![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পার্বত্য চট্টগ্রামকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি নতুন করে সংশয় ঘনীভূত হয়েছে। ১০ এপ্রিল দৈনিক আমার দেশ-এর এক রিপোর্টে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সপ্তম সভায় সেনা সদর পার্বত্য চট্টগ্রামের ভবিষ্যত্ সম্পর্কে গভীর আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। মূল কথায় সেনা সদর বলেছে, এখনই ব্যবস্থা না নেয়া হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ব তিমুর এবং দক্ষিণ সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সেনা সদরের অন্য কথাগুলো ছিল—১. পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত অস্ত্র ও মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে; ২. পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র আসছে মিয়ানমার থেকে। ভারতের কিছু গ্রুপও অর্থকষ্টে পড়লে সন্ত্রাসীদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে (প্রকৃতপক্ষে ভারত সরকারই অস্ত্র দেয়— বিষয়টি সেনা সদর সম্ভবত পাশ কাটিয়ে গেছে); ৩. পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এর আশু সমাধান দরকার; ৪. পার্বত্য চট্টগ্রামে বহুদিন ধরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে না। এসব নির্বাচন করা দরকার; ৫. পার্বত্য চট্টগ্রামে তত্পর ইউএনডিপিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অধিকাংশ পদে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের নিযুক্তি দেয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ; এবং ৬. দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা যাতে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর দারিদ্র্যের সুযোগ না নিতে পারে, সে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
শুধু সেনা সদর নয়, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ওই সভায় তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদও আশঙ্কার কথাই জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা ঘন ঘন পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করছেন। সাংবাদিকসহ বিদেশি লোকজনের আনাগোনাও অনেক বেড়ে চলেছে। তথ্যমন্ত্রীর ধারণা, পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে বিদেশিদের নিশ্চয়ই কোনো গোপন ‘এজেন্ডা’ রয়েছে। সেখানে তারা উস্কানিও দিচ্ছে।
বর্তমান পর্যায়ে কথা উঠেছে আসলে বিদেশিদের সংশ্লিষ্টতার কারণে। সেনা সদর হঠাত্ পর্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ব তিমুর এবং দক্ষিণ সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কেন—সে প্রশ্নের উত্তর নিয়েও দেশপ্রেমিকদের মধ্যে জোর আলোচনা চলছে। কারণ, পূর্ব তিমুর একসময় ইন্দোনেশিয়ার অংশ ছিল। তিমুরবাসীর দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে পাশ্চাত্যের এনজিওরা দ্বীপটিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক তত্পরতা চালিয়েছে, দ্বীপবাসীকে খ্রিস্টান বানিয়েছে এবং সবশেষে দাবি তুলেছে স্বাধীনতার। এর সমর্থনে ছুটে গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো। সঙ্গে থেকেছে জাতিসংঘ। ফলে ইন্দোনেশিয়াকে পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতা স্বীকার করে নিতে হয়েছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ২০০২ সালের ২০ মে পূর্ব তিমুর স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
মুসলিম রাষ্ট্র সুদানের দক্ষিণাঞ্চলেও পাশ্চাত্যের দেশগুলো দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে একই ধরনের তত্পরতা চালিয়েছে। দরিদ্র মুসলমানদের তারা খ্রিস্টান বানিয়েছে। এই ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানরা স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছে। সেখানেও জাতিসংঘই সামনে থেকেছে। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত গণভোটে স্বাধীনতার পক্ষে ভোট পড়েছে ৯৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির গণভোটের রায় মেনে নিয়েছেন। আগামী ৯ জুলাই দক্ষিণ সুদান স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে মূল সুদান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
পূর্ব তিমুর এবং দক্ষিণ সুদানের অভিজ্ঞতাই দেশপ্রেমিকদের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও উদ্বিগ্ন করেছে। কারণ, পার্বত্য চট্টগ্রামেও পাশ্চাত্যের দেশগুলো দরিদ্র মানুষদের খ্রিস্টান বানানোর একই তত্পরতা চালিয়ে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে তারা পূর্ব তিমুরের মতো স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাতে চায়। সন্তু লারমাদের পাশাপাশি তাদের সংগঠন হিসেবে ভূমিকা পালন করছে এনজিওরা। টাকা আসছে হিসাব ছাড়া। সে টাকার কাছে বিক্রি হচ্ছেন এদেশেরই চিহ্নিত কিছু রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের ‘নামকরা’ প্রতিনিধিরা। তারা উপজাতিদের নিয়ে মাতামাতি করছেন। তার ওপর রয়েছেন সন্তু লারমাসহ পার্বত্য সন্ত্রাসীরা। তারা শুধু শান্তিচুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছেন না, স্বাধিকার শব্দের আড়াল নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধীনতার দাবিও তুলছেন। সন্তু লারমা বলেছেন, ওই অঞ্চলে বাংলাদেশের একজন সেনাকেও রাখা চলবে না। আওয়ামী লীগ সরকারও সন্তু লারমার ঢোলের বাড়িতে নৃত্য করে চলেছে। সন্তু লারমার ইচ্ছা পূরণের জন্য সরকার ২০০৯ সালের জুলাই থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ শুরু করেছে। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী ৭ লাখের বেশি বাঙালির অনুরোধ ও প্রতিরোধ উপেক্ষা করে সরকার সেনাবাহিনীকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়ায় পরিষ্কার হয়েছে—আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও সেনাবাহিনীর মর্যাদার কোনো মূল্য নেই। সরকার এমনকি লাখ লাখ বাঙালির জীবন বাঁচানোর ব্যাপারেও আগ্রহী নয়।
এখানে উদ্বেগের কিছু কারণ জানানো দরকার। এরকম একটি কারণ হলো, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ‘আদিবাসী দিবস’সহ বিভিন্ন উপলক্ষে সন্তু লারমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘সেনা শাসন’ শুধু নয়, ‘সেনা সন্ত্রাস’ও চলছে! কথাটির মধ্য দিয়ে সন্তু লারমা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ সেনাবাহিনীকেই সরাসরি ‘সন্ত্রাসী’ বানিয়ে ছেড়েছেন। সন্তু লারমাদের দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রাম তাদের এলাকা—পৈতৃক সম্পত্তির মতো। তারাই সেখানকার আদিবাসী, তারাই ভূমিপুত্র।
অথচ জাতিতাত্ত্বিক, নৃতাত্ত্বিক, ভাষাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচালিত কোনো গবেষণাতেই কিন্তু প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, সন্তু লারমাদের মতো উপজাতিরা ওই এলাকার আদিবাসী বা ভূমিপুত্র। গবেষণায় বরং প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশী বাঙালিরাই পার্বত্য চট্টগ্রামসহ এই অঞ্চলের ভূমিপুত্র এবং আদিবাসী। বাঙালিরা সেখানে হাজার হাজার বছর ধরে বসবাস করছে আর উপজাতি গোষ্ঠীগুলো সেখানে এসেছেই মাত্র দেড়-দুইশ’ থেকে চার-পাঁচশ বছর আগে। এদের মধ্যে সন্তু লারমার পূর্বপুরুষ চাকমারা এসেছে আরও পরে—দেড়শ’ থেকে তিনশ’ বছরের মধ্যে। চাকমাদের আদি নিবাস থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলে। ব্রিটিশ শাসনের প্রথমদিকে তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ করেছিল। গবেষণায় আরও জানা গেছে, উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর কোনো একটিও স্বেচ্ছায় ওই অঞ্চলে আসেনি। প্রতিটি গোষ্ঠীই যুদ্ধবিগ্রহের কারণে নিজেদের আদি বাসস্থান ছেড়ে প্রাণ বাঁচানোর প্রয়োজনে পালিয়ে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেছিল। অর্থাত্ উপজাতিদের কোনো গোষ্ঠীই পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নয়, তারা বহিরাগত মাত্র। শুধু বসবাস করলেই কেউ ‘ভূমিপুত্র’ বা ‘আদিবাসী’ হয়ে যায় না।
তা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি কিছু বিশেষ গোষ্ঠী উপজাতিদের ‘আদিবাসী’ বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশের চিহ্নিত কিছু রাজনীতিক, বুদ্ধিজীবী ও সুশীল নামধারী যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন ব্রিটেনের লর্ড এরিক এভবেরির নেতৃত্বে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক নামের কমিশনও। ব্রিটিশ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই লর্ড ইন্টারন্যাশনাল চিটাগং হিলট্র্যাক্টস কমিশনের কো-চেয়ারম্যান। ১৯৯০ দশকে কোপেনহেগেনে প্রতিষ্ঠিত এই কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের ওপর কথিত নির্যাতনের বিরোধিতা করে এসেছে। ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ সফরকালে লর্ড এরিক এভবেরি শান্তিচুক্তির প্রতিটি বিষয়ে একটি একটি করে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। বলেছেন, সম্পূর্ণ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে তিন-চার বছরের একটি টাইম ফ্রেম ঘোষণা করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও তারাই তত্ত্বাবধান করবেন।
লর্ড এভবেরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হুকুমের সুরে দিকনির্দেশনা দেয়ার মতো ঔদ্ধত্য দেখানোয় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে দেশপ্রেমিকদের মধ্যে। কারণ, এভবেরির মূলকথা লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করাই তাদের আসল উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের আগস্টে যখন লর্ড এভবেরির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক কমিশন সফরে এসেছিল, তখনই সন্তু লারমা থেকে চিহ্নিত ওই রাজনীতিকরা পর্যন্ত প্রত্যেকে লাফিয়ে দৃশ্যপটে এসেছিলেন। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতেও এমন এক সময়ে সহিংসতা শুরু হয়েছিল যখন ওই একই কমিশনের পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। জেন ল্যামবার্টের নেতৃত্বে ইইউ’র প্রতিনিধিদলটি পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করে আসার পরই সহিংসতা শুরু হয়েছিল। তিন পার্বত্য জেলায় তারা পাহাড়ি নেতা, সুশীল সমাজ ও এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছে।
তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ২০ ফেব্রুয়ারির যে দিনটিতে বাঘাইছড়িতে সহিংসতা শুরু হয়েছিল, সেদিনই প্রতিনিধিদলের নেতা জেন ল্যামবার্ট ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। ইইউ প্রতিনিধিদলের জন্য অজুহাত সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই সহিংসতা ঘটানো হয়েছিল কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছিল সঙ্গত কারণেই। ওদিকে দ্বিতীয় একটি তথ্যও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সে তথ্যটি হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতভিত্তিক সংগঠন এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস (এসিএইচআর) জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করে বসেছিল। ভারত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এ সংগঠনের নির্বাহী প্রধান সুহাস চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি নেতা উপেন্দ্রলাল চাকমার নিকটাত্মীয়। এ থেকেও পরিষ্কার হয়েছিল যে, সন্তু লারমা থেকে সুহাস চাকমা পর্যন্ত সবার ‘নাটাই’ই আসলে একই জায়গায় রয়েছে।
আশঙ্কার কথা হলো, চিহ্নিত রাজনীতিকরা একদিকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে চলেছেন, অন্যদিকে সুহাস চাকমারা জাতিসংঘের ‘হস্তক্ষেপ’-এর জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। এই হস্তক্ষেপের অর্থ নিশ্চয়ই বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা সে হস্তক্ষেপই চেয়েছেন, যেমনটি জাতিসংঘ করেছিল পূর্ব তিমুর এবং দক্ষিণ সুদানে। এসবের পাশাপাশি লর্ড এভবেরির নেতৃত্বে পার্বত্য কমিশন যে খুবই তত্পর রয়েছে, তার প্রমাণ তো জেন ল্যামবার্টরাই দিয়ে গেলেন।
লক্ষণীয় যে, বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সহিংসতায় সেনাবাহিনীর ‘প্রশ্রয়’ ও ‘হস্তক্ষেপ’ থাকার কথা বললেও বাঙালিদের কারা হত্যা করেছে, কারা বাঙালিদের শত শত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং কারা সেনা অফিসারদের ওপর হামলা চালিয়েছে—এসব বিষয়ে এভবেরিরা কিন্তু টুঁ-শব্দটিও করেননি। অবশ্য এটিই স্বাভাবিক। কারণ, একই বিশেষ কেন্দ্রের শেখানো ‘বুলি’ তাদের কপচাতে হয়েছে। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো ধরনের সেনা শাসন চলছে বলে প্রশ্ন তোলারই অবকাশ নেই। দেশের অন্য সব অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামও সরকারি তথা অসামরিক প্রশাসনর অধীনেই রয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীকে রাখতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। সীমা ছাড়ানো খুন-খারাবি, অপহরণ, ছিনতাই-ডাকাতি এবং ভূমি দখলের মতো ভয়ঙ্কর ধরনের অপরাধ সংঘটনের মধ্য দিয়ে সেনা মোতায়েনের প্রেক্ষাপটও পার্বত্য সন্ত্রাসীরাই সৃষ্টি করেছিল।
তারা যদি শান্তি ফিরিয়ে আনে ও পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে, তাহলেই শুধু সেনা প্রত্যাহার করার কথা চিন্তা করা যেতে পারে। অন্যদিকে নানান নামের আড়াল নিয়ে এখনও তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, সশস্ত্র যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে এভবেরিরা শুধু ‘সেনা শাসন চলছে’ পর্যন্ত বলেই থেমে যাচ্ছেন না, সেনাবাহিনীই সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে বলেও গুরুতর অভিযোগ তুলছেন। অথচ ঘটনাপ্রবাহে, বিশেষ করে অসহায় হয়ে পড়া বাঙালিদের ওপর চালানো দমন-নির্যাতনই প্রমাণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার পরিণতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।
বলা দরকার, বাংলাদেশে শুধু লর্ড এভবেরির আবির্ভাব ঘটেনি, তার সঙ্গী হিসেবে ছুটে এসেছিলেন ভারতের গুজরাটি লর্ড নবনিত দোলাকিয়াও। বলা হয় এবং ধারণা করাও কঠিন নয় যে, মানবাধিকার আন্দোলন ও সমাজসেবার আড়ালে এভবেরি ও দোলাকিয়ার মতো ভাড়াটে লর্ডরা আসলে পাশ্চাত্যের একই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এ দেশগুলো মুসলমানদের ধ্বংস ও পদানত করার এবং মুসলিম বা মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলার উদ্দেশ্য নিয়ে একযোগে কাজ করে চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে তারা পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মতো স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাতে চায়। তাদের সংগঠন হিসেবেই সন্তু লারমারা ভূমিকা পালন করছেন। এদিকে টাকার বিনিময়ে নৃত্য করছেন চিহ্নিত কিছু রাজনীতিক। সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন ‘সুশীল’ নামধারী ব্যক্তিরা। তারা এখন আর শুধু শান্তিচুক্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাচ্ছেন না, স্বাধিকারের আড়ালে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধীনতারও দাবি জানাচ্ছেন।
সেনা সদরের মূলকথায় এমন আশঙ্কার কথাই জানানো হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, সেনাবাহিনীর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়াই যে কোনো দেশপ্রেমিক সরকারের দায়িত্ব। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকার সেদিকে মনোযোগ পর্যন্ত দিচ্ছে না। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার পর্যন্ত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পাশ্চাত্যের ইঙ্গিতে সরকারও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সুযোগ দেয়ার এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ভয়ঙ্কর পথেই এগিয়ে চলেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব মোটেই গুরুত্ব পাচ্ছে না। - শা হ আ হ ম দ রে জা, সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
আধারের কবি বলেছেন:
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫
আহসান২০২০ বলেছেন: হাসিনার মাথায় চিন্তা একটাই। গোপালগন্জ বাচলেই বাংলাদেশ বাচবে। আর কোন এলাকার জন্য তার মাথা ব্যাথা নেই।
৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৫
মোহাম্মেদ তারেক হোসাইন বলেছেন: +++++++্ . সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।। এখানে এই ব্যাপারটা নিয়ে লিখেছি...।। পড়তে পারেন
সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।। দেশ ভাঙ্গার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে এখনই।। দেশটা কিন্তু সবার...
৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৩
জাহাজি৮৪ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে .।যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় শেযার করার জন্য..।
সেনাবাহিনীর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়াই যে কোনো দেশপ্রেমিক সরকারের দায়িত্ব।
৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
অবাধ্য ভ্রূকুঞ্চন বলেছেন: বিষয়টি নিয়ে কোন ক্রমেই অবহেলা বা গাফিলতি করার সুযোগ নেই। যদিও আমার রাজনৈতিক পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে নেই তথাপী বলতে হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আওয়ামী লীগ যা করছে তা একটি স্বাধীন দেশের পরিপন্থী কাজ। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে তারা যে ভারসাম্যহীন চুক্তি করেছিল তখনই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটি নীল নক্সা অংকিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং হতে যাচ্ছে। এরপর হয়তো তৃতীয় মেয়াদে এসে বাকী কাজ টুকু সেরে ফেলবেন। সুতরাং সকল দেশ প্রেমিক জনগণকে সজাগ থাকতে হবে এবং দূর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৭
অরণ্যের রোদন বলেছেন: Click This Link
Click This Link
http://www.youtube.com/watch?v=Gic53m-Epd4
অবাধ্য ভ্রূকুঞ্চন বলেছেন : বিষয়টি নিয়ে কোন ক্রমেই অবহেলা বা গাফিলতি করার সুযোগ নেই। যদিও আমার রাজনৈতিক পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে নেই তথাপী বলতে হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আওয়ামী লীগ যা করছে তা একটি স্বাধীন দেশের পরিপন্থী কাজ। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে তারা যে ভারসাম্যহীন চুক্তি করেছিল তখনই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটি নীল নক্সা অংকিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং হতে যাচ্ছে। এরপর হয়তো তৃতীয় মেয়াদে এসে বাকী কাজ টুকু সেরে ফেলবেন। সুতরাং সকল দেশ প্রেমিক জনগণকে সজাগ থাকতে হবে এবং দূর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:২১
মনুমনু বলেছেন: জাহাজি৮৪ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে .।যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় শেযার করার জন্য..।
সেনাবাহিনীর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়াই যে কোনো দেশপ্রেমিক সরকারের দায়িত্ব।
অবাধ্য ভ্রূকুঞ্চন বলেছেন: বিষয়টি নিয়ে কোন ক্রমেই অবহেলা বা গাফিলতি করার সুযোগ নেই। যদিও আমার রাজনৈতিক পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে নেই তথাপী বলতে হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আওয়ামী লীগ যা করছে তা একটি স্বাধীন দেশের পরিপন্থী কাজ। আওয়ামী লীগের প্রথম মেয়াদে তারা যে ভারসাম্যহীন চুক্তি করেছিল তখনই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটি নীল নক্সা অংকিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় মেয়াদে এসে ধীরে ধীরে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং হতে যাচ্ছে। এরপর হয়তো তৃতীয় মেয়াদে এসে বাকী কাজ টুকু সেরে ফেলবেন। সুতরাং সকল দেশ প্রেমিক জনগণকে সজাগ থাকতে হবে এবং দূর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সন্দেহাতীতভাবে একমত। কথা হল, আলীগের জারজদের উপেক্ষা করে , নিজেরাই আমাদের মত্ৃভূমিকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, ঐ জরজদের উপর আর ভবসা করতে পারছিনা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
সাদী বলেছেন: ব্যাপারটা আসলেই মারাত্মক। অতি সত্ত্বর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।