![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম চট্টগ্রামের এক হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে মারা গেলেন। ১৫ মার্চ শুক্রবার রাত বারটায় তিনি মারা যান। বিবিসি বাংলা তাঁর মৃত্যুর খবর প্রতিবেদনে লিখেছে,
" বাংলাদেশের বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ, অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম আজ চট্টগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। মহাবিশ্বের উদ্ভব ও পরিণতি নিয়ে মৌলিক গবেষণার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। "
বিবিসি লিঙ্ক
তিনি গণিতজ্ঞ ছিলেন, ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিদ। তাঁকে স্মরণ করে এক ব্লগের একজন ব্লগার লিখেছেন, " ১৯৮৪ সালে কেমব্রিজে একজন পূর্ণ প্রফেসরের বেতন ছিল বাংলাদেশী টাকায় মাত্র সোয়া লক্ষ টাকা! আর একই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রফেসরের বেতন ছিল অনেক, তিন হাজার টাকা! গবেষণার সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রেও এরকম আকাশ পাতাল ব্যবধান। এই রকম গবেষণার সুযোগ, নিশ্চিন্ত জীবন আর বিশ্বব্যাপী খ্যাতির সম্ভাবনাকে পেছনে ফেলে নিজের দেশে চলে আসতে পারেন এমন মানুষের সংখ্যা ১৯৮৪ সালে মাত্র একজন ছিল।"
ব্লগের লিঙ্ক
প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম বড় মাপের মানুষ ছিলেন সবদিক দিয়ে। আমি কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যিালয়ে বেড়াতে যাই। সেখানে শুনলাম তাঁর কথা। ২০০৭-৮ সালে পুরো বাংলাদেশে জরুরী অবস্থা জারি ছিলো। সবখানে দমবদ্ধ এক অবস্থা। সেই সময়ে চবিতে র্যাব মোতায়েন করা হয়েছিল। তিনি একবারে সকালে চবিতে বেড়ানোর সময় দেখতে পান। র্যাবের গাড়ি। তিনি তৎক্ষণাৎ র্যাবের অফিসারকে ডেকে সেখান থেকে চলে যেতে বললেন। শিক্ষার ক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন শৃঙ্খলাবাহিনীর দরকার এটা ভেবেই হয়তো তিনি র্যাবকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেছিলেন।
তিনি কোনো কিছু পাবার জন্য বা প্রক্টর-প্রভোস্ট-ভাইস চ্যাঞ্চেলর হবার জন্য বা অন্য কেউকেটা হবার জন্য কারো কাছে ধর্ণা দেন নি এবং আসলে তাঁকে নিয়ে এই কথা বলাটাই আমাকে লজ্বায় ফেলছে।
আজ আমরা জাফর ইকবাল স্যারে কথায় আসি। জাফর ইকবাল স্যার হয়তো অনেক দিক থেকে অনেক ক্ষেত্রে সমালোচনা-নিন্দা পাবার মতোই অবস্থান নেন।
কিন্তু এই জামাল নজরুল ইসলাম স্যার নিজ আদর্শকে স্থির রেখেছেন। থেকেছেন সবসময় নিপীড়িত-নির্যাতিতদের সাথে। তিনি কারো কাছে গিয়ে করুণা প্রকাশ করেন নি। বরং মর্যাদা ও সাহস দিয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে আমার মনে হয়েছে একজন আপনকে হারিয়েছি।
দেশের প্রেক্ষাপটেই বলছি, যখন সেক্টর কমান্ডা কর্নেল কাজী নূর উজ্জামান মারা গেলেন তখন আমাকে নাড়া দিয়েছে। যখন আজীবন বিপ্লবী প্রাণেশ সমাদ্দার মারা গেলেন তখন আমি ভেবেছি একজন আপন হারিয়েছি। দেশের মধ্যে অনেকেই মারা যায়। কিন্তু এই ম্যান অব প্রিন্সিপাল বা সত্যিকারের মানুষগুলো যখন মারা যায়, এবং যখন দেখি তাদের সম্মান জানাতে কুন্ঠা করে এই দেশ তখন সত্যিই খারাপ লাগে।
মন থেকেই বলছি, আর যারা এ যাবৎ অনেকেই মারা গেছেন এবং তারা অবশ্যই স্ব স্ব ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা রেখেছেন; কিন্তু আজীবন সৎ-বিপ্লবী জীবন কয়জনই বা কাটিয়ে দিতে পেরেছেন? সবাই জীবনের কোনো সময়ে জীবনের লোভ-লালসা-খ্যাতি-ক্ষমতার লোভে পরেছেন। কিন্তু যে তিন জনের নাম আমি বললাম, তাঁরা জীবন পর্যন্ত যে নিজের বিবেককে কারো কাছে গছিয়ে দিয়েছেন তা তাঁদের ঘোরতর সমালোচনাকারীরাও বলবেন কিনা আমার জানা নেই।
ম্যান অব প্রিন্সিপাল বা নৈতিকভাবে বড় মাপের মানুষদের এই দেশ আরো বেশী সম্মান দিতে শিখবে এই প্রত্যাশা।
১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:১৯
মিঠুন চাকমা বলেছেন: মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫১
এম.এস. রানা বলেছেন: এত বড় মাপের বিজ্ঞানী হয়েও স্যারের মত নির্মোহ আর নিরহংকারী মানুষ আজ পর্যন্ত আমি দেখিনি। দেশ কি হারাল তা যারা ওনাকে চেনেন তারাই বুঝতে পারছেন। স্যার কখনো খ্যাতির লোভে কিছু করেননি। একটা লেখায় পড়েছিলাম অমর্ত্য সেনের নোবেল পুরষ্কারের খবর প্রথম স্যারকেই দিয়েছিলেন। স্যারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আপনাকে ধন্যবাদ স্যারকে নিয়ে লেখার জন্য।
জাফর ইকবাল স্যারের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, কোন অর্থেই জাফর ইকবাল জামাল নজরুল ইসলাম স্যারের সংগে তুলনার যোগ্য না।
৩| ১১ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:১৪
খেয়া ঘাট বলেছেন: এই ম্যান অব প্রিন্সিপাল বা সত্যিকারের মানুষগুলো যখন মারা যায়, এবং যখন দেখি তাদের সম্মান জানাতে কুন্ঠা করে এই দেশ তখন সত্যিই খারাপ লাগে।
ম্যান অব প্রিন্সিপাল বা নৈতিকভাবে বড় মাপের মানুষদের এই দেশ আরো বেশী সম্মান দিতে শিখবে এই প্রত্যাশা।
সুন্দর একটা লিখা, মিস করেছিলাম। অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:০২
নুসরাতসুলতানা বলেছেন: জাফর ইকবালের সাথে ডঃ জামালকে তুলনার প্রশ্নই আসেনা।কাজী নুরুজ্জামান ডঃ জামাল এর আপন বোনজামাই। নৈতিকভাবে বড় মাপের মানুষদের সম্মান দিতে শিখবে এ প্রত্যাশা-সহমত।