নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ব্লগার মিজান

তথাকথিত কোন মানুষ আমি নই, একজন সাধারণ মানুষ। ট্রাই টু চেইন্জ দ্যা ওয়াল্ড

ব্লগার মিজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাংস্কৃতিক আগ্রাসন : একটি জাতিকে মেরুদণ্ডহীন করার দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্র।

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪০

সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হল কোন যুদ্ধ ছাড়াই একটি জাতিকে সরব বা নিরব দাসে পরিণত করা।

Aggression - ইংরেজি এই শব্দটির বাংলা অর্থ হচ্ছে বিনা উত্তেজনায় আক্রমণ করা। অথবা অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করা বা আক্রমণ করা। প্রথম বিপক্ষতাচারণ, প্রথম আঘাত বা আক্রমণ।



অনুপ্রবেশের পথঃ

১• রেডিও

২• ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া

৩• বিজ্ঞাপন শিল্প

৪• সংগীত শিক্ষালয়

৫• নাট্যবিদ্যালয়

৬• নাট্যশালা

৭• আর্ট ইশকুল

৮• ফ্যাশন শো

৯• সংগীত ও অভিনয় প্রতিযোগিতা

১০• সুন্দরী প্রতিযোগিতা

১১• সংবাদপত্র

১২• ম্যাগাজিন

১৩• পাঠ্যপুস্তক

১৪• সাহিত্য

১৫• সেমিনার

১৬• এনজিও

১৭• হাসপাতাল

১৮• বিউটি পার্লার

১৯• শিক্ষাবৃত্তি

২০• ক্লাব বা সমিতি

২১• সাংস্কৃতিক সফর এবং

২২• চলচ্চিত্র



এসব ছাড়াও আরো বিভিন্ন পথ থাকতে পারে, তবে এসবের সাথে জড়িতরা বেশিরভাগই তাদের কার্যক্রমের ফল বা ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জ্ঞাত নন অথবা অসচেতন। তবে নিঃসন্দেহে সবাই নিজস্ব বিশ্বাস এবং বিশ্বাস অনুযায়ী কর্তব্য কর্ম থেকে বিচ্যুত। তদের ধারণা দেয়া হয়েছে, জাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। এই অহংকারে বিশ্বাস অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমান, যুগে যুগে আল্লাহ নবী-রাসূল কেনে পাঠিয়েছেন এবং মৃত্যুর পরে কেমন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে, এসব বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান লাভে তাদের অনিহা।



আসলে অপসংস্কৃতি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মানুষের রিপুকে তাড়িত করে এবং যা তারা করছে সে বিষয়ের ধারণাকে একান্ত বিশ্বাস হিসেবে তাদের চিন্তারাজ্যে প্রতিষ্ঠিত করে। তার বাইরে অন্যকোনো বিশ্বাসের দিকে তারা ধাবিত হবার মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলে। আল কুরআন ও হাদীসের দৃষ্টিতে এ ধরণের মানুষ যতোটা না তৌহিদবাদী তার চেয়ে অনেক বেশি শিরককারী।



অপসাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অবৈধভাবে প্রেম করার কৌশল, ভাষা বিন্যাস, পোষাকের স্টাইল, চুল-চেহরার বিন্যাস, পিতা-মাতার নফরমানী, আত্মহত্যায় হত্যায় উদ্বুদ্ধ করা- এধরণের যতো অনাচার ও সংকীর্ণতা প্রতিষ্ঠিত করা হয়। যুব থেকে বৃদ্ধদের মন-মস্তিষ্কে ব্যাভিচার করার আগ্রহ সৃষ্টি করা হয়। এতে করে মানুষের সৃজনশীল শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়, মানুষ হয় পরিশ্রম বিমুখ এবং ধীরে ধীরে পরনির্ভর হয়ে রিজিক রোজগারের জন্য হাহাকার করে মরে। অথচ বলা হচ্ছে [অপ] সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড মানুষকে আনন্দ দেয়। তার শরীরের মধ্যে নিউক্লিয়াস, নার্ভাস সিস্টেম, নিউরন, কোষ, প্রটোপ্লাজম এসবের পরিবর্তন সাধিত হয়ে সে নতুন করে কর্মউদ্দীপনা লাভ করে।



সংস্কৃতির দু'টি দিক

১• বৈষয়িক সংস্কৃতি- যথা, জমিজমা, দালানকোঠা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ।



২• মানসিক সংস্কৃতি- যা অনুপ্রবেশের পথ শিরোনামে বলা হয়েছে। উক্ত দু'টি শক্তি বাংলাদেশে মানসিক সংস্কৃতি প্রচার-প্রসার ও প্রতিষ্ঠা লাভে দালালদেরকে সহায়তা করছে বৈষয়িক সংস্কৃতির জোগান দেয়ার মাধ্যমে।



বৈষয়িক সংস্কৃতির পথঃ

১• বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব তৈরি, দালাল শ্রেণি ও প্রচার মাধ্যমে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে ‘তারকা' খ্যাতি দিয়ে জনপ্রিয় করে তোলা।

২• শাসনযন্ত্রে, আইন ব্যবসায়, মিডিয়ার বিভিন্ন শাখায় এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাদের দালাল শ্রেণিকে প্রবেশ করানো।



একটা পরিসংখ্যানে দেখা যায় বৃটিশ-আমেরিকানরা ১৯৫১ সালে চীনে ৫০৪টি হাসপাতাল, ৯০৫টি ডিসপেন্সারি, ৩২টি খ্রিস্টিয় মিশনারী, ৩২০টি এতিমখানা, ৪০টি নার্সিং ইশকুল, ৩১টি কুষ্ঠরোগ চিকিৎসাকেন্দ্র, ১২টি প্রোটেস্ট্যান্ট কলেজ পরিচালনা করেছে। ৩৫ হাজার চাইনিজ ক্যাথলিক মিশন কাজ করেছে। তারা বহুসংখ্যক সরকারী কর্মচারিকেও ট্রেনিং দিয়েছে। পরবর্তীকালে নিজেদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার জন্য মাও সেতুং এসব প্রতিষ্ঠানকে ব্যান্ড করেন অথবা চাইনিজ দালালদেরকে উৎখাত করে চাইনিজ সংস্কৃতির বাহকদের নিয়োগ দেন।



আজও ভারতে বাংলাদেশী চ্যানেল দেখানো হয় না। এবং সেখানকার কোনো পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক খবর ছাপানো হয় না। চীন, হংকং, সিংগাপুরে বিদেশী সংস্কৃতির প্রবেশ একপ্রকার নিষিদ্ধ। তাদের বক্তব্য হলো দেশের সকল মানুষ যখন দেশজ সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণভাবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে তখনি বিদেশী সংস্কৃতি উন্মুক্ত হবে। আর দেশজ সংস্কৃতি প্রচলনের জন্য ঐসব দেশের সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।



সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিকদের স্মরণ রাখা দরকার, একমাত্র ইসলাম পরিবার ব্যবস্থাকে শান্তিময় করেছে। পিতা-মাতা, শিক্ষক-অভিভাবককে সম্মান দিতে শিখিয়েছে, মেহমানদারী করতে শিখিয়েছে, বিপন্নকে বুকে তুলে নিতে বলেছে, গরীবদেরকে দান করতে শিখিয়েছে মোট কথা সকলপ্রকার কু-সংস্কার ও অপসংস্কৃতিকে ধ্বংস করে মানবতার কল্যাণকে প্রতিষ্ঠিত করতে শিখিয়েছে।



অপসংস্কৃতিকে প্রতিহত করা দরকার দুটি পন্থায়।

১• ইসলামী সংস্কৃতি সম্বন্ধে অভিজ্ঞদেরকে এগিয়ে আসা এবং নেতৃত্বকে সেইসব অভিজ্ঞদেরকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করার সুযোগ প্রদান করা। সংগে সংগে আধুনিক যান্ত্রিকতা সম্পর্কে অভিজ্ঞ করে তোলা।

২• অপসংস্কৃতির বাহক ও দালাল শ্রেণির মাঝে ইসলামের জ্ঞান পৌঁছানো। সংগে সংগে অপসংস্কৃতির প্রচারকারীদের সকল প্রকার মাধ্যমকে একতাবদ্ধ হয়ে পরিত্যাগ করা। পত্রিকা থেকে শুরু করে কোমল পানিয় পর্যন্ত সবকিছু।



আমাদের সবাইকে এই অপসংস্কৃতির আগ্রাসন মোকাবেলায় ইসলামের সুমহান আদর্শকে ধারণ করে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মানে এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.