নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জেনো

যাঁরা মাটিকে দৃষ্টি দ্বারা রূপান্তরিত করেন রত্নে। আহা, যদি তারা আমাদের উপর দৃষ্টিপাত করিতেন।

জেনো

knowledge is virtue.

জেনো › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাযকিরায়ে মুহম্মদী

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৪৭

প্রথম অধ্যায়

হযরত মুহম্মদ (সা) কে ছিলেন? তাঁহাকে লইয়া সারা দুনিয়ায় এমন আলোড়ন সৃষ্টিরই বা কারণ কি? স্বাভাবিক চেতনা-সম্পন্ন যে-কোন মানুষের মনেই প্রথমে এই দুইটি প্রশ্ন জাগ্রত হওয়া স্বাভাবিক- বিশেষত, যখন তিনি দেখিতে পাইবেন যে, হযরত মুহম্মদ (সা) নামটি সর্বত্রই ব্যাপকভাবে উচ্চারিত হইতেছে।

প্রথম প্রশ্নের জওয়াবটিই প্রথম জানা দরকার। কারন এই জওয়াবটিকে সম্পূর্ণ হৃদয়ংগম

করিতে পারিলে তবেই দ্বিতীয় প্রশ্নের জওয়াব উপলব্ধির জন্য প্রস্তুত হওয়া সম্ভব হইবে।

ওয়াতন

হযরত মুহম্মদ (সা) ছিলেন একাধারে আরবী, মক্কী ও মাদানী। তাঁহার জন্মস্হান ছিল আরব। মক্কা ও মদীনায় তিনি জীবন অতিবাহিত করেন। প্রথমে তিনি মক্কারই বাসিন্দা ছিলেন; পরে মদীনায় বসতি স্হাপন করেন।

বংশসূত্রের দিক দিয়া মুহম্মদ (সা) ছিলেন একাধারে কুরায়শী, হাশেমী ও মুত্তালেবী; কারণ, তিনি কুরায়শ বংশের বনি হাশিম গোত্রে মুত্তালিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁহার নসবনামার নিকটতম সূত্র ব্যতীত দূর-সম্পর্কযুক্ত আরও একটি সূত্র ছিল।

শেষোক্ত সূত্র অনুসারে তিনি আদনানী, ইসমাঈলী ও ইবরাহিমী। তাঁহার নসবনামার ঊর্ধ্বতন পুরুষ হযরত ইবরাহিম (আ); হযরত ইবরাহিম (আ)- এর পুত্র হযরত ইসমাঈল (আ) এবং তাঁহারই বংশের এক বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন আদনান।

এই আদনানের বংশধরগণ পরবর্তীকালে বিভিন্ন কবিলা ও শাখায় বিভক্ত হইয়া পড়ে।

কুরায়শ উহারই অন্যতম শাখা। এই শাখারই বনি হাশিম গোত্রের বনি মুত্তালিব পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সুতরাং তিনি হযরত ইবরাহিম (আ)- এর অধঃস্তন পুরুষ।

নাম

তাঁহার প্রথম শ্রেণীর নাম মুহম্মদ (সা), দ্বিতীয় শ্রেণীর নাম আহমদ (সা)। তাঁহার দুইটি নাম-মুহম্মদ (সা) ও আহমদ(সা)। ইসলাম ধর্ম ও আল্ কুরআনের মনোনীত নাম মুহম্মদ (সা); এইজন্য এই নামটিই অধিকতর পরিচিতি লাভ করিয়াছে। ইসলাম- পূর্ব যুগে ও অন্যান্য ঐশী গ্রন্থে তাঁহাকে 'আহমদ' নামে অভিহিত করা হইয়াছে। মুহম্মদীযুগের ইতিহাসে যাহাতে বর্তমান অতীত হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া না পড়ে তজ্জন্য উম্মতে মুহম্মদী উভয় নামই একত্র করিয়া লইয়াছেন। তাই, যখন কোন মুসলমান তাঁহার পুরো নাম উচ্চারণ করেন তখন তিনি বলেন, 'আহমদ মুযতবা মুহম্মদ মুস্তফা' ।

'মুযতবা' এবং 'মুস্তফা'- এই দুইটি শব্দ নামের অংশ নহে, প্রশংসামূলক লকব। উভয় শব্দের অর্থ একই অর্থাৎ 'মনোনীত'। নামের সহিত এই শব্দ জুড়িয়া দেওয়ায় ইহাই ঘোষণা করা হয় যে তিনি আল্লাহ্‌র মনোনীত ব্যক্তি; তাঁহাকে সেই দৃষ্টিতেই দেখিতে হইবে এবং তাঁহার সংগে সেইমত সম্পর্ক রক্ষা করিয়া চলিতে হইবে।

'সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' বাক্যটিও তাঁহার নাম বহির্ভূত। ইহা প্রার্থনামূলক বাক্য। ইহার অর্থ এই যে, 'মুহম্মদ (সা)-এর উপর আল্লাহ্‌ তায়ালার অনুগ্রহ বর্ষিত হওক।' 'মুয্‌তবা' এবং 'মুস্তফা' এই দুইটি লকব অপেক্ষা 'সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' বাক্যটিকেই তাঁহার নামের সহিত উচ্চারণ করা অধিকতর জরুরী গণ্য করা হইয়াছে। এমনকি এই বাক্যটি শেষে যুক্ত না করিয়া রসূলুল্লাহ্‌র নাম উচ্চারণকে গুস্তাখী এবং খানিকটা গুনাহ্‌র কাজ গণ্য করা হয়। এইজন্য তাঁহার নাম উল্লেখের সংগে এই বাক্যটির উল্লেখও অপরিহার্য কর্তব্য হিসাবে পরিগণিত হইয়া আসিতেছে। নুন্যতম ধর্মীয় জ্ঞানসম্পন্ন কোন মুসলমানের মুখ হইতেও তাই কখনো ' সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' ব্যতীত রসূলুল্লাহ্‌র নাম উচ্চারিত হইতে শোনা যায় না।

'মুযতবা' এবং 'মুস্তফা' ব্যতীত তাঁহার আরও বহু লকব আছে এবং লকবের সংখ্যা এত অধিক যে সবগুলিকে একত্র করিতে গিয়া আলাদা গ্রন্থই রচনা করিতে হইয়াছে। এই সব লকব সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান হাসিলের জন্য গ্রন্থগুলি পাঠ করা কর্তব্য। উল্লেখিত বিষয়ে প্রসিদ্ধ গ্রন্থের মধ্যে দুইটির নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য- যথা ' দরুদে তাজ' এবং 'হিজবুল বাহার্‌'। অবশ্য এত অধিক সংখ্যক লকবের মধ্যে পাঁচটিই প্রধান। হযরত মুহম্মদ (সা)-কে জানিতে হইলে পাঁচটি লকবের সাথে পরিচিত হওয়া অবশ্য কর্তব্য এবং তাঁহার সামান্যতমও বরকত হাসিলের জন্য সেই পরিচয়ের সহিত তাহা মানিয়া লওয়াও কর্তব্য।

এই প্রধান পাঁচটি লকব হইল : (১) শাফিউল মুজ্‌নাবীন, (২) রাহ্‌মাতুল্লিল আলামীন, (৩) সাইয়েদুল মুরসালিন, (৪) খাতেমুন্নাবিঈন এবং (৫) ইমামুর রব্বানীয়্যিন; অর্থ যথাক্রমে : পাপীদের শাফায়াতকারী, বিশ্বের জন্য রহমত, নবীদের নেতা, শেষ পয়গম্বর এবং রব্বানীদের ইমাম। ইহার মধ্যে 'রহমাতুল্লিল আলামীন' ও 'খাতেমুন্নাবিঈন' -এই দুইটি লকব আল্লাহ্‌- প্রদত্ত এবং আল্লাহ্‌র পূণাংগ গ্রন্থ আল্‌- কুরআনে এই দুইটি উল্লেখিত হইয়াছে। অবশিষ্ট তিনটি লকব তাঁহার উম্মতগণ উদ্ভাবন করিয়াছেন। ইহার মধ্যে দুইটি পুরাতন, একটি নূতন। এই নূতন লকবটি হইল 'ইমামুর রব্বানীয়্যিন'। রব্বানীগণ এই লকবটি উদ্ভাবন করতঃ উভয় জগতের নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়াছেন। শেষোক্ত লকবটি নূতন হইলেও ইহার গুরুত্ব ও মূল্য অপরিসীম।

হযরত মুহম্মদ (সা)- এর পিতার নাম আবদুল্লাহ্‌ এবং মাতার নাম আমিনা; দাদার নাম আবদুল মুত্তালিব। তাঁহার চাচাদের মধ্যে হামযা, আব্বাস, আবূ তালিব ও আবূ লাহাবের নাম উল্লেখযোগ্য। অনেকেই আবূ জহলকেও তাঁহার চাচাদের মধ্যে শামিল করিয়া থাকেন; কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ ভুল। তাঁহার চাচাতো ভাইদের মধ্যে হযরত আলী, হযরত আবদুল্লাহ্‌ ও হযরত ফযল প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন। (চলবে)



মূল: আল্লামা আযাদ সুবহানী।

অনুবাদক: মুজিবুর রহমান।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৬

Rain_in_Sydney বলেছেন: ZAJAKALLAH bro...+++

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

জেনো বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৬

জেনো বলেছেন: আবদুল কাদির আযাদ সুবহানী সংক্ষেপে আল্লামা আযাদ সুবহানী ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, মুসলিম লীগের আবুল হাসিম যিনি বদরুদ্দীন ওমর এর পিতা এবং আরো অনেকের ওস্তাদ। তার চিন্তার পরিস্ফুটন আমরা দেখতে পাই মাওলানা ভাসানী আবুল হাসিম এর কর্মে, লেখায়।
উনার একটি তাফসির আছে 'তাফসিরে রব্বানী মুকাদ্দামা' ।
আমি অনেকদিন হতে খুজছি। কারো কাছে সন্ধান থাকলে অবশ্যই জানাবেন।
ধন্যবাদ।

৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

বোকামন বলেছেন: আস সালামু আলাইকুম

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:০১

জেনো বলেছেন: আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হউক।

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:১১

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: ভাই, পোস্টখানা কি নিয়া বা প্রথম কুশ্চেনটাকি সেইটাই তো বুঝলাম না!


আমার এন্টেনা মনে হয় জং লাগছে!

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫০

জেনো বলেছেন: এনার একটা বই ছিল আমার কাছে। সেখানেই শেষে লেখা ছিল যে উনি তাফসির করছেন।
মনে হয় বাংলা হয় নাই।নাইলে কারো না কারো কাছেতো পাইতাম।
কি আর করা, কানপুর যাব, সেখানে উনার পরিবারের কারো থেকে পাওয়া যাবে আশাকরি।
আর আপনেও কেমন, খালি জায়গামত নজর দেন। এন্টেনার রিফ্লেক্টর ছুড হইয়া গেছে।
http://allamaazad.blogspot.com/

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.