নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিখাউজ টাইপের

কাজের কথা

কি আর বলব, কথার কথাই এখন আসল কথা

কাজের কথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগার এবং অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট কি এবং কারা

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:২৬

প্রথমেই শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে কিছু বিষয় পরিস্কার করতে চাই, কেননা বর্তমান সময়ে দেশে সম্ভবত সবচেয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত বিষয় এটি। যে শব্দগুলি বেশ কয়দিন যাবৎ সমস্ত মিডিয়া এবং জনমানুষের মুখে মুখে তা হচ্ছে, ব্লগার, অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট, প্রজন্ম চত্বর, শাহবাগ চত্বর ইত্যাদি।



এখানে মূল বিষয়টি হচ্ছে শাহবাগ আন্দোলন যা আসলে মুক্তযুদ্ধ বিষয়ে তরুন প্রজন্মের চেতনাকে ধারন করে। যেহেতু এই শাহবাগ আন্দোলনটি শুরু হয়েছিল ব্লগার এবং অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্টদের কারনে তাই ব্লগার কি এবং কারা, অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট কি এবং কারা সে সম্পর্ককে প্রত্যেকের একটা স্বচ্ছ এবং সুষ্পস্ট ধারনা থাকা প্রয়োজন। এই দুইটি শব্দ সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকলে তবেই শাহবাগ আন্দোলন এর প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব বোঝা যাবে।



প্রথমেই বলে রাখি ব্লগার এবং অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট এক কথা নয়। ব্লগ হচ্ছে একজন মানুষের ডিজীটাল ডায়েরী। যেখানে সে তার মনের কথা লিখতে পারে। তার দিনের ভাল লাগা, ভাল কোন সিনেমার গল্প, তার সামাজিক এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, ধর্ম ও দর্শন ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় সে এখানে লিখে রাখে। সময়ের প্রয়োজনে এই ব্লগীয় ধারনাটি পরিবর্তন হয়ে একটা কমিউনিটি বা গোষ্ঠিতে রুপান্তিরত হয়েছে। ফলে আমাদের একটা ভার্চুয়াল জগৎ তৈরি হয়েছে যেখানে আমরা আমাদের মত করে সুখ দুঃখ ভাগাভাগী করে নেই এবং এই ব্লগারদের উদ্যোগে ইতিপূর্বে অনেকবার অনেক ধরনের সামাজিক কার্য্যকলাপও সংঘটিত হয়েছে। আমাদের মধ্যে কারও চেহারা হয়ত কেউ চেনে না, কারও সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়ত হয় না কিন্তু কারও রক্তের প্রয়োজন হলে, আমরা তার জন্য ছুটে গিয়েছি, কারও সাথে কোথাও অন্যায় হলে প্রতিবাদ করেছি, না করতে পারলে তাকে সান্তনা দিয়েছি, বন্যার্তদের পাশে দাড়িয়েছি, শীতার্তদের পাশে দাড়িয়েছি, নারীদের প্রতি অন্যায় হলে তারও প্রতিবাদ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আপনারা যাদেরকে বলেন এরা ক্র্যাক, এদের কোন কাজ কাম নাই সারারাত নেটে বসে থেকে কি সব হাবী-জাবী কাম করে, এই আমরাই ব্লগার।

ইতিপূর্বে সবার ধারনা ছিল যে সমস্ত ছেলেরা সারারাত সারাদিন কম্পিউটারে বসে থাকে তারা দেশের বিষয় বা সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে মাথা ঘামায় না। কিন্তু আপনারা আমাদের ব্লগগুলি পড়লে বুঝতে পারবেন, আমরা অন্য অনেকের চাইতে বেশী চিন্তা করি। সারা বিশ্বে যারাই ব্লগার আছেন তাদের মধ্যে একটা বিষয় কিন্ত কমন যে তারা প্রত্যেকেই অন্তত মানসিকভাবে স্বাধীন। সামাজিক বা পারিপার্শ্বিক প্রতিটা বিষয় নিয়েই তারা নির্দ্বিধায় লিখতে পারে। ব্লগার হওয়ার জন্য কোন পড়াশোনা বা কোর্স করতে হয় না, সবাই ব্লগিং করতে পারে। যদি আরও একটু ব্যাখ্যা করতে বলেন, উদাহরণ দেই: পেশায় যারা সাংবাদিক, তারা পেশার কারনেই সমস্ত খবর সংগ্রহ করেন এবং তাকে নিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে পরিবেশন করেন। যাদেরকে আমরা সুশীল সমাজ বলি এনারা বিভন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন সামাজিক বিভিন্ন অসামঞ্জস্য নিয়ে। কিন্ত এরা ছাড়াও সমাজে অনেক লোক আছে যারা দেশকে নিয়ে চিন্তা করে বিনা স্বার্থে, শুধু নিজেদের বিবেকর তাড়না থেকে। তারা একত্রিত দেশের বড় বড় সমস্যায় ভাল পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে পারবে।



সারাটা জীবন টিভিতে, পেপারে, ষ্টেজে বড় বড় সাংবাদিকের আগুনঝড়া কাব্য, রাজনৈতিকদের অসহ্য মিথ্যার ঝুড়ি সুশীল সমাজের কথা শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত হয়ে গেছি। এখন আমাদের বলার সময় এসেছে। আমরাও বলতে চাই। এই বলতে চাওয়ার মানুষগুলোই হচ্ছে ব্লগার।কেউ পেশায় ব্লগার না, তাদের সারাদিন খবরের পিছনে দৌড়ানোর সময় নাই, তারা কথা বেচেও জীবিকা করে না। ব্লগাররা শুধু ঐ বিষয়গুলি নিয়ে লিখে যেগুলি তাদের সামনে পড়ে বা মনে পড়ে।



আরও একটা বিষয় বলেই দেই একজন মসুলমান ব্লগারের যেমন অন্য ধর্মের সম্পর্কে নেতীবাচক মতামত দেওয়ার অধিকার আছে তেমন অন্য ধর্মাবলম্বী ব্লগারেরও কিন্তু মসুলমান ধর্ম সম্পর্কে নেতীবাচক মতামত দেওয়ার অধিকার আছে, তদ্রুপ যদি কেউ নাস্তিক হয়, তবে তারও এর পক্ষে এবং বিপক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ আছে কারন সবই তার নিজস্ব মতামত। এবং তার ঐ মতামত যদি ভুল কোন ধারনালব্ধ হয় তবে তাকে আমরা সঠিক ধারনার মতামত দিতে পারি। এখানে আস্তিক, নাস্তিক, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন হলেও দেশের প্রশ্নে কিন্তু সবাই একমত। সবাই দেশের উন্নতি এবং প্রগতি চায়।





এবার অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট নিয়ে একটু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। সত্যি কথা বলতে এই শব্দটা আমাদের কাছেও বেশ নতুন। তবে আরও একটু বিশ্লষন করলে দেখা যায় অনলাইন কথাটার সাথে সবাই পরিচিত। এটি একটি মাধ্যম যাতে যে কোন প্রকারের তথ্য মহুর্তের মধ্যে সারা ছড়িয়ে দেওয়ার যায়; ইন্টারনেট। এ্যাক্টিভিষ্ট আসলে জনস্বার্থে বৃহৎ কোন বিষয় নিয়ে যারা আন্দোলন, আলোচনা, সমালচনা, প্রয়োজনে বড় শক্তির প্রতিপক্ষ অবস্থান নেয়। এই দুইটা শব্দকে যদি এক করি তবে, যে বা যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনস্বার্থে বৃহৎ কোন বিষয় নিয়ে যারা আন্দোলন, আলোচনা, সমালচনা করে এবং সেই বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিজ অবস্থানে অনড় থাকে। উদাহরন স্বরুপ কেউ কোন একটি ধর্ষনের বিষয়ে যদি ফেইসবুকে অনবরত লিখালেখী করে মানুষকে এর বিরুধ্বে সোচ্চার করার চেষ্টা করে, টুইটারে লিখতে পারে, কোন গ্রুপে লিখতে পারে মোট কথা হচ্ছে যেখানে লিখলে মানুষকে নির্ধারিত বিষয়ে সোচ্চার করা যায়, সেখানেই সে লিখতে পারে এবং এই কর্মকান্ডকেই এ্যাক্টিভিষ্ট বলা যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.