্রকৃতির ভূমিকাই মূখ্য; ঈশ্বর, পরলোক, পুনর্জন্ম বা জন্মান্তর বলে কিছু নেই; মৃত্যুর পর মানুষের কোনো অস্তিত্ব থাকে না। বেদবিশ্বাসী মানুষের মাঝে তারা এই নাস্তিক দর্শন প্রচার করেন। মুলত চার্বাকরাও বৃহস্পতি লৌক্য’র মতানুসারী, বৃহস্পতি লৌক্য-ই চার্বাক মতের আদি প্রবর্তক। ব্রাহ্মণদের সঙ্গে চার্বাকদের মতবিরোধ ছিল, কিন্তু শাসককে প্ররোচিত করে ব্রাহ্মণরা যেমনি চার্বাকদের ওপর গণহত্যা চালায়নি, যেমনি চার্বাকরাও তাদের দর্শন প্রচারের ক্ষেত্রে সহিংসতার পথ অবলম্বন করে হাতে তরবারি তুলে নেননি, নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য ব্রাহ্মণদের হত্যা করেননি।
বৈদিক ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ ভারতবর্ষে জন্ম নেয় বৌদ্ধ, জৈন, আজীবিক, বৈষ্ণব, শৈব প্রভৃতি ধর্ম।
রাজপুত্র সিদ্ধার্থ বৈদিক ধর্ম ও ব্রাহ্মণদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ছিলেন, বেদ তার অন্তরের ক্ষুধা নিবারণ করতে পারেনি। তাই তিনি গৃহত্যাগ করে নতুন পথের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। পুরাতন বৈদিক ধর্মের সমালোচনা করেই তিনি নতুন দর্শনের জন্ম দিয়েছেন। যেখানে ব্রাহ্মণরা ঈশ্বরের নামে বিবিধ যাগযজ্ঞে ব্যস্ত; সেখানে বুদ্ধ ঈশ্বরকে অস্বীকার করার কথা বলেন, অন্যথায় ‘মানুষ স্বয়ং নিজের প্রভু’ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়। যেখানে ব্রাহ্মণরা আত্মা-জন্মান্তর ইত্যাদি জুজুর ভয় দেখিয়ে স্বার্থসিদ্ধিতে রত; সেখানে বুদ্ধ আত্মাকে নিত্য অস্বীকার করার কথা বলেন, নইলে নিত্য একরস মানলে তার পরিশুদ্ধি বা মুক্তির প্রশ্নই ওঠে না। যেখানে ব্রাহ্মণদের কাছে জীবনাচার-ধর্মাচারের ক্ষেত্রে বেদ-ই একমাত্র প্রমাণ্য গ্রন্থ এবং বেদ বাক্যই শেষ কথা; সেখানে বুদ্ধ কোনো গ্রন্থকে স্বতঃ প্রমাণ হিসেবে স্বীকার না করার উপদেশ দেন, অন্যথায় বোধবুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। তিনি যে সাহসী বাণী উচ্চারণ করেন, তার ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গড়ে ওঠে বৌদ্ধধর্ম। যদি বৈদিক ধর্মের সমালোচনা ও নতুন দর্শন সৃষ্টিকে অপরাধজ্ঞান করে যদি তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হতো বা হত্যা করা হতো, তাহলে পৃথিবী বঞ্চিত হতো এক অহিংস দর্শন থেকে।
সিদ্ধার্থের মতোই পার্শ্বনাথও বৈদিক ধর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে নতুন দর্শনের সৃষ্টি করেছিলেন, যা জৈন ধর্ম নামে পরিচিতি লাভ করে। পার্শ্বনাথকে জৈনধর্মের তেইশতম তীর্থঙ্কর বলা হলেও তার পূর্বের বাইশজন ঐতিহাসিক চরিত্র নন, পার্শ্বনাথকেই জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। পার্শ্বনাথ ছিলেন বেনারসের রাজা অশ্বসেনের পুত্র, তিনি বিবাহিত ছিলেন। ত্রিশ বছর গৃহে থাকার পর তিনি কঠোর তপস্যার পথ বেছে নেন। জৈন ধর্মের প্রসারে তিনি খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারেননি। বাংলার সম্মেত পর্বতে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর আড়াইশো বছর পর জৈন ধর্মের চব্বিশতম এবং শেষ তীর্থঙ্কর হিসেবে আবির্ভাব হয় মহাবীরের, তার হাতেই জৈনধর্মের প্রসার ঘটে। মহাবীর যেমনি ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে সহিংস পথ বেছে নেননি, তেমনি পুরনো ধর্মের মানুষেরা তাকে উৎখাতও করেনি।
একইভাবে বৈষ্ণব, শৈব ধর্ম ও অন্যান্য উপ-ধর্মের প্রসার ঘটেছে।
আঠারো শতকের শেষদিকে পুরনো ধর্মগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ অনেক উপধর্ম জেগে ওঠে। যেমন-কর্তাভজা, দরবেশ, সাঁই, গোপ বৈষ্ণব, চামার বৈষ্ণব, টহলিয়া বৈষ্ণব, গুরুদাসী বৈষ্ণব, বৈরাগী, ফকিরদাসী, সাহেবধনী, কবীরপন্থী, কুড়াপন্থী, বলরামী, চরণদাসী প্রভৃতি এধরনের আরো অনেক উপধর্ম। এইসব উপ-ধর্মও যুক্তি-তর্কে পুরনো ধর্মকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। পুরনো ধর্ম থেকে বাধা এসেছে, কিন্তু তা খুব বেশি ধ্বংসাত্মক ছিল না।
মধ্যপ্রাচ্যেও ইহুদি কিংবা পৌত্তলিকদের আচার অনুষ্ঠান আর রীতি-পদ্ধতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে, সমাজব্যবস্থা ও জীবনাচারে সত্য এবং নৈতিকতার ঘাটতি দেখে, সমাজ এবং ধর্ম সংস্কারে উদ্যোগী হন যীশু। যীশুর দর্শনই খ্রিষ্টান ধর্ম হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।
মুহাম্মদও বহুশ্বরবাদী কোরাইশদের পৌত্তলিকতা এবং সনাতন সংস্কৃতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন এবং উপলব্ধি করেন মূর্তিপূজার অসারতা সম্পর্কে। আরব সমাজে আগে থেকেই পৌত্তলিকতা বিরোধী বা একেশ্বরবাদের ধারণা ছিল। ইহুদি-খ্রিষ্টান ধর্ম তো ছিলই, এছাড়াও আদ গোত্রের হুদ নবী, মিদিয়ান গোত্রের শুয়েব নবীও পৌত্তলিকতার বিরোধী ছিলেন। আরবের অনেক কবি ছিলেন; যেমন-কবি কাসা বিন সায়িদা আল ইয়াদি, কবি আমর বিন ফজল, কবি লবীদ; এরা সকলেই পৌত্তলিকতার বিরোধী ছিলেন, মূর্তিপূজার কুসংস্কার থেকে মানুষকে বের করে আনার জন্য পৌত্তলিকতা বিরোধী কবিতা লিখতেন এবং সে-সব কবিতা ওকাজের মেলার কবিতা সম্মেলনে আবৃত্তিও করতেন। কিন্তু এজন্য পৌত্তলিকরা তাদেরকে হত্যা করেনি, আবার তারাও মূর্তি পূজার অপরাধে পৌত্তলিকদেরকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করেননি।
মুহাম্মদ মূর্তিপূজার মতো সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস এবং কুসংস্কার জীর্ণ পোশাকের মতো পরিত্যাগ করে নতুন পথের অনুসন্ধানে নামেন। সিরিয়া ভ্রমণকালে তিনি বিভিন্ন ধর্মের এবং মতের মানুষের সংস্পর্শে আসেন। মক্কাতেও তিনি দূর-দূরান্ত থেকে আগত সন্ন্যাসীদের সান্নিধ্যলাভ করেন। ইহুদিদের সিনাগগ এবং খ্রিষ্টানদের গীর্জায় গিয়ে যাজকদের সঙ্গে ধর্মীয় আলোচনা করেন। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে এসময়েই তার মধ্যে পৌত্তলিকতার বিরোধীতা এবং একেশ্বরবাদের ধারণা দৃঢ় হয় ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং আরবের অন্যান্য একেশ্বরবাদী ধর্ম ও ব্যক্তির প্রভাবে।
তিনি মক্কা থেকে রুক্ষ-শিলাময় তিন মাইল পথ পাড়ি দিয়ে হেরা পর্বতের নির্জন গুহায় যেতেন একাকী ধ্যান করার জন্য, অনেক একেশ্বরবাদী বা হানিফ মতাদর্শীও তখন হেরা পর্বতে ধ্যান করতে যেতো। গুহায় ধ্যানের কালেই তার ভেতরে ইসলামের ধারনার জন্ম হয়। হেরা পর্বত থেকে লোকালয়ে ফিরে এসে নিজেকে আল্লাহ’র নবী দাবী করে কোরাইশদেরকে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানান। কোরাইশদের ধর্মকে মিথ্যা ও পাপ আখ্যা দিয়ে, তাদের ধর্মের সমালোচনা ও কটুক্তি করে নিজের ইসলাম ধর্মকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন এবং নিজের ধর্মের প্রচার চালান।
কোরাইশদের ধর্মকে মিথ্যা ও পাপ আখ্যা দিলেও কোরাইশরা মুহাম্মদকে বন্দী করে রাখেনি বা হত্যা করেনি।
যুগে যুগে নতুন ধর্ম বা মতবাদের জন্মই হয়েছে পুরাতন ধর্ম বা মতবাদের সমালোচনা করে এবং পুরাতন ধর্মের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে। কিন্তু নতুন ধর্ম বা মতবাদের প্রবর্তক তার অনুসারীদের নিয়ে পুরাতন ধর্ম বা মতবাদকে ধ্বংসের প্রয়াস চালায়নি।
কোনো একটি দর্শন বা তত্ত্বে বিশ্বাসী মানুষ যদি তাদের দর্শনকে শ্রেষ্ঠজ্ঞান করে পৃথিবীর বাকি সব দর্শন এবং দর্শনের মানুষকে ধ্বংসের প্রয়াস চালায়, তাহলে একদিকে যেমনি পৃথিবী তার বৈচিত্র্য হারাবে অন্যদিকে লঙ্ঘিত হবে মানবাধিকার। ওই একটি দর্শন তখন আর দর্শন থাকে না, হয়ে ওঠে সন্ত্রাসী মতবাদ, আর সন্ত্রাসী মতবাদের কাছে হেরে যায় মানবতা। কিন্তু কোনো মতবাদ বা দর্শন নয়, মানুষই শ্রেষ্ঠ; দর্শনের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্যই দর্শন।
অতীতে ইসলামী সাম্রাজ্যে এবং বর্তমান পৃথিবীর ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে বহু মানুষকে কারাদণ্ড এবং মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হলো- ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া ব্যাপারটা কী? ধর্মীয় অনুভূতি কি ধর্ম ভেদে পৃথক হয়ে থাকে, নাকি কম-বেশি হয়ে থাকে? নাকি কোনো জাতি-গোষ্ঠীর একেবারেই ধর্মীয় অনুভূতি থাকে না, এমনকি তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস বা দখল করলেও?
ধর্মীয় অনুভূতির ব্যাপারটা বোঝার জন্য আমি একটা ঘটনার উল্লেখ করে প্রশ্ন রাখবো।
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে দশ হাজার সৈন্য দিয়ে ইসলামের নবী মুহাম্মদ মক্কা আক্রমণ করেছিলেন। মক্কা আক্রমণের পূর্বে মুহাম্মদ কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানকে বাধ্য করেন ইসলাম গ্রহণ করে তাকে নবী হিসেবে মেনে নিতে, অন্যথায় তাকে হত্যা করা হতো। আর মক্কার অন্যান্য কোরাইশদের সম্পর্কে তিনি বলেছিলেন, ‘যে আবু সুফিয়ানে বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকবে সে নিরাপদ এবং যে কাবাঘরে আশ্রয় নেবে সে নিরাপদ।’
আবু সুফিয়ান নগরে এসে এই সংবাদ জানান কোরাইশদের, আর সবাইকে উপদেশ দেন যুদ্ধ না করতে, কেননা তিনি মুহাম্মদের যে বাহিনী দেখে এসেছিলেন, তাদের সঙ্গে যুদ্ধে জয়লাভ করা অসম্ভব ছিল।
ফলে কোরাইশদের সামনে তিনটি পথ খোলা ছিল।
এক. ইসলাম গ্রহণ করে মুহাম্মদকে নবী হিসেবে মেনে নেওয়া
দুই. মুহাম্মদের বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা
তিন. পালিয়ে যাওয়া
তিনটি ঘটনাই ঘটেছিল পরদিন মুহাম্মদ তার বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করলে। কোরাইশদের একটি দল মুহাম্মদের বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মুহাম্মদের যোদ্ধা খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সামনে তারা টিকতে পারেনি, তাদের অনেকে প্রাণ হারায়, অনেকে পালিয়ে যায়। আবার অনেকে মক্কা আক্রমণের আগেই পালিয়েছিল। যেমন- মুহাম্মদের চাচাতো বোন উম্মেহানির স্বামী হুবায়রা। হুবায়রার পালানো এক বিস্ময়, সে আলোচনা থাকুক।
প্রাণ বাঁচাতে সেদিন কোরাইশরা মুহাম্মদের আনুগত্য স্বীকার করে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। তারপরও মুহাম্মদের নির্দেশে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মক্কা বিজয়ের পরপরই মুহাম্মদের নির্দেশে কাবাঘরে রক্ষিত ৩৬০ টি মূর্তি ধ্বংস করা হয়, এর মধ্যে কাঠের একটি ঘুঘু মুহাম্মদ নিজে ধ্বংস করেন। এই মূর্তিগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী বংশ পরম্পরায় কোরাইশরা পূজা করে আসছিল। এরপর মুহাম্মদের নির্দেশে খালেদ বিন ওয়ালিদ নাখলার আল-উজ্জা মন্দিরে রক্ষিত মূর্তি ধ্বংস করে। হুদেইল গোত্রের পূজিত সুওয়ার নামের মূর্তি ভেঙে ফেলে মুহাম্মদের শিষ্য আমর। মুহাম্মদের অন্য একদল অনুসারী কোদেইদ গোত্রের আল-মানাত মন্দির ধ্বংস করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে কোরাইশ, হুদেইল, কোদেইদ এবং আরও অন্যান্য যে-সব গোত্রের মন্দির এবং মূর্তি মুহাম্মদ ধ্বংস করেন, তা কি ওইসব গোত্রে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া নয়? এতগুলো মূর্তি এবং মন্দির যে ব্যক্তি ধ্বংস করেন, যিনি মানুষকে হত্যার নির্দেশ দেন, সেই ব্যক্তির সমালোচনা করা যাবে না? নাকি কথা ওইটাই যে ধর্ম ও ব্যক্তিভেদে অনুভূতি আলাদা?
মে, ২০২৪
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:১৯
মিশু মিলন বলেছেন: নিজ ধর্মের প্রসার ও সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য তিনি যুদ্ধে জড়িয়েছেন, মক্কা-মদিনার বিভিন্ন গোত্রকে আক্রমণ করেছেন। ধর্মান্তর ও লুণ্ঠন করেছেন।
২| ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৭
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: মোহাম্মদ (সা) মূর্তি ধ্বংস করেছেন পুজারি না থাকার কারণে। তো পুজারিই যদি না থাকে তবে মূর্তি ধ্বংসে কার অনুভূতিতে আঘাত লাগবে?
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২
মিশু মিলন বলেছেন: দশ হাজার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেছেন। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে মক্কাবাসীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘যে আবু সুফিয়ানে বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকবে সে নিরাপদ এবং যে কাবাঘরে আশ্রয় নেবে সে নিরাপদ।’
পরদিন প্রাণ বাঁচাতে মক্কাবাসীরা ধর্মান্তরিত হয়, কেউ কেউ পালিয়ে যায় আর কয়েকজনকে হত্যা করা হয়। তারপরই কাবা এবং অন্যান্য গোত্রের মূর্তি ভাঙা হয়। এতে কোরাইশ এবং অন্যান্য গোত্রের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লাগেনি? কী হাস্যকর প্রশ্ন! কোরাইশদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। আর নিজের পূর্ব-পুরুষের পূজিত মূর্তি ভাংতে হবে কেন? এগুলো তো প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। তিনি তো তার ধর্মের জন্য অন্য জায়গায় উপাসনালয় বানাতে পারতেন। তা করেননি, কারণ তিনি সব ধ্বংস করতে চেয়েছেন।
৩| ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: আমাদের আদালত এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাহ্যিক রূপ পাশ্চাত্যের মতো হলেও, ভেতরটা মধ্যপ্রাচ্যের অন্ধকারে ঠাসা!
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৩
মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২
কামাল১৮ বলেছেন: কিছু আইন আছে যা মধ্যযোগীয় বর্বর আইন।গনতান্ত্রীক রাষ্ট্রে এগুলি বাদ দিতে হবে।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৩
মিশু মিলন বলেছেন: অবশ্যই বাদ দিতে হবে। ধন্যবাদ।
৫| ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: বড়জোর শোকজ করা যেত।
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮
মিশু মিলন বলেছেন: তিথি কোনো অপরাধই করেননি। একজন ব্যক্তির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নিজের মত প্রকাশ করেছেন। শোকজ করাও অনুচিত। ধন্যবাদ।
৬| ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২
ধুলো মেঘ বলেছেন: রাসূল (স) অন্য ধর্ম সম্পর্কে কি কি কটুক্তি করেছেন? একটা তালিকা দিন তো দেখি!
রাসূল (স) যখন মূর্তি ধ্বংসের আদেশ দেন, তখন মক্কায় কোন মূর্তি পূজারি ছিলোই না। তো মূর্তি ভেঙে তিনি তাদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন? খোলাসা করবেন আশা করি।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, তিনি তো মূর্তি না ভেঙ্গেও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন।
না, পারতেন না। মূর্তিগুলো তখন মিথ্যা এবং কুসংস্কারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল । মূর্তিপূজা কোন ধর্ম নয় - এগুলো এক ধরণের কাল্ট - এটা সবাই তখন বুঝেছিল। তাই রাসূল (স) আবু সুফিয়ানকে নিয়োগ দেন মূর্তি ভাঙার জন্য। আবু সুফিয়ান যদি বাধ্যই হতো ইসলাম গ্রহণ করতে - তাহলে সে এই দায়িত্ব নিতে অবশ্যই অস্বীকার করতো। কিন্তু করে নি তো!
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫১
মিশু মিলন বলেছেন: দশ হাজার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেছেন। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে মক্কাবাসীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘যে আবু সুফিয়ানে বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকবে সে নিরাপদ এবং যে কাবাঘরে আশ্রয় নেবে সে নিরাপদ। আবু সুফিয়ানের ঘাড়ে কয়টা মাথা যে দশ হাজার সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানাবে?
পরদিন প্রাণ বাঁচাতে মক্কাবাসীরা ধর্মান্তরিত হয়, কেউ কেউ পালিয়ে যায় আর কয়েকজনকে হত্যা করা হয়। তারপরই কাবা এবং অন্যান্য গোত্রের মূর্তি ভাঙা হয়। এতে কোরাইশ এবং অন্যান্য গোত্রের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লাগেনি? কী হাস্যকর প্রশ্ন! কোরাইশদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। আর নিজের পূর্ব-পুরুষের পূজিত মূর্তি ভাংতে হবে কেন? এগুলো তো প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। তিনি তো তার ধর্মের জন্য অন্য জায়গায় উপাসনালয় বানাতে পারতেন। তা করেননি, কারণ তিনি সব ধ্বংস করতে চেয়েছেন।
আমার লেখা নিয়ে আপনার অবিশ্বাস থাকলে আপনি কোনো আলেমের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করবেন, দেখবেন কী বীরত্বের সঙ্গে তারা এসব বর্ণনা করেন। হাদিসগুলোতে এসব ইতিহাস পাবেন। ব্লগার এভো সীরাতে ইবনে হিশামের একটা পাতার স্ক্রীণশর্ট দিয়েছেন, ওটা পড়ে দেখুন। মক্কায় থাকতে মুহাম্মদ নিজের ধর্ম গ্রহণের জন্য কোরাইশদের নানাভাবে জ্বালাতন করতেন, আর দেবদেবী সম্পর্কে কটুক্তি করতেন।
৭| ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪
এভো বলেছেন:
মোহাম্মদ (সা) মূর্তি ধ্বংস করেছেন পুজারি না থাকার কারণে। তো পুজারিই যদি না থাকে তবে মূর্তি ধ্বংসে কার অনুভূতিতে আঘাত লাগবে?
১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩
মিশু মিলন বলেছেন: দশ হাজার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মক্কা আক্রমণ করেছেন। জীবন বাঁচাতে বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে মক্কাবাসীদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘যে আবু সুফিয়ানে বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ, যে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে থাকবে সে নিরাপদ এবং যে কাবাঘরে আশ্রয় নেবে সে নিরাপদ।’
পরদিন প্রাণ বাঁচাতে মক্কাবাসীরা ধর্মান্তরিত হয়, কেউ কেউ পালিয়ে যায় আর কয়েকজনকে হত্যা করা হয়। তারপরই কাবা এবং অন্যান্য গোত্রের মূর্তি ভাঙা হয়। এতে কোরাইশ এবং অন্যান্য গোত্রের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লাগেনি? কী হাস্যকর প্রশ্ন! কোরাইশদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। আর নিজের পূর্ব-পুরুষের পূজিত মূর্তি ভাংতে হবে কেন? এগুলো তো প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। তিনি তো তার ধর্মের জন্য অন্য জায়গায় উপাসনালয় বানাতে পারতেন। তা করেননি, কারণ তিনি সব ধ্বংস করতে চেয়েছেন।
৮| ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:১৫
ফিনিক্স পাখির জীবন বলেছেন: নবীজী (সা দশ হাজার অনুসারী নিয়ে মক্কা অভিমুখে যাত্রা করেন এবং বিনা যুদ্ধে মক্কা বিজয় হয়।
আপনি এই দশহাজার মানুষকে সন্ত্রাসী বাহিনী কেন বলছেন, জানতে চাচ্ছি। কি কারনে তারা সন্ত্রাসী?
মদিনায় মুসলিমরা হিজরত করে চলে যাবার পর থেকে মক্কা বিজয়ের আগে পর্যন্ত মক্কার কুরায়েশরা ও ইসলামে অবিশ্বাসীরা বহুবার মদিনায় বসবাসকারী মুসলিমদের আক্রমন করেছিল বিনা প্ররোচনায়। এগুলো কি শান্তি রক্ষার উদ্যোগ ছিল? এরা সন্ত্রাসী ছিল না, কিন্তু মুসলিমরা সন্ত্রাসী হয়ে গেল।
মুর্তি কেন ভাঙ্গা হয়েছিল?
ইসলাম একেশ্বরবাদী ধর্ম। যখন একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন বহু ঈশ্বরবাদকে বিদায় নিতে হবে।
আর আপনার লেখার শিরোনাম ও কমেন্টের উত্তর সাংঘর্ষিক।
শিরোনাম সত্য মেনে নিলে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সময় যা হয়েছে তা স্বাভাবিক। আবার আপনার কমেন্টের কথা মেনে নিলে শিরোনামের কথাটা অন্যায্য।
১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৫
মিশু মিলন বলেছেন: যে বাহিনী নিরীহ বণিকদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা চালিয়ে লুটপাট করে, বণিকদের হত্যা করে, বিভিন্ন বসতিতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে, নারীদের দাসী বানিয়ে ধর্ষণ করে, পুরুষদের দাস বানায়, জোর করে ধর্মান্তর করে, মন্দির ধ্বংস করে, সেই বাহিনীকে সন্ত্রাসী বাহিনীকে সন্ত্রাসী বাহিনীই বলতে হবে। যেমন এখন আমরা ইসলামী জঙ্গিদের সন্ত্রাসী বলি। এই যুগে হলে মুহাম্মদের পরিণতিও লাদেনের মতো হতো।
কোনো কুরাইশ মদিনায় গিয়ে মুসলমানদের উপর হামলা চালায়নি। বরং মদিনার মুসলমানদের জীবিকার কোনো মাধ্যম না থাকায় তারা কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা চালাতো।
ইসলাম একশ্বরবাদী ধর্ম বলেই অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা চালাতে হবে? বাহ, একেবারে সহি মুসলমানের মতো চিন্তা!
শিরোনাম ও কমেন্ট মোটেও সাংঘর্ষিক নয়। শিরোনামে বাস্তব ইতিহাসটা বলা হয়েছে, লেখার ভেতরে যার বিশদ আলোচনা হয়েছে। পুরোনো মতবাদের সমালোচনা করে নতুন মতবাদের সৃষ্টি হবে। কিন্তু কোনোভাবেই সহিংসতার পথ বেছে নেওয়া যাবে না। কোনো মতবাদ-ই নিজের মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সহিংসতার পথ বেছে নেয়নি, যেটা ইসলাম নিয়েছে। এটা বিরাট অপরাধ।
৯| ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪
শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার লেখাটার একেবারে প্রথম বাক্যটি ছাড়া অর্থাৎ তিথি সরকারের সাথে ঘটিত অন্যায় কর্মগুলো ছাড়া পুরো লেখাটাই নিতান্ত বাজে।
আপনার চিন্তাভাবনায় নতুন কিছু নেই এবং এগুলো নেহায়েত বাজে ক্যাচাল ছাড়া কোন কিছুই সৃষ্টি করে না।
১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩১
মিশু মিলন বলেছেন: বুকে মরুদর্শন ধারণ করা, বাহাত্তর হুরের স্বপ্নে বিভোর সহি তরিকার মানুষের কাছে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের ইতিহাস বাজে ক্যাচালই মনে হবে, এটা খুব স্বাভাবিক।
১০| ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭
রানার ব্লগ বলেছেন: তিথি আপুনির বা এতো কি এমন দরকার ছিলো নবীদের নিয়ে ফাও কথা বলার? এখন কেউ যদি তার সামনে কৃষ্ণ কে নিয়ে খবিস মন্তব্য করেন উনি কি তা মেনে নেবে? যেমন কর্ম তেমন ফল। অন্যের ধর্ম নিয়ে ফাও কথা বলা থেকে বিরত থাকা ভদ্র লোকের কাজ।
আগে ভাবতাম আহারে হিন্দুদের কি দুঃখ তাদের দেশেই তাদের মুর্তি ভেংগে ফেলছে অথচো এখন দেখি অন্তত ৫০ শতাংশ কাম তাহারা নিজেরাই করে ভারতীয় অনুকম্পা পেতে। ছ্যা ছ্যা!! অবশ্য এই কাজ কেবল হিন্দুরাই করে তা না বৌদ্ধরাও করে। তার রেকর্ড আছে।
১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৬
মিশু মিলন বলেছেন: তিথি সত্য ইতিহাস বলেছেন, ফাও কথা বলেননি। কৃষ্ণকে নিয়ে নির্মোহ ইতিহাস যেমনি বলা হয়, তেমনি অনেক বাজে কথাও বলা হয়। কিন্তু এজন্য কোনো হিন্দু কারো গলা কাটেনি, আদালতেও শাস্তিভোগ করতে হয়নি।
আর নিচের প্যারায় যা বলেছেন, তাতে স্পষ্ট আপনি একজন ইসলামী জঙ্গি মানসিকতার ছাগু।
১১| ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৭
চারাগাছ বলেছেন:
শিরোনাম দেখে পড়তে এসেছিলাম।
ভুল করেছিলাম।
১২| ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ২:১৬
ফিনিক্স পাখির জীবন বলেছেন: আপনার এই লেখা আর কমেন্ট পড়ে বহুদিন পর আসিফ মহিউদ্দিন সাহেবের কথা মনে পড়ল। তাকে আমি মিস করি। অনেকদিন পর তাকে মনে করিয়ে দিলেন ভাই।
ক্রুসেডগুলো খ্রিষ্টানরা বছরের পর বছর চালিয়েছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে। মুসলমানদের যদি কাঠগড়ায় দাড় করাতেই চান, তবে খ্রিস্টানরা বাদ পড়ল কেন? এই খ্রিস্টান সম্প্রদায় তো আমেরিকা আর ল্যাটিন আমেরিকায় ঈশ্বরের দূত হিসেবে অসংখ্য আদিবাসী সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল, আপনি এদের কথাও পোস্টে উল্লেখ করতে ভুলে গেছেন।
১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৯
মিশু মিলন বলেছেন: আপনার সঙ্গে একমত। খ্রিষ্টানরাও বহু জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করেছে। ধন্যবাদ।
১৩| ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪২
ধুলো মেঘ বলেছেন: সীরাতে ইবনে হিশামের যে স্ক্রীনশট দিলেন, তাঁর লেখা ছোট ছোট ছিল। পড়তে কষ্ট হয়েছে - তারপরেও পড়লাম। কিন্তু এর মধ্যে আপত্তিকর কি আছে - সেটাও বুঝলাম না। তাওহীদ এবং মূর্তিপূজা - এই দুটো ভয়াবহভাবে সাঙ্ঘর্ষিক। তাই তাওহীদের প্রচার করতে হলে মূর্তিপূজার অসারতা নিয়ে কথা বলতেই হবে। বিশেষ করে সেই এলাকায়, যেখানে মূর্তিপূজার ব্যাপক প্রচলন আছে। রাসূল (স) তাই করেছিলেন। কিন্তু দেব-দেবীকে গালাগালি করা? সেটা কাফেরদের অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের কোন সত্যতা ছিলনা। কুরাইশ নেতা আবু তালিবের কাছে অভিযোগ দেবার জন্য তাঁর ভাই আবু লাহাব এই কথা অতরঞ্জিত করে বলেছিল। আবু তালিবের পরে নেতা হবার খায়েশ তাঁর মধ্যে কাজ করেছিল।
দশ হাজার সাহাবা নিয়ে নবম হিজরীতেও রাসূল (স) হজ্জ করতে এসেছিলেন। তখন কি মক্কা অক্রমণ করেছিলেন? নাকি কাফিরদের আপত্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মদীনায় ফিরে গিয়েছিলেন?
আপনি বলেছেন, মদিনায় মুসলিমদের উপার্জনের উপায় ছিলনা বলে মুসলিমরা মক্কার বাণিজ্য কাফেলায় হামলা চালাতেন। এটা কি আপনি বুঝে বলেছেন? মদিনা ছিল উর্বর এলাকা। সেখানে প্রচুর ফল ও ফসল ফলতো। আবহাওয়াও মক্কার মত চরম ভাবাপন্ন নয় - কিছুটা হলেও আরামদায়ক। তারা মক্কার সম্পদের উপর লোভ করবেন কেন?
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৭
মিশু মিলন বলেছেন: হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন ‘আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সর্ম্পক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ ভেঙ্গে ফেলার, এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুকে শরীক না করার বিধান দিয়ে। -সহীহ মুসলিম হা. ৮৩২
আলী ইবনে আবী তালেব রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে মদীনায় যাবে এবং যেখানেই কোনো প্রাণীর মূর্তি পাবে তা ভেঙ্গে ফেলবে, যেখানেই কোনো সমাধি-সৌধ পাবে তা ভূমিসাৎ করে দিবে এবং যেখানেই কোনো চিত্র পাবে তা মুছে দিবে?’ আলী রা. এই দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্ত্তত হলেন। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে কেউ পুনরায় উপরোক্ত কোনো কিছু তৈরী করতে প্রবৃত্ত হবে সে মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি নাযিলকৃত দ্বীনকে অস্বীকারকারী।’ -মুসনাদে আহমাদ হা. ৬৫৭
আবুল হাইয়াজ আসাদী বলেন, আলী ইবনে আবী তালেব রা. আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে ওই কাজের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করব না, যে কাজের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? তা এই যে, তুমি সকল প্রাণীর মূর্তি বিলুপ্ত করবে এবং সকল সমাধি-সৌধ ভূমিসাৎ করে দিবে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে,... এবং সকল চিত্র মুছে ফেলবে।’ -সহীহ মুসলিম হা. ৯৬৯
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন, “আমি ‘বাদ্যযন্ত্র’ ও ‘মূর্তি’ ধ্বংস করার জন্যে প্রেরিত হয়েছি।”
ইবনে ইসহাক এর লেখা মুহাম্মদের জীবনী পড়ুন। আক্রমণের জন্য না এলে মক্কা বিজয় হলো কী করে? আলেমরা মক্কা বিজয়ের ইতিহাস গর্বের সঙ্গে বলে থাকেন। আর কী পরিস্থিতিতে মক্কা বিজয় করেছিল তার কিছুটা আমি লেখাতেই বলেছি। হত্যাও করেছেন।
মুহাম্মদ মদিনার ইহুদিদেরকে ইসলাম গ্রহণ এবং নবী হিসেবে তাকে মেনে নেওয়ার আহ্বান জানালে কোরাইশদের মতো তারাও তা প্রত্যাখান করে। মদিনার ইহুদিরা তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকতো; ফলে কোথাকার কোন মুহাম্মদ নিজেকে আল্লাহ’র নবী দাবী করে ইসলাম নামক একটি নতুন ধর্মের প্রচার এবং প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাতে তাদের কিছু যেত-আসতো না। ইহুদিদের দলে ভেড়াতে কোরানের নতুন নতুন আয়াত নাজিল করলেও ইহুদিরা তা ভ্রান্ত মতবাদ বলে উড়িয়ে দেয় যেমনটা তবে মদিনার বহুশ্বরবাদীদের অনেকেই ইসলাম গ্রহণ করে, বিশেষত এটা বহুলাংশে বেড়ে যায় নাখলা হামলা এবং বদরযুদ্ধের পর লুণ্ঠিত ধন-সম্পদের লোভে।
মদিনায় মুহাম্মদ এবং তার অনুসারী মুহাজিরদের মাসের পর মাস কেটে গেলেও তারা কোনো সুবিধাজনক রোজগারের পথ খুঁজে পাচ্ছিল না, এভাবে মাসের পর মাস চলতে থাকলে মুহাম্মদের অনুসারীরা হতাশ হয়ে পড়ে এবং তার নবুওতির ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে। মুহাম্মদ মক্কায় থাকতে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে আল্লাহ তাদেরকে বহু আশ্রয় এবং প্রাচুর্য দেবে, কিন্তু বাস্তবতা হলো দুটো রুটির জন্যও তাদেরকে আনসারদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়; মুহাম্মদ আল্লাহ’র কাছ থেকে তাদের জন্য কোনো অলৌকিক সুবিধা এনে দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মুহাম্মদ তখন আবার কোরানের আয়াত নাজিলের কৌশল অবলম্বন করে অনুসারীদের সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করেন এবং এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে থাকেন। অবশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নেন সিরিয়া থেকে মক্কায় প্রত্যাবর্তনরত কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা করে তাদের মালামাল লুণ্ঠন করবেন। তবে তার এই সিদ্ধান্তে অনুসারী মুহাজিররা আরো হতাশ হয়ে পড়ে এবং তারা কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা চালাতে অনীহা প্রকাশ করে, কেননা কোরাইশরা তাদেরই আত্মীয়-স্বজন। কিন্তু চতুর মুহাম্মদ আবারো কোরানের আয়াত নাজিলের কৌশল অবলম্বন করে তার অনুসারীদের রাজি করান এবং তাদের মনোবল বৃদ্ধি করেন। মদিনায় হিজরতের আট মাস পর ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে মুহাম্মদের নির্দেশে তার অনুসারীরা প্রথম হামলা চালায় কোরাইশদের একটি বাণিজ্য কাফেলায়, কিন্তু হামলাটি ব্যর্থ হয়। এরপর তারা পর্যায়ক্রমে আরো পাঁচটি হামলা চালায়, যার সর্বশেষ তিনটির নেতৃত্ব দেন স্বয়ং মুহাম্মদ; কিন্তু তাদের পাঁচটি হামলাই ব্যর্থ হয়!
এর পরের বছর, অর্থাৎ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে মুহাম্মদের নির্দেশে আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাসের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি দল নাখলা নামক স্থানে নাটকীয় ছলনার মাধ্যমে কোরাইশদের বাণিজ্য কাফেলায় হামলা চালায়। পূর্বের হামলাগুলো ব্যর্থ হওয়ায় সতর্ক মুহাম্মদ গোপনীয়তা রক্ষার্থে হামলার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগ মুহূর্তে জাহাসের হাতে একটা চিঠি দিয়ে জানান যে দু-দিনের পথ পাড়ি দেবার আগে সে যেন চিঠিটা না খোলে। জাহাস দু-দিন পর চিঠিটা খুলে দ্যাখে তাতে নাখলায় অবস্থান এবং হামলার নির্দেশনা দেওয়া। নাখলা মদিনা থেকে নয় দিনের এবং মক্কা থেকে দুই দিনের দূরত্বের পথ। জাহাস তার দল নিয়ে নাখলায় পৌঁছে কোরাইশদের কাফেলার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তখন রজব মাস, ওমরাহ পালনের সময়। আরব সংস্কৃতি অনুযায়ী রজব মাসে যুদ্ধ এবং রক্তপাত নিষিদ্ধ হলেও মুহাম্মদ তা উপেক্ষা করেই তার অনুসারীদেরকে পাঠান কোরাইশদের মালামাল লুণ্ঠনের জন্য। সময়টা যেহেতু ওমরাহ পালনের তাই জাহাসের দলের একজন মাথা ন্যাড়া করে যাতে কোরাইশরা তাদেরকে ওমরাহ পালনকারী মনে করে বিভ্রান্ত হয়! হয়ও তাই, কাফেলাটি তাদেরকে ওমরাহ পালনকারী ধার্মিক দল ভেবে অসতর্কভাবে কাছে আসতেই তারা অতর্কিত হামলা চালায়। কাফেলার একজন পালিয়ে গেলেও জাহাস এবং তার দল বাকি তিনজনের একজনকে খুন এবং অন্য দু-জনকে বন্দী করে মদিনায় নিয়ে আসে, সঙ্গে লুণ্ঠিত মালামাল। মুহাম্মদ এই বন্দী দু-জনের মুক্তিপণ বাবদ অর্থ আদায় করে কোরাইশদের কাছ থেকে। লুণ্ঠিত মালামাল এবং মুক্তিপণের অর্থ পেয়ে তিনি আর তার অনুসারীদের জীবনযাত্রার মান কিছুটা উন্নত এবং ইসলাম প্রচারে সুবিধা হয়। আধুনিককালে এটাকে বলা হয় ডাকাতি এবং অপহরণের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন। নাখলা হামলার পর হয় সেই কুখ্যাত বদর যুদ্ধ, মুসলমানদের কাছে অবশ্য বিখ্যাত! কিন্তু সকল মানবতাবাদী, নিপীড়িত জনগণের পক্ষের মানুষের কাছে এটা কুখ্যাত যুদ্ধ-ই হওয়া উচিত। নাখলা হামলার দুই মাসের মাথায় অর্থাৎ মার্চ মাসে মুহাম্মদ জানতে পারেন যে মক্কার কোরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান বিন হারবের নেতৃত্বে বেশ বড় একটি বাণিজ্য কাফেলা সিরিয়া থেকে মক্কা ফিরছে। তখনই তিনি সেই কাফেলা আক্রমণ করে মালামাল লুণ্ঠনের সিদ্ধান্ত নেন এবং সাড়ে তিনশো অনুসারীকে সঙ্গে নিয়ে পানির কূপসমৃদ্ধ বদর নামক মরুদ্যানে কাফেলাটির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এরই মধ্যে কোনোভাবে আবু সুফিয়ানের কাছে মুহাম্মদের এই ষড়যন্ত্রের কথা পৌঁছে যায়। তিনি এই দুঃসংবাদটি জানিয়ে দমদম বিন আমর আল গিফারিকে দ্রুত মক্কার উদ্দেশ্যে পাঠান, যাতে মক্কার কোরাইশরা এসে মুহাম্মদ ও তার বাহিনীর হাত থেকে কাফেলা রক্ষা করতে পারে। পরে উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি কাফেলা নিয়ে বদরের পথে না গিয়ে লোহিত সাগরের ধার দিয়ে সতর্কতার সাথে এবং নিরাপদে মক্কায় পৌঁছান। কিন্তু তার পৌঁছার আগেই অন্য কোনো মাধ্যমে দুঃসংবাদ শুনে মক্কা থেকে সাতশ (মতান্তরে হাজার) কোরাইশের একটি দল কাফেলাটি উদ্ধারের জন্য ভিন্ন পথেবদরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়।
এদিকে বদরে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা মুহাম্মদ জানেন না যে আবু সুফিয়ান অন্য পথে মক্কা পৌঁছে গেছে। তিনি নিজের সৈন্যদের জন্য তাদের তাঁবুর কাছে একটি জলের কূপ রেখে অবশিষ্ট কূপগুলো বালি দিয়ে বন্ধ করে দেন যাতে কাফেলার কোরাইশরা পানি খেতে না পারে, ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত থাকে। সফল হয় মুহাম্মদের এই ধূর্ত ও নিষ্ঠুর পরিকল্পনা, মক্কা থেকে আগত কাফেলা উদ্ধারকারী দলটি মরুপথ পাড়ি দিয়ে যখন বদরে পৌঁছায়, তখন তারা ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত; জলের কূপ বালিপূর্ণ থাকায় তাদের তৃষ্ণা নিবারণের কোনো উপায় থাকে না। ভোররাতে মুহাম্মদ আবু সুফিয়ানের কাফেলা মনে করে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত কোরাইশদের উদ্ধারকারী দলটির ওপর নির্মমভাবে আক্রমণ করে। দু-পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হয়, সংখ্যায় দ্বিগুণ কিংবা তারও বেশি থাকা সত্ত্বেও তৃষ্ণার্ত থাকায় কোরাইশরা যুদ্ধে হারতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। যুদ্ধে কোরাইশ গোত্রের পঞ্চাশজন নিহত হয় এবং আরো প্রায় পঞ্চাশজন হয় বন্দী মুহাম্মদের বাহিনীর হাতে, পরবর্তীতে মুহাম্মদের নির্দেশে বন্দীদের অনেককেই হত্যা করা হয়। অন্যদিকে এই যুদ্ধে মুহাম্মদের বাহিনীর মাত্র পনেরজন নিহত হয়।
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:১২
মিশু মিলন বলেছেন: ১) আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যখন (মক্কা বিজয়ের দিন) মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন কাবা ঘরের চারপাশে তিনশত ষাটটি মূর্তি ছিল। নবী (ﷺ) নিজের হাতের লাঠি দিয়ে মূর্তিগুলোকে আঘাত করতে থাকেন আর বলতে থাকেনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [সহীহুল বুখারী, হাদিস নং ৪৭২০]
.
২) ইবনে ইসহাক বলেনঃ মক্কা বিজয়ের পর উযযা মূর্তি ধ্বংস করার জন্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খালিদ ইবনে ওয়ালিদকে প্রেরণ করেন। নাখলা নামক স্থানে একটি মন্দিরে উযযা মূর্তি স্থাপিত ছিল। কুরাইশ, কিনানা ও মুদার গোত্র এর পূজা করত এবং সেবা যত্ন ও পাহারাদারীর দায়িত্ব ছিল বনু হাশিমের মিত্র ও বনু সুলাইমের শাখা গোত্র বনু শাইবানের উপর….। খালিদ যখন সেখানে পৌঁছলেন তখন মূর্তিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে তবে ছাড়লেন এবং কাজ সম্পাদন করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট ফিরে এলেন। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৪৫]
.
৩) তায়েফের যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর সাকীফ গোত্রের লোকেরা যখন ইসলাম গ্রহণ করে, তখন তারা রাসূল (ﷺ) এর সাথে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিল তার মধ্যে একটি ছিল এই যে, তাদের লাত নামক মূর্তিটি তিন বছর পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে এটিকে ভাঙ্গা যাবে না। যাতে করে এ গোত্রের মূর্খ লোকদের ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়। নবী (ﷺ) তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। তারপরও তারা জোর দাবি করতে থাকল। নবী (ﷺ) বরাবরই অস্বীকার করলেন। পরিশেষে তারা মাত্র এক মাস রেখে দেওয়ার অনুরোধ করলে নবী (ﷺ) কোন মেয়াদেই তা রেখে দিতে অস্বীকার করলেন….।
.
সবশেষে তারা যখন নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল, নবী (ﷺ) তখন তাদের সাথে আবু সুফিয়ান ও মুগীরা ইবনে শুবাকে লাত নামক মূর্তিটি ভাঙ্গার জন্য পাঠালেন। মুগীরা ইবনে শুবা যখন হাতিয়ার হাতে নিয়ে মূর্তিটির ঘরে প্রবেশ করলেন, তখন বনী মুগীসের লোকেরা মুগীরাকে হেফাযতের জন্য তার চারপাশে ঘুরাফেরা করছিল। কারণ তাদের আশঙ্কা ছিল উরওয়ার মত তাকেও তীর নিক্ষেপে হত্যা করা হয় কিনা (ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার কারণে বনী সাকীফ গোত্র পূর্বে উরওয়া বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে শহীদ করে দিয়েছিল)। আর বনী সাকীফের মহিলারা মূর্তিটির জন্য বিলাপ শুরু করে দিল। তিনি মূর্তিটি ভেঙ্গে সেখানকার সকল ধন-সম্পদ নিয়ে আসলেন….।
.
তায়েফের ঘটনা থেকে প্রমাণ মিলে যে, ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা থাকলে শিরক ও তাগুতের আড্ডাকে একদিনের জন্যও অবশিষ্ট রাখা জায়েজ নেই। কেননা এগুলো হচ্ছে শিরক ও কুফরের নিদর্শন এবং সর্বাধিক গর্হিত কাজ। সুতরাং ক্ষমতা থাকলে এগুলোকে বহাল রাখা কখনোই বৈধ নয়। [মুখতাসার যাদূল মাআদ কিতাব থেকে সংগৃহীত]
.
৪) খলিফা ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিকের খিলাফতকালে কুতাইবা ইবনে মুসলিম জিহাদ ও সন্ধির মাধ্যমে মুশরিকদের নিকট থেকে সমরকন্দ বিজয় করেন। উক্ত শহরে একটি মসজিদ ও মিম্বার তৈরির পর কুতাইবা শহরে প্রবেশ করেন। তিনি মসজিদে সালাত আদায় করেন, খুতবা দেন ও খাদ্য গ্রহণ করেন। অতঃপর সমরকন্দের মুশরিকদের মূর্তিগুলো তাঁর সামনে উপস্থিত করা হল এবং সেগুলোকে স্তুপ করে রাখা হল। মূর্তির সংখ্যা এত বেশি ছিল যে, স্তুপটি একটি বিরাট প্রাসাদের রূপ ধারণ করল। তারপর তিনি এগুলোকে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। তারা তখন ক্রন্দন ও বিলাপ করতে লাগল। এক অগ্নিপূজারী বলল, এগুলোর মধ্যে একটি পুরানো দেবী আছে। যে এটিকে পুড়াবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। সমরকন্দের বাদশাহ গাওরাক এগিয়ে আসলেন এবং এ কাজ করতে নিষেধ করলেন। আর কুতাইবাকে বললেন, আমি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী, আপনি এরূপ কাজ করবেন না। কুতাইবা দাঁড়ালেন ও অগ্নিশিখা হাতে নিলেন এবং বললেন, আমার নিজের হাতে এটিকে পুড়াবো, তোমরা সকলে মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর, তোমাদেরকে বেশি সময় দেওয়া হবে না। তারপর তিনি এটির কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহু আকবার বললেন ও তার উপর অগ্নিশিখা ফেলে দিলেন। তারপর তা পুড়ে গেল। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৪৭]
১৪| ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৫৬
এভো বলেছেন:
কমেন্ট ১৩ -- কিন্তু দেব-দেবীকে গালাগালি করা? সেটা কাফেরদের অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের কোন সত্যতা ছিলনা।
------ রেফারেন্স প্লিজ
কুরাইশ নেতা আবু তালিবের কাছে অভিযোগ দেবার জন্য তাঁর ভাই আবু লাহাব এই কথা অতরঞ্জিত করে বলেছিল।
-------- রেফারেন্স প্লিজ
এবার ৬২ নং পেজ দেওয়া হোল ---- আগেরটা ছিল ৬১ নং পেজ
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:১১
মিশু মিলন বলেছেন: তোমরা পরিহার কর অপবিত্র বস্ত্ত অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার কর মিথ্যাকথন।’ -সূরা হজ্জ : ৩০
এই আয়াতে পরিস্কারভাবে সবধরনের মূর্তি পরিত্যাগ করার এবং মূর্তিকেন্দ্রিক সকল কর্মকান্ড বর্জন করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরো লক্ষণীয় বিষয় এই যে. উপরের আয়াতে সকল ধরনের মূর্তিকে ‘রিজস’ শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘রিজ্স’ অর্থ নোংরা ও অপবিত্র বস্ত্ত। বোঝা যাচ্ছে যে, মূর্তির সংশ্রব পরিহার করা পরিচ্ছন্ন ও পরিশীলিত রুচিবোধের পরিচায়ক
১) আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) যখন (মক্কা বিজয়ের দিন) মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন কাবা ঘরের চারপাশে তিনশত ষাটটি মূর্তি ছিল। নবী (ﷺ) নিজের হাতের লাঠি দিয়ে মূর্তিগুলোকে আঘাত করতে থাকেন আর বলতে থাকেনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [সহীহুল বুখারী, হাদিস নং ৪৭২০]
.
২) ইবনে ইসহাক বলেনঃ মক্কা বিজয়ের পর উযযা মূর্তি ধ্বংস করার জন্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খালিদ ইবনে ওয়ালিদকে প্রেরণ করেন। নাখলা নামক স্থানে একটি মন্দিরে উযযা মূর্তি স্থাপিত ছিল। কুরাইশ, কিনানা ও মুদার গোত্র এর পূজা করত এবং সেবা যত্ন ও পাহারাদারীর দায়িত্ব ছিল বনু হাশিমের মিত্র ও বনু সুলাইমের শাখা গোত্র বনু শাইবানের উপর….। খালিদ যখন সেখানে পৌঁছলেন তখন মূর্তিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে তবে ছাড়লেন এবং কাজ সম্পাদন করে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট ফিরে এলেন। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৪৫]
.
৩) তায়েফের যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর সাকীফ গোত্রের লোকেরা যখন ইসলাম গ্রহণ করে, তখন তারা রাসূল (ﷺ) এর সাথে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিল তার মধ্যে একটি ছিল এই যে, তাদের লাত নামক মূর্তিটি তিন বছর পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। এ সময়ের মধ্যে এটিকে ভাঙ্গা যাবে না। যাতে করে এ গোত্রের মূর্খ লোকদের ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়। নবী (ﷺ) তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। তারপরও তারা জোর দাবি করতে থাকল। নবী (ﷺ) বরাবরই অস্বীকার করলেন। পরিশেষে তারা মাত্র এক মাস রেখে দেওয়ার অনুরোধ করলে নবী (ﷺ) কোন মেয়াদেই তা রেখে দিতে অস্বীকার করলেন….।
.
সবশেষে তারা যখন নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল, নবী (ﷺ) তখন তাদের সাথে আবু সুফিয়ান ও মুগীরা ইবনে শুবাকে লাত নামক মূর্তিটি ভাঙ্গার জন্য পাঠালেন। মুগীরা ইবনে শুবা যখন হাতিয়ার হাতে নিয়ে মূর্তিটির ঘরে প্রবেশ করলেন, তখন বনী মুগীসের লোকেরা মুগীরাকে হেফাযতের জন্য তার চারপাশে ঘুরাফেরা করছিল। কারণ তাদের আশঙ্কা ছিল উরওয়ার মত তাকেও তীর নিক্ষেপে হত্যা করা হয় কিনা (ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার কারণে বনী সাকীফ গোত্র পূর্বে উরওয়া বিন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে শহীদ করে দিয়েছিল)। আর বনী সাকীফের মহিলারা মূর্তিটির জন্য বিলাপ শুরু করে দিল। তিনি মূর্তিটি ভেঙ্গে সেখানকার সকল ধন-সম্পদ নিয়ে আসলেন….।
.
তায়েফের ঘটনা থেকে প্রমাণ মিলে যে, ভেঙ্গে ফেলার ক্ষমতা থাকলে শিরক ও তাগুতের আড্ডাকে একদিনের জন্যও অবশিষ্ট রাখা জায়েজ নেই। কেননা এগুলো হচ্ছে শিরক ও কুফরের নিদর্শন এবং সর্বাধিক গর্হিত কাজ। সুতরাং ক্ষমতা থাকলে এগুলোকে বহাল রাখা কখনোই বৈধ নয়। [মুখতাসার যাদূল মাআদ কিতাব থেকে সংগৃহীত]
.
৪) খলিফা ওয়ালিদ বিন আব্দুল মালিকের খিলাফতকালে কুতাইবা ইবনে মুসলিম জিহাদ ও সন্ধির মাধ্যমে মুশরিকদের নিকট থেকে সমরকন্দ বিজয় করেন। উক্ত শহরে একটি মসজিদ ও মিম্বার তৈরির পর কুতাইবা শহরে প্রবেশ করেন। তিনি মসজিদে সালাত আদায় করেন, খুতবা দেন ও খাদ্য গ্রহণ করেন। অতঃপর সমরকন্দের মুশরিকদের মূর্তিগুলো তাঁর সামনে উপস্থিত করা হল এবং সেগুলোকে স্তুপ করে রাখা হল। মূর্তির সংখ্যা এত বেশি ছিল যে, স্তুপটি একটি বিরাট প্রাসাদের রূপ ধারণ করল। তারপর তিনি এগুলোকে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। তারা তখন ক্রন্দন ও বিলাপ করতে লাগল। এক অগ্নিপূজারী বলল, এগুলোর মধ্যে একটি পুরানো দেবী আছে। যে এটিকে পুড়াবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। সমরকন্দের বাদশাহ গাওরাক এগিয়ে আসলেন এবং এ কাজ করতে নিষেধ করলেন। আর কুতাইবাকে বললেন, আমি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী, আপনি এরূপ কাজ করবেন না। কুতাইবা দাঁড়ালেন ও অগ্নিশিখা হাতে নিলেন এবং বললেন, আমার নিজের হাতে এটিকে পুড়াবো, তোমরা সকলে মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর, তোমাদেরকে বেশি সময় দেওয়া হবে না। তারপর তিনি এটির কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহু আকবার বললেন ও তার উপর অগ্নিশিখা ফেলে দিলেন। তারপর তা পুড়ে গেল। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৪৭]
.
১৫| ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৩
ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: আসিফ মহিউদ্দীনের উত্তরসূরিদের সাথে প্যাচাল পারা বাদ দিয়েছি বহু আগেই।
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০০
মিশু মিলন বলেছেন: আমি আসিফ মহিউদ্দিনের উত্তরসুরী নই। আমি যখন এই ব্লগে লিখতে শুরু করেছি, আসিফ সম্ভবত তখন নাবালক।
১৬| ১৮ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
জ্যাকেল বলেছেন: এই লেখার উদ্দেশ্য কেচাল সৃস্টি করা। অসভ্যতার আহ্ববানে ভরপুর এই লিখা।
১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৩
মিশু মিলন বলেছেন: সভ্যতা কী তবে নিজের মাকে জাহান্নামী বলা, পূর্ব-পুরুষের মূর্তি ধ্বংস করা, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের হত্যা ও উচ্ছেদ করা, মানুষের সম্পদ লুটপাট করা, নারীদের গনিমতের বাল বানিয়ে ধর্ষণ করা!!
১৭| ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৭
ধুলো মেঘ বলেছেন: এভো, আপনি একই কুমিরের বাচ্চা বারবার দেখাচ্ছেন, তাই আমি একই কথা আবারও বলছি। রেফারেন্স হচ্ছে আপনার স্ক্রীনশট। দেব-দেবীকে গালাগালি করার কথা মুশরিকরাই বলেছে। নবীজি নিজে বলেন নি। সেই সময়ে মুশরিকদের সবচেয়ে বড় নেতা ছিল যথাক্রমে আবু লাহাব, তারপরে ছিল আবু জেহেল, তারপরে ছিল উমাইয়া, তারপরে ছিল উতবা। কাজেই যারা এই অভিযোগ নিয়ে এসেছিল, নিঃসন্দেহে আবু লাহাব ছিল তাদের নেতা।
১৮| ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:১০
এভো বলেছেন: @ধুলো মেঘ কমেন্ট ১৭
দেব-দেবীকে গালাগালি করার কথা মুশরিকরাই বলেছে
----- আপনি কি স্কিন সট দুটো ভাল করে পড়েছেন ? যাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করা হয়েছে --- তারা নালিশ করবে ? নাকি যে ধর্মানুভুতিতে আঘাত করেছে সে বলবে ?
নবীজি নিজে বলেন নি
তার বিরুদ্ধে গালাগালির অভিযোগ করা হয়েছে , তিনি নিজে কেন বলবেন যে -- আমি গালাগালি করেছি ? বরং তিনি বলেছেন তার এক হাতে চাদ এবং অপর হাতে সুর্য এনে দিলেও তিনি এসব বন্ধ করবেন না ।
ইবনে হিশামের সিরাত গ্রন্থে বলা হয়েছে-- যত দিন দেব দেবিকে কোন গালাগালি করা হয় নি তত দিন তারা কিছু বলেন নি । যখন গালাগালি শুরু করা হয় , তখন তারা ক্ষেপে যায়
১৯| ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭
আলামিন১০৪ বলেছেন: ধর্ম একটাই। মানুষ যুগে যুগে একশ্বরবাদী ধর্মের বিকৃকি ঘটিয়েছে। সনাতন ধর্মের আদিও ছিল পরম আরাধ্য এক ব্রাহ্মনের (click উপাসনা। অপেক্ষা করুন। আমরাও অপেক্ষা করছি।
”তারা কি এরই অপেক্ষা করছে যে, তাদের নিকট ফেরেশতাগণ হাযির হবে, কিংবা তোমার রব উপস্থিত হবে অথবা প্রকাশ পাবে তোমার রবের নিদর্শনসমূহের কিছু? যেদিন তোমার রবের নিদর্শনসমূহের কিছু প্রকাশ পাবে, সেদিন কোন ব্যক্তিরই তার ঈমান উপকারে আসবে না, যে পূর্বে ঈমান আনেনি, কিংবা সে তার ঈমানে কোন কল্যাণ অর্জন করেনি। বল, ‘তোমরা অপেক্ষা কর, আমরাও অপেক্ষা করছি’।” ৬: ১৫৮
১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০০
মিশু মিলন বলেছেন: আমার ব্লগে ওয়াজ করা নিষেধ।
২০| ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩০
ধুলো মেঘ বলেছেন: এভো বলেছেনঃ ইবনে হিশামের সিরাত গ্রন্থে বলা হয়েছে-- যত দিন দেব দেবিকে কোন গালাগালি করা হয় নি তত দিন তারা কিছু বলেন নি । যখন গালাগালি শুরু করা হয় , তখন তারা ক্ষেপে যায়।
আমি এই পেজটি স্ক্রীনশট দেখতে চাই।
২১| ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
এভো বলেছেন: ধুলো মেঘ বলেছেন: এভো বলেছেনঃ ইবনে হিশামের সিরাত গ্রন্থে বলা হয়েছে-- যত দিন দেব দেবিকে কোন গালাগালি করা হয় নি তত দিন তারা কিছু বলেন নি । যখন গালাগালি শুরু করা হয় , তখন তারা ক্ষেপে যায়।
আমি এই পেজটি স্ক্রীনশট দেখতে চাই
------- আমার কমেন্ট যেটার নাম্বার ৭ সেখানেই স্কিন সটটা আছে , সেটার প্রথম প্যারা যেটা হাইলাইট করা হয়েছে সেখানেই পেয়ে যাবেন, যেখানে সমালোচনা শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে --- এই সমালোচনাটা প্রকৃত পক্ষে গালাগালি , সেটা তিন নাম্বার হাইলাইট করা প্যারাতে পেয়ে যাবেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৩
অধীতি বলেছেন: তথ্যবহুল লেখা। ধর্ম নিয়ে যুদ্ধের বেলায় বিষয়গুলো আলাদা দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে হবে।