নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন শুরু...

সুখের দিনে তোমার কথা ভাবি....দুখের সাথে একলা রয়ে যাই....

মনের কথা

অনেক কথা 'মনের কথা' হলেও সবসময় তা প্রকাশ করা সম্ভব হয়না। কেননা তাতে তর্ক-বিতর্কের অবকাশ থাকে। তার মানে এই নয় বিতর্কে আমার অরুচি। তবে কক্‌টেলে আমার হ্যাঙ্গ ওভার হয়। তাই মনের কথা প্রকাশ করতে এই মাধ্যম বেছে নিলাম। মানুষের মন আর মনের মানুষকেও জানার ইচ্ছে রইল।

মনের কথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূর্গা পূজার একাল সেকাল (পুজোর রোজ নামচা-১ম পর্ব)

২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ দুপুর ২:৫৮

বিশ্বকর্মা পূজায় ঢাকে বাড়ি পরতেই মনটা কেমন উদাস হয়ে বাড়ি ছুটে যায়। শরতের নীল আকাশের সাথে মিলিয়ে যাওয়া কাঁশবন হাওয়ায় দুলতে দুলতে হাতছানি দিয়ে ডাকে। কাজে আর মন বসেনা। একে একে মনে পরতে থাকে ফেলে আসা পুজোর দিনের স্মৃতি গুলো। মেঘের ভেলায় সওয়ার হয়ে মন ছুটে বেড়ায় বছর থেকে বছরে।



ছোটবেলায় ঠাকুর আনতে গেলে বড়রা গাড়ি থেকে নামতে দিতেন না। ওরা সবাই নেমে ঠাকুর গাড়িতে তুলতেন। গাড়ির সামনে লাইন দিয়ে পাড়ার মহিলারা লালপাড় শাড়ি পরে হেটে আসতেন। হাতে প্রদীপ। আমার দাদা আর ওর বন্ধুবান্ধব বড়দের হাতের ব্যরিকেডে নাচতে নাচতে ফিরতো। আমরা গাড়ির থেকে দেখতাম আর ভাবতাম, কবে বড় হব।



সপ্তমীতে সেই স্থলপদ্মের গাছ থেকে ফুল পেড়ে পুজোর জন্য নিয়ে যাওয়া। যাওয়ার আগে বাবা মাকে প্রনাম করে কাতর নয়নে চেয়ে থাকা একটা টাকার আশায়। মিলত টাকার ভগ্নাংশ। তাই অনেক। ১০ পয়সার বেলুন দশটা, মটরভাজাও অনেক। সারাদিন পুজোর মন্ডপে দৌড়ে বেড়াত মনের সাথে শরীর।



মূলতঃ অষ্টমীর দিন এখানে পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেড়োবার রেওয়াজ ছিল। আত্মীয় স্বজন, পাড়া পড়শী সবাই একসাথে দলবেধে ঘুরে বেড়াতাম মন্ডপে মন্ডপে। পায়ে হেটে। প্রচন্ড ভীড়ে হাত ছাড়লেই হারিয়ে যাওয়ার ভয়। পুরো শহর ঘুরতে হয়ে যেত ১০-১২ কিলোমিটারের জার্নি। ফেরার পথে জিলিপিতে কামর দিয়ে মায়ের হাত ধরে টানতাম। মা বুঝতে পেরে কোলে তুলে নিতেন। ফেরার কিলোমিটারগুলো ট্রান্সফার হয়ে যেত মায়ের পায়ে।



নবমীর দিন আমাদের এখানে আরতি প্রতিযোগিতা হয়। পুরো এলাকা ভেঙ্গে পড়ত পাড়ার মন্ডপে। কঁচি কাঁচাদের সাথে আরতি দিতে নেমে পড়তেন বড়রাও। মহিলারাও শাড়ির আচল কোমরে গুঁজে। নাচতে পারতাম না। আরতির ঢাকের বাজনায় পা নাচতো শুধু। এখনও নাচে। ঢাকের বাজনায় অদ্ভুত আবেশ আছে। আরতি শেষে পূরস্কার বিতরনী। এই সময়টাতেই শুধু আফশোষ হত নাচতে না জানার। খিচুরী খেয়ে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতাম পূরস্কার নিচ্ছি। অনেক স্বপ্নই পূরণ হয়েছে স্বপ্নে।



দশমীর দিন গোটা শহরের প্রতিমা বিসর্জন হয় "করলা নদী"তে। প্রায় ৫০-৬০টা পুজো ছিল। নদীর ঘাট ভাগ করে দেওয়া হত। সাথে বসত মেলা। তখনও মদের ব্যাপ্তি ঘটেনি। এইদিনের জন্য একটু শিথিল থাকত বড়দের রাশ। তারাও একটু আধটু গলা ভেজাতেন শরীরে তাল আনতে। উদ্দাম পরিবেশ। একটা একটা ঘাটে কয়েক হাজার মানুষ। নদীতে নৌকোর সার। প্রতিমা আসছে গরুর গাড়িতে খুব বড় পুজো হলে ট্রাকে। সাথে মিছিল করে সে পাড়ার ছোট বড় সবাই। স্লোগান চলছে, দূর্গামাই কি....জয়....আবার কবে? বছর পড়ে। ঘাটের পাশে মাঠে প্রতিমা নামিয়ে উদ্দাম নাচ। একসাথে কয়েকশ ঢাক। বাজির আওয়াজ, আলোর রোশনাইতে মনে হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্র। মহিলারা সেই নাচে সাধারনত অংশ নিতেন না। তালিকা অনুসারে মাইকে ক্লাবের নাম ঘোষনা করা হত। এক এক করে হয়ে যেত বিসর্জন। শান্তিজল ছিটিয়ে বিজয়ার কোলকুলি শেষে আস্তে আস্তে বাড়ির পথ।



এখন বদলে গেছে অনেক ধরন। বদলায়নি শুধু আসছে বছর পুজোর জন্য অপেক্ষার শুরু।



(Picture: http://www.flickr.com)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:০৫

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: "বদলায়নি শুধু আসছে বছর পুজোর জন্য অপেক্ষার শুরুর।"

@মাকু, কিছু কিছু কথা অতি সত্য সবার জন্য। অনেক দিন পর বহু পুরানা স্মৃতি মনে করায় দিলা। দারুন তুমার লেখা, আমার প্রিয় পোস্ট! ৫ বড় কম হইয়া গেলো!

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:০৮

হমপগ্র বলেছেন: আমি একটা মন্ডপে গেছি পূজা দেখতে। ঐখানে কার্তিককে লম্বা সোনালী চুল দিয়ে সাজানো হয়েছিলো। অন্য মন্ডপগুলোতে না শুধু ঐটিতেই। আমার কার্তিক দেখে একটা কথা মনে উদয় হলো। ভাবলাম যুগ তো পালটে গেছে। কার্তিক দা মনে হয় স্বর্গে ব্যান্ড দল করেছেন। ভাবলাম স্বর্গেও তো নিশ্চই এরকম সুন্দর একটা দেবতার অনেক জনপ্রিয়তা হয়েছে। তিনি যখন কন্সার্ট করেন তখন হই হই রই রই পড়ে যায়।
যা হোক নিছক আমার কল্পনা। এতে আঘাত পেলে অবশ্যই রিপ্লাইটি ডিলেক্ট করে দিবেন। ৫!

৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:১২

মনের কথা বলেছেন: তুমারে টাটকা ধইন্যাপাতা@উদু

ধুর...মাইন্ড করবো ক্যান...কার্তিকেরও তো শখ আহ্লাদ আছে @হমপ্রগ

৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩২

অচেনা বাঙালি বলেছেন: উমদা লেখা।
চোখ বন কইরা ৫ দিলাম।

৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:৫৩

মনের কথা বলেছেন: তুমারে ধইনাপাতা, চান গেলাচ টা দিবানা যোগার কইরা।@অচু

৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:০৫

দুঃখবিলাস বলেছেন: স্বপ্নের মতো মনে হল। ৫

৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:০৭

অনুমান বলেছেন: "শুভ বিজয়া" । স্মৃতিগুলো জ্যান্ত হয়ে গেল। ফিরে আয় তারপর পুজোর গল্প শুনব।

৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:১২

রাশেদ বলেছেন: হুমম...

৯| ২৩ শে অক্টোবর, ২০০৭ দুপুর ১২:০৭

েজবীন বলেছেন: ভালো লাগলো বর্ননাটা, অনেক জীবন্ত।


হেই রাশু সবখানে খালি হুমহাম লেখতাছে ক্যান??!!!

১০| ২৩ শে অক্টোবর, ২০০৭ দুপুর ১২:৩০

মনের কথা বলেছেন: ধন্যবাদ @জেবীন, দুঃখবিলাস, অনুমান

বান্দরের মুখ দিয়া হুম হাম ছাড়া আর কি বাইর হইবো।

১১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

হুমায়রা হারুন বলেছেন: আপনার এই সুন্দর লেখাটি কি আমার ম্যাগাজিনের, পুজো সংখ্যার জন্য নিতে পারি? আমার ম্যাগাজিন লিঙ্ক http://www.nauba-aloke-bangla.com

০২ রা অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:২৫

মনের কথা বলেছেন: অবশ্যই নিতে পারেন। আমার আসল নামের সাথে "ইন্ডিয়া" লিখে দিলে খুশী হবো। তবে ছবি টা ইউজ না করলেই ভালো কেন না ওটা নেট থেকে নেওয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.