নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উন্নয়ন ও মানবাধিকার কর্মী। শিশুর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অধিকার এবং নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার জন্য কাজ করি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে কৌতূহলী।

মাঈনউদ্দিন মইনুল

মুখোশই সত্য!

মাঈনউদ্দিন মইনুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুদের নিয়ে ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতাগুলো কতটুকু ভবিষ্যৎদর্শী?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১





এক) সাড়া জাগানো এবং বক্সঅফিস মাতানো সিনেমা ‘হোম এলোন ১-২’ এর ছোট্ট শিশু কেভিনের কথা কারও খেয়াল আছে? আহা! দুটো প্রাপ্তবয়স্ক ভিলেনকে কী নাস্তানুবাদই করেছিলো ছোট্ট শিশুটি! আমি সেদিনও দেখছিলাম স্টার মুভিজে। অথবা ‘রিচি রিচ’ সিনেমার সেই ধনীর দুলাল রিচির কথা মনে পড়ে? কীভাবে সে তার বাবা-মাকে স্বার্থলোভী সহকর্মীদের ফাঁদ থেকে রক্ষা করেছিলো! ছোটকাল থেকেই আমি কালকিন ম্যাকুলে’র ভক্ত। ১৯৯১ সালের এমি এওয়ার্ড বিজয়ী এবং হোম-এলোন-খ্যাত কালকিন বিবেচিত হয়েছিলো সফলতম শিশু তারকা হিসেবে। বলা বাহুল্য, এ লেখাটি তার উন্নতি নয়, অবনতি নিয়ে।





২০০০ সাল পর্যন্ত অভিনয় জীবন থেকে বিরত থাকার পর হঠাৎ ২০০৪ সালে কালকিন খবরে আসে খুবই খারাপভাবে। বিভিন্ন প্রকারের মাদকদ্রব্যসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর! সেই ছোট ছেলেটি আর ছোট্ট নেই। খ্যাতিমানদের বিচার হয় সবচেয়ে দ্রুত। খুবই তাড়াতাড়িই সে বিচারের সম্মুখীন হয় এবং সংক্ষিপ্ত জেলজীবনও অতিক্রম করে এই কালকিন। ততদিনে কালকিন পরিণত হয়েছে নিয়মিত হেরোইন সেবক হিসেবে। ব্যক্তিগত জীবনে একবার স্ত্রী পরিবর্তন করেছে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে আছে। সেটাও বর্তমানে অনিশ্চিত অবস্থায় আছে। কিন্তু পশ্চিমে এসব কোন খবর নয়। খবর হলো, হেরোইন সেবক হয়ে মৃত্যুর সাথে তার ছেনালিপনা। নিজ হাতে নিজের সর্বনাশ কে মেনে নেয়?



২০১২ সালে জুলাই মাসে দ্য ইনকোয়ারার খবর প্রকাশ করে যে, হেরোইন-সেবী কালকিন ম্যাকুলে’র মাত্র ছ’মাস সময় আছে এই পৃথিবীতে। কিছু কিছু পত্রিকা তাদের হতাশা প্রকাশ করার জন্য আগাম শোকবার্তা প্রকাশ করে ঠিক এভাবে: “অ্যামেরিকান অভিনেতা কালকিন ম্যাকুলে (১৯৮০-২০১৩) মৃত্যুবরণ করেছেন; তার বন্ধু ও পরিবারবর্গ শোকাহত” ইত্যাদি। চিকিৎসকদের ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ি কালকিন ম্যাকুলে এবছর ৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করার কথা।



যা-ই হোক কালকিন এখনও মারা যায় নি। নিরব আত্মহননের পথ থেকে অনেকটাই ফিরে এসেছে সে। দিন কাটাচ্ছে ছবি এঁকে। কিন্তু ধ্বংস যা হবার তা হয়েই আছে, বাকী শুধু পরিণতি লাভের। পরিবারের সাথে বিশেষত বাবার সাথে তার সম্পর্ক ভালো ছিলো না কখনোই। পশ্চিমা পরিবারে যতটুকু বন্ধন থাকে, তার চেয়ে একটু কম ছিলো কালকিনের পরিবারে! তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো অপরিণত বয়সের তারকাখ্যাতি।





দুই) কালকিনের জীবন থেকে অনেককিছুই শেখা যায়। আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিটি মানুষ সামাজিক এবং আইনগতভাবে শিশুই তাকে, কারণ এসময়ে তারা নিজের মঙ্গল-অমঙ্গল বুঝতে পারে না। কম বয়সে শিল্পী হওয়া খারাপ কিছু নয়, কিন্তু তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, জীবনে একটি শক্ত ভিত তৈরি করা। মৌলিক পড়াশুনা শেষ না করেই শিশুরা যখন প্রাপ্তবয়স্কদের মতো কৃতীত্ব পেয়ে যায়, তাদের পক্ষে তখন প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পড়াশুনায় মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে অনেক ক্ষুদে শিল্পী গড়ে ওঠছে নাচ গান ইত্যাদি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। অথচ গণিত অলিম্পিয়াড বা স্পেলিংবি’র মতো পড়াশুনার সাথে প্রাসঙ্গিক আয়োজনগুলো যথেষ্ট গুরুত্ব পায় না, আমাদের অভিভাবক বা স্পনসরদের কাছে।



শিশুদেরকে নিয়ে এসব নাচ-গান প্রতিযোগিতায় আমার ঘোর আপত্তি আছে, যদিও সকলকে তা বুঝানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কথিত ট্যালেন্ট হান্ট-এর আয়োজকেরা শিশুদের নিয়মিত পড়াশুনার বিষয়টিকে কতটুকু বিবেচনায় রাখছেন, তাতে আমার অনেক সন্দেহ। আমাদের দেশে তারকাখ্যাতি পাওয়া এক শিশু শিল্পীর মা হবার খবর শুনে আমি রীতিমতো চমকে ওঠেছিলাম। দশ-বারো বছর বয়সে তারা তারকাখ্যাতি লাভ করছে আর প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে অসম সামাজিকতায় জড়িয়ে পড়ছে। এদের মধ্যে কতজন সঠিকভাবে তাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালনা দিতে পারবে, ভেবে দেখার বিষয়।





*কালকিন ম্যাকুলে সম্পর্কে যাবতিয় তথ্য ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪

তামিম ইবনে আমান বলেছেন: সহমত।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ, লেখাটি পড়ার জন্য।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৬

মোহাম্মেদ তারেক হোসাইন বলেছেন: সহমত।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সহমত প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮

সকাল>সন্ধা বলেছেন: এই অবস্থা থেকে আমাদের বাচ্চা কাচ্চারা পিছিয়ে নেই। একটু খোজ করে দেখুন... বল্লে মাইন্ড কইরেন না। ভারসিটির ছেলে মেয়েরা গাজা খায়ে পড়া মুখস্ত করে এটা নাকি যাদুর মত কাজ করে। আসলে কি? তারা নেশর জগতে প্রবেশ করে। আপনি হলফ করে বলতে পারবেন না আপনার আশে পাশের কেউ ইয়াবায় আসক্ত কিনা....

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “ ভারসিটির ছেলে মেয়েরা গাজা খায়ে পড়া মুখস্ত করে এটা নাকি যাদুর মত কাজ করে। আসলে কি? তারা নেশর জগতে প্রবেশ করে। আপনি হলফ করে বলতে পারবেন না আপনার আশে পাশের কেউ ইয়াবায় আসক্ত কিনা”

-শতভাগ একমত। আমাদের উচিত এবিষয়ে অন্তত নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট এবং গঠনমূলক রাখা।

মন্তব্য দেবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

কাকপাখী বলেছেন: পুরোপুরি একমত ।ফলগুলো পাকার আগেই পচে যায় ।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩১

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “ফলগুলো পাকার আগেই পচে যায় ।”
- খাঁটি কথা।

লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৪

শার্লক বলেছেন: আসলেই বাংলাদেশেও এই অবস্থা। মেডিক্যাল, ভার্সিটির পোলাপানরা গাজা, ডাইল এসব খায়। না খাইলে নাকি পড়তে পারে না।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “মেডিক্যাল, ভার্সিটির পোলাপানরা গাজা, ডাইল এসব খায়। না খাইলে নাকি পড়তে পারে না।”

-বিভীষিকতাময় বর্তমানে বাস করছি আমরা!
এ থেকে বাঁচার উপায় কী?

মন্তব্যের জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।

৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৫

মিনহাজুল হক শাওন বলেছেন: @শার্লক, কথা সত্য। অনেকে বিশ্বাস করবে না, কিন্তু নিজে চোখে দেখা এটা। না খেলে নাকি পিনিক আসেনা।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: হাহাহা!

৭| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১২

মদন বলেছেন: +

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: মদন ভাইকে ধন্যবাদ।

৮| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

শায়মা বলেছেন: কি ভীষন কষ্টকর!

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: সত্যিই তাই।
নিজেই নিজের জন্য কষ্টকর পরিস্থিতি আমরা সৃষ্টি করতে পারি।

মন্তব্যের জন্য শায়মাকে কৃতজ্ঞতা।

৯| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০

বোকামন বলেছেন: ট্যালেন্ট মানে কি শুধুই - নাচ, গান, অভিনয় !!!

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: নাচ গানের নামে যে ট্যালেন্ট শো গুলো হয়, সেগুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। শুধু নাচ-গান নিয়ে ট্যালেন্ট শো হতে পারে না।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য!

১০| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৮

লিন্‌কিন পার্ক বলেছেন:
বাবা খাইলে নাকি পরীক্ষার রেসাল্ট ভালা হয় !! পরীক্ষার আগে অনেকেই পড়া বাদ দিয়া বাবার খোঁজ করে । ঘুম আসেনা , ক্লান্ত লাগে , না একটানা পড়া যায় ব্লা ব্লা ব্লা :|

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:১৬

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: এটি ধ্বংসের পূর্বের অবস্থা! নিজের ওপর ভরসা হারিয়ে অন্যকিছু ওপর ভরসা, মানেই হলো অধ:পতন।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ!!

১১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:২১

খায়রুল আহসান বলেছেন: একটা জরুরী বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য ধন্যবাদ।
অথচ গণিত অলিম্পিয়াড বা স্পেলিংবি’র মতো পড়াশুনার সাথে প্রাসঙ্গিক আয়োজনগুলো যথেষ্ট গুরুত্ব পায় না, আমাদের অভিভাবক বা স্পনসরদের কাছে। - আপনি ঠিক বলেছেন। এসব বিষয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর এগিয়ে আসা উচিৎ।
ফলগুলো পাকার আগেই পচে যায় - কাকপাখীর এ মন্তব্যটা কতটা সত্য, তা আমরা অনেকেই লক্ষ্য করি না।
পোস্টে ভাল লাগা- + +

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

ছাপার লেখা ইচ্ছে হলেই খুঁজে বের করে পড়া যায়, কিন্তু ৩/৪ বছরে আগের পোস্ট খুঁজে বের করে পড়ে তাতে আবার মন্তব্য দেওয়া... এটি সব পাঠকের কাজ নয়। লেখকও নিজের লেখাটি আবার দেখার ফুরসন পায়। এজন্য পুরাতন পোস্টে মন্তব্য পেলে একটি বিশেষ ভালোলাগা কাজ করে। অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় লেখক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.