নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জার্মানিতে বসবাস ও কর্মস্থল

মনাজ হক

মনাজ হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামীলীগ কি পারবে ২০ তম জাতীয় সম্মেলনে পরিবারতন্ত্রের বাইরে কাউন্সিলর দের দ্বারা নির্বাচিত একটি জাতীয় কমিটি নির্বাচন করতে?

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:০২

আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলন চলছে এই উইকেন্ডে ঐতিহাসিক সরোয়ার্দী উদ্দানে, হয়তো আর কিছুক্ষন অপেক্ষা করলে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির পূর্ণাঙ্গ লিস্ট ও চলে আসবে হাতে, কিন্তু এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে আমার ছাত্র জীবনে যোগ দেওয়া একমাত্র ছাত্র সম্মেলনের কথা। এপ্রিল ১৯৭২, সবে যুদ্ধ শেষ করে অস্ত্র জমা দিয়ে আবার ছাত্রজীবনে ফিরিয়ে গেছি। সেসময় উত্তর বঙ্গের এক ছোট্ট শহরের, বগুড়া কলেজে পড়তাম, একমাস আগেই ছাত্র সম্মেলনে আমাকে সভাপতি রেখে বগুড়ায় ছাত্র ইউনিয়ন এর শহর শাখা তৈরী হয়েছে, তাই এপ্রিল ১৯৭২ প্রথম বার কাউন্সিলর হিসেবে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ত্রয়োদশ সম্মেলন আমার জীবনে আজ ও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। সম্মেলনের শের দিনে রবীন্দ্রনাথে রক্ত করবি নাটক মঞ্চায়স্থের মাদ্ধমে সম্মেলন শেষ হয়। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কিছু আদর্শবান নেতা তৈরী করে গেছে যেমন, মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন (১৯৬৫ সনে ভাগ হয় মেনন গ্রূপ), নূহ-উল-আলম লেনিন, সিলেটের নুরুল ইসলাম নাহিদ এরাই এখন আওয়ামীলীগের ব্রেন হিসেবে পরিচিত। আর বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ই একমাত্র ছাত্র সংগঠন যারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের আয়োজন করে সে সময়। ১৯৭২ সালের ছাত্র ইউনিয়নের ত্রয়োদশ সম্মেলনের প্রধান অতিতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে সম্মেলনের প্রবেশপথে বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী, মোজাফ্ফর আহম্মেদ ও মণিসিংহ এই চারজন জাতীয় নেতার বিশাল পোট্রেট টাঙানো হয়েছিল। তাঁরা সকলেই আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। মওলানা ভাসানী ছাড়া অন্যরা সবাই এসেছিলেন এবং ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণে ছিল ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য তিনি অন্যদেরকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যের কথা তিনি জোরালোভাবে তুলে ধরে ছাত্র ইউনিয়নকে সমাজতন্ত্রের কারিগর তৈরির কারখানা বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। অন্য নেতারাও তাদের বক্তৃতায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিলেন। নুরুল ইসলাম নাহিদ সেসময় ছাত্র উনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ১৯৭২ এর সম্মেলনেই বিপ্লবী ছাত্র নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম কে সভাপতি ও আব্দুল কাউয়ুম মুকুল কে সাধারণ সম্পাদক রেখে নতুন কমিটি গঠন হয়, পরে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ডাকসুর সহ সভাপতি নির্বাচিত হলে নূহ-উল-আলম লেনিন ছাত্র উনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন, বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, এককালের এই তুখোড় ছাত্রনেতা কখনোই সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। নূহ-উল-আলম লেনিন এখনো কোনো সংসদ সদস্য নন কিন্তু আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত প্রাণ বলে পরিচিত। আশির দশকের ছাত্র উনিয়নের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হয় পরবর্তীতে। এই তো গেলো ছাত্র উনিয়নের সাথে আওয়ামীলীগের সম্পর্ক।
আজ আওয়ামীলগের ২০ তম সম্মেলনে, ১৯৮১ সনের পরথেকে দীর্ঘ ৩৫ বছরের নেত্রী শেখ হাসিনা এবার অবসর নেবার কথা বলেছে ও নতুন নেতৃত্বের হাতে দলের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। পশ্চিমা রাজনীতিতে এটি খুব স্বাভাবিক ঘটনা। বাংলাদেশের গত ৩৫ বছর যদি ইউরোপীয় গণতান্ত্রিক রাজনীতির সাথে তুলনা করা যায় তাহলে দেখা যায় ব্রিটেনের লেবার পার্টিতে জেমস ক্যালাহান এর পরে ১০ জন পার্টি প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন আজ অবদি গত ৩৫ বছরে, কনসারভেটিভরাও মার্গারেট থেচার পরে ৭ জন পার্টি প্রধান পেয়েছে আর জার্মানির এককালের ক্ষমতাধর চ্যান্সেলর উইলি ব্র্যান্ড এর পরে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা ও ১২ জন পার্টি প্রধান পেয়েছে। আর জার্মানির বর্তমান চ্যাঞ্চেলর আঙ্গেলা মের্কেল ও গত ৩৫ বছরের জার্মান কনসারভেটিভ দলের তৃতীয় পার্টি প্রধান, ফরাসি সোসালিষ্ট রা ও গত ৩৫ বছরে ৬ জন পার্টি প্রধান পেয়েছে আর ভারতীয় কংগ্রেস পার্টি জওহরলাল নেহেরুর পরে ৫ জন পার্টি প্রধান পেয়েছে ভারত বাসী । তাহলে কি এবার সত্যি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রার্থী নির্বাচনে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হবে? শোনা যায় নতুন প্রজন্মের নতুন মুখ এখন পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছে, সোহেল তাজ ফিরে গেছে, বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র জয় ওয়াজেদ ও রেদওয়ান সিদ্দিকী এমনকি রেহানার নাম ও শোনা যাচ্ছে পার্টির লিস্টে। তাইতো প্রশ্ন থেকেই যায় আওয়ামীলীগ কি পারবে পরিবারতন্ত্রের বাইরে কাউন্সিলর দের দ্বারা নির্বাচিত একটি জাতীয় কমিটি নির্বাচন করতে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.