নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেহেদী হাসান৭৫

মেহেদী হাসান৭৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হায়! কমিশন্ড অফিসার পদে যোগদানের এই কি লক্ষ্য?

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৩

প্রায় বছরখানিক আগে আমি একবার কমিশন্ড অফিসার পদে যোগদানের একটি বিজ্ঞাপন পড়েছিলাম। কেন পড়েছিলাম তা নির্দিষ্ট করে মনে নেই এখন। বিজ্ঞাপনে কমিশন্ড অফিসার পদে ‘প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা’ শিরোনামে বেশ কিছু সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-



জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করে বিদেশ ভ্রমন ও আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জনের সুযোগ।

নিরাপদ ও মনোরম পরিবেশে মানসম্পন্ন বাসস্থান প্রাপ্তি এবং দেশে বিদেশে উন্নতমানের চিকিৎসা লাভের সুযোগ।

নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষ ডিওএইচএস-এ প্লট/ফ্যাট প্রাপ্তির সুবিধা।

বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে সামরিক/সহকারি সামরিক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ প্রাপ্তির সুবিধা।

নিজ সন্তানদের জন্য ক্যাডেট কলেজ, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এবং সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্কুল/কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ।

দুরারোগ্য ব্যাধিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হলে নগদ অর্থ প্রদানসহ বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা।



এরপর আমি কমিশন্ড অফিসার পদে আরো দুয়েকটি বিজ্ঞাপন দেখলাম ওগুলো আছে কি-না তা দেখার জন্য। দেখালাম আছে। আজ শুক্রবার কমিশন্ড অফিসার পদে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখলাম। সেখানেও এ সুযোগসুবিধার কথা বর্নিত আছে। আজকের বিজ্ঞাপন থেকে উপরোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরলাম।

কমিশন্ড অফিসার পদে নিয়োগ লাভের পর বর্নিত সুযোগ সুবিধাদি দেখে আমার মনে কতগুলো প্রশ্ন জেগেছে। শান্তি মিশনে যোগ দিয়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন, ঢাকায় প্লট/ফ্যাট আর বাড়ির মালিক হওয়া কি সেনা অফিসার পদে যোগদানের উদ্দেশ্য? সেনা কর্মকর্তা হওয়া কি এখন নিতান্তই একটি চাকরিতে পরিণত হয়েছে? এটাকে কি স্মার্ট জব হিসেবে বিবেচনা করবে তরুনরা? এই কি এখন সেনা কর্মকর্তা হওয়ার লক্ষ্য আর উদ্দেশ্য?



সেনা কর্মকর্তারা এসব সুযোগ সুবিধা পাক তা নিয়ে আমার একটুও আপত্তি নেই। আরো বেশি পেলেও আপত্তি নেই। প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতে হয় যেখানে সে ধরনের একটি মহান ব্রতী কাজে এ ধরনের ুদ্র লোভনীয় জিনিসগুলো সামনে না আনলেই কি নয়? আমার এ ধারণা নিশ্চয়ই মিথ্যা নয় যে, একটা মহান ত্যাগী উদ্দেশ্য থাকে তরুনদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের পেছনে । কিন্তু একজন তরুন যখন জানবে সেনা অফিসার হলে সে রাতারাতি শান্তি মিশনে গিয়ে অনেক টাকার মালিক হতে পারবে, ঢাকায় প্লট, বাড়ির মালিক হতে পারবে অতি সহজে তখন সেনাবাহিনীতে যোগদানের আসল উদ্দেশ্যই তার মন থেকে হারিয়ে যেতে পারে না কি? একজন তরুন শুধুমাত্র মহান দেশপ্রেম, দেশ রক্ষার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত সে, তার জীবনের বিনিময়েও হলেও দেশের স্বাধীনতা, মানুষের মুক্ত পদযাত্রা অব্যাহত থাকুক এ নেশা, চিন্তা থেকেই সে সেনাবাহিীনতে যোগ দিক। তার মনে আর কোন লোভ লালসা না থাক সেটাই তো হওয়া উচিত তাই নয়কি? তারপর তার জীবনে যুদ্ধের সুযোগ না আসুক, জীবন দেবারও সুযোগ না আসুক কিছুই যায় আসেনা। উন্নত জীবনের সব সুযোগ সুবিধা সে পাক; তাতেও কোনই আপত্তি নেই। কিন্তু শুরুর উদ্দেশ্যটা মহানই থাক, থাকা উচিত। সেনাবাহিনীতে যোগদানের শুরুতে সে শুধু জানুক এখানে কিছই পাবার নেই। বরং পুরোটাই দেবার। মানব জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাণ পর্যন্ত যেকোন সময় বিলিয়ে দিতে হতে পারে দেশের জন্য। সে শুধু এটাই জানুক। শুধু এটুকু জানার মধ্য দিয়ে যখন একজন সেনাবাহিনীতে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নেবে তখনই কেবলমাত্র সেনাবাহিনী একঝাক সাচ্চা তরুন পাবে। কিন্তু কমিশন্ড অফিসার পদে যোগদানের আগে যখন তাকে জানানো হবে এখানে শান্তি মিশনে যোগ দিয়ে ভাল পরিমান অর্থের মালিক হওয়া যায়, ঢাকায় বাড়ির মালিক হওয়া যায় নিশ্চিন্তে নির্ঝামেলায় তখন চাকরির তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে একজন তরুন সেনা অফিসার পদে যোগদেয়াকে একটি ভাল বিকল্প হিসেবে বেছে নেয়ার কথা চিন্তা করতেই পারে। তার মনে দেশ প্রেম, দেশের জন্য জীবন দেয়া এসব উদ্দেশ্য মাইনর হয়ে যেতেই পারে। এটি যে ঘটছেনা তা কি অস্বীকার করা যাবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে সব পরীক্ষায় ফার্স্ট কাস পাওয়া অনেক মেধাবী তরুনও এখন তার সব বিকল্প পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে স্থান দেয় কমিশন্ড পদে যোগদানকে। ভাল করে বুকে হাত রেখে জিজ্ঞাসা করুন আসলে তারা কি জন্য এ পদে যোগ দিতে চায়? সেটা কি দেশরক্ষা না সুনিশ্চিত উন্নত জীবন যাপনের নিশ্চয়তা?



আমার মতে দেশরক্ষাকারী বাহিনীতে যোগদানের মত একটি মহান কাজের পেছনে ুদ্র এ লোভ লালসার বিষয়গুলোকে এভাবে সামনে না আনাই ভাল। ঢাকঢোল না পিটিয়েই এগুলো তাদের দিয়ে দিন। কোন আপত্তি নেই। বরং এ পদে যোগদানের পর তার জীবনে কি কি চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, তাকে কি কি কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হবে সেসব বর্ননা করুন বিজ্ঞাপনে । তাহলেই সেনাবাহিনী আরো ত্যাগী তরুনদের পাবে আশা করি।



















মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

প্লাটো বলেছেন: Quite alarming !!

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

রিওমারে বলেছেন: সত্যি কথা বলতে সব কিছুই বানিজ্যিক হয়ে গেছে।।

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৫

ময়ূখ বলেছেন: ভাই...আমি জানি না আপনার কোন সামরিক ট্রেনিং এর অভিগ্গতা আছে কিনা, থাকলে বুঝতে পারতেন যে ট্রেনিং শেষের পরে দেশের প্রতি মোটিভেশনের কোন অভাব কোন কালেই থাকে না, থাকবে ও না...পুরো ট্রেনিং প্রোগ্রাম টাই এভাবে ডিজাইন করা থাকে...আর সামরিক অফিসার হওয়া একটা প্রফেশন আর দশটা কাজের মতই, কাজের ধরনে যা তফাৎ...আমাদের বুঝতে হবে এইটা...

আপনি অন্যান্য দেশের ডিফেন্সের চাকুরীর এড গুলো দেখেন: আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া...দেখেন কি লেখা থাকে...তার পরে চিন্তা করেন ঐ দেশের আর্মি অফিসার কিন্তু এত কিছু দেখেই জয়েন করতেছে এবং খুব ভালো মতোই পারফর্ম করতেছে ফিল্ডে...

প্রফেশনাল হিসাবে আমি জানতে চাইব যে আমি কি পাব দেশের জন্য কাজ করলে...কম আর বেশী হোক...আমি যদি আমার পরিবার কে ঠিক রাখতে না পারি, দেশকে কিভাবে রাখব...?! ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.