নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"জীবন শেখায়, আমি লিখে রাখি। গল্প অনুভূতি আর অভিজ্ঞতার মিশেলে এটাই আমার ছোট্ট জগৎ\" গতানুগতিক সাধারণ মানুষ

মহিউদ্দিন হায়দার

শব্দে আমার আশ্রয়, লেখায় আমার মুক্তি। এখানে আমি লিখি, ভেবে দেখি, আর খুঁজি মানুষের মনের গল্প।

মহিউদ্দিন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সু-রাজনীতির অভাবেই সুনাগরিকের সংকট

০৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২৫



রাজনীতি শব্দের মূল অর্থই হলো রাষ্ট্র পরিচালনার নিয়মনীতি। অর্থাৎ—কোন সমাজ, কোন রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, তার নীতি, দিকনির্দেশনা এবং উদ্দেশ্যই রাজনীতির মূল ভিত্তি। একটি আদর্শ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাজনীতি কখনোই কেবল ক্ষমতা অর্জনের প্রতিযোগিতা হতে পারে না; বরং এটি হওয়া উচিত সমাজ ও রাষ্ট্রকে কল্যাণের পথে পরিচালনার এক মহৎ প্রয়াস।

কিন্তু আজ আমরা যে রাজনীতি দেখি, তা কি সত্যিই রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণের জন্য পরিচালিত হচ্ছে? নাকি এটি কেবল ক্ষমতা দখল আর আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে?

রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য জনগণের সেবা করা—এই বোধ থেকেই গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। প্রতিটি দলেরই আদর্শ ছিল রাষ্ট্র ও নাগরিকের কল্যাণ সাধন। কিন্তু সেই সেবার আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন একদল সৎ, দক্ষ, আদর্শবান ও জনবান্ধব কর্মীবাহিনী। কারণ, রাজনীতির রূপ বাস্তবে ফুটিয়ে তোলে তার কর্মীরা। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই কর্মীবাহিনী কি আদর্শিক নাকি স্বার্থান্বেষী?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আজ যে দূর্বৃত্তায়ন ও সন্ত্রাসায়ন দেখা যাচ্ছে, তা কেবল কোনো একটি দলের নয়—বরং প্রায় সব দলেই এই সংস্কৃতি গভীরভাবে প্রোথিত। কেউ দলীয় আধিপত্যে, কেউ আর্থিক স্বার্থে, কেউ বা ক্ষমতার আশায়—সবাই যেন রাজনীতিকে জনসেবার মহৎ অঙ্গন থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে এক ধরণের প্রতিযোগিতামূলক হিংস্রতায়।

ফলাফল হিসেবে রাজনীতি আজ জনগণের আস্থা হারিয়েছে। যে রাজনীতি সেবার, মানবতার ও নৈতিকতার প্রতীক হওয়ার কথা, তা এখন ভয়, ঘৃণা ও স্বার্থের সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন জাগে—
বর্তমান রাজনীতি কি সত্যিই রাজনীতির মৌলিক সংজ্ঞায় পরিচালিত হচ্ছে?
যদি না হয়, তবে এই রাজনৈতিক ধারায় রাষ্ট্র ও সমাজের কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব?

বাস্তবতা হলো— সুনাগরিক সৃষ্টি ছাড়া কোনো রাষ্ট্র টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে পারে না, আর সুনাগরিক তৈরি হয় কেবল সু-রাজনীতির আলোকেই। আজ প্রয়োজন এমন রাজনীতি, যা আদর্শিক, মানবিক ও দায়িত্বশীল। প্রয়োজন এমন কর্মসূচি, যা কেবল ভোটের রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং নাগরিক চরিত্র, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও মানবিকতা বিকাশে ভূমিকা রাখে।

রাজনীতি যদি নীতিহীন হয়, তাহলে রাষ্ট্রও অনৈতিক হয়ে পড়ে। তাই সময় এসেছে নতুন করে ভাবার—
আমরা রাজনীতিকে কিসের জন্য চাই? ক্ষমতার জন্য, নাকি দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য?

একটি সৎ, আদর্শিক ও মানবিক রাজনীতি ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি সম্ভব নয়।
সুনাগরিক গঠনের প্রথম শর্তই হলো—সু-রাজনীতি।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: এখন তো আর রাজনীতি নাই।
আছে ভন্ডগিরি।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৩৩

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
সত্যি বলতে বর্তমান সময়ে রাজনীতির অনেক ক্ষেত্রেই ভণ্ডামি ও স্বার্থপরতা জায়গা করে নিয়েছে—এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে তারপরও আমি বিশ্বাস করি, সু-রাজনীতি পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি, কেবল হারিয়ে গেছে তার চর্চা ও চেতনা।
যদি আমরা নাগরিক হিসেবে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ হই, তবে একদিন আবার সু-রাজনীতির জায়গা তৈরি হবে—যেখান থেকে সত্যিকারের সুনাগরিক জন্ম নেবে।

২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১১

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পলিটিক্স বাংলাদেশে এমনই ।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৩০

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই, বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আমাদের দেশের রাজনীতি অনেক সময় হতাশাজনক মনে হয়। তবে বিশ্বাস করি—সচেতন নাগরিক ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্ব গড়ে উঠলে রাজনীতির চিত্রও একদিন বদলে যাবে। সু-রাজনীতি গড়ে তোলাই সেই আশার প্রথম ধাপ।

৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১৩

কামাল১৮ বলেছেন: প্রতিটা মানুষ মানবিক হলে আর কোন সমস্যা থাকবেনা।ভূপেন হাজারিকা কতো আগে বলেগেছেন,মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:২৯

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। মানবিকতা যদি প্রতিটি মানুষের মনের মূলে স্থান পেত, তবে রাজনীতি, সমাজ কিংবা রাষ্ট্র—সবকিছুই আপন গতিতে সুন্দর হতো। ভূপেন হাজারিকার সেই চিরন্তন আহ্বান আজও আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়—“মানুষ মানুষের জন্য”—এই সত্যই সু-রাজনীতির মূল দর্শন হওয়া উচিত।

৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৯

রৌশন বলেছেন: সু-রাজনীতিটা কি অ-নাগরিক প্রতিষ্ঠা করবে? সু-রাজনীতি প্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় নাগরিকরা অপেক্ষা করে বসে থাকবে এখন?

এমন চিন্তা-ধারনার জন্যই রাষ্ট্র টেকসই উন্নয়ন অর্জন করতে পারে না। নিজের অকর্মণ্যতার দায় অন্যের উপর না দিয়ে সু-নাগরিক হয়ে পড়ুন এখুনি। ব্যাবসা শুরু করুন, গবেষণা শুরু করুন, রোবট বানান, ব্যায়াম করুন, পড়ালেখা করুন। নিজে করুন, অন্যকে করতে বলুন।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:২৬

মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি একদম ঠিক বলেছেন—সু-নাগরিক গড়ে ওঠা ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তবে আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল এই বার্তাটিই জোর দেওয়া যে, নাগরিকের চেষ্টাকে টেকসই করতে হলে রাজনৈতিক ব্যবস্থাটিও হতে হবে ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল।
সু-রাজনীতি এবং সু-নাগরিক—দুটিই একে অপরের পরিপূরক। একজন সচেতন নাগরিক যেমন সু-রাজনীতির ভিত্তি তৈরি করেন, তেমনি সৎ রাজনীতি নাগরিকদের সেই চেতনা বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়। তাই পরিবর্তন আসবে—দুই দিক থেকেই।

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন। সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.