নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিজান রহমান

সাংবাদিক মিজান রহমান

Now we served Daily Bangladesh Shomoy sr. journalist

সাংবাদিক মিজান রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাঁত শিল্পের অতীত ও বর্তমান অব¯’া

২৩ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:৫২









তাঁত শিল্পের অতীত ও বর্তমান অব¯’া

মিজান রহমান



বাংলাদেশের একটি বিরাট সম্ভাবনাময় শিল্প তাঁত। দেশের অনেক জেলায় এ তাঁত শিল্প গড়ে উঠেছে। আবহমান কাল থেকে তাঁতী সমাজ তাদের নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের কাপড়েরর চাহিদা মেটায়। দেশের চাহিদা মেটানোর পরেও বিদেশে আমাদের তাঁতজাত কাপড় রফতানি হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে জামদানী কাপড় সারা বিশ্বে সুপরিত।

দেশের মোট কাপড়ের চাহিদার শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ যোগন দি”েছ তাঁত শিল্প। ৫০ লাখ লোক সরাসরি তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত রয়েছে। এক হিসেবে মতে দেখা গেছে আগের তুলনায় এ শিল্পের সাথে জড়িত লোকদের সংখ্যা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। তথাপিও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এ শিল্পের সাথে এখনো ওপপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে।

বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে সঙ্গে তাঁত শিল্প টিকে থাকতে না পারলে তাঁতী পরিবারের ছেলে মেয়েদের কর্মসং¯’ানের, জীবিকা নির্র্বাহের কি ব্যব¯’া হবে সে প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে পারে। তারা কি সহজে অন্য পেশা গ্রহণ করতে পারবে? নাকি কর্মসং¯’ানহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদেরকে বেকার হয় যেতে হবে? নানা প্রতিকুলতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ সমাজ টিকে থাকতে পারছে না, তাই এ পেশা ছাড়তে অনেক তাঁতী অন্য পেশায় যোগ দি”েছ বা বেকার হয়ে যা”েছ। কেউ কেউ তাদের ঐতিহ্য পেশাকে কোন মতে আকড়ে রয়েছে। একটু আগের ঘটনÍ দিকে আলোকপাত করলে দেখা যায়, কুটির শিল্প হিসেবে হস্তচালিত তাঁত শিল্প বৃটিশ পূর্বকালে কেবল দেশেই নয় বর্হিবাণিজ্যেও বিশেষ ¯’ান দখল করেছিল। বংশ পরম্পরায় দক্ষতা অর্জনের মধ্যদিয়ে বয়ন উৎকর্ষতায় এ দেশে তাঁতীরা সৃষ্টি করেছিল এক অনন্য ¯’ান। কিš‘, বৃটিশ আমলে অসম করারোপ, তাঁত ব্যবহারের উপর আরোপিত নানা বিধি নিষেধ, বৃটিশ বস্ত্রের জন্য বাজার সৃষ্টির নানা অপকৌশলের কাছে তাঁতী সমাজ তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেনি। ক্রমান্বয়ে তাঁত শিল্পে সংকট ঘনীভূত হতে থাকে। স্বাধীনতার পরও সে সংকটের তেমন কোন সুরাহ হয়নি। বাজার অর্থনীতি স¤প্রসারণে তাঁতীদের সমস্যা আরো জটিল করে তুলেছে। বর্তমানে মুক্ত বাজার অর্থনীতির আড়ালে হ”েছ পরোক্ষ আগ্রাসনের শির্কা নানা ধরণ, নানা রং, নানা ডিজাইনের কাপড়ের অবাধ প্রবেশের ফলে বাজার চলে গেছে সনাতনী তাঁতীদের প্রতিকূলে। মুদ্রা অর্থনীতির প্রসারের পলে দেখা দিয়েছে পুঁজি সংকট। সে সুযোগে মহাজনের কাছ সেবাদাসে পরিণত হয়েছে অধিকাংশ প্রান্তিক তাঁতী ও তাঁত মালিক। সুতা, রং রসায়নের জন্য মহাজনের কাছে বাধা হয়ে বাধা পড়তে হ”েছ তাঁতীদের। মহাজন ও পাইকারের পাতা জালে অনি”ছা সত্ত্বেও ধরা দিতে হ”েছ তাদেরকে।

হস্তচালিত তাঁতশিল্পের সমস্যাগুলো সহজ চিহ্নিত করতে গেলে বলা যায়ঃ (১) আধুনিক প্রযুক্তি সাথে টেক্কা দিতে হস্তচালিত তাঁতেও কিছুটা প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ নিযে আসা দরর্কা এ ব্যাপারে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ এগিয়ে আসতে হবে। (২) পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক উৎস বিশেষ করে ব্যাংক ও বিশেষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ ধরনের পুঁজি সরবরাহের ব্যব¯’া থাকা দরকার।

(৩) শিথিল প্রশান ও ভৌগোলিক অব¯’ানের কারণে চোরাচালানীর মাধ্যমে অবাধে বস্ত্র সামগ্রী দেশে প্রবেশ করছে। ফলে চোরাই পথে আসা কাপড়ের সাথে দেশীতাঁত বস্ত্র এখন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। চোরাইপথে আসা বস্ত্র সামগ্রীর ট্যাক্স দিত না হওয়ায় সেগুলো কম দামে বাজারে বিক্রি হ”েছ। দেশী তাঁতবস্ত্র তাই মানে ভালহওয়া সত্ত্বেও বাজার পা”েছ না। তাঁ বস্ত্রের বাজার তাই সীমিত হয়ে পড়ছে। পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে তাঁতীদেরকে পড়তে হ”েছ দার“ণ সমস্যায়। (৪) তৈরি পোশাক শিল্প ও তাঁতীদের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একশ্রেণীর তৈরি পোশাক আমদানীকারক বিশেষ কর ও র্শুক সুবিধায় পোশাক রপ্তানির নামে বস্ত্র আমদানি করে দেশের বাজারে তা বিক্রি করে দি”েছ। কর ফাঁকি দেয়ায় এ সকল বস্ত্র কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হ”েছ। বস্ত্রকলে তৈরি এ সকল কাপড় তাঁতবস্ত্রের বাজার সহজেই দখল করে নি”েছ। তাঁতীরা পড়ছে বিপাকে। (৫) বৈধ ও অবৈধভাবে আমদানকিৃত কাপড় পরিকল্পিত ও সুব্যব¯’াপনায় উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে তৈরি হওয়ার ফলে সেগুলোর ডিজাইন, মান ও গুণ তুলনামূলকভাবে উন্নতমানের। উন্নতমানের এ পণ্যের সাথে হস্তচালিত তাঁতে প্রসউতত কাপড় প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখার জন্য ডিজাইন ও ব্যবসায়ী পরিকল্পনার ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা দরকার, তার কোন ব্যব¯’া নেই। তাঁত বস্ত্রের ডিজাইন উন্নত আকর্ষণীয় ও বহুমাত্রিক করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যব¯’ার অভাব তাঁতীদের াব¯’ান আরো দুর্বল করে দি”েছ। তাঁতশিল্প এখনো সিংহভাগ মানুষের জন্য বস্ত্র সরবরাহ করে চলেছে। সে প্রেক্ষিতে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের জন্র পশাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যব¯’া নেই। মানুষের র“চি ও পছন্দের দ্র“ত পরিবর্তন ঘটছে। যাতায়াত, যোগাযোগ ও প্রচারণা ব্যবব¯’ার অকল্পনীয় উন্নতির কারণেই মানুষের র“চি বদল দ্র“ততর হ”েছ। পরিবর্তিত র“চি ও পছন্দের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তাঁত বস্ত্রেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগা প্রয়োজন। কিš‘ সেজন্যযে সামর্থ থাকা দরকার সাধারণ তাঁতী সমাজের তা নেই। তাই তাদেরকে সনাতনী পদ্ধতিতেই ও সনাতনী মানের বস্ত্র উৎপাদনে নিয়োজিত থাকতে হ”েছ। এ অব¯’া তাঁত শিল্পের উৎকর্ষ সাধারণের পথে বড় অন্তরায় হয়ে অব¯’ান করছে। (৬) তাঁত শিল্পের জন্য প্রয়োজন সুতা, রং, রাসায়নিক দ্রব্য ও অন্যান্য উপকরণ। এক ধরনের মধ্যসত্বভোগীর কারণে এ সকলউপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ঘটার ফলে, তাঁতবস্ত্রের উৎপাদন খরচ স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পা”েছ। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাঁতীদের প্রতিযোগিতা ক্ষমতাও কমে যা”েছ। রোকসানের ঝুঁকি বাড়ছে। অতিরিক্ত রোকসানের কারণে অনেকেই তাদের তাঁত বন্ধ রাখতে বাধ্য হ”েছ। (৭) বিশেষ ধরণের তাঁতবস্ত্র যেমন জামদানী, বেনারসী ইত্যাদির জন্য বিশ কারিগরী দক্ষতার প্রয়োজন। ঐতিহ্যের ধারা রক্ষা করে এ সকল শিল্পের জন্য মূল-কারিগর গড়ে ওঠে। এ ধরনের কারিগরের সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পা”েছ। এ সকল বিশেষ বস্ত্রের মানও তাই কমে যা”েছ। বিশেষ কারগরদের খুঁজে বের করে তাদের দক্ষতার স্বীকৃতি দান ও দক্ষতার ব্যবহার করার কোন ব্যব¯’া নেই। বিশেষ বস্ত্র বয়নে বিশেষ কারিগরী দক্ষতা তাই হ্রাস পা”েছ। তাঁত শিল্পের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে নির্ভর করছে বিশেষ কারিগরী দক্ষতার বিস্তার ঘটিয়ে পণ্যে অনন্যতা সৃষ্টি করার উপরে। বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে তাঁত বস্ত্র তেরি করতে না পারার কারণে সাধারণ বস্ত্রের সাথে আলাদা অব¯’ানে তাঁত বস্ত্রকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হ”েছ না। (৮) সময়মত রং, সুতা ও অন্যান্য উপকরণ পাওয়ার উপরে তাঁত শিল্পের উৎপাদন অনেকটা নির্ভর করে। তাঁতজাত পণ্য বিক্রির জন্য তাঁতীদেরকে সাধারণতঃ সাপ্তাহিক হাট বা বাজারের উপর নির্ভর করতে হয়। সময়মত উপকরণ না পেলে পণ্য উৎপাদন করে যথাসময়ে হাট বা বাজার ধরা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। ফলে, তাদের পুঁজি বেশীদিন আটকে থাকে ক্ষং আয়ও কমে যায়। (৯) সরকারীভাবে তাঁতশিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত উদ্যোগ ও ব্যব¯’া যথেষ্ট না। আবার সেগুলো কার্যকরও নয়। এছাড়া, সরকারী নীতি ও কর্মকাণ্ড তাঁত শিল্পের অনুকূলে বাস্তবে কম প্রতিফলিত হয়। তাঁত শিল্পের বিকাশের জন্য অপেক্ষাকৃত সংরক্ষিত আভ্যন্তরীণ বাজার, অবৈধ বস্ত্রের প্রবেশ রোধ, তাঁত বস্ত্রের উৎকর্যতা বৃদ্ধির অনুকূলে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, ডিজাইন বহুমুখীকরণ, ঋণ সহযোগিতা তাঁত পণ্য বাজারজাতকরণ ও বাজার প্রসারের বিশেষ পদক্ষেপ দরকার। কিš‘, তেমন পদক্ষেপের অনুপ¯ি’তি তাঁত শিল্পের পুনর“জ্জীবন ও বিকাশ প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। (১০) তাঁত শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের জোরালো সাংগঠনিক অনুপ¯ি’তিও তাঁতশিল্প বিকাশের পথে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাঁতীদের সমস্যা, দুরাব¯’া তুলে ধরার জন্য শক্তিশালী পেশাগত সংগঠনের অভাব বিদ্যমান। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য তাই তারা নীতি নির্ধারকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হ”েছ। পুঁজি সরবরাহ প্রাপ্তির জন্য তাঁতী সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি হ”েছ একটি তাঁত ব্যাংক ¯’াপন কর্ াএছাড়া, তাঁত বস্ত্র বাজারজাত করণের জন্য জাতীয় ভিত্তিক কার্যকর ব্যব¯’াও গড়ে তোলা দরকার। তাঁতবস্ত্রের বড় বাজার এক সময় ছিল বহিঃবিশ্বে। রপ্তানী বাজার ধরার জন্যও প্রয়োজন শক্তিশালী বাজার প্রসার-পদক্ষেপ। এ সকল বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে তাঁতী স¤প্রদায়কে সংগঠিত শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটাতে হবে।





মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:২০

মোঃ শরিফুল আলম বলেছেন: অনেক দিন আগের লিখা আজ আমার চোঁখে পরল, অনেক সুন্দর লিখেছেন


আচ্ছা ভাই আমি একটা তাঁত শিল্প গড়তে চাচ্ছিলাম কিভাবে শুরু করব একটু বলবেন কি?

কোথায় শুতা পাওয়া যাবে? কেমন দাম পরবে?
মেশিন কোথায় পাওয়া যাবে? কেমন দাম পরবে?
বিশ্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হতাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.