নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাহাড়ের প্রতিধ্বনী

মমতাজ-কলি

ভাল করে বাঁচতে চাই

মমতাজ-কলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণমাধ্যম বন্ধ ও সাংবাদিক নির্যাতনে উসকানি দাতাদের বিচার হবে

১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৭

সরকার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে অভিযোগ করে অবস্থান কর্মসূচিতে সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, গণমাধ্যম বন্ধ ও সাংবাদিক নির্যাতনে সরকারকে যারা উসকানি দিচ্ছেন সময় এলে তাদের সমুচিত জবাব ও বিচারের মুখোমুখি করা হবে।



১৩ জুন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের রিমান্ড বাতিল ও মুক্তি, আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দেয়া, সাগর-রুনি হত্যার বিচার ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে গত ২০ মে থেকে লাগাতার এ কর্মসূচি পালন করছেন সাংবাদিকরা।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি আবদুস শহিদ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, আমার দেশ-এর বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, বিএফইউজে সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, আমার দেশ-এর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আহম্মদ মীরু, ডিইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, প্রচার সম্পাদক আবু ইউসুফ, আমার দেশ ইউনিট প্রধান বাছির জামাল, সংগ্রাম ইউনিট প্রধান শহীদুল ইসলাম, দিগন্ত টিভি ইউনিট প্রধান ইমরান আনসারী, সাবেক প্রধান শাহীন হাসনাত, ডিইউজের দফতর সম্পাদক এম এ নোমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন আরিফ, সাংবাদিক নেতা খন্দকার গোলাম আজম প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান।

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, এ সরকার তার সীমাহীন দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে ভিন্নমতের গণমাধ্যমগুলোকে বন্ধ করে দিচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মেনে মাহমুদুর রহমানের মেডিকেল চেকআপ না করে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। যা প্রচলিত আইন বিরোধী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবেই মিডিয়া বিরোধী। ভিন্নমত তারা সহ্য করতে পারে না। এজন্য ১৯৭৫-এ চারটি রেখে সব পত্রিকা বন্ধ করেছিল। ৯৬-এ এসে চারটি এবং ২০১৩-তে এসে চারটি গণমাধ্যম বন্ধসহ অনেক মিডিয়াকে আসতেই দেয়নি। সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। মাহমুদুর রহমানকে আবারও গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন এসব করে মিথ্যা দিয়ে সত্যকে চিরদিন দমিয়ে রাখা যাবে না। আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেশের মানুষের চেতনাকে স্তব্ধ করা যাবে না। তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি ও সাংবাদিকরা গণমাধ্যম বন্ধ ও সাংবাদিক নির্যাতনের পক্ষে সরকারকে উসকানি দিচ্ছে সময় আসলে এসব ইন্ধনদাতাদের জবাব দেয়া হবে। তাদেরকেও বিচারের মুখোমুখি করা হবে। তিনি আগামী ১৬ জুন রোববার সংবাদপত্রের কালো দিবসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সমাবেশে সাংবাদিকসহ সব শ্রেণীর পেশাজীবীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, মাহমুদুর রহমান দুই মাস ধরে কারারুদ্ধ। তার আগে তিনি অফিসে অবরুদ্ধ ছিলেন। সেই অবরুদ্ধ থাকাকালীন গণজাগরণ মঞ্চের হামলার উসকানি দেয়ার অভিযোগে তাকে ২৮ নম্বর আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই হাস্যকার মামলায় তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। অথচ একই মামলায় প্রথম থেকে ২৭ জন আসামির কোনো খোঁজ নেই। তিনি বলেন, সত্য সংবাদ প্রচার করা যদি উসকানি হয় তাহলে ইসলামের বিরুদ্ধে কুত্সা রটনাসহ কোমলমতি শিশুদের দিয়ে যারা ফাঁসি চাই বলিয়েছে, ২৪ ঘণ্টা যারা শাহবাগিদের সেই উসকানিকে লাইভ প্রচার করেছে সেটা কি বড় উসকানি নয়? তিনি বলেন, যারা গণজাগরণ মঞ্চ থেকে গণহত্যা, মিডিয়া বন্ধ ও হামলার উসকানি দিয়েছে, রিমান্ডে নেয়ার পক্ষে যারা উসকানি দিচ্ছে তাদেরও একদিন বিচার হবে।

ডিইউজের সভাপতি আবদুস শহিদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার জন্য। সম্পাদকরাও একই দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সরকারের কানে সেটা পৌঁছেনি। উল্টো সরকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে সম্পাদক ও আন্দোলনকারীদের অপমানিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকার সম্পাদক ও রাজনীতিকদের জেলে পুড়িয়ে দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে যে, সংবাদপত্রে আঘাত করলে সে আঘাত উল্টো তাদের ওপরই এসে লাগে।

ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে কিনা এখন দেশের মানুষের মনে সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে। সত্যনিষ্ঠ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে জেলে নিয়ে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, তিনি নাকি গাড়ি ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াও করেছেন। তিনি বলেন, সরকার শেষ দিকে এসে বেসামাল হয়ে গেছে। দেশের মানুষ সরকারের আচরণে ত্যক্ত, বিক্ষুব্ধ।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়াটার নেট’ কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, সেই কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তথ্য ফাঁসকারী সাংবাদিককে পুলিত্জার পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ঠিক একই রকমভাবে স্কাইপ কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করার পর সংশ্লিষ্ট বিচারক যখন পদত্যাগ করে কেলেঙ্কারির সত্য নিশ্চিত করেছে তখন মাহমুদুর রহমানকে পুরস্কৃত না করে তাকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে সরকার।

আমার দেশ-এর বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী বলেন, মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য কিছু সাংবাদিক উসকানি দিচ্ছেন। মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে অন্য মিডিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে করে অন্য মিডিয়াগুলো যেন দুর্নীতি ও সত্য সংবাদ প্রচার করতে সাহস না পায়। তিনি প্রথম আলো পত্রিকার সমালোচনা করে বলেন, মাহমুদুর রহমান মুক্ত থাকা অবস্থায় পত্রিকাটি কোনো সমালোচনা করার সাহস পায়নি। তারা এখন আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছে এবং রিমান্ডে নেয়ার জন্য সরকারকে উসকানি দিচ্ছে। এরআগে পত্রিকাটি একাধিকবার মিথ্যা সংবাদ প্রচারের জন্য ক্ষমা চেয়েছে তওবা পাঠ করেছেন। এমনকি বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা সতর্ক হোন। তা না হলে অচিরেই আমার দেশ প্রকাশিত হবে। সেদিন পত্রিকার পাতায় আপনাদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে।

১৬ জুন রোববার সংবাদপত্রের কালো দিবসে সাংবাদিক সমাবেশ : আগামী ১৬ জুন রোববার সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভিসহ বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দেয়া, সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, সাগর-রুনি হত্যার বিচার দাবি ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রতিবাদে একই দিন বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে পূর্বঘোষিত সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.