নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তর মম বিকশিত করো/ অন্তরতর হে/ নির্মল করো, উজ্জ্বল করো,/ সুন্দর কর হে

মহান অতন্দ্র

কবিতার মত মেয়ে

মহান অতন্দ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময় থেকে এগিয়ে

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১৪

২০৭০ সাল।

আজ সকাল থেকে জারিনের শরীরটা বেশ খারাপ। কাল রাতেই আশরাফকে একবার বলেছিল সে। আশরাফ কানে তোলেনি কথাটা। যুদ্ধ চলছে চারদিকে। কামান বারুদের গন্ধ। তাছাড়া পঁচা লাশের স্তূপ তো আছেই। শরীর খারাপ হতেই পারে। আশরাফের নিজের শরীরই ভালো নেই। তবু রোজ তাকে অফিসে ছুটতে হচ্ছে। আমেরিকার বিখ্যাত বি এন এল ল্যাবে কাজ করে আশরাফ। চাকরিতে খুব বেশী দিন হয়নি তার। গত বছরই এইচ ওয়ান বি পেল। কি কষ্টের দিন গেছে তাদের। গ্রিন কার্ডের এপ্লাইও করেছিল। ভাবছিল এইতো সুখের দিন আসছে।



অনেকদিন থেকেই সে শুনছিল প্রতিবাদের কথা। কিন্তু ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারিনি। আমেরিকাকে আক্রমণ করা এত সহজ কথা নয়। সে নিজেই কেমিস্ট বলে জানে কি পরিমাণ শক্তিশালী নিউক্লিয়ার বোমা এদের আছে। তবে পুরোটাই তার আন্দাজ বলা যায়। ন্যাশনাল সিকুউরিটির স্বার্থে অনেক কিছুই তাকে জানতে দেওয়া হয় না। আর মুসলিম হবার কারনে তাকে সন্দেহের তালিকায়ও রাখা হয়েছে। আশরাফের এখন খুব ব্যস্ত সময় কাটছে। তার প্লুটোনিয়াম-৯৪ ফর্মুলা বোমা তৈরির কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে। আশরাফ সারাদিন ল্যাবরেটরিতে কাজ করে। সন্ধ্যায় তাকে বিশেষ নিরাপত্তায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।



আজ জারিন গিয়েছিলো কাছের ম্যানহাটন স্ট্রীটের সুপারশপে বাজার করতে। সাথে তার ৩ বছরের ছেলে জায়ান। ভেবেছিল এলেনার সাথে দেখা করে আসবে। কিন্তু মেডারী স্ট্রীটের কাছে এসে শোনে, রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে সিরিয়ান সৈন্যরা। আজ আশরাফ ফিরলে বিস্তারিত আলাপ করতে হবে। গতরাতে আশরাফ অবশ্য একটা ম্যাপ একে অনেকটা বুঝিয়েছে তাকে। প্রথমে তারা যাবে নর্থ ক্যারোলিনা। ক্যালিফোর্নিয়া দিয়ে গেলেই সবচেয়ে সুবিধা হয় । কিন্তু শুনেছে ওখানে নাকি ইরাকী সৈন্যরা ক্যাম্প করেছে। গোলাগুলি ওখানেই বেশি হচ্ছে। তাই তারা যাবে নর্থ ক্যারোলিনা হয়ে। নর্থ ক্যারোলিনার মোরহেড সমুদ্রবন্দর থেকে রওনা দেবে তাদের জাহাজ। তারপর আটলান্টিক হয়ে তাদের জাহাজ পড়বে ভারত মহাসাগরে। সেখান থেকে শেষ গন্তব্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর। তবে পথে ব্রাজিল, মেক্সিকো, প্যারাগুয়ে পড়বে। অনেকে বলছে ওখানে নাকি জাহাজে মুসলিম পেলেই হত্যা করা হচ্ছে। প্রশান্ত দিয়ে যদিও সংক্ষিপ্ত পথ হয়, তবে এই পথেই গোলাবারুদ আনছে মুসলিম সৈন্যরা। সেখানে আমেরিকান জাহাজ পাহারা বসিয়েছে। তাই প্রশান্ত দিয়েও যাওয়া ঠিক হবে না। আর ঐ পথে আমেরিকা থেকে কোন যাত্রীবাহী জাহাজও ছাড়ছে না। আশরাফ একবার পরিকল্পনা করেছিল রাশিয়া হয়ে যাওয়া যাক। রাশিয়া খ্রিস্টান অধ্যূষিত দেশ হলেও মুসলিমদেরকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। কিন্তু রাশিয়া হয়ে যেতে হলে আর্কটিক হয়ে যেতে হয়। পথে পড়বে ফ্রান্স। ফ্রান্সে নাকি সবচেয়ে বেশী মুসলিম হত্যা হচ্ছে। আর্কটিক হয়ে গেলে এলেনার সাথে যাওয়া যায়। কিন্তু ফ্রান্স মোটেই নিরাপদ নয় তাদের জন্য।



যুদ্ধ এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা ইউরোপে আর আমেরিকায়। এশিয়াও ঠিক অতটা নিরাপদ নয়। আমেরিকান সরকার জানিয়ে দিয়েছে আমেরিকান নাগরিক ছাড়া কারো দায়িত্ব নিতে তারা রাজী নয়। নগরভবন থেকে আমেরিকান নাগরিকদের তালিকা নেওয়া হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি তাদের মেক্সিকো বর্ডার দিয়ে পার করে রিফিউজি ক্যাম্পে নেওয়া হবে । তবে জারিনের বারবার মনে হচ্ছে কথাটা কিছুতেই সত্যি নয়। এত লোককে বাড়িবাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা নিশ্চয়ই সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। আর করলেও তার আগেই জায়ানকে নিয়ে দেশে চলে যেতে হবে তাদের। জায়ান জন্মসূত্রে এদেশের নাগরিক। আশরাফ বলেছে যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী জায়ানকে আমেরিকান সরকার নিয়ে নিবে কারন আমেরিকান হবার কারনে মুসলিম সৈন্যরা তাকে হত্যা করবে।



আশরাফ সিগারেট ধরিয়েছে। এখন সে বাসাতেই সিগারেট খায়। চারদিকে গোলা বারুদের এত ধোঁয়া সিগারেট না খেলেও স্মোক ডিটেক্টর এমনিতেই বেজে ওঠে। জায়ান খুব ভয় পেয়ে যায় তখন। স্মোক ডিটেক্টর খুলে রেখেছে সে। আশরাফ উঠে গিয়ে জায়ানকে চুমু খেল। খবরটা আজকেই সে শুনেছে। তবে গোপনীয়তা রক্ষার্থে জাতীয় টেলিভিশনে প্রচার করা হচ্ছেনা। আমেরিকা তার সব নাগরিকদের রিফিউজি ক্যাম্পে সরিয়ে নিচ্ছে আর বাকিদেরকে দেশে ছেড়ে চলে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



মুসলিম দেশগুলোর আক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। ওদেরকে শায়েস্তা করতে হলে সাধারণ নাগরিকদের সরিয়ে ফেলতে হবে। জায়ান এদেশের নাগরিক তবে ওর জন্ম জারিনের গর্ভে হয়নি। আইরিশ মেয়ে এলেনা ওর সারোগেট মাদার। জায়ান ব্যাপারটি জানে না। অবশ্য জানলেও বোঝার মত বয়স ওর হয়নি। জারিন তার গর্ভে কখনও সন্তান ধারণ করতে পারবে না। তাদের দ্বিতীয় সন্তানও এখন এলেনার গর্ভে। গতকাল সে মেইল বক্সে এলেনার চিঠি পেয়েছে। এখানে এখন অভ্যন্তরীণ সব ফোন কল ট্র্যাপ করা হচ্ছে। তাই এলেনা চিঠি পাঠিয়েছে। সেখানে সে বলেছে, সে আয়ারল্যান্ডে ফিরে যাচ্ছে। আয়ারল্যান্ড সরকার তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সব সহায়তা দিচ্ছে। সোনালি চুলের, বাদামী চোখের এলেনার সাথে তাদের পরিচয় হয়েছে হাসপাতালের মাধ্যমে। এলেনা আরও অনেকের সারোগেট মাদার হিসেবে কাজ করেছে। এটা নাকি তার একটা হবি। এজন্য সে মোটা অংকের টাকাও দাবী করে। কথাটা জারিনকে কিভাবে বলবে সে ঠিক বুঝতে পারছে না। এলেনার আয়ারল্যান্ডে যাবার খবর জারিন কি সহ্য করতে পারবে। আর তাদের সন্তান ...... আশরাফ আর ভাবতে পারছে না। তার মাথা ঘুরে আসছে।



১ মাস পর

জারিন খুব অসুস্থ। ডাক্তার বলেছে সে খুব একটা স্বাভাবিক অবস্থায় নেয়। প্রায়ই অস্বাভাবিক আচরণ করে। আজ ২০ দিন জায়ান তাদের কাছে নেয়। আমেরিকান সরকার তার সব নাগরিকদের সরিয়ে ফেলেছে । শিশুদেরকে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কারন ইরাক, আফগানী সৈন্যদের প্রধান লক্ষ্য আমেরিকান শিশু হত্যা করা। যাতে পরবর্তী আমেরিকান জেনারেশন উঠে না দাড়াতে পারে। আশরাফ খুব জানার চেষ্টা করছে জায়ান কেমন আছে। কিন্তু আমেরিকার সাথে সারা বিশ্বের ওয়্যারলেস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি এয়ারপোর্ট বন্ধ। কোথাও এয়ার ট্রাভেল করা যাচ্ছে না। জাহাজই একমাত্র ভরসা। এলেনাদের জাহাজ ছেড়েছে গত সপ্তাহে। এরপর আর সে কিছু জানে না। দেশে সবাই খুব চিন্তা করছে বুঝতে পারছে। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছে না।



২ মাস পর

যুদ্ধের ভয়াবহতা দিনে দিনে বাড়ছে। আশরাফ ভেবেছে জারিন হয়ত কিছুটা অপ্রকৃতস্থ। সারাদিন কোন কথা বলে না সে। জারিনের আসলে সেরকম কিছু হয়নি। কি করবে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। দিনের বেশিরভাগ সময়টা এখন সে সিটি পার্কে যাচ্ছে। সেখানে গেলেই তার একটু ভাল লাগে। জায়ানকে নিয়ে প্রায়ই এখানে আসত সে। পাইন গাছটার তলায় জায়ানকে বসিয়ে দিত। জায়ান একমনে খেলত। জারিন ভেবেছিল জায়ানের ভাইকে নিয়েও এখানে আসবে সে। দু ভাই একসাথে খেলবে। এলিনার আলট্রাসনোগ্রাফিতে ছেলে হবার কথা ধরা পড়েছে। এলেনা ২ মাস হল দেশে চলে গেছে। তাহলে হিসেব মত তার সাত মাস হবার কথা। এ সময় বাচ্চারা বেশ বড় হয়ে যায়। জায়ানের সময় এলেনার বাসায় প্রায়ই যেত সে। এলেনার পেটে কান পেতে জায়ানের নড়াচড়া শুনত। জারিনের চোখে জ্ল আসছে। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে সে। সে জানে না রায়ান এখন কোথায় আছে।



আশরাফ জারিনকে বাসায় এনেছে। বলেছে একদম বের না হতে। পুরা ম্যানহ্যাটন স্ট্রীটে কারফিউ জারি হয়েছে। তাদের তাড়াতাড়ি গোছগাছ সেরে নিতে হবে। আশারাফের মনে হচ্ছে জারিনের সাথে সে যেতে পারবে না। বি এন এল ল্যাবের আশরাফ একজন গুরুত্বপূর্ণ কেমিস্ট। নতুন নতুন যে বোমা বানানো হচ্ছে তার অনেকগুলোই আশরাফের উদ্ভাবন । তাকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। কয়েকজন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। মৃত্যুকে আশরাফ ভয় পায় না তবে তার চিন্তা হচ্ছে জারিনের জন্য। অপ্রাসঙ্গিক ভাবে তাকে গত মিটিঙে আশরাফকে ডাকা হয়েছে। এই যুদ্ধ সম্পর্কে সে কি ভাবছে। সত্যিকার অর্থে যুদ্ধ নিয়ে তার কোন অনুভূতি নেই। যুদ্ধ বরাবরই তার কাছে অপ্রয়োজনীয়। এই যুদ্ধের কারনেই আজ তার এক সন্তান কোথায়, সে জানে না। আরেক সন্তান অন্য দেশে। পৃথিবীর আলোর মুখ সে কোনোদিন দেখবে কিনা কে জানে। দেখলেও কি সত্যি তাদের দেখা হবে । আশরাফের এক একবার মনে হয় এই যুদ্ধটা দরকার ছিল। এটা আমেরিকান আগ্রাসনের প্রতিবাদ। নির্বিচারে সারা বিশ্বে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদ। কিন্তু আশরাফ কথাটি বলতে পারে না। মিটিঙে সে চুপ করে আছে।



আশরাফকে ল্যাবের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলতে গেলে এখন সে শুধু হাজিরা দিতেই অফিস যাচ্ছে। তাকে বলে দেওয়া হয়েছে সে নজরবন্দী। উপরমহলের নির্দেশ পাওয়া না পর্যন্ত সে কোথাও যেতে পারবেনা। আশরাফ বুঝতে পারছে না কি করবে। যুদ্ধ দিনকে দিন তীব্র আকার ধারণ করছে। এত গোলাবারুদ সত্ত্বেও আমেরিকানরা যেন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। কোন এক অদৃশ্য কারনে মুসলিমদের অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে চীন। আশরাফের ধারনা আমেরিকা হারলে বৈশ্বিক ক্ষমতার গদিটা চীন দখল করতে চায়। রাশিয়াও মুসলিমদেরকে সাহায্য দিচ্ছে অনেকটা আমেরিকা বিদ্বেষ থেকেই।



১ সপ্তাহ পর

কাল জারিনকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইন্টেলের শমশের ভাই নাকি মারা গেছে। এক সাথে স্কুলে পড়েছে তারা। না এ শহর এখন একেবারেই নিরাপদ নয়। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে মুসলিম দেশ মৌরিতানিয়ায় জাহাজ পৌঁছালে তারা বিমানে করে নাগরিকদের ফিরিয়ে নিবে। আশরাফেরও মনে হচ্ছে এটি ভাল হবে। কারণ পুরোটা জাহাজে যেতে হলে ৮০৪৭ নটিক্যাল মাইল। ২ মাসের বেশি সময় লাগবে। এ সময় নানা বিপদ আপদও হতে পারে।



জারিন সকাল থেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে নিল। আশরাফের মোজা সোয়েটার সব সে গুছিয়ে নিয়েছে। আশরাফের ঠান্ডার সমস্যা । শীতের ধকল সে সইতে পারে না একদম। তাছাড়া সি সিকনেসও আছে তার। সে যাচ্ছে কয়েস ভায়ের সাথে। তাদের পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে তাদের জাহাজ ছাড়বে। তাই তারা হোটেলে উঠেছে। আশরাফ কি একটা কাজে ওয়াশিংটন অফিসে গেছে। তাকে দুজন আমেরিকান এসে ডেকে নিয়ে গেছে। আশরাফ বলেছে অফিস থেকেই নাকি তাকে বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হবে। জারিন হোটেলের জানালা দিয়ে আমেরিকা দেখছে। ৭ বছর আগে তারা এ দেশে এসেছিল। আশরাফ আরও এক বছর আগে। ছেলে আমেরিকায় থাকে বলে কত আগ্রহ করে বাবা-মা বিয়ে দিল। প্রথম প্রথম বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হয়েছে । তারপর একসময় এই দেশটা ভাল লেগে যায় তার। এখানে থিতু হওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের।



জারিন জাহাজে উঠেছে। বন্দরের দিকে তাকিয়ে আছে। জাহাজ ছেড়ে দিবে এখনই। আশারফকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। তার ভারী চিন্তা হচ্ছে। কয়েস ভাই বলছে ১ ঘণ্টা পর নাকি আরেকটা জাহাজ ছাড়বে।

জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে। জারিন কিছুতেই বুঝতে পারছে না, সে কি করবে। আশরাফের শীতের কাপড় তো তার কাছে। জাহাজ দুটো কি পাশাপাশি চলবে। সে কি আশরাফের কাপড়গুলো চেলে দিবে। জাহাজে কি এরকম করা যায়। আর আশরাফকে ছাড়া সে এত দীর্ঘ পথ থাকবেই বা কি করে।

আশরাফের জাহাজ আসেনি। কয়েস ভাই বলছে আশরাফ নাকি ভাল আছে। আগামীকাল আশরাফদের জাহাজ ছাড়বে। জারিন ভেবেছে , জাহাজ পৌঁছুলে সে মৌরিতানিয়ায় আশরাফের জন্য অপেক্ষা করবে। কিছুতেই আগের প্লেনে যাবে না। তার শুধু জায়ানের কথা মনে পড়ছে। এলেনার কথা মনে পড়ছে। এলেনা দেশে পৌঁছেছে কিনা কে জানে। দেশে পৌঁছে আশরাফকে বলতে হবে খোঁজ নিতে।



৫ দিন পর

জারিন জাহাজের নিচের তলার ডেকে। সব বাংলাদেশীরা এক সাথে এখানে আছে। খুব গাদাগাদি অবস্থা । তবুও একটাই শান্তি দেশে ফিরছে তারা। জারিনের মনে অবশ্য কিছুটা দুশ্চিন্তা। কয়েস ভাই বলেছে আশরাফের জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে। খুব শীঘ্রই ধরে ফেলবে তাদের । আশরাফের শীতের কাপড় তার কাছে। আশরাফ শীতে নিশ্চয়ই খুব কষ্ট পাচ্ছে। জারিন জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে আছে। সেখান থেকে দুরের কোন জাহাজ দেখা যাচ্ছে না। তার মানে আশরাফের জাহাজ আসতে একটু দেরিই হবে। আশরাফের হাতমোজাগুলো ব্যাগের উপরদিকে রাখতে হবে। আসার সময় তাড়াহুড়োই ব্যাগের তলায় পড়ে গেছে। আশরাফ আসলেই দিতে হবে ওকে। বেচারি ঠাণ্ডায় নিশ্চয়ই জমে গেছে। জাহাজের ডেকে কেউ রেডিও চালিয়েছে। সেখানে যুদ্ধের নানা আপডেট দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশই আমেরিকান সৈন্যদের গুনাগুন।



রেডিওতে বলা হল সন্দেহভাজন মুসলিম আশরাফ আলমকে হত্যা করেছে আমেরিকান সৈন্যরা। জারিন ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল।



জারিনের ঘুম ভেঙ্গে গেছে। আশরাফ তাকে জরিয়ে ধরে আছে। পাশে জায়ান শুয়ে আছে। টিভিতে খবরে বলছে আমেরিকান সৈন্যের গোলার আঘাতে ২০ জন ইরাকী শিশু নিহত। নিচে নিউজ বুলেটিনে সময় দেখাচ্ছে ২০০৫, ১৩ ফেব্রুয়ারী ।



আশরাফ বলছে, কি হয়েছে, দুঃস্বপ্ন দেখেছো। জারিন বলল, কিছু না। জায়ানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল সে।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

কলাবাগান১ বলেছেন: "এটা আমেরিকান আগ্রাসনের প্রতিবাদ। নির্বিচারে সারা বিশ্বে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদ। "

আপনার আমেরিকাতে পড়তে আসা উচিত হয় নি..... আসলেন কয়দিন হল এখনই ২০৭০ সনে আমেরিকাতে কি হবে তা নিয়ে গল্প ফেদে বসলেন।

গত এক বছরে মুসলিম দের হাতে ১০০,০০০ জন মুসলিম নিহত হয়েছে শুধু সিরিয়াতে ই



আমেরিকাতে মুসলিম হিসাবে বেশ মাথা উচু করেই বসবাস করছি...কোহাও তো কোন বৈষ্যমের শিকার হই নাই... বরন্চ নিজেই মাঝে মধ্যে সাদা-কালোর মধ্যে বৈষম্য করি ফেলি.......।

"Real color is very difficult to hide"

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৪

কলাবাগান১ বলেছেন: এদেশে অনেক দেশীয় ভাই দেরকে দেখি...... আমেরিকার খাবে, আমেরিকার সব সুযোগ সুবিধা নিবে (ফুড স্ট্যাম্প, টিএশীপ), কিন্তু সুযোগ পেলেই এরা আমেরিকার বুকে ছুরি বসাতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করবে না...... আপনার লিখা অনুযায়ী (সুখ স্বপ্ন) নিউয়র্কের রাস্তায় সিরিয়ান আর্মী আসলে, এই ভাইয়েরা ওদেরকে নিজের বাসায় যায়গা দিবে

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: আপনার মনোভোবটা মনে হয় কিছুটা বুঝেছি। গল্পটা আসলে আমার কোন এক অনুভূতি থেকে লেখা। তবে লেখার কোথাও বলা হয়নি আমেরিকাতে মুসলিমরা বৈষম্যের স্বীকার। আমার কল্পনায় যেটা এসেছে, ভবিষ্যতে কি এমন হতে পারে।
আর আমি জ্যোতিষীও নয়। গল্প গল্পই। তবে প্রত্যেক গল্পের একটি ম্যাসেজ থাকে। লেখক হিসেবে আমি সেটা ডেলিভার না করতে পারলে বলা যায় অনেকটা ব্যার্থ ।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন।

No more war, even in blog.

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮

কলাবাগান১ বলেছেন: ""এটা আমেরিকান আগ্রাসনের প্রতিবাদ। নির্বিচারে সারা বিশ্বে মুসলিম হত্যার প্রতিবাদ। "

তালিবান রা যে ১৪৫ টা শিশুকে মারল, সেখানেও কি আপনি আমেরিকার হাত দেখেন

(প্রিয় পোস্টের তালিকা দ্স্ট্রব্য)

এই এক সেন্টেন্সেই আপনি আপনার আসল মনোভাব টা ফুটিয়ে তুলেছেন.....

আপনার সাহসের তারিফ করি এমন খোলা ইন্টারনেটের যুগে আমেরিকাতে বসে এমন ব্ল্যান্কেট বাক্য লিখা...........

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৫

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমার লেখায় কোথাও মুসলিমদেরকে কার্যক্রম নিয়ে মন্তব্য করা হয়নি । তাদেরকে ফেরেশতা বানানো হয়নি ।

I just tried to visualize what would happen in opposite way and you know there is no rules in war except the victory.
My message is ‘no more war’

৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:



গল্পে ভালো লাগা। আমেরিকার আগ্রাসনে সারা বিশ্ব একসময় অতিষ্ঠ হয়ে হয়ত আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে। অনেক বড় লেখা তাই মাঝে মাঝেই মনোযোগ ছুটে যাচ্ছিল।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভ্রাতা । ভাল থাকবেন ।

৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

যুধিষ্ঠির বলেছেন: খাইলেন তো কলাবাগান দাদার কাছে ছাগু ট্যাগ! আপনি কি বুঝিয়েছেন তা উনি না বুঝেই বকে যাচ্ছেন। নিজে তো কপি পেস্টের আখড়া। পাড়াতো ভাবীকে বলে দিয়েন এই আশংকা অমূলক :)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ধন্যবাদ সহজে বুঝতে পেরেছেন বলে।

কলাবাগান ১ ভাই আসলে গল্পটা একটু সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলেছেন তাই ।
সবার আলাদা মত থাকতে পারে । আমি সেটা শ্রদ্ধা করি। তবে এই লেখায় আমার কোন মতামত প্রকাশ করা হয়নি ।

ভাল থাকবেন ।

৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬

কলাবাগান১ বলেছেন: নো মোর ওয়ার লিখার জন্য ২০৭০ সনে যাইতে হয় না....

আর সুখ স্বপ্ন ও দেখতে হয় না যে নিউয়র্করের রাস্তায় সিরিয়ান আর্মী!!!!!!!

উনার আসল কথায় বার বার আসছে যে মুসলমান বলেই আমেরিকান সৈন্যরা হত্যা করছে

৮| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২০

যুধিষ্ঠির বলেছেন: কলাবাগান ভাই টাইপ লোকজনদের মাথায় বিরাট সমস্যা :D "আমি বলি কি আর আমার সারিন্দা বাজায় কি!"

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২২

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ভাই ঝগড়াঝাটি না করলেই ভাল । আগেই বলেছি No more war ।

৯| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪৬

নীল আতঙ্ক বলেছেন: যুদ্ধ কোন দিন শান্তি আনতে পারে না।
লেখা টা খুব ভালো লাগলো :)
ভালো থাকবেন আপু :)

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১০

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন ।

১০| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

নীল আতঙ্ক বলেছেন: চেষ্টা করছি ভালো থাকতে আপু।
ধন্যবাদ।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: :D

১১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৪

আমি অথবা অন্য কেউ বলেছেন: লেখাটা টানছিলো, শেষটা আরো চমতকার হতে পারত

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪১

মহান অতন্দ্র বলেছেন: হূম পরবর্তীতে চেষ্টা থাকবে । ধন্যবাদ ।

১২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০

ডি মুন বলেছেন:
দীর্ঘ লেখা, তবু ধৈর্য নিয়ে পড়লাম। ভালো লাগছিল।

স্বপ্নে ভব্যিষ্যত গমন আর স্বপ্ন শেষে বিপরীত বাস্তবতায় ফিরে আসা। স্বপ্ন ও বাস্তবতার অসংগতি। কিংবা বলা যায় বর্তমান অবস্থা মনের মধ্যে যে চাপ ও আতঙ্ক তৈরি করেছে, স্বপ্নের মধ্য দিয়ে তা কিছুটা প্রশমিত করার প্রয়াস।

গল্প ভালো লেগেছে।

তবে বাস্তবে কি গল্পে যুদ্ধ কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না। কোনো একটা গল্পে বা লেখায় পড়েছিলাম - (ঠিক মনে করতে পারছি না এ মুহূর্তে)

হত্যার প্রতিশোধ হত্যা নয়
পাপে পূন্যের প্রতিষ্ঠা হয় না



++++

উত্তরোত্তর আরো সুন্দর হোক আপনার লেখার হাত
শুভকামনা সবসময়।




০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৯

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ডি মুন আপনার সুন্দর ব্যাখ্যার জন্য । আমিও সহমত আপনার সাথে হত্যার সমাধান কখনই হত্যা নয়।

১৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৬

পারভেজ রানা বলেছেন: গল্পটি ইম্প্রেসিং, চালিয়ে যাও।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০০

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া । ভাল থাকবেন।

১৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪০

তুষার কাব্য বলেছেন: আমরা কেউ যুদ্ধপীড়িত পৃথিবী চাইনা,শান্তিময় পৃথিবী হোক সবার জন্য..

ভালোলাগা গল্পে...

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০০

মহান অতন্দ্র বলেছেন: সহমত আপনার সাথে। ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ ।

১৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

তাশমিন নূর বলেছেন: সুন্দর লেখনী। শুভকামনা।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৮

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ধন্যবাদ তাশমিন নূর। ভাল থাকবেন ।

১৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

তিথীডোর বলেছেন: এত প্রান্জল লেখা, খুব ভালো লাগলো!....কলাবাগানের সমস্যা কি? মাইকেল মুরের মত আমেরিকানও আমেরিকার যুদ্ধ পলিসী নিয়ে মুভী বানিয়েছেন!লেখিকাকে পার্সোনালি এ্যাটাক করে উনি (কলাবাগান) উনার হীনমন্যতার পরিচয় দিলেন!...কীপ ইট আপ মহান অতন্দ্র!

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৭

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তিথীডোর আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য । ভাল থাকবেন ।

১৭| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১১

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৫৩

মহান অতন্দ্র বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন ।

১৮| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৩

সোহানী বলেছেন: ব্লগ মানে মুক্ত চিন্তা.... আমার মনের খুব ছোট একটি কোনায় যে দু:শ্চিন্তা উকিঁ দিয়েছে তা শেয়ার করা...... আর এর বিপক্ষে মত থাকতেই পারে কিন্তু তা আক্রমানাত্বক ভাবে নয়, যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা উচিত..... @কলাবাগান১ ।

লিখায় ভালো লাগা..... হাঁ, আমার ও একই কথা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কি হবে এতো রক্তারক্তি করে....... যার সন্তান হারিয়েছে সে জানে কি ব্যাথা বুকে।

পৃথিবীর কোন মা'ই যেন সন্তান হারা না হয়...... এ প্রত্যাশায়।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ সোহানী আপনার সুন্দর মতামত ও সুন্দর ব্যাখ্যার জন্য।

১৯| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩২

কাবিল বলেছেন: যে যাই বলুক আমার খুব ভাল লেগেছে

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৮

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কাবিল । আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো । ভাল থাকবেন ।

২০| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১১

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: যাক এটা তাহলে স্বপ্নই ছিলো। বাস্তব মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্নের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে ওঠে।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: সহমত আপু । ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

২১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৬

কলমের কালি শেষ বলেছেন: গল্পে অনেক ভালো লাগলো । +++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০৪

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভ্রাতা । ভাল থাকবেন ।

২২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

এহসান সাবির বলেছেন: বেশ!


শুভেচ্ছা।

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬

মহান অতন্দ্র বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.