নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"জীবন শেখায়, আমি লিখে রাখি। গল্প অনুভূতি আর অভিজ্ঞতার মিশেলে এটাই আমার ছোট্ট জগৎ\" গতানুগতিক সাধারণ মানুষ

মহিউদ্দিন হায়দার

শব্দে আমার আশ্রয়, লেখায় আমার মুক্তি। এখানে আমি লিখি, ভেবে দেখি, আর খুঁজি মানুষের মনের গল্প।

মহিউদ্দিন হায়দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

✴️ অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাস্তবতার নির্মম প্রতিচ্ছবি ✴️

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৩



২৪-এর অভ্যুত্থান ছিল কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার নাম নয়; এটি ছিল বহু বছরের জমাটবদ্ধ বঞ্চনা, বৈষম্য, আর লাঞ্ছিত নাগরিক অধিকারের বিরুদ্ধে এক জনগোষ্ঠীর নীরব আর্তনাদ। যখন রাষ্ট্রযন্ত্র নিজ নাগরিকের অধিকারে অভিমুখী হতে ব্যর্থ হয়, তখন জনগণই হয়ে ওঠে ইতিহাসের নিয়ন্তা। সেই নিয়ন্ত্রণের ডাকেই মানুষ দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে নেমেছিল—স্বপ্ন ছিল একটি ন্যায্য রাষ্ট্র, যেখানে মানুষের মর্যাদা কারও দয়া নয়, বরং স্বাভাবিক অধিকার।

প্রতিশ্রুতি ছিল—
সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার,
সুষম অর্থনীতির,
বেকার যুবকের জন্য যুগোপযোগী পরিকল্পনার,
বাকস্বাধীনতার মুক্ত হাওয়ার,
এবং অপরাধ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর রাষ্ট্রীয় অবস্থানের।

সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি ছিল জাতীয় ঐক্যের, কারণ বিভক্ত হৃদয়ে রাষ্ট্র টেকে না—এ কথা ইতিহাস বহুবার শিখিয়েছে।

➤ দেড় বছরের ব্যবধান—স্বপ্নে ফাটল, বাস্তবে অন্ধকার

কিন্তু দেড় বছর পরে যখন প্রতিশ্রুতির খাতা খোলা হলো, দেখা গেল প্রত্যাশার পৃষ্ঠাগুলো ছিন্নভিন্ন।
যেখানে থাকার কথা ছিল একতার দৃঢ় দেয়াল, সেখানে দাঁড়িয়ে আছে বিভেদের উঁচু প্রাচীর।
রাষ্ট্র, যে হওয়ার কথা জনমতের রক্ষক, সে-ই যেন হয়ে উঠেছে বিভাজনের কারিগর।

বৈষম্য দূর করার বদলে সৃষ্টি হয়েছে নতুন বৈষম্যের বীজ।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ঘিরে গড়ে উঠেছে স্বার্থপরতার চক্র—যেখানে সাধারণ মানুষের অধিকার নয়, বরং সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর চাহিদাই হয়ে উঠেছে নীতি-নির্ধারণের কেন্দ্রবিন্দু।

যে বাকস্বাধীনতা অভ্যুত্থানের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল, তা আজ নির্বাসনের পথ ধরেছে। মানুষ কথা বলার আগে দ্বিধায় ভোগে—কথা বলবে, নাকি নিশ্চুপ থেকে বাঁচবে?

➤ ক্ষমতা: জনস্বার্থের সিঁড়ি নয়, ব্যক্তিস্বার্থের দালান

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আজ দায়িত্বের চেয়ে সুবিধাকেই বড় করে দেখছে।
ক্ষমতা, যা জনগণের নিরাপত্তা ও অগ্রগতির হাতিয়ার, তা পরিণত হয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থের দুর্গে।
পরিবার, আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের জন্য নীতির পথ প্রশস্ত করা যেন রাষ্ট্রচর্চার স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে।

ফলে লুটপাট, অনিয়ম, অপব্যবহার আর নৈতিকতার অবক্ষয়—সবকিছুই রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে, তা আর আলাদা করে চেনা যায় না।

➤ জাতির অবস্থান: অন্ধকারের ভেতর আলোহীন দীর্ঘশ্বাস

এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের অবস্থান যেন দিগন্তহীন এক অন্ধকারের মাঝে দিশাহীন দাঁড়িয়ে থাকা।
যে জনগণ স্বপ্ন দেখেছিল পরিবর্তনের, তারা আজ প্রত্যক্ষ করছে সেই স্বপ্নের অপমৃত্যু।

দেশ আজ যেন অমানিশার গভীর তলে থমকে থাকা—
যেখানে আশা নেই, ভরসা নেই, শুধু আছে অনিশ্চয়তার দীর্ঘ ছায়া।
রক্ত-মাংসের মানুষগুলো আজ রাষ্ট্রের কাছে উত্তর নয়, বরং প্রশ্নের বোঝা।

➤ পরিবর্তনের স্বপ্ন কি শুধুই ইতিহাসের আরেকটি গল্প?

অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য কখনোই ক্ষমতার পালাবদল নয়; উদ্দেশ্য হলো কাঠামোর পরিবর্তন।
কিন্তু যখন সেই কাঠামোই ক্ষমতার অন্ধলিপ্সায় ক্ষয়ে যায়, তখন জনগণের স্বপ্ন ভেঙে পড়ে বালুকামাটির মতো।

দেড় বছরের অভিজ্ঞতা তাই একটি নির্মম সত্য শিখিয়েছে—
নেতৃত্ব দায়বদ্ধ না হলে, রাষ্ট্র জনগণের হয় না;
ঐক্যকে অগ্রাধিকার না দিলে, জাতির ভবিষ্যৎ আলো দেখতে পায় না।

আজ এই জাতির মুখে তাই একটাই প্রশ্ন—
অমানিশার এই অন্ধকার ভেদ করে আলো কি আর কখনো ফিরবে?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৩

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনি এআই ব্যবহার করে পোস্ট লেখেন, ভালো কথা। তাই বলে মন্তব্যের উত্তরও এআই দিয়ে দেন- এটা কেমন কথা!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.