![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মমতাজ উদ্দিন আহমদ
পাহাড়ি জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নৈসর্গিক সৌন্দর্যের শ্যামল আঙ্গিনায় পর্যটন স্পট করার অনেক সম্ভাবনাময়ী স্থান রয়েছে। পুরো উপজেলাকে সবুজ পর্বতরাজি, পাহাড়ী ঝর্ণা ও নানা নান্দনিক দৃশ্য ঘিরে রেখেছে। এ যেন এক প্রাকৃতিক সৌন্দযের রাণী। এখানে রয়েছে পর্যটন সম্ভাবনাময় ঐতিহাসিক আলীর সুড়ঙ্গ, মারাংইংতং জেদী, তামাংঝিরি জলপ্রপাত ও রূপমুহুরী প্রভৃতি।
মারাংইংতং জেদী :
যেখানে ‘আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায়’ সে ধরণের এক কাব্যিক মনোরম পরিবেশে মারাইংতং জাদীর অবস্থান। আলীকদম-লামা উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রায় ২০০০ ফুট উঁচু পাহাড় চুড়ায় মারাইংতং স্থানটির অবস্থান। এ পাহাড় চুড়া থেকে প্রকৃতি আর নীলাকাশের সাথে যে কোন পর্যটক এককার হয়ে যেতে পারে। পাহাড় চুড়া থেকে সোজা পশ্চিমে বিশ্বের বৃহত্তম বেলাভূমি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত অনায়াসে দেখা যায়। তাছাড়া সেখানে দাড়িয়ে প্রকৃতির অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্যাদি অবলোকনের পাশাপাশি এক কাব্যিক পরিবেশের ছন্দময় প্রতিধ্বনী শোনা যায়। আলীকদম উপজেলা সদর থেকে ১৬/১৭ কিলোমিটার দুরে ‘মারাইংতং জাদীর’ অবস্থান। আলীকদম-লামা-ফাঁসিয়াখালী সড়কের রেপারপাড়ী এলাকা থেকে পাহাড় চুড়ায় যাওয়ার রাস্তা আছে। রেপারপাড়ী থেকে দক্ষিণমূখী ইটের রাস্তা দিয়ে আঁকা বাঁকা পাহাড়ী পথ মাড়িয়ে পাহাড় চুড়ায় উঠার জন্য রয়েছে কাঁচা মাটির রাস্তা।
এই পাহাড় চূড়াকে সর্বপ্রথম বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা দৃশ্যপটে নিয়ে আসেন। ১৯৯২ সালে ১০ একর পাহাড়কে “মহইদই বৌদ্ধ ধাম্মা জেদী” নামে একটি কমিটির মাধ্যমে বন্দোবস্তি নেয়া হয়। ১৯৯৩ সালে সেখানে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৬ী৪ হাত আয়তকার একটি বৌদ্ধ মূর্তি স্থাপন করা হয়। এ পাহাড় চূড়ায় স্থাপিত বৌদ্ধ জাদীকে ঘিরে প্রতি বছর ‘মারাইংতং মেলা’ নামের একটি উৎসব পালিত হয়ে থাকে। এ উৎসবে পার্শ্ববর্তী দেশ সমুহ থেকেও অসংখ্য বৌদ্ধ ভিক্ষু ও দায়ক/দায়িকার সমাগম ঘটে। প্রতি বছর ৩ দিন ব্যাপী এ সেখানে বৌদ্ধ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
এছাড়াও, অসংখ্য পাহাড়ী ঝর্ণা-নির্ঝরণী এ উপজেলাকে করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত। এখানকার তৈন খাল সংলগ্ন ‘তামাং ঝিরি ঝর্ণা’, ‘পালংখ্যাং জলপ্রপাত’ পোয়ামুহুরী এলাকার ‘রূপমুহুরী ঝর্ণা’ এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে করেছে রূপময়। যা দর্শক চিত্তে শিহরণ সৃষ্টি করবে অনায়াসে।
আলীর সুড়ঙ্গ :
এ উপজেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান হিসেবে ‘আলীর সুড়ঙ্গ’ এখনো এলাকাবাসীর মধ্যে আলোচিত হয়ে আছে। ‘আলীর সুড়ঙ্গ’কে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানা রূপকথা, কিংবদন্তি ও কল্প কাহিনী। শুষ্ক মৌসুমে অসংখ্য দর্শনার্থীর পদভারে মুখরিত হয়ে উঠে সুড়ঙ্গের পার্শ্ববর্তী জনপদ। তবে এর সংস্কারে কোন মহলই অদ্যাবধি উদ্যোগী হননি। ফলে সুড়ঙ্গের গিরিপথ দুর্গম ও বন্ধুর। ইতোপূর্বে অসংখ্য পর্যটক, সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী সুড়ঙ্গ পরিদর্শন করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চীনের পরিভ্রাজক হিওয়েন সাং বলেছেন, ‘নদী নাব্য জলাভূমির এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক নিদর্শনসমুহ অতি অল্প সময়েই হারিয়ে যায়’। চীনের এ পরিভ্রাজকের উক্তিটি আলীর সুড়ঙ্গের বেলায় প্রযোজ্য।
রূপমুহুরী :
মাতামুহুরী নদীর উপত্যকায় রূপমুহুরী ঝর্ণাটির অবস্থান। এটি একটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা। এলাকাটি এখনো দুর্গম বিধায় চমৎকার এই ঝর্ণাটি প্রশাসন কিংবা পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। আলীকদম উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোয়ামুহুরী বাজারের পার্শ্বে এটির অবস্থান। প্রায় ৪শ’ ফুট উঁচু পাহাড় চূড়া থেকে প্রতিনিয়ত ঝর্ণাটি থেকে পানির স্বচ্ছ ধারা প্রবাহিত হচ্ছে। এ যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঝর্ণার পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকেন। প্রচ- গরমে একটি শীতল পরশ পেতে স্থানীয় সেই ঝর্ণার পানিতে গোসল করেন। পর্যটকরা রূপমুহুরী দেখতে গিয়ে মাতামুহুরী নদীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য এবং মুরুং জনগোষ্ঠীর বর্ণিল জীবন যাত্রা উপভোগ করতে পারেন।
শৈল সমারোহে সুষমামন্ডিত পার্বত্য আলীকদমে পর্যটন স্পটের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো দরকার। উপজেলায় অবসর চিত্ত বিনোদনের জন্য সদর এলাকায় একটি পার্ক তৈরী করা প্রয়োজন। মারাংতং পাহাড় চুড়াকে পর্যটনের অপার ক্ষেত্র হিসেবে এর উন্নয়ন ও সড়ক সংস্কার করা হলে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতের অসুবিধা লাঘব হবে। পাশাপাশি “আলীর সুড়ঙ্গ”-এ যাতায়াতের জন্য তৈনখাল সন্নিহিত এলাকায় একটি ঝুলন্ত ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন। সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে এ উপজেলা পর্যটন স্পট তৈরী ও দর্শনীয় স্থান সমুহের উন্নয়ন করা দরকার।
তথ্যসূত্র : প্রেক্ষণ পার্বত্য চট্টগ্রাম : গিরিনন্দিনী আলীকদম
লেখক: মমতাজ উদ্দিন আহমদ, সভাপতি, আলীকদম প্রেসক্লাব
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:১৫
মমতাজ-কলি বলেছেন: সুন্দর সকাল@ ভাই, আপনার মন্তব্য ভাল লাগলো।
আলীকদম আসলে কল দিন
০১৫৫৬৫৬০১২৬।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৪:১৩
সুন্দর সকাল বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট, খুবই ভাল লাগল,
আরো ভাল হত যদি ছবি যোগ করা যেত,
এক পরিচিত ভাই তাদের গ্রুপ নিয়ে গিয়েছিল আলীকদম,
তারা যেসব অসাধারণ জায়গা আবিষ্কার করেছে, কল্পনার বাইরে,
প্রায় ৬-৭ টি ঝনর্া, তাদের কে বলেছিলাম ব্লগে দেয়ার জন্য,
কিন্তু রাজি নয়, কারণ প্রায় জায়গা ছিল নিষিদ্ধ,
আপনার মত সাংবাদিক রে পেলে তো আর কথাই নাই,
দেখি একাবার আসার ইচ্ছা আছে।