নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিঃসঙ্গতার একশ’ বছর-খ্যাত ল্যাটিন লেখক গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস ৮৭ বছর বয়সে মেক্সিকো সিটিতে মৃত্যুবরণ করেন। গত ৩ এপ্রিল তারিখে নিউমোনিয়া নিয়ে তিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখান থেকে মোটামুটি সুস্থ হয়ে তিনি নিজ বাড়িতে ফিরেও যান। কিছুদিন পর হঠাৎ ইনফেকশন হলে আবার গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।
১৯৮২ সালের সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী কলাম্বিয়ান লেখক যিনি স্প্যানিশ ভাষায় বিশ্বজুড়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তার ‘ম্যাজিকেল রিয়েলেজমযুক্ত’ উপন্যাস ও ছোট গল্প দিয়ে। ম্যাজিকেল রিয়েলিজম হলো একটি সাহিত্য-ধারা (literary genre) যাতে কল্পনা ও বাস্তবতাকে বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে সমন্বয় করা হয়। সাহিত্যের এধারাকে তিনি জনপ্রিয় করে তুলে তিনি নিজেও হন জনপ্রিয়। Don Quixote ডন কুইক্সোট-খ্যাত মিগুয়েল ডি সার্ভান্তেসের পরে তাকে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্প্যানিশ লেখক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা (১৯০৪-১৯৭৩) মার্কেসকে সার্ভান্তেসের পর শ্রেষ্ঠ স্থান দিয়েছিলেন। “উপন্যাস ও ছোটগল্পে কল্পনা আর বাস্তবতাকে (তিনি) একত্রিত করেছেন তার সমৃদ্ধ কল্পনার রাজ্যে, যাতে উপমহাদেশের জীবন ও দ্বন্দ্বের প্রতিচিত্র ফুটে ওঠেছে।” নোবেল কমিটির সংক্ষিপ্ত ঘোষণাপত্রে মার্কেসের লেখার নিজস্বতা খুঁজে পাওয়া যায়। ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যের পতাকা-বাহক গ্যাব্রিয়েল নিজ উপমহাদেশে ‘গাবো’ নামে পরিচিত।
পুরস্কার বা স্বীকৃতির বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের হুমায়ুন আজাদের মতোই মার্কেস ছিলেন বিপরীতমুখী। ১৯৮১ সালে অর্থাৎ নোবেল পুরস্কারের পূর্বের বছরটিতে তাকে একবার প্রশ্ন করা হলো: লেখক হিসেবে তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা কেমন। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, নোবেল প্রাইজ পাওয়া হবে তার লেখক সত্ত্বার জন্য বিধ্বংসী, কারণ লেখককে তখন ‘খ্যাতি’র সাথে সংগ্রাম করতে হবে। খ্যাতি লেখকের ব্যক্তিগত জীবনকে আক্রান্ত করে এবং এটি তাকে বাস্তব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। “এভাবে আমি বলতে চাই না, কারণ এটি কখনও বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তবে আমি সত্যিই চাইব আমার লেখাগুলো মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হোক, যেন আমাকে খ্যাতি এবং বিখ্যাত লেখকের চাপে না থাকতে হয়।”
মজার ব্যাপার হলো নোবেল প্রাইজ অর্জনের পর লেখক সত্ত্বার যা-ই হোক, মার্কেস দেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। বিখ্যাত লেখকের সুনাম দিয়ে মার্কেস কলাম্বিয়ার অভ্যন্তরিণ রাজনৈতিক সমাধানে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন এবং সরকারের সাথে যুদ্ধরত গেরিলাদের শান্তি আলোচনায় অবদান রাখেন। লেখকের খ্যাতি দিয়ে কিউবান প্রেজিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাথে নিজ দেশের জন্য সম্পর্ক সৃষ্টি করতে সমর্থ হন। অপর দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে এই সেলিব্রেটি লেখক প্রকাশ্য অবস্থান নেবার কারণে দীর্ঘদিন ইউএস ভিজা থেকে বঞ্চিত হন।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম:
•উপন্যাস: ১) ইন ইভিল আওয়ার/ দুঃসময়ে; ২) ওয়ান হানড্রেড ইয়ারস অভ সলিটিউড/ নিঃসঙ্গতার একশ’ বছর; ৩) লাভ ইন দ্য টাইম অভ্ কলেরা/ কলেরার সময়ে প্রেম (ইত্যাদি);
•ছোট গল্প: ৪) আইজ অভ্ আ ব্লু ডগ/ নীল কুকুরের চোখ; ৫) বিগ মামা’র ফিউনারেল/ বড় মা’র অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া;
•ছোট উপন্যাস/ নোভেলা: ৬) লিফ স্টর্ম/ পাথার ঝড়; ৭) নো ওয়ান রাইটস টু দ্য কর্নেল/ কর্নেলের কাছে কেউ লেখে না। ‘লিফ স্টর্ম’ উপন্যাসটি মার্কেসের প্রথম ফিকশন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী ও লেখক সত্ত্বার উদ্ভব
কলাম্বিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৭ সালে। মার্কেসের ছেলেবেলা কেটেছে পারিবারিক গল্প শুনতে শুনতে। বাবা ফার্মাসিস্ট হবার কারণে জন্মের পরেই নানাবাড়িতে এবং নানার কাছেই বড় হয়েছেন গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। নানা ছিলেন একজন চৌকষ মিলিটারি অফিসার এবং নিজ এলাকায় সম্মানীত একজন ব্যক্তি। সেই সাথে তিনি ছিলেন এক সম্মোহনী গল্পকার। গল্প, ভাষা এবং নৈতিক শিক্ষা সবই তিনি পেয়েছেন তার নানার কাছে থেকে। বাবা-মা ফার্মেসি ব্যবসা নিয়ে অন্যত্র অবস্থান করায় তারা ছিলেন এক প্রকার অপরিচিত, মার্কেসের কাছে।
ছেলেবেলার আরেকটি বিষয় মার্কেসের লেখক-সত্ত্বাকে প্রভাবিত করেছে। তা হলো, বাবা-মায়ের ঘটনাবহুল বিবাহ-পূর্ব প্রেম। মার্কেসের ‘কর্নেল নানা’ কোনভাবেই তার মেয়ের সাথে গাব্রিয়েল এলিজিও গার্সিয়াকে (মার্কেসের বাবা) মেনে নিতে চান নি। এলিজিও নারী-প্রেমী বা ওমেনাইজার হিসেবে সমাজে পরিচিত ছিলেন এবং ছিলেন কনসার্ভেটিভ পার্টির একজন কর্মী। বিষয়গুলো লুইসা সান্তিয়াগার (মার্কেসের মা) বাবা পছন্দ করতেন না। এলিজিও বীণা বাজিয়ে, প্রেমের কবিতা লিখে, অগণিত প্রেমপত্র এবং এমন কি টেলিগ্রাফ পাঠিয়ে লুইসার মন জয় করার চেষ্টা করতেন। এ পরিস্থিতিতে তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করার উদ্দেশ্যে বাবা (মার্কেসের নানা) লুইসাকে দূরে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু সম্পর্কটি ছিন্ন করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেও এলিজিওকে থামাতে পারেন নি। অবশেষে তারা বাধ্য হলেন লুইসাকে এলিজিও’র হাতে তুলে দিতে। অবাধ্য প্রেমের মজার কাহিনীটি মার্কেসের ‘লাভ ইন দ্য টাইম অভ্ কলেরা’ গল্পে ফুটে ওঠেছে।
আইন বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করে মার্কেস সাংবাদিকতা দিয়ে তার লেখক জীবন শুরু করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লেখেছেন তিনি। তবে আল হেরাল্ডো নামের স্থানীয় পত্রিকার সাথে কাজ করার সময় একটি লেখক সংঘের সাথে যুক্ত হন মার্কেস। তিনি নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রের সমালোচনা এবং রিভিউ লিখতেন, যা পরবর্তিতে সাহিত্য সৃষ্টিতে প্রচ্ছন্নভাবে প্রভাব সৃষ্টি করেছে।
মার্কেসের ৭টি ‘জটিল’ উদ্ধৃতি: পাঠক এবারও হুমায়ুন আজাদের সাথে মিল পাবেন!
১) যখন মরা উচিত মানুষ তখনই মরে না যদিও সে তা পারে।
২) খুব বেশি অপেক্ষা করলে কমই পাওয়া যায়।
৩) ঈশ্বরকে আমি বিশ্বাস করি না। তবে তাকে আমি ভয় করি।
৪) সবসময় মনে রাখবেন, বিয়ের মধ্যে সুখি হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ নয়, দীর্ঘস্থায়ি হওয়াটাই আসল।
৫) সত্যিকার বন্ধু হলো সে, যে হাতে হাত রেখে হৃদয়কে স্পর্শ করে।
৬) ঈশ্বর রবিবার দিনটিতে বিশ্রাম না করলে হয়তো পৃথিবীটি ভালোভাবে গড়তে পারতেন।
৭) আমার মুখের ভেতর দিয়ে যাকিছু প্রবেশ করে তা আমাকে মোটা বানায় – যাকিছু মুখ থেকে ‘বের’ হয়ে আসে তা আমাকে লজ্জিত করে।
মার্কেস সম্পর্কে বিশ্ববাসীর মতামত প্রতিক্রিয়া
বারাক ওবামা (মার্কিন রাষ্ট্রপতি): এক মহান স্বপ্নদর্শী লেখককে বিশ্ব হারিয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ‘গাবো’র সৃষ্টি বেঁচে থাকবে।
জুয়ান মানুয়েল সান্তোজ (কলাম্বিয়ান রাষ্ট্রপতি): গাবো’র মৃত্যু কলাম্বিয়ার জন্য হাজার বছরের নিংস্বঙ্গতা এবং শোক নিয়ে এসেছে। এমন বৃহৎ ব্যক্তিরা কখনও মরেন না।
শাকিরা (কলাম্বিয়ান সঙ্গীতশিল্পী): তোমার জীবনকে, গাবো, আমি মনে রাখবো, অনুপম এবং অমূল্য উপহার হিসেবে। তোমার গল্পগুলো ছিলো সবচেয়ে মৌলিক।
দৈনিক প্রথম আলো: পৃথিবীর অগণিত পাঠককে তাঁর কলম থেকে ঝরে পড়া বর্ণে-শব্দে-বাক্যে সৃষ্ট ম্যাজিক রিয়ালিজমের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন; সকালের সংবাদপত্রের মতো অমোঘ আকর্ষণে যার সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ প্রকাশের পরপরই ট্রেনে-প্ল্যাটফর্মে-রাস্তায় হকারের হাত থেকে মুহূর্তে নিঃশেষ হয়ে যেত; তিনি চলে গেলেন।
শেষ জীবন ও শেষ কথা
শেষের দিকে নিজের জীবন নিয়ে মেমোয়ার বা স্মৃতিকথা প্রকাশে বেশি সময় দেন মার্কেস। লিভিং টু টেল দ্য টেইল শীর্ষক জীবনীগ্রন্থটি ২০০৩ সালে ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়। কিন্তু ১৯৯৯ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কেমিকেল থেরাপি নিতে গিয়ে স্মৃতিশক্তির লোপ পায়। ২০০৫ বছরটিতে প্রথমবারের মতো কিছুই লিখতে পারেন নি বলে আক্ষেপ করেছিলেন মার্কেস। ফলে গত এক দশকে আগের সেই প্রলিফিক রাইটার হিসেবে মার্কেসকে আর পাওয়া যায় নি। গত ১৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মেক্সিকোতে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন দক্ষিণ আমেরিকার সংগ্রামী মানুষের প্রতিনিধি গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস।
পৃথিবীর শোষিত মানুষ আর তাদের দেশগুলো যেন একই ইতিহাসে আবদ্ধ হয়ে আছে। দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলো আমাদেরই মতো বৈষম্য আর সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে সংগ্রাম করে একেকটি নক্ষত্র হিসেব আজ পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে। বাংলাদেশ এবং বাঙালি তাদের বিপ্লবে নিজেদেরকে দেখতে পায়। বাঙালি চে গুয়েভারার চেতনায় নিজেকে দেখে, কারণ ইতিহাস তাদের অভিন্ন। পাবলো নেরুদার সংগ্রামী চেতনায় যেমন বাঙালি যেমন আপ্লুত হয়েছে, ঠিক সেরকম ভাবেই মার্কেসের লেখা ও তার পরবর্তি জীবন দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলো। মার্কেস বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং বাঙালি আথিতিয়েতায় মুগ্দ হয়েছিলেন। তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভিতে। মার্কেসের মৃত্যুতে পৃথিবীর তাবৎ মানুষগুলোর সাথে বাঙালি ও বাংলাদেশি হিসেবে আমরা শোকাহত। আমরাও শ্রদ্ধাবনত। বিদায় হে স্বপ্নের যাদুকর, এডিউ!
গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস সম্পর্কে আরও জানার জন্য কয়েকটি লিংক:
•তৈমুর রেজা অনূদিত ২০১১ সালে প্রথম আলোতে প্রকাশিত মার্কেসের একটি গল্প পড়ুন।
•ছবিতে মার্কেসের জীবনী।
•মার্কেসের সুতীক্ষ্ণ কথাগুলো।
•টাইমলাইন: গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস।
নোবেল পুরস্কার এবং সাহিত্য আলোচনা নিয়ে পূর্বের পোস্টগুলো:
সাহিত্য রচনায় বিষাদের ব্যবহার।
কবি ও কবিতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
২০১২ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মো ইয়ানের হ্যালুসিনেটরি রিয়েলিজম।
২০১২ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার নিয়ে বিশেষ অভিমত।
-----------------
গ্রন্থপঞ্জি:
ক. লিভিং টু টেল দ্য টেইল (২০০৩)। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। নি্উইয়র্ক।
খ. দ্য গার্ডিয়ান, লন্ডন।
গ. নোবেল প্রাইজ হোমপেইজ।
ঘ. ওয়ান হানড্রেড ইয়ার্স অভ্ সলিটিউড (১৯৭০)।গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস। নি্উইয়র্ক।
ঙ. সকল ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৪
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
সুন্দর বলেছেন।
আপনাকেও ধন্যবাদ, অন্ধবিন্দু
২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:০৯
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি মার্কেস।
“এভাবে আমি বলতে চাই না, কারণ এটি কখনও বিশ্বাসযোগ্য হবে না। তবে আমি সত্যিই চাইব আমার লেখাগুলো মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হোক, যেন আমাকে খ্যাতি এবং বিখ্যাত লেখকের চাপে না থাকতে হয়।”
কতটা বড় মনের আর বড় মাপের লেখক হলে এমনটা বলতে পারে। তাঁর সাথে আসলেই কিছু বিষয়ে আমাদের হুমায়ূন আজাদের সাথে যথেষ্ট সাদৃশ্য আছে।
পোস্টটা প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। এই পোস্টের সাথে দেখলাম আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিংক আছে। সময় করে ঘুরে আসবো।
স্বল্প সময়ে মধ্যে খুব সুন্দর তথ্যবহুল একটা পোস্ট সাজিয়েছেন মইনুল ভাই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৪
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
প্রিয় বিদ্রোহী বাঙালী, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
৩| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭
হাসান মাহবুব বলেছেন: এই মহান লেখকের জন্যে শ্রদ্ধা। এমন একটা জীবন কাটিয়ে গেলেন, পূর্ণতায় উপচে পড়া, বিদগ্ধতায় পূর্ণ। এমন জীবনই তো মানবজন্ম ও সভ্যতাকে মহিমান্বিত করে।
১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৬
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
...পূর্ণতায় উপচে পড়া, বিদগ্ধতায় পূর্ণ... দারুণ বলেছেন!
অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা জানবেন, হাসান মাহবুব
৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:১৪
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: আমি তার লিখা খুব বেশি পড়িনি । ছোট গল্পের অনুবাদ পড়েছিলাম কয়েকটা । নিঃসন্দেহে তিনি একজন শক্তিমান লেখক ছিলেন । শুধু লেখকই বা কেনও তার জীবন আসলে বহুমাত্রিক, তিনি নিজেই একজন একজন অসাধারন গল্প হতে পারেন । তার সাক্ষাৎকারগুলোও চমৎকার । আমি সাক্ষাৎকার পড়েই মুগ্ধ হয়েছি বারবার ।
শ্রদ্ধাঞ্জলি এই মহান শব্দ শিল্পীর প্রতি ।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৮
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে, আদনান শাহরিয়ার
৫| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৯
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অমর শিল্পীর প্রয়াণে শ্রদ্ধাঞ্জলি রইল।
সুন্দর পোস্ট দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ, প্রোফেসর শঙ্কু!
আপনাকে অনেক দিন পর পেয়ে ভালো লাগলো...
শুভেচ্ছা
৬| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪২
নিশাত তাসনিম বলেছেন: গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য জানলাম। তথ্যবহুল পোস্টটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। তার মৃত্যুতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ, প্রিয় নিশাত তাসনিম
ভালো থাকা হোক...
৭| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০৫
মামুন রশিদ বলেছেন: এই মহান লেখককে হারানো বিশ্ব সাহিত্যের জন্য অপূরনীয় ক্ষতি । টুপি খোলা সালাম প্রিয় লেখকের জন্য ।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩২
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনি এলেখা খুঁজে পেলেন!
আমি পোস্ট দিয়ে দেখি লেখা হাওয়া...
অনেক কিছু বলার ছিলো মার্কেস সম্পর্কে...
প্রথম পোস্টে সব বলা গেলো না...
টুপি-খোলা প্রতি-সালাম, মামুন রশিদ ভাই
শুভেচ্ছা জানবেন...
৮| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:০৩
আমিনুর রহমান বলেছেন:
মহান লেখক গার্সিয়া মার্কেসের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
পোষ্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:২৯
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আমিনুর রহমান
৯| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: মৃত্যুর সময় আমি যে কয়েকটি বই আমার পাশে রাখতে চাই, "ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অফ সলিচিউড" তার একটি। এর স্রষ্টা যে মহিরুহ তিনি মারা গেছেন। গার্সিয়া গার্সিয়া বলে মাতম করতে ইচ্ছা করল প্রথমে কিন্তু এরপরই মনে হল, উনি তো মারা যান নাই, উনি অন্য একটা রিয়েলিটিতে ট্রান্সফর্ম করলেন মাত্র। আমাকে দিয়ে গেলেন নাতিকে গল্প শোনাবার নতুন উপলক্ষ, আমি হয়ত বলব, "শোন, সেদিন দুপুরে আমি উর্দ্ধশ্বাসে হাঁটছিলাম। পড়নের জুতোটা যতবারই পিছলে যাচ্ছিল, ততবারই মনে হচ্ছিল একটা সময় আসবে যখন আমি আর ভারসাম্য রাখতে পারবো না সত্যি সত্যি পিছলে পড়ে আঘাত পাবো, হয়তো হাড় ভেঙ্গে যাবে এবং যা কখনোই জোড়া লাগবেনা। যখন আমি বুড়ো হবো। আর ঠিক তখনি আমি পাকা পেয়ারার সুবাসটা পেলাম। কন্ট্রোলার বিল্ডিং এর ঘুলঘুলি দিয়ে স্পষ্ট ভেসে আসলো। থাকলো কিছুক্ষণ, ঘর জুড়ে প্রদক্ষিণ করল এরপর বেরিয়ে গেল। আমি তখনো টিএসসির জনতা ব্যাংকের সামনে উগ্র মেকাপে ঘুর ঘুর করা মেয়েটার কথাই ভাবছিলাম। কিন্তু গন্ধটা এতই তীব্র ছিল যে কিছুক্ষণের জন্য আমার বোধবুদ্ধি একেবারেই লোপ পেল। আমি দেখলাম, একটা বিরাট বিছানায় মসলিনের চাদর গায়ে শুয়ে আছি, আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমি মারা যাবো। চারপাশে অগণিত মানুষের ভিড়। আর ঠিক তখনি উগ্র মেকাপ করা মেয়েটা ভিড় ঠেলে ঘরে ঢুকলো, সেই আগের সাজে কিন্তু বয়স তখন অনেক।" আমার নাতি বলে উঠল,"তারপর, তারপর"?
আমি বললাম: "তখনি আমি বুঝতে পেরেছিলাম গার্সিয়া আজ মারা যাবে। ওই মেয়েটা খুব বিষণ্ন হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছিলাম।"
আমার নাতি বলে উঠল, "এরপর কি হল"?
আমি বললাম: তেমন কিছুই না, আমি মেয়েটার কাছ থেকে বইটা নিলাম।
কোন বই?
"আমার দুঃখ ভারাতুর বেশ্যাদের স্মৃতিকথা"।
১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩৬
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//গার্সিয়া গার্সিয়া বলে মাতম করতে ইচ্ছা করল প্রথমে কিন্তু এরপরই মনে হল, উনি তো মারা যান নাই, উনি অন্য একটা রিয়েলিটিতে ট্রান্সফর্ম করলেন মাত্র।//
সাধারণভাবে কথাটি সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
তবু আপনার চমৎকার অভিমতটি অতটা বুঝতে পারতাম না, যদি নাতির সাথে কাল্পনিক কথোপকথনটি যুক্ত না করতেন...
আমরা ভাগ্যবান এজন্য যে, যারা ল্যাটিন আমেরিকার নিপীড়িত মানুষগুলোর দ্রুপদি বীরদের জীবদ্দশায় ছিলাম না, তারা গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজকে পেয়েছি।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, অন্যমনষ্ক শরৎ
১০| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫১
রাজা মশাই বলেছেন: গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস সম্পর্কে বেশ কিছু অজানা তথ্য জানলাম।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:৪৬
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, রাজা মশাই
১১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২১
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
গার্সিয়া মার্কেসের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:২৫
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ধন্যবাদ, কাণ্ডারি অথর্ব...
শুভেচ্ছা জানবেন
১২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩৩
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
মার্কেস আমি তেমন একটা পড়িনি প্রথম আলোর সাহিত্য সাময়িকী ছাড়া ।
তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ।
আপনার দারুন এ পোস্টের জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা ।
আমি ভাবছি আমার খুব প্রিয় আর একজন ব্যাক্তি "ফিদেল" কে নিয়ে !!
ভালো থাকুন । প্রিয়তে নিলাম ।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৫
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
চে, নিরুদা - তাদের পরই ল্যাটিন আমেরিকার যে ব্যক্তিটি বাঙালির মন কেড়েছেন, তিনি হলেন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস।
আপনার আন্তরিক সঙ্গ পেয়ে আমি অনুপ্রাণিত, স্বপ্নচারী গ্রানমা
ভালো থাকুন আপনিও!
১৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৪০
অদৃশ্য বলেছেন:
আপনার এই পোষ্টটি পড়বো পড়বো করেও পড়া হচ্ছিলোনা... পড়ে গেলাম... মার্কেজ সম্পর্কে আমার তেমন কোন ধারনাই ছিলোনা, সত্য বলছি... এখন অনেক আগ্রহ তৈরি হয়েছে... তার লিখাগুলো সংগ্রহ করে পাঠ করবার দারুন এক ইচ্ছা তৈরি হয়েছে...
চমৎকার পোষ্ট... আমার আগ্রহকে আরও খানোকটা বাড়িয়েছে লিখাটি...
শুভকামনা...
২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৪
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আপনার আগ্রহকে বাড়াতে পেরেছি, সেতো বিরাট সফলতা....
অনেক ধন্যবাদ, কবি অদৃশ্য....
আপনার উপস্থিতি বরাবরই আনন্দের
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:০২
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
স্বপ্ন বিক্রেতা 'গাবোর' বেশ কিছু লেখাই আমার পড়া। তাই আমি তাঁকে/মৌলিকত্বকে ঠিক বিপরীতমুখী বলতে চাই না; বলবো নিজ-মুখী। সাহিত্যের আধুনিক গাঁথুনি তে তাঁর দৃশ্য শিল্প নিশ্চয়ই পথ দেখাকে অনেকটা দূর ....
ভাল পোস্ট। ধন্যবাদ, মইনুল।।