| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহিউদ্দিন হায়দার
শব্দে আমার আশ্রয়, লেখায় আমার মুক্তি। এখানে আমি লিখি, ভেবে দেখি, আর খুঁজি মানুষের মনের গল্প।

মানব সম্পর্ককে অনেক সময়ই আমরা জটিল ও দুরূহ মনে করি। বিশেষ করে প্রেম বা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত অহং বা ইগো অনেক সময় সম্পর্কের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ইগো মানুষের মধ্যে আত্মমর্যাদা রক্ষা বা নিজের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠার একটি চেষ্টার অংশ হলেও, যখন এটি সম্পর্কের মধ্যে প্রবেশ করে, তখন তা স্বাভাবিক মাধুর্যকে নষ্ট করতে শুরু করে।
যদি আমরা দেখি, সত্যিকারের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিশ্বাস, বোঝাপড়া ও সংবেদনশীলতার ওপর। কিন্তু যখন ইগো কাজ শুরু করে, তখন কথার স্থান কমে যায়। কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়, ছোটখাটো অভিমান বড় রূপ নেয়। সম্পর্কের প্রাকৃতিক সাদাসিধে রাগ-অভিমানকেও ইগো দিয়ে মাপা হয়—“আমি নীরব থাকছি, তাই তুমি ভুলে যাও।” কিন্তু বাস্তবে, নীরবতা কখনো সমস্যা সমাধান করে না; বরং তা সম্পর্কের মধ্যে ফাঁক তৈরি করে।
কথা বলা বন্ধ রাখা মানেই সম্পর্কের বন্ধন দুর্বল হওয়া। অভ্যাস হয়ে যায় নীরব থাকা, কথার অভাবে বোঝাপড়া কমে যায়, আর রাগ-অভিমান শুধু আরও বড় হয়ে ওঠে। এটি এক ধরনের “মানসিক দূরত্ব” তৈরি করে, যা অনেক সময় সম্পর্ককে অচেনা ও অপরিচিত করে তোলে।
যেখানে রাগ-অভিমান আসে, সেখানে ভালোবাসা মিশ্রিত থাকলে সেটি স্বাভাবিক। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সেই রাগকে প্রকাশের মাধ্যমে সমাধান করা, নীরবতার মধ্য দিয়ে নয়। সম্পর্কের টেকসইতা নির্ভর করে, কথার প্রবাহের ওপর, বোঝাপড়ার ওপর এবং দুই পক্ষের আন্তরিকতার ওপর। ইগোকে সামলানো গেলে, রাগ-অভিমানকে সৃষ্টিশীলভাবে প্রকাশ করা গেলে, সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়।
সুতরাং, বাস্তব জীবনের সম্পর্ক বলতে গেলে ইগোকে বাদ দিয়ে স্বচ্ছন্দভাবে কথা বলা, অনুভূতি প্রকাশ করা এবং ছোটখাটো রাগকে সৃষ্টিশীলভাবে সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি। সম্পর্ককে দীর্ঘায়িত করতে হলে ইগোকে “অফ” করতে হবে এবং ভালোবাসার ভাষা—কথা—কে “অন” রাখতে হবে।
©somewhere in net ltd.