নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোনায়েদ সাকি-তাসলিমাদের খপ্পরে পড়লে, শীতে ঠক ঠক করে কাঁপবে বাংলাদেশ

২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৫





সম্ভবত ২০১৮-১৯ সালের কথা। তীব্র শৈত্য প্রবাহের রাতে পেশাগত কারণে গেছি জোনায়েদ সাকি-তাসলিমা আখতারের বাসায়, সঙ্গে দুই সহকর্মী আইটি ও ক্যামেরা পারসন। তখন গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন চলছিল, জোনায়েদ সাকির স্ত্রী নারী শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক তাসলিমা আখতারকে জার্নালে যুক্ত করতে গিয়েছিলাম। আমরা সময়ের অনেকটা আগেই পৌঁছে গিয়েছিলাম। কলিংবেল বাজাতেই তাসলিমা গেট খুলে আমাদের নিয়ে গেলেন তার কাজের রুমে। বেশ বড় বাসা, কিন্তু বীভৎস অগোছালো! তিনি পিসিতে কাজ করতে লাগলেন, আমরা তিনজন তীব্র ঠান্ডায় খালি পায়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। সেই রুমে বসার আর কোনো চেয়ার নেই, তিনি আমাদের বসার ব্যবস্থাও করলেন না! আমরা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম! ফ্লোর ভীষণ ঠাণ্ডা, শীতে আমাদের খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। আমরা সহকর্মীরা বিব্রতচোখে একে-অন্যের দিকে তাকাচ্ছিলাম। কেননা এমন অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য প্রথম, কোনো অতিথির বাসায় এমন বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়িনি। তাসলিমা কাজের ফাঁকে টুকটাক কথা বলছিলেন আমাদের সঙ্গে। আমি কখনো কখনো এক পায়ের ওপর আরেক পা রেখে দাঁড়াচ্ছিলাম। ত্রিশ মিনিট পেরিয়ে যাবার পর তাসলিমার উপলব্ধি হলো যে আমরা তীব্র ঠান্ডা ফ্লোরে দাঁড়িয়ে আছি, এবং অস্বস্তিবোধ করছি! তিনি বললেন, ‘আপনাদের তো ঠাণ্ডা লাগছে, আসেন স্যান্ডেল পায়ে দেন।’

তার সঙ্গে সদর দরজার কাছে গিয়ে তিনজন স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে আবার রুমে ফিরে এলাম। কিন্তু আমাদের বসার ব্যবস্থা করলেন না। আমরা স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। ভীষণ অগোছালো রুম, এলেমেলো বইয়ের গাদার দিকে আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে তিনি বললেন, আসলে আমরা তো বাইরে থাকি, ঘর-টর গোছানোর সময় পাই না।’

তিনি এবার ঢাকা-১২ আসনে এমপি প্রার্থী, যিনি নিজের ঘর গোছাতে পারেন না, তিনি দেশ গোছাবেন কী করে! এর মধ্যে সাকি বাসায় আসেন, টুকটাক কথা হয়। টকশোতে দেশ উদ্ধার করেন, কিন্তু তিনিও আমাদের বসার ব্যবস্থা করেন না।

আমরা সাড়ে এগারোটায় তাদের বাসায় ঢুকেছি, তাসলিমাকে বারোটা বিশে যুক্ত করার কথা, সেটা ধাক্কা খেয়ে বারোটা চল্লিশ হয়েছে। দাঁড়িয়ে থেকেই বারোটা চল্লিশে তাকে যুক্ত করি। প্রোগ্রাম শেষ হয় একটায়। এই দেড় ঘণ্টা আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম, তার মধ্যে ত্রিশ মিনিটের বেশি খালি পায়ে ঠান্ডা ফ্লোরে!

প্রোগ্রাম শেষ হলে জোনায়েদ সাকি আমাদেরকে বাসার নিচে এগিয়ে দেন, আর গাড়িতে উঠার আগে বলেন, ‘আপনাদের চা খাওয়াতে পারলাম না!’

আসলেই চা খাওয়ানোর জন্য দেড় ঘণ্টা বড্ড কম সময়!

শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, এরশাদ। এরা ব্যতিত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জেএসডি, গণফোরামের বড় বড় নেতা, এমপি-মন্ত্রীদের বাসায়-অফিসে গেছি। এই শহরের বড় বড় ব্যবসায়ী, আইনজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের বাড়িতে গেছি। কিন্তু সাকি-তাসলিমার বাসার মতো অপমানিত বোধ করিনি কোনোদিন। বসা তো সাধারণ ভদ্রতার ব্যাপার, দু-একজন সামরিক কর্মকর্তা ব্যতিত না খেয়ে আসতে দেয়নি কেউ। অনেকে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করেছেন। বাইরে থেকে থালি অর্ডার দিয়ে আনিয়ে খাইয়েছেন। একবার নজরুল ইসলাম বাবু ভাইয়ের বাসায় গেছি, তিনি তখনও বাসায় আসেননি। ভাবী আমাদের নাস্তা এনে দিলেন। এরপর বাবু ভাই এলেন, জার্নালে যুক্ত হলেন। বললেন, ‘ভাত খেয়ে যেতে হবে।’

বললাম, ‘ভাই, আমরা অফিস থেকে খেয়ে আসছি। আসার পর ভাবী নাস্তা দিয়েছেন, নাস্তা খেয়েছি।’

বললেন, ‘নাস্তা খেয়েছেন, আমি তো দেখি নাই।’

কে শোনে কার কথা! হাত ধরে টেনে ডাইনিং নিয়ে চেয়ারে বসালেন। এই হলো প্রকৃত রাজনীতিকের আন্তরিকতা, রাজনীতিকের পাগলামী! সব বড় দলের নেতাদের মধ্যেই এমন আন্তরিকতা দেখেছি। দেখেছি যিনি যত বড় নেতা, তিনি তত বেশি আন্তরিক। তারা মানুষের নেতা। সাকিদের মতো সঙ্গে ভাড়া করা লোক নিয়ে ঘোরেন না। প্রেসক্লাবে একটা মানববন্ধন করতে হলেও চারশো টাকা মজুরিতে সাকিদের লোক ভাড়া করতে হয়।

না, সাকি-তাসলিমা খাওয়াননি, তাতে মোটেই অখুশি নই। আমরা খেতে যাইনি। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডায় তিনজন মানুষকে দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখবেন! রাস্তার একটা কুকুর কাছে এসে দাঁড়ালেও তো আমি তাকে উপেক্ষা করি না, ওর গায়ে হত বুলাই, খাওয়াই।
এই রকম মানবিকতা নিয়ে তাসলিমা শ্রমিক-আন্দোলন করেন! আসলে মানবতা-টতা কিছু নয়। এই শ্রমিক-আন্দোলন তার বাণিজ্য। রাজনীতিও সাকি-তাসলিমার তাদের কাছে বাণিজ্য।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় বসে দুর্নীতি-টাকা পাচার যা-ই করুক, জনগণের জন্য কাজও এরাই করে বা করবে। জনগণকে যতটুকু সম্মান দেবার তা এরাই দেয়, এরাই দেবে। সারাদেশে জোনায়েদ সাকি-তাসলিমার দলের পাঁচ হাজার ভোটও নেই, তাতেই তীব্র শীতে দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তারা এমপি হলে, বাংলাদেশ তাদের খপ্পরে পড়লে, আমাদের মতোই অবস্থা হবে, শীতে ঠক ঠক করে কাঁপবে বাংলাদেশ!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:২৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দারুণ লিখেছেন সাকিদের নিয়ে ।

২১ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:২৬

মিশু মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.