![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত কয়েকদিন যাবত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী নিয়ে অনেক আন্দোলন ও অনেক লেখা লেখি হচ্ছে। আজকে একটি দৈনিক পত্রিকায় এই বিষয়ে একটি লেখা পড়লাম। লেখক ৮০০০ টাকা মজুরীর পক্ষে অনেক যুক্তি তুলে ধরেছেন । তার অনেক লেখাই আমার কাছে যুক্তি পূর্ণ বলে মনে হয়েছে । কিন্তু একটি বিষয় আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে গার্মেন্টস আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরূত্ব পূর্ণ একটি খাত। তাই এই বিষয়ে কথা বললে একটু হিসেব করে কথা বলাই মনে হয় ভাল । আবেগের বশে যেকোন কথা হয়ত বলা যায় কিন্তু তার পরিণতি সম্পর্কেও আমাদের ভাবতে হবে । শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে হবে এই বিষয়ে কোন সন্দেহ বা বলার অবকাশ আছে বলে আমার মনে হয় না । কিন্তু সেটা কতটুকু। সেটা কি ৮০০০টাকা ?
এখানে দুইটা পক্ষ জড়িত; একটা মালিক পক্ষ আর একটা শ্রমিক পক্ষ । আমরা যদি আবেগের বশে শুধু শ্রমিকদের কথাই চিন্তা করি তাহলে বিষয়টা যুক্তিপূর্ণ হবে বলে মনে হয় না । বাংলাদেশ থেকে পোষাক কেনার অন্যতম প্রধান কারণ হল কম মজুরি । আমরা যদি এক লাফে শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ করে দেই, সেটা মালিকদের জন্য কতটুকু উপযুক্ত হবে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। ৮০০০ টাকা মজুরি দিয়ে আমাদের পোষাকের যে মূল্য আসবে সেই মূল্যে কি বিদেশিরা তা ক্রয় করবে? এসব আমাদের ভাবতে হবে ।
অধিকাংশ লেখাতে আমাদের দেশের মজুরীর সাথে পার্শ্ববর্তি কিছু দেশের মজুরীর তুলানা করা হচ্ছে। যেমন বলা হচ্ছে ঃ চীনে মজুরী ১৫০ - ২০০ ডলার যেখানে বাংলাদেশে ৩৮ ডলার । এখানে একটা বিষয় আমাদেরকে বুঝতে হবে চীনের জিডিপি আর আমাদের দেশের জিডিপি এক না । সহজ একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে - চীনের প্রধান মন্ত্রীর এক বছরের বেতন ১৯০০০ ডলার কিন্তু আমাদের দেশের প্রধান মন্ত্রীর বেতন কত? কোন ভাবেই ১০০০০ ডলার ( আরও কম) ডলারের বেশি না। তাহলে চীনের সাথে তুলনা করলে আমাদের দেশের প্রধান মন্ত্রী থেকে শুরু করে সকল শ্রণীর সরকারী কর্মকর্তা বা বেসরকারী কর্মকর্তাদের বেতন কয়েকগুন বাড়াতে হবে । কিন্তু বাস্তবে কি সেটা সম্ভব ?
প্রকৃত পক্ষে আমাদের যে বিষটা মাথায় রাখতে হবে তা হল, তাদের (চীনাদের ) প্রকৃত আয় কত আর আমাদের প্রকৃত আয় কত? তাদের তিন বেলা খেতে কত খরচ হয় আর আমাদের কত খরচ হয় ?
তথ্য সূত্রঃ
আমাদেরকে মূল যে বিষটার উপর জোর দিতে হবে তা হচ্ছে শ্রমিকদের নিরাপত্তা । এই দায়িত্বটা অবশ্যই সরকারে এবং এর দায় সরকারকে নিতে হবে । যাদের জন্য নিরীহ শ্রমিকরা ভবন ধসে বা আগুনে পুড়ে মারা যায় তাদের বিচার করতে হবে । কিন্তু সরকরা কি সেটা করছে ? ঘটনা ঘটার পরে কিছু দিন মিডিয়ায় তা নিয়ে লেখা লেখি হয় তার পর যেই লাঊ সেই কদু । আগে শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে মূল্যায়ণ করতে হবে তারপর তাদের অন্যান্য অধিকারের কথা ভাবতে হবে। আজকে শ্রমিকদের বেতন বাড়বে কালকে তারা আগুনে পুড়বে আর মালিকদের কিছুই হবে না, সেটা হতে পারে না।
সর্বোপরি আমি মজুরি বাড়ানোর পক্ষে তবে সেটা যুক্তিক হতে হবে । শ্রমিকদের উত্তেজিত করে বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে পোষাক শিল্পকে ধ্বংসের যে পায়তার সেটা বন্ধ করতে হবে।
©somewhere in net ltd.