নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলছে চলবে

হাসান কালবৈশাখী

আমি দুর্বার, আমি ভেঙ্গে করি সব চুরমার। আমি কালবৈশাখীর ঝড়! আমার ফেসবুকইডি www.facebook.com/norwstorm

হাসান কালবৈশাখী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগে ফেবু ও ব্লগে কিছু ছেচড়া কুকুর এসব নিয়ে মাতামাতি করতো, এখন ম্যাডাম নিজেই

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৩৫

২য় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার ২ কোটি লোক প্রাণ হারিয়েছিল।
২য় বিশ্বযুদ্ধ সময়কালে ইউরোপ ও ভুমধ্যসাগর অঞ্চলে মোট ৬০ লাখ ইহুদী মারা হয়েছিল।
মাওসেতুং উথ্যান পরবর্তি সময় চীনে দুর্বিক্ষে ১ কোটির বেশী লোক না খেয়ে মারা গেছিল।

এসবগুলোই রাউন্ড ফিগার। লাশ কেউ গুনে দেখেনি।
তবুও এগুলো বাস্তব সত্য, চির সত্য। সেসব দেশের কেউ বা অন্যকেউ, এমনকি নাৎসি সমর্থক মহলগুলোও এসব নিয়ে সন্দেহ করে না। কেউ করে না। কারন গণহত্যা বাস্তব সত্য, একুরেট সংখা, তালিকা করা অসম্ভব ও অপ্রয়জনীয়। কারন সেসব দেশে আমাদের দেশের মত পাপিষ্ঠ ছাগু সমর্থক, প্রকাশ্য দেশ বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী নেই।
বাংলাদেশ বাদে পৃথিবীর কোন দেশ নিজ দেশবাসিদের উপর নৃসংস আচরনকারি খুনিদের সমর্থন করে না।
নিজদেশে নিজ দেশবাসির উপর হানাদার দ্বারা গণহত্যা অস্বীকার করে না। প্রশ্নই আসে না।
আমাদের দুর্ভাগ্য এসব দেখতে হচ্ছে।

আমাদের দুর্ভাগ্য যুদ্ধকরে জয়লাভের পরও পরাজিত পাপিষ্ঠ ছাগু, স্বাধীনতা বিরোধীদের ও তাদের সমর্থক বড় একটি দলের দেশ বিরোধী আস্ফলন দেখতে হচ্ছে।
আগে শুশিল বা বিরোধী রাজনৈতিক ছোট বড় নেতারা এসব বিতর্ক এড়িয়ে যেত। সুধু ফেবু-ব্লগে ছেচড়া কুকুরগুলো এসব নিয়ে মাতামাতি করতো।
এখন ডিসেম্বরের এই বিজয়ের মাসে বড় একটি জনপ্রীয় দলপ্রধানের মুখদিয়ে এসব শুনতে হল!
ইউরোপের কোন দেশে কেউ এইরুপ বক্তব্য উচ্চারন করলে "হলকষ্ট ডিনায়েল এক্টে" তার দেড় বছর জেল হতো কনফার্ম।

কিছু তথ্য সংযোজন।

৭২ এ ৮ই জানুয়ারী মুক্ত হয়ে বংগবন্ধু লন্ডনে বিবিসির কাছে সাখ্যাতকারে, হঠাৎ না জেনেই ৩০ লাখের কথা বলেন নি।
১০ তারিখ ঢাকায় ফিরেও একই কথা বলেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে মে মাসে গ্রানাডা টিভিতে একটি ডকুমেন্টারিতে খালেদ মোশাররফ বলেছিলেন ১০ লাখের বেশী নিহতের সম্ভাবনা। (প্রথম দু মাসেই ১০ লাখ!)

১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল ও ৭ জুন মাওলানা ভাসানী সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাছে পাকিস্তান বাংলাদেশের জনগণের ওপর যে বর্বরোচিত অত্যাচার চলছে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। মওলানা ভাসানী বিবৃতিতে আরো বলেন, বাংলাদেশের সব অঞ্চল আজ দশ লাখ বাঙালির রক্তে স্নাত এবং এই রক্তস্নানের মধ্য দিয়েই বাংলার স্বাধীনতা আসবে।

৭১ এর ২৫সে মার্চের পর পাকি সামরিক জান্তা সকল বিদেশী সাংবাদিক ঢাকা থেকে বিতারিত করেছিল। এরপর কোন বিদেশী ঢুকতে দেয়া হয়নি।
মার্কিন টেলিভিশন CBS News ও ন্যাসানাল জিওগ্রাফিক পত্রিকা 'প্রকৃতি গবেষনার' কথা বলে যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা এসে রিপোর্ট লিখেছিল -
পুর্বপাকিস্তানে ভয়াবহ গণহত্যা হচ্ছে, নিহতের সাম্ভ্যাব্য সংখা ২ মিলিয়ন ক্রস করতে পারে। (যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়েই ২০লাখ)

কবি আসাদ চৌধুরী ৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে “বারবারা বিডলারকে” নামে একটি অসাধারণ কবিতা লেখেন, সেখানে নিহতের সংখ্যা ১৫ লাখ উল্লেখিত ছিল।

লন্ডনে প্রকাশিত হ্যাম্পস্টেড এন্ড হাইগেট এক্সপ্রেস পত্রিকা, ১ অক্টোবর ১৯৭১ সালে ২০ লাখ মানুষকে হত্যার কথা বলেছে।

১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের গৌরবময় খবর প্রথম পাতায় ছাপিয়ে তাশ বার্তা সংস্থার বরাত দিয়ে সোভিয়েট পত্রিকা প্রাভদা লিখেছিল ৩ মিলিয়ন (৩০ লাখ) নিহত হওয়ার কথা। ঢাকার ইংরেজি দৈনিক অবজারভার পত্রিকা প্রাভদায় ছাপা প্রতিবেদনের আলোকে ৩০ লাখ উল্লেখ করে একটি রিপোর্ট ছাপে।

৭১ এর ডিসেম্বরে বালাদেশের পুর্বদেশ ও আজাদ পত্রিকায়ও ৩০ লাখের কথা কয়েকবার এসেছে।
ডিসেম্বর জুড়ে রেডিওতে বিপুল জনপ্রীয় চরমপত্রে ১৬ই ডিসেমবরের পর "৩০ লাখ ও একসাগর রক্তের বিনিময়ে" বলা হতে থাকে।


৪ জানুয়ারী ৭১, দৈনিক আজাদ।


ঢাকার ইংরেজি দৈনিক অবজারভার পত্রিকা ৪ জানুয়ারী ৭১ প্রাভদা পত্রিকার উধৃতি দিয়ে নিহত ৩০ লাখ উল্লেখ করে।

জামাতি লবিষ্ট নিয়জিত বাষ্টার্ড বার্গম্যান, ক্যাডম্যান ও ভাড়াটে লেখক শর্মিলা বসু একবারও বাংলাদেশে না এসে কোন সুত্র, রেফারেন্স উল্লেখ না করেই ৩ মিলিয়ন সংখাটিকে নজিরবীহিন বলেছেন। জনসংখার ৪% নিহত হওয়া 'অবিশ্বাস্য', বলে আসছেন।
চতুর ভাড়া করা ফরমাসেয়ি লেখক এদেশে না এসে মাঠপর্যায়ে কোন অনুসন্ধান না করে এসেই কথিত টেবিল গবেষনা দিয়ে কিভাবে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করছে ভাবাই যায় না।

অথচ কম্বোডিয়ার খেমারুজরা ২৬০ দিনে তাদের দেশের জণসংখার ২১% খতম করেছিল,
রুয়ান্ডায় ১০০ দিনের দাংগায় মোট জনসংখ্যার ২০% নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছিল।
চীনের নানকিং শহর মাসাকারে এক মাসেই ৩ লাখ নিহত হয়েছিল,
আর্মেনিয়ায় জনসংখ্যা ছিল ৪৩ লাখ। তুর্কি যোদ্ধারা জোড়পুর্বক বাস্তুচুত করে ভিন্ন স্থানে সরিয়ে দিতে নৃসংস ভাবে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনিয় (জনসংখ্যার ৩৫%) হত্যা করেছিল।

আর বাংলাদেশে, ৮ কোটি জনগণের দেশে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, বিধ্বস্ত চিকিৎসাসেবা (মানুষ স্বল্প আহত হলেই বিনা চিকিৎসা ঔসধপত্রের অভাবে মৃত্যু) আর দেড় লাখ পাকি সৈনিক আর দুই লাখ প্রশিক্ষিত মুজাহিদ-রাজাকার নিয়ে ৩০ লাখ ফিগার, মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪% মানুষের মৃত্যু এদের কাছে অবিশ্বাস্য অসম্ভব মনে হয় কোন কারনে?
১ কোটি শরনার্থি ভারতে যাওয়ার পথেই তো অনেক অসুস্থ বয়বৃদ্ধ মারা পরেছিল। ভারতীয় শরনার্থি শিবিরেও লক্ষাধিকের মৃত্যু হয়েছিল।

পাকিস্তান যুদ্ধ শেষে পরাজয়ের কারন অনুসন্ধান করতে "বিচারপতি হামিদুর রহমান তদন্ত কমিশন" প্রতিবেদনে দেখা যায় - পূর্ব পাকিস্তানে নিয়জিত সামরিক-আধাসামরিক সেনা সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষনের যতেচ্ছ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল। হিন্দু ও আওয়ামী সমর্থকদের দেখা মাত্র হত্যা করতে নির্দেশ ছিল। আর ইয়াহিয়া নিয়াজি সহ সব জেনারেলরা ঘোষনাই দিয়েছিল পুর্বপাকিস্তানে লক্ষাধিক হত্যা করতে। লাহরে পাকিস্তানি সেনাদের এক বৈঠকে ইয়াহিয়া খান বলেছিলেন, ‘Kill 3 million of them and the rest will eat out of our hands’. এখানে সুস্পষ্ট যে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রথম থেকেই পরিকল্পনা ছিল লক্ষ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করে জনসংখার বড় একটি অংশ কমিয়ে ফেলতে।

১৯৭০-৭১ এ বিপুল সংখক মানুষ হঠাৎ নিহত বা নিখোজ হওয়ার অকাট্য প্রমান পাওয়া যায় UNDP এর পপুলেশান গ্রোথ ইন্ডেক্সে মানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তালিকায়, হঠাৎ ড্রপ। 6.5 মিলিয়ন মিসিং ৬৫ লক্ষ মানুষের হিসাব মিলছে না। ৭০ এর ঘূর্ণিঝড় ও ৭১ গণহত্যায় বিপুল সংখক নিহতের সমর্থনে এটাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল।

কিন্তু এতকিছু বলেও লাভ হবেনা। কুলাঙ্গার এদেশীয় পাকি সমর্থকরা আবার নতুন স্টোরি তৈরি করবে।
বঙ্গবন্ধু তখন সুধু ৩ লক্ষ বা ১ লক্ষ বললেও লাভ হত না, ওরা তখন আরো কমিয়ে শুধু ৩ হাজার বলতো, তালিকা দাবি করতো।
সম্পুর্ন তালিকা করা হলেও ওরা বিশ্বাস করত না, ডেথ সার্টিফিকেট দাবি করতো।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

আমি মিন্টু বলেছেন: :P :)

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
কোন বাড়িতে ডাকাত আক্রমন করলে বাড়ির সদস্য ও পাড়াপ্রতিবেশীদের প্রথম ফরজ হলো ডাকাত প্রতিরোধ করা, তারপরের প্রধান কাজ ডাকাতদের চিহ্নিত করে এমন শাস্তি দেয়া যেনো আর এহেন দুষ্কর্ম করতে সাহস না করে।
এসব না করে বাড়ির কোন সদস্য বা পাড়াপ্রতিবেশীদের কেউ যদি ত্যানা প্যাঁচাতে থাকে - "ডাকাতরা আসলে সোনা ৩০ ভরি না ৩ ভরি লুট করেছে", "মাথায় মেরেছে না পায়ে মেরেছে এটা নিয়ে সংশয় আছে" - তখনই বুঝে নিতে হবে ঝামেলা আছে, বিরাট ঝামেলা।
নিশ্চিতভাবেই এই ত্যানা প্যাঁচানোওয়ালা কজন ডাকাতদের জন্য বাড়ির সদর দরজা খুলে দিয়েছিল, কিংবা কোথায় কী লুকানো আছে সেই খবর পাচার করেছে।
গনহত্যার শিকার অন্য কাউকে ক্যালকুলেটর টিপে হিসাব দেখাতে হয়নি - কয়হাজার নাকি কয়লাখ মানুষ খুন হয়েছে, যে কোন ক্ষতিতে ভিকটিমের দাবী ক্ষতিগ্রস্থ দেশের দাবি গ্রহনযোগ্য। শুধুমাত্র এইদেশেই এটা সম্ভব, কারন এইদেশেই ডাকাতের জন্য নিজ বাড়ির সদরদরজা খুলে দেয়া লোকের অভাব নাই। মুজিব তখন ২ লাখ বললেও লাভ হত না এরা আরো কমিয়ে ২ হাজার বলতো। ভবিষ্যতে ইসলামী রাজনীতির জন্য পাকি-জামাতি-বদর নৃসংসতা ভুলানোর জন্য নিহতের সংখা ধিরে ধিরে শুন্যে নিয়ে আসা তাদের জন্য জরুরি।

(কমেন্টের কিছু অংশ ফেবুর হাসান মোরশেদের স্ট্যাটাসের আলকে)

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

আমি মিন্টু বলেছেন: করফার্ম।
এটা কি জিনিস হাসান ভাই । ঠিক করে দিয়েন । :)

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
spelling error , edited. now ok

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯

কবি আকাশ বলেছেন: জ্ঞানমূলক । ।

৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: "তবুও এগুলো বাস্তব সত্য, চির সত্য। সেসব দেশের কেউ বা অন্যকেউ, এমনকি নাৎসি সমর্থক মহলগুলোও এসব নিয়ে সন্দেহ করে না। কেউ করে না।" এই তথ্য কই পাইলেন? একটু পড়াশুনা করে আসুন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পড়াশোনা করে আসবো? মাদ্রাসা থেকে?


বাংলাদেশ বাদে পৃথিবীর কোন দেশ নিজ দেশবাসিদের উপর নৃসংস আচরনকারি খুনিদের সমর্থন করে না। কারন তারা দুধ-কলা দিয়ে 'ছাগু' পুষে না।
ইউরোপের কোন দেশে কেউ গণহত্যা কটাক্ষ করে বক্তব্য দিলে "হলকষ্ট ডিনায়েল এক্টে" তার দেড় বছর জেল।
আপনি চেক করে দেখুন।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০১

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: কিছু পড়াশোনা করে এলাম।

একাত্তরের ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সম্প্রতি অঙ্ক কষতে বসেছেন বাংলাদেশের একদল অঙ্কবিদ। অন্যদিকে একদল নিরপেক্ষ গবেষক এ সংখ্যা নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ গবেষণার দাবি তুলেছেন। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষশক্তির রাজনীতিবিদরা নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে যত না সংশয় প্রকাশ করছেন, তার চেয়ে বেশি সংশয় প্রকাশ করছেন এই ‘ত্রিশ লক্ষ’ সংখ্যাটি নিয়ে। আবার জনৈক ‘দেশ-জামাই’ ব্লগার ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যার খেলা নিয়ে ‘ব্লগাইতে ব্লগাইতে’ নিজের দেশ, জাতি এবং ‘ধর্ম’ ত্যাগ করে এখন পাগলপ্রায়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সা কা চৌধুরী তো দেশ, জাতি এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে চট্টগ্রামবাসীর কাছে মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছে হিসেবে ত্রিশ লক্ষ শহীদের ডেথ সার্টিফিকেটগুলো দেখতে চেয়েছিলেন। আর হাজার মাইল দূরের পাকিস্তান রাষ্ট্রটি ত্রিশ লক্ষ শহীদ তো দূরের কথা, একজনও শহীদ হননি বলে ফতোয়া দিয়ে বসে আছে।
তা যা-ই হোক, আসুন আমরা সবাই মিলে ত্রিশ লক্ষ শহীদের অঙ্কটি মিলিয়ে আসি। যারা অঙ্কটি মেলাতে পারেন না তাদের প্রধান তিনটি যুক্তি হলো :
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহীদ হন নাই;
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষ বাঙালি শহীদ হতে পারেন না; এবং
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি ভাষণ দেওয়ার সময় ইংরেজি না জানার কারনে লাখকে মিলিয়ন ধরে ত্রিশ লক্ষ বলে ফেলেছেন।
প্রথম যুক্তির খণ্ডন : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষ শহীদ হননি বলে যারা দারি করেন তাদের অজ্ঞতা দেখে যে কেউ লজ্জা পাবেন। কারণ :
(ক) ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের লক্ষ্যই ছিল ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করা। পাকিস্তানি আর্মিদের এক বৈঠকে ইয়াহিয়া খান বলেন, ‘Kill 3 million of them and the rest will eat out of our hands’. এখানে সুস্পষ্ট যে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রথম থেকেই লক্ষ্য ছিল অন্তত ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করা।
[তথ্যসূত্র : (১) Robert Payne, Massacre: The Tragedy of Bangladesh and the Phenomenon of Mass Slaughter Throughout History (1972), পৃষ্ঠা-৫০; (২) Debashish Roy Chowdhury, ‘Indians are Bastard Any way’, The Asia Times, 23 June, 2005]

(খ) পাকিস্তানের প্রতিরক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট defence.pk-এ প্রকাশিত ‘The Radical Truth: Teaching MPACUK the Forgotten Chapter of Pakistan’s History’ শীর্ষক নিবন্ধের তৃতীয় অনুচ্ছেদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘In 1971, over 9 months, President Yahiya Khan and his military commanders with the aid of local collaborators committed mass atrocities on unarmed civilians, killed an estimated three million people...’
(গ) ১৯৭১ সালের ২১ ডিসেম্বও দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘হানাদার দুশমন বাহিনী বাংলাদেশে প্রায় ত্রিশ লক্ষ নিরীহ লোক ও দু শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে’।

(ঘ) ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার The Daily Observer-এর শিরোনাম ছিল ‘Pak Army Killed Over 30 Lakh People’। একই দিন The Morning News-এর শিরোনাম ছিল ‘Over 30 Lakh Killed by Pak Force’।
(ঙ) রাশিযার কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘প্রাভদা’ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসেই বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিষয়টি প্রকাশ করে। এই প্রাভদার ইংরেজি সংস্করণে উল্লেখ করা হয়, ‘Over 30 lakh persons were killed throughout Bangladesh by the Pakisthani occupation forces during the last nine months’। প্রাভদা পত্রিকাটির ১৯৭২ সালের ৪ জানুয়ারির বাংলা সংস্করণে শিরোনাম হয় দখলদার বাহিনী বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষাধিক মানুষ হত্যা করেছে’।
(চ) ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি দৈনিক বাংলা-র ‘হুশিয়ার আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ শিরোনাম খবরে লেখা হয়, দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তাতে ৩৫ লক্ষাধিক বাঙালি প্রাণ হারিয়েছে।

(ছ) গবেষক রওনাক জাহানও তার গবেষণায় ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যা খুঁজে পেয়েছেন। [তথ্যসূত্র : ‘Genocide in Bangladesh’ in Samuel Totten, William S. Parsons and Israel W. Charny (ed), Century of Genocide: Critical Essays and Eyewitness Accounts (2nd ed, Routledge, 1995)পৃষ্ঠা-২৯৫।]

দ্বিতীয় যুক্তির খণ্ডন : যারা মনে করেন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হওয়া কোনোমতেই সম্ভব নয় তারা আসলে অঙ্কে বড় কাঁচা। সহজ সরল অঙ্কের ফর্মুলা না বোঝার কারণেই তাদের এই বাচালতা। কারণ :

(ক) Rudolph Joseph Rummel গণহত্যার পরিসংখ্যান কিভাবে করতে হয় তার একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। পদ্ধতিটি তার রচিত ‘Estimating Democide: Methods and Procedures’ শীর্ষক নিবন্ধে বিধৃত হয়েছে। তার রচিত Statistics of Democide (1998) গ্রন্থের অষ্টম অধ্যায়ে তিনি অন্তর্ভুক্ত করেছেন ‘Statistics of Pakistan Democide, Estimates Calculation and sources’ শীর্ষক নিবন্ধটি। এই নিবন্ধে Rummel তার আবিষ্কৃত গণহত্যা পরিসংখ্যান পদ্ধতি অনুসারে দেখিয়েছেন যে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ত্রিশ লক্ষ ৩ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন।
(খ) ১৯৮১ সালের UNHRC (ইউনাইটেড ন্যাশনস হিউম্যান রাইটস কমিশন) রিপোর্ট অনুযায়ী মানবসভ্যতার ইতিহাসে যতগুলো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে তাতে অল্প সময়ের মধ্যে সব থেকে বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে। প্রতিদিন গড়ে ৬,০০০ থেকে ১২,০০০ মানুষ তখন খুন হয়েছিল বাংলাদেশে। গণহত্যার ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ গড়। তবে এখানে উল্লেখ্য, অপারেশন সার্চলাইটের প্রথম রাতের প্রাণহানির সংখ্যাই ছিল কমপক্ষে ৩৫,০০০। চুকনগর গণহত্যায় প্রাণহানি ঘটেছিল ১০,০০০ এর ওপরে। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ প্রকাশিত New York Times-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ২৭ মার্চে প্রাণহানির সংখ্যা ১০,০০০। ১৯৭১ সালের Sydney Morning Herald-এর রিপোর্ট অনুযায়ী মার্চের ২৫ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত (৫ দিনে) প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। এতে দেখা যায় দিনপ্রতি প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। সুতরাং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে প্রাণহানির দৈনিক গড় UNHRC রিপোর্টের ঊর্ধ্বসীমার কাছাকাছি (দিন প্রতি ১২,০০০) বলেই আমরা ধরে নিতে পারি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ চলেছে মোট ২৬৭ দিন (২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর)। অতএব, দিনপ্রতি ১২,০০০ নিহত সংখ্যাকে ২৬৭ দিন দিয়ে গুণ করলে মোট নিহতের সংখ্যা পাওয়া যায় ৩২ লাখ ৪ হাজার। আবার UNHRC-এর নির্দেশিত ঊর্ধ্বসীমা ১২,০০০ ও নিম্নসীমা ৬,০০০-এর গড় যদি হয় ৯০০০, তবে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় অন্তত পক্ষে ২৪ লাখ ৩ হাজার।
(গ) ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি বাংলাদেশে প্রায় ৯৪২টি বধ্যভূমি শনাক্ত করেছিল। অতি সম্প্রতি, ১৯৭১ গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের সমীক্ষা অনুযায়ী ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে মোট ৩৪০০টি বধ্যভূমি শনাক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বধ্যভূমি স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের হিসাব অনুযায়ী ১৯৭১-এর এপ্রিল থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে প্রায় ২০ হাজারের মতো বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। আবার ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের গবেষণা অনুযায়ী গল্লামারী বধ্যভূমিতে ১৫ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়েছে। রায়ের বাজার বধ্যভূমি ও জল্লাদখানা বধ্যভূমির মোট লাশের সংখ্যা নির্ণয় করা বেশ দুষ্কর। তবে যদি ত্রিশ লক্ষ বাঙালিকে শুধু ৩৪০০ বধ্যভূমিতেই হত্যা করা হয় তবে প্রতি বধ্যভূমিতে অন্তত ৮৮২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রাপ্ত তথ্যের চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে কম। সুতরাং ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যার সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন। একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে, অসংখ্য লাশ নদীতে বা পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং শুধু বধ্যভূমির সংখ্যা দিয়ে একাত্তরের শহীদের মোট সংখ্যা নিরূপণ করা সঠিক হবে না। প্রকৃত শহীদের সংখ্যা ৩০ লক্ষের বেশিই হবে।
(ঘ) ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯৩,০০০ পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। এটাও সত্য যে, যুদ্ধে অনেক পাকিস্তানি সৈন্যের মৃত্যুও ঘটেছে। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর তদন্ত সংস্থা এলাকাভিত্তিক রাজাকার বাহিনীর নাম সংগ্রহের কাজ শুরু করে। এ ছাড়া মেজর আরেফিন এবং মুনতাসীর মামুনও ভিন্ন ভিন্নভাবে রাজাকারদের তালিকা তৈরির কাজ করেছেন। সবার তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালে রাজাকারের সংখ্যা ছিল ৪৭,০০০ থেকে ৬০,০০০। একাত্তরে এরা সবাই পাকিস্তানি বাহিনীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঙালি নিধন করেছে। যদি ধরে নিই অন্তত ৪৭,০০০ রাজাকার সেই সময় ৯৩০০০ পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে ছিল তবে মোট ঘাতকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার। এখন ১ লাখ ৪০ হাজার ঘাতক যদি ত্রিশ লক্ষ বাঙালি নিধন করে থাকে তবে এক একজন ঘাতক মোট ২৬৭ দিনে মাত্র ২১ জনকে হত্যা করেছে। অর্থাত্ একজন ঘাতক যুদ্ধকালে ১৩ দিন পর পর একজন বাঙালিকে হত্যা করেছে। এই সংখ্যাটি কি খুবই অবিশ্বাস্য?
ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যা নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করেন, তারা অঙ্কটি বেশ কয়েকবার কষে দেখবেন হিসাবটি ঠিক করে বুঝবার জন্য।
তৃতীয় যুক্তির খণ্ডন : যারা দারি করেন যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি ভাষণ দেওয়ার সময় ভুলবশত শহীদের সংখ্যা অতিরঞ্জিত করে ত্রিশ লক্ষ বলে ফেলেছেন, তারা যে কত হাস্যকর মিথ্যাচার করতে পারেন তা ভেবে আমি অবাক হই। কারণ :
(ক) ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত চরমপত্র অনুষ্ঠানে এম আর আখতার মুকুল ত্রিশ লক্ষ শহীদের কথা উল্লেখ করেছেন।
(খ) ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর দৈনিক পূর্বদেশ-এর সম্পাদকীয়তে, ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি The Daily Observer, The Morning News এবং রাশিয়ার প্রাভদা পত্রিকার বাংলা সংস্করণের শিরোনামে এবং ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি দৈনিক বাংলার শিরোনামে ত্রিশ লক্ষ শহীদের কথা উল্লেখ করা হয়।
অতএব, দেখা যাচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি ভাষণ দেওয়ার অনেক আগে থেকেই ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিষয়টি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম অনুযায়ী একটি স্বীকৃত বাস্তবতায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল। তাই ত্রিশ লক্ষ শহীদ নিয়ে বঙ্গবন্ধু অতিরঞ্জিত করে কিছু বলেছেন এটা কখনই হতে পারে না।

সর্বশেষে, বলতে চাই, আজ যারা ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা আসলে নিজেরাই বিভ্রান্ত। খোঁজ নিয়ে দেখলেই জানা যাবে, যারা ত্রিশ লক্ষ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বা এর বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা দাবি করেন, তাদের সবারই পাকিস্তানি সম্পৃক্ততা রয়েছে— হয় পারিবারিকভাবে, নয় রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিকভাবে। বাংলাদেশে বসবাসকারী এসব পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী লোকজন কখনই আপনার বা আমার বন্ধু হতে পারে না। আসুন, এদের বর্জন করি— ঘৃণা করি।
সংগ্রহ : ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রসিকিউটর, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৬

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: আইন করে দিলেই কি বিতর্ক বন্ধ হয়ে যায়? আইন করে সত্য অনুসন্ধান বন্ধ করে দেওয়া কি উচিত?
দেড় বছরের জেলের ভয়ে কেউ বসে নেই কিন্তু !!! বিতর্ক ছিল বলেই গবেষণা হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে হিটলার বাহিনী ৬ মিলিয়ন নয় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছিল যার মধ্যে শুধু ইহুদি নয় বহু সংখ্যক অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর মানুষও ছিল।
http://www.somewhereinblog.net/blog/Abid_Jaljala/30091575 এখানে ঘুরে আসতে পারেন।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

আপনার লেখা দেখলাম,
"বর্তমানে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে হিটলার বাহিনী ৬ মিলিয়ন নয় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছিল যার মধ্যে শুধু ইহুদি নয় বহু সংখ্যক অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর মানুষও ছিল। যদিও ইউরোপের অনেক দেশে এই নিহতের সংখ্যা ৬ মিলিয়ন এর কম বলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ"।

কোন অথেনটিক রেফারেন্স নেই। গুগলে এইরকম ফালতু জিনিস হাজারে হাজারে পাওয়া যায়।

৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: সবার উপর BAL সত্য তাহার উপর নাই। পৃথিবীতে আওয়ামী মনস্ক ছাড়া কোন অথেনটিক রেফারেন্স নেই বলেই আমি জেনেছি। আমার দেওয়া তথ্য আপনার না বিশ্বাস করলেও চলবে।

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:১১

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

BAL না, আপনাদের পক্ষের অরিজিনাল অথেনটিক রেফারেন্স।
আপনাদের গুরু সয়ং পাকিস্তান যুদ্ধ শেষে পরাজয়ের কারন অনুসন্ধান করতে "বিচারপতি হামিদুর রহমান তদন্ত কমিশন" গঠন করে। যা আংশিক ভাবে পাকিস্তানি পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ হচ্ছিল, পরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হলে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম আলোতে (৯-১২-১৫) প্রকাশীত তার কিছু অংশ তুলে ধরছি।

যুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরেই পাকিস্তান সরকার বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে যে তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল, তার প্রতিবেদনে যুদ্ধকালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধগুলোর উল্লেখ আছে। ‘হামুদুর রহমান কমিশন’ নামে পরিচিত ওই কমিশন তাদের প্রতিবেদনে সেগুলো উল্লেখ করেছে অভিযোগ হিসেবে। কমিশনের প্রতিবেদনের ভাষায় সেগুলো এ রকম:
ক. ১৯৭১ সালের ২৫/২৬ মার্চ রাতে ঢাকায় যে সামরিক অভিযান শুরু করা হয়, তাতে অত্যধিক ‘ফোর্স অ্যান্ড ফায়ার পাওয়ার’ ব্যবহার করা হয়েছে।
খ. ওই সামরিক পদক্ষেপের পর থেকে গ্রামাঞ্চলে পরিচালিত ব্যাপক মাত্রার অভিযানগুলোতে (‘সুইপিং অপারেশনস)’ নিরর্থক/অকারণ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন অগ্নিসংযোগ ও হত্যাযজ্ঞ (সেন্সলেস অ্যান্ড ওয়ান্টন অ্যারসন অ্যান্ড কিলিংস) চালানো হয়েছে।
গ. বুদ্ধিজীবী ও চিকিৎসক, প্রকৌশলী প্রভৃতি পেশাজীবীকে হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছে, শুধু (যুদ্ধের) শুরুর পর্যায়েই নয়, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের চূড়ান্ত দিনগুলোতেও।
ঘ. (সেনাবাহিনীর) ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস ও ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ ফোর্সের অফিসার ও সৈনিকদের নিরস্ত্র করার প্রক্রিয়ায় অথবা তাদের বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে হত্যা করা হয়েছে।
ঙ. পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের হত্যা করা হয়েছে, অথবা তাঁরা নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে নিরুদ্দেশ হয়েছেন, অথবা নিরুদ্দেশ হয়েছেন সেনা অফিসারদের সামরিক আইনের দায়িত্ব পালনের ঘটনার মধ্য দিয়ে।
চ. ইচ্ছাকৃত/সুচিন্তিত প্রতিশোধ, পাল্টা আঘাত ও নির্যাতনের একটা উপায় হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অফিসার ও সৈনিকেরা পূর্ব পাকিস্তানের একটা বড় অংশের নারীকে ধর্ষণ করেছেন।
ছ. সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ইচ্ছাকৃত/সুচিন্তিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদনের কোনো বাক্যে ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যা শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। নিহতের মোট সংখ্যা অষ্পষ্ট রাখা হয়েছে। কিন্তু হত্যার যেসব তথ্য সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোতে গণহত্যার উপাদান নিশ্চিতভাবেই আছে। যেমন -

পুর্ব পাকিস্তানে নিয়জিত সেনা সদস্যদের হত্যা ও নির্বিচারে অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষনের যতেচ্ছ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছিল।
প্রথমে ৮ বালুচ ব্যাটালিয়ন এবং পরে ৮৬ মুজাহিদ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজ আহমেদ খান (সাক্ষী নম্বর ২৭৬) কমিশনে সাক্ষ্য দিয়েছেন: ‘ব্রিগেডিয়ার আরবাব আমাকে জয়দেবপুরের সব ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দিতে বলেন। বিপুল গোলা বারুদ ব্যাবহার করে আমি বহুলাংশে এই নির্দেশ পালন করেছি।
জেনারেল নিয়াজি ঠাকুরগাঁও ও বগুড়ায় আমার ইউনিট পরিদর্শন করেন। তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমরা কতজন হিন্দুকে হত্যা করেছি। হিন্দুদের হত্যা করার জন্য একটা লিখিত নির্দেশ এসেছিল মে মাসে। ওই নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন ২৩ নম্বর ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ মালিক।’
একজন সিপাহিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এই গ্রামের সবাইকে কেন মেরেছো? জবাবে সে বলেছিল "আমাকে বলা হয়েছে এরা সবাই হিন্দু হয়ে গেছে এবং হিন্দুস্তানের সাথে যুক্ত হতে চায়"।
এখানে উল্লেখ করা জরুরি যে জাতিগত, নৃগোষ্ঠীগত, ভাষাগত, বর্ণগত, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীগত পরিচয়ের কারণে কোনো জনগোষ্ঠীর সদস্যদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনে ‘জেনোসাইড’ বা গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। সুতরাং হামুদুর রহমান কমিশনের প্রতিবেদন থেকে ওপরে উল্লেখিত উদ্ধৃতি সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ করছে, ‘হিন্দুদের হত্যা করার জন্য লিখিত নির্দেশ’ প্রদান এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেসব নির্দেশ পালনের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে।

সুতরাং ছাগুরা ম্যাডামকে দিয়ে নিহতের সংখা কমিয়ে বললে লাভ হবে না, পাপের পরিমান কমবে না। এদেশে তোদের রাজনীতি শেষ।

৭| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: একটা ছাগুর মন্তব্যের জবাব কেন আপনি দিচ্ছেন বুঝতে পারছি না

৮| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

হাসান নাঈম বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা কম না বেশী প্রশ্ন সেটা নয় - প্রশ্ন হল একটা আনুমানিক হিসেবকেই কেন ধ্রুব সত্য হিসেবে বিশ্বাস করতে হবে? এই সংখ্যাটা প্রথম যখন বলা হয়েছিল তখনতো অনুমান করা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু পরবর্তিতে সুযোগ থাকা সত্যেও শহীদদের নাম পরিচয় সংরক্ষনের উদ্যোগ কেন নেয়া হয় নি - সেটাই আসল সমস্যা।

এই দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গ উঠলেই একদল লোক বলত ওটা মিমাংসিত ইসু, ওটা নিয়ে আর নাড়াচাড়া করা যাবে না, শেখ মুজিব যখন ক্ষমা করে দিয়েছেন তখন আর বিচারের প্রয়োজন কী - ইত্যাদি। তখন যারা প্রতিবাদি ছিল, যারা বলত কোন কিছুই মিমাংসিত নয়, প্রতিটি বিষয়ই তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে - নিয়তির কি পরিহাস, শহীদের তালিকা প্রকাশের প্রসঙ্গ আসলে তারাই আবার বলে যে ওটা ঐতিহাসিক সত্য, ওব্যাপারে কোন কথাই চলবে না। কেন?

যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধীতা যারা করত তাদের না হয় একটা ভয় ছিল ফেসে যাওয়ার - শহীদের তালিকা তৈরীর বিরুদ্ধে যারা বলে তাদের ভয়টা কোথায়? আওয়ামী ধর্মের অবতারের বাণী মিথ্যা হয়ে যাবে, না কি মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীক বানিজ্যে ঘাটতি পরবে? সংখ্যাটা ৩০ লাখ না হয়ে ৩ লাখ বা ৩০ হাজার হলেই বা সমস্যা কোথায় যদি নাম পরিচয় সহ একটা তালিকা পরবর্তি প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা হয়?

যাইহোক, আশার কথা হল কিছু কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাষণ দুই বছরের তদন্ত শেষে ৩৬৭ জনের একটা তালিকা তৈরী করেছে। এ'ভাবে সবগুলি জেলা উদ্যোগ নিলে অল্প সময়েই সারা দেশের শহীদদের নাম পরিচয় সহ পুর্নাঙ্গ তালিকা করা খুবই সহজ। কারণ এখনও নিহত বা নিখোঁজ ব্যাক্তিদের আত্মীয় প্রতিবেশী বন্ধু কেউ না কেউ জীবিত আছে। আজ থেকে ৫০/১০০ বছর পর আর কেউ বেঁচে থাকবে না। তবে সমস্যাহল যে চেতনার সরকার এখন দ্বায়িত্বে আছে তারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে না বন্ধ করে দেবে সেটাই দেখার বিষয়।

শহীদের তালিকা

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:০২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পরবর্তিতে শহীদদের নাম পরিচয় সংরক্ষনের উদ্যোগ নেয়া হয় নি কেন?
পৃথিবীর কোন বড় গণহত্যার পর লাশের সংখা গোনা সম্ভব হয়নি, নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা তো আরো বহুদুরের ব্যাপার,
সুধু বড় কেন, রিসেন্ট ছোটমাপের গণহত্যার লাশের সংখাও গোনা সম্ভব হয়নি। রুয়ান্ডা, বসনিয়ার জেনসাইড ফিগারগুলো আইকনিক রাউন্ড ফিগার।
আমাদের ৩০ লাখের মত ৬০ লাখ ইহুদি হত্যাও আইকনিক রাউন্ড ফিগার।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন দুই বছরের তদন্ত শেষে ৩৬৭ জনের একটা তালিকা তৈরী করা খুবই প্রসংসনীয় উদ্যোগ। তার মানে এইনা যে সিরাজগঞ্জে মোট নিহতের সংখা ৩৬৭ জন। বরং বলতে হবে "বিপুল নিহতের ভেতর এজাবৎ ৩৬৭ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।

৭২ এ ১০ই জানুয়ারী মুজিব লন্ডনে হঠাৎ না জেনেই ৩০ লাখের কথা বলেন নি।
২৫সে মার্চের পর পাকি সামরিক জান্তা সকল বিদেশী সাংবাদিক ঢাকা থেকে বিতারিত করেছিল। এরপর কোন বিদেশী ঢুকতে দেয়া হয়নি। মার্কিন টেলিভিশন CBS News ও ন্যাসানাল জিওগ্রাফিক পত্রিকা প্রকৃতি গবেষনার কথা বলে যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে এসে রিপোর্ট লিখেছিল -
পুর্বপাকিস্তানে ভয়াবহ গণহত্যা হচ্ছে, নিহতের সাম্ভ্যাব্য সংখা ২ মিলিয়ন ক্রস করতে পারে। (যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়েই ২০লাখ)
১৬ ডিসেমবর সোভিয়েট পত্রিকা প্রাভদা লিখেছিল ৩০ লাখের কথা।
৭১ এর ডিসেম্বর বালাদেশের পুর্বদেশ ও আজাদ পত্রিকায় ৩০ লাখের কথা কয়েকবার এসেছে।
ডিসেম্বর জুড়ে রেডিওতে বিপুল জনপ্রীয় চরমপত্রে ১৬ই ডিসেমবরের পর "৩০ লাখ ও একসাগর রক্তের বিনিময়ে" বলা হতে থাকে।

সুতরাং মুজিব মোটামুটি খোজখবর নিয়েই সুষ্পষ্ট ভাবে ৩০ লাখ বলেছেন।
অতচ এক বেকুব বুদ্ধিজীবি টকশোতে বলছেন মুজিব না বুঝে লাখকে মিলিয়ন বলেছেন!
মানে বোঝাতে চেয়েছেন মুজিব ইংরাজি বুঝেন না, বকলম!

৯| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:১৬

রাফা বলেছেন: আরে ভাই এরাতো সত্যিকার অর্থে জানতে চায়না।বিতর্কিত করার জন্য একেক সময় একেক তত্ব আবিস্কার করে।বঙ্গবন্ধু বলার অনেক পুর্বেই ৩০ লক্ষের হিসেব করা হয়েছে।এখন বঙ্গবন্ধু বলছে তাই এটা ভুল প্রমাণ করতে হবে।দেখেন নাই রাজাকারদের সব মাফ করে দিয়েছে তত্ব/সব কিছুতেই বঙ্গবন্ধুকে টেনে নামাতে হবেনা।কারন ঐখানে কোন এক মেজরকে অধিষ্ঠিত করতে ব্যার্থ হয়ে এখন কুত্তা পাগল অবস্থা।
বংগবন্ধু বলার পুর্বেই বলা হইছে-আরে ভাই এরাতো সত্যিকার অর্থে জানতে চায়না।বিতর্কিত করার জন্য একেক সময় একেক তত্ব আবিস্কার করে।বঙ্গবন্ধু বলার অনেক পুর্বেই ৩০ লক্ষের হিসেব করা হয়েছে।এখন বঙ্গবন্ধু বলছে তাই এটা ভুল প্রমাণ করতে হবে।দেখেন নাই রাজাকারদের সব মাফ করে দিয়েছে তত্ব/সব কিছুতেই বঙ্গবন্ধুকে টেনে নামাতে হবেনা।কারন ঐখানে কোন এক মেজরকে অধিষ্ঠিত করতে ব্যার্থ হয়ে এখন কুত্তা পাগল অবস্থা।
বংগবন্ধু বলার পুর্বেই বলা হইছে-

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:০৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ধন্যবাদ রাফা ভাই।
আপনার দেয়া এই পত্রিকার কাটিং মুলপোষ্টে এড করে দিয়েছি।

১০| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪

ক্যাপ্টেন ম্যাকক্লাস্কি বলেছেন:
স্বসস্ত্র যুদ্ধ করে জয়লাভের পরও পরাজিত পাপিষ্ঠ ছাগুরা প্রকাস্য দেশ বিরোধী আস্ফলন করে যাচ্ছে।
আমাদের গৌরবময় বিজয়কে বিতর্কিত ও হেয় করার জন্য দিবা-রাত্র বিরামহীন মিথ্যা ইনফো পোষ্ট করছে আবার একই পোষ্ট ঘুরেফিরে আবার রিপিট করেই যাচ্ছে।
কেউকি দেখে না?

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৯

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
ফেবু ও ব্লগে এ দুদিনে ছাগুদের স্ট্যটাস-কমেন্ট পর্যলাচনা করে যা বুঝলাম -
ইশু - (৩০ নয়, ৩ লাখ আর ভারত মুক্তিযুদ্ধ না বলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কেন বলেছে।)
ফেবুতে শতশত ও ব্লগে প্রায় দেড়শো পোষ্ট করেছে ছাগুরা, মুক্তিযুদ্ধ পক্ষ মাত্র ৮ - ১০ টা পোষ্ট।

যা বুঝলাম, মুক্তিযুদ্ধকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পেশাদার ছাগু ও ছাগুসমর্থকরা সংগবদ্ধ ভাবে বদ্ধপরিকর।

মুজিব তখন ৩ লাখ বললেও লাভ হত না, ওরা তখন আরো কমিয়ে ৩ হাজার বলতো, তালিকা চাইতো।

ভারতীয়রা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ না বলে সুধু "মুক্তিযুদ্ধ" বললে ওরা আরো ভয়ানক ইশু তৈরি করতো।
তখন বলতো "মুক্তিযুদ্ধ করেছি আমরা, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের। ভারত কেন মুক্তিযুদ্ধ বলবে?
বলতো এটা কি ভারতীয় মুক্তিযুদ্ধ? ... ভারতীয়রা কি মুক্তিযুদ্ধা? মুক্তিযুদ্ধের এহেন অপমান! সরকারই দায়ী।

১১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:

মাও'এর বেলায় সংখ্যটা বাড়িয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপ।

ইহুদীরা সংখ্যাটা বাড়িয়েছে ক্ষতিপুরণের জন্য, এবং বেশীর ভাগই ক্ষতিপুরণ পেয়েছে।
রাশিয়ার বেলায়, প্রতিটি পরিবারকে সমবএদনা জানানো হয়েছে, ও পরিবার থাকার যায়গা পেয়েছে, পেনশন পেয়েছে।

বাংলাদেশে ঘটনাটাকে সঠিভাবে হ্যান্ডলিং করেননি ১ম সরকার; ফলে, দেশ-বিরোধীরা সুযোগ পেলে, জাতীকে ছোট করতে চায়।
তবে, খালেদা জিয়া ও গয়েস্বর নিজ পায়ে কুড়াল মেরেছে।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৫

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
মাওসেতুং উথ্যান পরবর্তি সময় চীনে দুর্বিক্ষে ১ কোটির অনেক বেশী লোক মারা গেছিল। মাও বরং কমিয়ে বলেছে।
দেড়শো কোটির দেশে বিধ্বস্ত অবকাঠামোতে সেই আমলে ৩০-৪০ লাখ স্বাভাবিক মৃত্যুই ছিল।
৬০ লাখ ইহুদী হত্যা বিভিন্ন মহল থেকে মোটামুটি ভেরিফাইড পরিসংখান।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:০৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
বাংলাদেশে ঘটনাটাকে সঠিভাবে হ্যান্ডলিং করেননি ১ম সরকার?

আপনে পুরান মানুষ, এত অকৃতজ্ঞ কেন ভাই?

মুজিবকে সময় দিছিলেন কয়দিন? ৩ বছর। যেটা আপনারা ৪০ বছরেও পারেন নি,
সেটারই কৈফিওত চাচ্ছেন কেন ৩ বছরে হল না!

যুদ্ধবিধ্বস্ত নবগঠিত যুদ্ধ বিজয়ী সরকার। শুন্য রাজকোষ, বৈরি চীন, আরব ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদিদের রোষানলের ভেতর সুরু করা,
প্রথম বছর ভারতীয় মুদ্রায় সরকারি বেতন দিতে হয়েছে, পরে ভারত ও ফ্রান্স বিনামুল্যে কিছু বাংলাদেশী টাকা ছাপিয়ে দিয়েছিল, নিম্নমানের হওয়ায় টাকা জাল হতে থাকে, বার বার টাকা অচল ঘোষনা করা হতে থাকে। আবার নুতন নোট ছাপাতে হয়। চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ। চাল-গম জরুরি আনা দরকার, চালনা বন্দর দিয়ে আনার চেষ্টা। চট্টগ্রাম বন্দর মাইনমুক্ত করে চালু করতে ২ বছর লাগে। বিনামুল্যে মাইনমুক্ত করে দেয় মহান সোভিয়েট ইউনিয়ন। ২ বছরে মাইন দুর্ঘটনায় প্রান হারিয়েছিলেন ডজন খানেক অকুতভয় সোভিয়েট নাবিক, পতেঙ্গায় এখনো সেই বীর সোভিয়েট নৌসেনাদের সমাধী আছে।
কিন্তু তখনো বিপুল সংখক সেনা, পুলিশ, সরকারি স্টাফ সহ ৪ লক্ষ বেসামরিক বাংগালী তখনো পাকিস্তানে আটক। ৩বছরের বেশী সময় আটকে জিম্মি করে রেখেছে ভুট্টো। ১৯৫ যুদ্ধাপরাধী পাকি সেনা অফিসারের সাথে বিনিময় করে চড়া মুল্য দিয়ে ৪ লাখ আটক বাংগালী ছাড়িয়ে আনা হয় ১৯৭৪এ।
৭৩ এ দেশটি মোটামোটি দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল। তখই বিপর্যয়। কিন্তু ৭৩ এ মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আরব ইসরাইল যুদ্ধ, তেলের মুল্য ৩ ডলার থেকে ১২ ডলারে উন্নিত হলে সব দ্রব্যমুল্যে খাদ্যমুল্য ৩-৪ গুন বেড়ে যায়।এরপর জরুরি অবস্থা জারি করতে হয় বাধ্যহয়েই।

হিমসিম খাচ্ছিল সেই সরকার, আর আপনি কন কাজকাম বাদদিয়া হাড্ডি-গুড্ডি গুইন্যা তালিকা বানাইতে!

১২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:০১

হাসান নাঈম বলেছেন: "আমাদের ৩০ লাখের মত ৬০ লাখ ইহুদি হত্যাও আইকনিক রাউন্ড ফিগার"

ইহুদীরা ৬০ লাখকে আইকনিক ফিগার বানিয়ে রেখেছে বলেই কি আমাদেরও ৩০ লাখকে আইকনিক ফিগার বানিয়ে রাখা লাগবে? আমরা কি তাহলে ইহুদীদের অনুসরণ করার জন্য দেশ স্বাধীন করেছি??

ইউরোপীয়ান অনেক দেশে এই ৬০ লাখ সংখ্যার ব্যাপারটাকে আইন করে টিকিয়ে রাখা হয়েছে, আমাদের এখানেও দাবি উঠছে আইন করার জন্য - কেন? কখন কোন বিষয় আইন করে টেকানোর প্রশ্ন আসে? আমরা দেখেছি ১৫ আগস্টের ঘটনা আড়াল করার জন্য ইনডেমনিটি আইন করতে হয়েছিল - তাহলে কি এটাও ঐরকম কোন ঘটনা যাকে আইন করে টেকাতে হয়?

ইহুদীদের ৬০ লাখের মধ্যে অন্তত ৩-৪ লাখের নাম ঠিকানার তালিকা আছে, তাদেরকে ক্ষতিপুরোনও দেয়া হয়েছে। আর আমাদের ৩০ লাখের মধ্যে কয়জনের নাম ঠিকানা আছে? কয়জনকে ক্ষতিপুরন দেয়া হয়েছে?

আওয়ামী লীগ যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিজের রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করে এবং নিজেদেরই একমাত্র স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি বলে হাজির করে তাই দায়টা তাদের উপরই বর্তায়। সংখ্যা কত হবে সেটা কোন বিষয় না, বিষয় হল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের একটা তালিকা থাকবে কী না। যতজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায় ততজনেরই তালিকা হোক, ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদেরকে শুধুমাত্র একটা সংখ্যা হিসেবে না বলে নাম পরিচয়সহ চিনুক।

কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যাদের উৎসাহের সাথে এই কাজে ঝাপিয়ে পরার কথা ছিল - প্রসঙ্গটা উঠলে তারাই বিরোধীতা শুরু করে। 'আইকনিক ফিগার', 'মিমাংশিত ইসু', 'রাস্ট্রীয় ঘোষণা', 'বিদেশী পত্রিকার উদ্ধৃতি' - ইত্যাদি দিয়ে বলার চেস্টা করে যে তালিকা টালিকার দরকার নাই সবাইকে ৩০ লাখই মানতে হবে। এই মনোভাবটা কেন? কেন শহীদের তালিকা তৈরীরমত মহান কাজে আওয়ামী ঘরনার বুদ্ধিজীবিরা সউৎসাহে ঝাপিয়ে পরতে পারে না - যেমনটা তারা পারে রাজাকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে। তাহলে কি তাদের কাছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে রাজাকারের গুরুত্ব বেশী? না কি এটা কেবল রাজনৈতিক স্বার্থের ব্যাপার?

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫০

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আমি এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটিকে আইন করে রক্ষা করার ঘোর বিরোধী।
আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে একমত।

তবে কিছু ইহুদীদের অন্তত ৩-৪ লাখের নাম ঠিকানার তালিকা পাওয়া গেছিল কারন ইউরোপে জন্মানো মাত্র জন্ম নিবন্ধিত হয়।
নাৎসি সৈন্যরা ইহুদি দেখা মাত্র গুলি করে নি। প্রথমে তাদের এক যাগায় জড় করেছে, বাছাই করে পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। কয়েকদিন আটকে রাখে, পরে গুদামঘরে গাদাগাদি করে ঢুকিয়ে বিশাক্ত গ্যাসপ্রয়গে হত্যা করে।
পরাজয়ের আগে নাৎসিরা সব বন্দি তালিকা নষ্ট করতে পারেনি, তাই কিছু তালিকা পেয়েছে। অনেক এলাকায় যুদ্ধবিধ্বস্তের কারনে জন্ম নিবন্ধন লেজারবইও ধ্বংশ হয়ে গেছিল।

আমাদেরও নিহত তালিকা থাকলে অবস্যই ভাল হত।
আমাদের দেশে বিহারী ও রাজাকাররা লুন্ঠনের উদ্দেশ্যে সাধারন গ্রামকে হিন্দুগ্রাম বা আওয়ামী সমর্থক গ্রাম আখ্যা দিয়ে পাকি সৈন্যদের ডেকে আনে। পাকিরা ভোর রাতে গ্রাম ঘেরাও করে নির্বিচারে সবাইকে হত্যা করে, অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের সবাই নিহত হয়। হত্যার আগে মানুষ তো দুরের কথা গ্রামেরও তালিকা করেনি। তবে ঢাকায় বুদ্ধিজীবি হত্যার তালিকা ছিল গোলামআজম ও জেনারেল রাও ফরমান আলীর কাছে।
১৬ ই ডিসেম্বরের পর জীবিতরা ফিরে আসলে খাদ্যাভাবে বিপর্যস্ত মুক্তিযোদ্ধারা নিহতের তালিকা তৈরির চেয়ে সরকার গঠন করে দুর্বিক্ষ ঠ্যাকানো মুখ্য কাজ মনে করেছিল।

পৃথিবীর কোন বড় গণহত্যার তালিকা করা সম্ভব হয়নি। ছোট গুলোও হয়নি, এমনকি জিয়ার হাতে ১৪০০ সেনা অফিসার হত্যার সম্পুর্ন তালিকাও করা সম্ভব হয়নি, কারন কেন্দ্রিয় কারাগারের বন্দি তালিকার পুরো লেজার বইটি গায়েব করে দেয়া হয়েছিল। নিহতের পরিবার বিদেশে বা অন্যত্র চলেগিয়ে আর তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে নি।

৩০ লাখই মানা না মানায় কিছু আসে যায় না। কিন্তু তথ্যপ্রমান, ভেরিফাইড রেফারেন্স ছাড়া কোন বড় একটি দলের নেতৃবৃন্দ মতলববাজী বক্তব্য দিলে একসাগর রক্তের বিনিময়ে চরমমুল্য দেয়া জাতিকে অবমাননা ও ছোট করা হয়।
বাষ্টার্ড বার্গম্যান-ক্যাডম্যান ও শর্মিলা বসুর টেবিলে তৈরি ফরমায়েসি প্রতিবেদন কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়।


ছাগুরা বেশিরভাগ লেখায় বলে এসেছে তালিকায় বেশী নিহত দেখিয়ে ব্যাবসা করছে।
এটা ঠিক নয়। নিহতের কোন পরিবারই আজ পর্যন্ত ক্ষতিপুরন চায় নি, রাষ্ট্রও কিছু দেয়নি।
নিহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারও কিছু দাবি করে নি। সুধু জীবিতরা কিছু পাচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধারা বাড়ী থেকে না বলে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, না খেয়ে অভুক্ত-অর্ধভুক্ত ছিল এরপরও কোন বেতন চায় নি। আগষ্টের দিকে কিছু হাতখরচ দেয়া সুরু হয়। দেশ মুক্ত করে রাষ্ট্র উপহার দেয়ার পরও তারা কোন বকেয়া বেতন দাবী করে নি।
মৃত মুক্তিযুদ্ধারা মরেও কিছু দাবি করেনি। জীবিতরা ভিক্কা করে, রিক্সা চালিয়ে বেঁচেছিল তবুও রাষ্ট্রের কাছে কিছু দাবী করে নি।
বহুবছর পর বাংলাদেশ রাষ্ট্র সক্ষম হয়ে নিজের পায়ে দাড়ালে সুধু জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের অল্প কিছু ভাতা দেয়া সুরু হয়।

যারা বলছে এসব নিয়ে ব্যবসা চলছে তাদেরকে ধিক্কার জানাই।

১৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:

" যুদ্ধবিধ্বস্ত নবগঠিত যুদ্ধ বিজয়ী সরকার। শুন্য রাজকোষ, বৈরি চীন, আরব ও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদিদের রোষানলের ভেতর সুরু করা, "

-এটা প্রচলিত ভাবনা, ফাইন্যানসিয়েলী এটা সঠিক নয়।
১ম সরকারের ১ম কয়েকটি কাজের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কাজ ছিল মৃত ও আহতদের লিস্ট করা; এবং তা করা যেতো মোটামুটি ফ্রি, মাত্র কয়েকদিনের মাঝে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এটা প্রচলিত ভাবনা কিন্তু অবস্যই সঠিক।

রাজকোষ শুন্যই ছিল। এবসুলুটলি জিরো।
নতুন টাকা ছাপিয়ে না আনা পর্যন্ত ভারতীয় টাকায় বেতন দেয়া হচ্ছিল।
চট্টগ্রাম বন্দর ২ বছর বন্ধ ছিল। ডুবে থাকা জাহাজ বর্জ, অবিষ্ফোরিত বোমা ও পাকিদের পেতেরাখা লিম্পেট মাইনের কারনে।
পরাজয়ের কদিন আগে হার্ডিঞ্জ ও ভৈরব সেতু সহ বড় বড় সেতু ধ্বংশ করে দিয়েছিল পলায়ন রত পাকিস্তান, মেরামতে দু বছর লাগে।
৪ লক্ষ সামরিক-বেসামরিক বাংগালী তখনো পাকিস্তানে আটক। ৩বছর জিম্মি করে রেখেছিল পাকিস্তান।
১৯৭৩ এ তেলের দাম ৪ গুন বৃদ্ধি পাওয়াতে দ্রব্যমুল্য ৫-৬ গুন বেড়ে গেছিল। বাজারে জিনিসই ছিলনা,
দুধের টিন, চিনি এমনকি সামান্য এক টুকরা জামার কাপড় কিনতেও লাইনে দাড়াইতে হয়েছে।
এসব কি ফাইন্যানসিয়েলি সক্ষমতার নমুনা?

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

১৬ ই ডিসেম্বরের পর জীবিতরা ফিরে আসলে খাদ্যাভাবে বিপর্যস্ত মুক্তিযোদ্ধারা নিহতের তালিকা তৈরির চেয়ে সরকার গঠন করে দুর্বিক্ষ ঠ্যাকানো মুখ্য কাজ মনে করেছিল।
পৃথিবীর এমন কোন গণহত্যার কথা বলতে পারেন, যার মৃতদের তালিকা হয়েছে?

চেঙ্গিশ খানের গণহত্যা
হালাকু খা্নের গণহত্যা
তুর্কিদের আর্মেনিয়ান জেনসাইড।
২য় মহাযুদ্ধে ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা।
২য় মহাযুদ্ধে ২কোটি রাশিয়ান সহ প্রায় ৪ কোটির বেশী নিহত।
৭১ এর গণহত্যা
সম্প্রতি -
বসনিয়া, প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া গৃহযুদ্ধে দফায় দফায় মুসলিম হত্যা, গণহত্যা।
রুয়ান্ডার গৃহযুদ্ধে গণহত্যা।

পৃথিবীতে এই পর্যন্ত যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে কোনো যুদ্ধতেই বেসামরিক মৃত মানুষের তালিকা হয়নি। কারণ, যুদ্ধ একদিনের ব্যাপার না। যুদ্ধ কোনো ট্রাফিক জ্যাম না, যুদ্ধ কোনো স্টেডিয়ামের ফুটবল ম্যাচ না যে ধরে ধরে গণনা করা যাবে।
পৃথিবীর কোন বড় গণহত্যার তালিকা করা সম্ভব হয়নি। ছোট গুলোও হয়নি, এমনকি জিয়ার হাতে সামান্য ১৪০০ সেনা অফিসার হত্যার সম্পুর্ন তালিকাও করা সম্ভব হয়নি, কারন কেন্দ্রিয় কারাগারের বন্দি তালিকার পুরো লেজার বইটি গায়েব করে দেয়া হয়েছিল। ক্যান্টনমেন্টে নিহতের সিভি সহ সব নাম মুছে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল সুপরিকল্পিত ভাবেই।
পরে অনেকের পরিবার বিদেশে বা অন্যত্র চলেগিয়ে আর তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে নি।

১৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৪

হাসান নাঈম বলেছেন: আমি এই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটিকে আইন করে রক্ষা করার ঘোর বিরোধী।
আমি এ ব্যাপারে আপনার সাথে একমত

- ধন্যবাদ একমত হওয়ার জন্য।

"আমাদেরও নিহত তালিকা থাকলে অবস্যই ভাল হত।"

আসুন এখন থেকে জোর দাবি জানাই যত জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায় তাদেকেই তালিকাভুক্ত করা হোক। মহান শহীদদের আমরা শুধুমাত্র একটা সংখায় আটকে রাখতে পারি না। এখনও অনেকের আত্মীয় বন্ধু প্রতিবেশীরা বেঁচে আছে। আজ থেকে ৫০ বছর পর তারাও থাকবে না। সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।

কাজেই সংখ্যা যাই হোক, শহীদদের নাম পরিচয়সহ একটা তালিকা থাকাটা খুবই জরুরী। আর যারা তালিকার কথা শুনলেই আঁতকে ওঠে, তাদেরকেও বুঝিয়ে বলি এতে খারাপ কিছু নাই। ৩০ লাখ আইকনিক ফিগার ঠিক রেখেও তালিকা করা যায়। যদি আমরা শহীদদের নাম পরিচয় সংরক্ষণের চেয়ে ৩০ লাখ আইকনিক ফিগার ঠিক রাখার দিকেই বেশী নজর দেই তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। পরবর্তিতে হয়ত লেখা হবে - আমরা শহীদের মর্যাদার চেয়ে একটা সংখ্যা ঠিক রাখাকেই বেশী গুরুত্ব দিয়েছি।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৪

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
নিহত তালিকা থাকলে অবস্যই ভাল হত। এখন তালিকার কথা বলা অপ্রয়জনিয়।
কিন্তু পৃথিবীতে এই পর্যন্ত যতগুলো যুদ্ধ হয়েছে কোনো যুদ্ধতেই বেসামরিক মৃত মানুষের তালিকা করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিটি যুদ্ধ শেষে বিভিন্ন প্রতিকুলতার কারনে এসব সম্ভব হয় নি।
এখন আবার নতুন করে তালিকা করা হলে অসম্পুর্ন ভুল তালিকা হয়ে মানুষ বিভ্রান্ত হবে।

একটি মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' ২০১৩ ৫ ই মে 'হেফাজত তান্ডবে' নিহতের ৬১ জনের তালিকা করেছিল ৪ মাস তদন্ত করে।
কিন্তু ভুল পাওয়া গেছিল ১৪টা।
মৃতের তালিকায় চাদপুর উজানি মাদ্রাসার ৩ জন বেঁচে ছিল, এক বছর পর আরো দুজন জীবিত সন্ধান পাওয়া যায়।
অনেকের নাম ছিল আংশিক , ঠিকানা বিহীন। ১ জনের ডুব্লিকেট এন্ট্রি, নাম দুবার এসেছে।

এ নিয়ে আমার একটি পুরানো লেখা পড়ুন।
ভন্ড আদিলুর-মাহামুদুরদের বিভ্রান্তিকর তালিকা
ভন্ড আদিলুর-মাহামুদুরদের কঠিন শাস্তিই কাম্য

১৫| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৫

হাসান নাঈম বলেছেন: তাই কি ভুলের ভয়ে তালিকাই করা যাবে না?
দারুন যুক্তিতো?
তাহলে রাজাকারের বিচার করলেন কিভাবে?
সেই তালিকায়ওতো ভুল হতে পারে।
যেসব লোকের নাম প্রথম সরকারের ১৯৫ জনের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় ছিল না, দালাল আইনে মামলা হওয়া এক লাখ মানুষের তালিকায়ও ছিল না - তাদেরকেই কি ৪০বছর পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিন্হিত করা হয় নাই? তাহলে সেখানে ভুলের সম্ভাবনা কতটুকু? ভুলের সম্ভাবনা সত্যেও মানুষকে ফাঁসি দিয়ে ফেলতে পারলাম - অথচ ভুলের আশংকায় শহীদের তালিকা করতে চাই না - বাহ্ বাহ মুক্তিযু্দ্ধের চেতনাতো খুবই চমৎকার!!!

"একটি মানবাধিকার সংস্থা 'অধিকার' ২০১৩ ৫ ই মে 'হেফাজত তান্ডবে' নিহতের ৬১ জনের তালিকা করেছিল ৪ মাস তদন্ত করে।
কিন্তু ভুল পাওয়া গেছিল ১৪টা। "

এটাতো খুবই উদ্বেগের বিষয়। ৬১জনের মধ্যে ১৪টা ভুল হলে ৪৭টা সঠিক! অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে সরকারের পরিষ্কার নির্দেশে রাস্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে রাতের অন্ধকারে নিরস্র মানুষের উপর ঝাপিয়ে পরে যদি ৪৭ জন না ৪ জনকেও হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে তার দায়ে নির্দেশ দাতাদের কি ফাঁসি হবে না?? এর সাথে যদি কেউ ২৫ মার্চের অপারেশন সার্চলাইটের তুলনা খুঁজে পায় - তাকে কি খুব বেশী দোষ দেয়া যাবে?

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৩

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আশ্চর্য তো, রাজাকার চিফদের বিচার আপনার কাছে ভুল মনে হচ্ছে?
এই বদর নেতাদের নাম ১৯৫ পাকি যুদ্ধবন্দি তালিকায় থাকবে কেন? তারা কি পাকি সৈন্য?
১৯৫ বন্দি পাকি সেনা কর্মকর্তা। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার হচ্ছিল।
কিন্তু ভুট্টো এই কয়টা সেনার বিপরিতে পাকিস্তানে অবস্থানরত ৪ লক্ষ বাংগালিকে বন্দি করে জিম্মি করে রাখে ৩ বছর জাবত।
শিমলা চুক্তি ও ৩ দেশিয় চুক্তির মাধ্যমে বন্দি বিনিময় হয়। ৪ লক্ষ বেসামরিক বাংলাভাষির সাথে ১৯৫ বন্দি পাকি সেনা কর্মকর্তা যুদ্ধাপরাধী বিনিময় হয়।
রাজাকারদের কোন তালিকা করা হয়নি, যারা ধরা পরেছিল সুধু তাদের বিচার হচ্ছিল। বদর নেতারা দাড়ি কামিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল, কিছু ভারত, বৃটেন ও পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিল। হিন্দুস্তান জামাত তাদেরকে আশ্রয় দেয়। মুজিব হত্যার পর সামরিক জান্তা তাদেরকে ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার ব্যাবস্থা করে। ২০০৮ এর নির্বাচনে বিজয়ী সরকার পুর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে সুধু শির্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ব যুদ্ধাপরাধ বিচারে এই বিচার ছিল আসামিদের ব্যাপক আত্নপক্ষ সমর্থনের সুযোগ।
সাকার আইনজীবি বাদে জামাতের আইনজীবিরা মোটামুটি সন্তুষ্ট ছিল। তারা বিচারশেষে বলেছিলেন।- "বিচারপর্ব শেষ হয়েছে, আমাদের দুর্ভাগ্য রায় পক্ষে আসেনি, তবে বিচার প্রকৃয়াতে কোন বড় ত্রুটি ছিলনা"।

১৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

হ্যারিয়ার-৩ বলেছেন:
ম্যাডাম এমন সময়ে বিতর্ক তুললেন যখন পাকিস্তান নিহত সংখা নিয়ে উদ্ভট দাবি করে ফাসির নিন্দা করে যাচ্ছিল।

১৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৩

হাসান নাঈম বলেছেন: "আশ্চর্য তো, রাজাকার চিফদের বিচার আপনার কাছে ভুল মনে হচ্ছে? "

না, ঠিক ভূল নয়, কিছু সংশয়তো আছেই। বিশেষ করে আপনি যখন ভুলের ভয়ে শহীদের তালিকা করতে চান না তখনতো মনে হতেই পারে যে এত বছর পরে বিচার করতে গিয়ে আবার কোন অবিচার হয়ে গেল কী না। আর শাস্তিটাওতো একেবারে মৃত্যুদন্ড, যার কোন শংষোধন সম্ভব না, তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন। আরও কিছু বিষয় জানা দরকার: আপনি বলছেন 'রাজাকার চিফ' দের বিচার হয়েছে। যতদুর জানি রাজাকার একটা সরকারী বাহীনি ছিল, পাকিস্তা আর্মির সহযোগী (বর্তমানে বাংলাদেশে যেমন আনসার )। তাদেরতো সরকারী তালিকা থাকার কথা। যাদের ফাঁসি হয়েছে তারা কি সেইরকম কোন সরকারী তালিকায় নথিভুক্ত ছিল? বিশেষ করে তারা যদি চিফ হয়ে থাকে তাহলেতো সেটা আরো স্পস্ট করে উল্লেখ থাকার কথা ছিল।

" প্রথম পর্যায়ে সুধু শির্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সিদ্ধান্ত হয়"
কিন্তু আমরাতো দেখলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারই হয় নি, বিচার হয়েছে মানবতা বিরোধী অপরাধের। যে ১৯৫ জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল তারা কি শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ছিল না? বাংলাদেশ সরকার কি শীর্ষ দের বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা করেছিল? শেখ সাহেবের সরকার কি এতই বেকুব ছিল যে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদেরই তালিকায় রাখতে ভুলে গিয়ে ছিল? এত বড় ভুল যদি তারা করে থাকতে পারে, তাহলে শহীদের সংখ্যা নিয়ে ভুল করা কি তাদের পক্ষে খুব কঠীন কিছু?

আর একটা বিষয়: ট্রাইবুনালের প্রথম রায় ছিল কাদের মোল্লার যাবত জীবন জেল। এর পর শাহবাগে সেই রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। পরে সংসদের মাধ্যমে আইন পরিবর্তন করে উচ্চ আদালতে আপীল করে সেটা মৃত্যুদন্ডে উন্নীত করা হয়। এখন প্রশ্ন হল: যে বিচার ব্যাবস্থার রায় রাস্তার আন্দোলনের প্রভাবে বদলে যায়, এমন কি আইন পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে যায় - তাকে কি সঠিক বিচার বলা যায়? আজকে আমরা হয়ত আবেগের বশে উৎফুল্ল হচ্ছি, কিন্তু ভবিষ্যতে যখন এই আবেগ থাকবে না, অনাগত প্রজন্ম যখন ইতিহাস পড়বে - তখন বিষয়টা কিভাবে দেখবে, ভেবে দেখেছেন কি?

"তারা বিচারশেষে বলেছিলেন।- "বিচারপর্ব শেষ হয়েছে, আমাদের দুর্ভাগ্য রায় পক্ষে আসেনি, তবে বিচার প্রকৃয়াতে কোন বড় ত্রুটি ছিলনা"।
যদি তেমনই হয়ে থাকে,বিচার সবাই মেনে নেয়, তাহলেতো ভালই। কিন্তু আমরাতো দেখলাম রায়ের প্রতিবাদে হরতাল পালন। দেশে বিদেশে হাজারো গায়বানা জানাজা আয়োজন এবং তাতে লক্ষ মানুষের যোগদান। ওনারা যদি মেনেই নিয়ে থাকেন যে অপরাধের কারনেই ঐসব নেতাদের ফাঁসি হয়েছে - তাহলে একজন অপরাধী, তাও যুদ্ধাপরাধীর জন্য এই প্রতিকৃয়া কি স্বাভাবিক? দেশ বিদেশে যারা গায়েবানা জানাজায় অংশ নিয়েছেন তারা সবাই কি যুদ্ধাপরাধী(বা সহযোগী)?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

বিদেশে গায়বানা জানাজা আয়োজন এবং তাতে লক্ষ মানুষের যোগদান? কোথায়? দু একশ লোক কে বলেন লক্ষ লক্ষ!

রাজাকার একটা সরকারী বাহিনী ছিল।
তেমনি আলবদরও একটা সরকারী নিয়ন্ত্রিত মিলিশিয়া বাহিনী ছিল। আলবদর কমান্ডার ও সদস্যরা সবাই জামাতের/ছাত্রসংঘের সদস্য।
১৯৫ জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল তারাও শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী ছিল। এদের বিচার করতে বিশেষ আইন তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু ভুট্টো এই কয়টা সেনার বিপরিতে পাকিস্তানে অবস্থানরত ৪ লক্ষ বাংগালিকে বন্দি করে অনাহারে জিম্মি করে রাখে ৩ বছর জাবত।
শিমলা চুক্তি ও ৩ দেশিয় চুক্তির মাধ্যমে বন্দি বিনিময় হয়। ৪ লক্ষ বেসামরিক বাংলাভাষির সাথে ১৯৫ বন্দি যুদ্ধাপরাধী পাকি সেনা কর্মকর্তা বিনিময় করতে বাধ্য হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.