![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমানে আমরা যাকে জঙ্গিবাদ বলছি, মূলত তা হলো ধর্মীয় উগ্রপন্থা। এই জঙ্গিবাদের পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ধর্মীয় গ্রন্থে যেভাবে বলা হয়েছে, ঠিক সেভাবে না বলে অর্থাত্ ধর্মের অপব্যাখ্যা বিষয়ক বিভিন্ন বই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আর এই বইগুলোই জঙ্গিবাদকে অনুপ্রাণিত করছে। কেবল তাই নয়, এই জঙ্গিবাদ উত্থানের বড় কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। সমাজে অর্থনৈতিকসহ নানা কারণে একটি বঞ্চিত ও অবহেলিত শ্রেণি রয়েছে। এই বঞ্চিত শ্রেণিকে খুব সহজে ভয় এবং প্রলোভন দেখিয়ে বশ করা যায়। এজন্য জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক প্রতিরোধ অনিবার্য হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠীর সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্পর্কের ইতিহাস অনেক পুরানো। যদিও বলা হয়ে থাকে, আমাদের দেশ ধর্মীয়ভাবে সহনশীল এবং আমরা কট্টর ধর্মীয় পন্থা গ্রহণ করি না। অর্থাত্ আমরা ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধতায় বিশ্বাসী নই। তারপরও রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শেষ দিকে ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে বিভক্ত করা হয়। হিন্দু এবং মুসলমান দুটি পৃথক জাতি। এই দ্বি-জাতি তত্ত্ব ভিত্তি করেই উপমহাদেশ বিভক্ত করা হয়। পাকিস্তান এবং ভারত নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হলো। পরে ভ্রান্ত পাকিস্তানকে সংশোধন করেই আমরা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করেছি। কিন্তু যারা পাকিস্তানি ভাবধারার ছিল, এখনও তাদের সে মানসিক একাত্মবোধ শেষ হয়নি। পাকিস্তানবাদ, পাকিস্তান রাষ্ট্রের ইসলাম এবং সে চিন্তার সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত অবস্থা রয়েছে। আর এই বিপরীত অবস্থাকে ধারণ করে, এমন লোক এখনও বাংলাদেশে আছে। সমগ্র জাতি মুক্তিযুুদ্ধের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল—এটা আসলে সঠিক বলা হয় না। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে আমাদের বিরোধিতা করেছিল। বিরোধিতা তখনও ছিল, এখনও আছে। এই বিরোধীগোষ্ঠীই পরবর্তী পর্যায়ে ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়।
ইসলাম কেন্দ্রিক ভাবাদর্শ ও ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে নানা আন্দোলনে বাংলাদেশের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এদেশ থেকে প্রচুর লোক আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন এবং কাশ্মীর যুদ্ধে অংশ নেয়। পরে তারা ফিরেও আসে। এসব দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের মৌলবাদীগোষ্ঠীর সাথে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি নেটওয়ার্ক অবশ্যই আছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পরে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানি কায়দায় ফিরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অর্থাত্ স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান কায়েম করা হয়েছিল। এর মূল হোতারা হচ্ছে সামরিক বাহিনীর ভক্ত ও অনুসারীরা। সামরিক ক্ষমতা থেকে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল তারাই এদেরকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠপোষকতা করে। যেমন লিবিয়া এদের মূল আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। লিবিয়াই পৃথিবীর এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং অস্ত্র দেয়ার কাজটি করে। কাজেই এসব মৌলবাদী গোষ্ঠীর সাথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ইতিহাস অনেক পুরানো। সব ধর্মে মৌলবাদী আছে। ইসলামি মৌলবাদীদের সাথে ইসলামি বিশ্ব তথা আরব তথা মধ্যপ্রাচ্যের যোগাযোগ আছে। কিন্তু ইতিহাসে দেখা যায়, প্রত্যেক মৌলবাদী গোষ্ঠীর একটি উগ্র চর্চার ভূমি হচ্ছে ইউরোপ। এসব সংগঠনের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু লন্ডন। লন্ডনে হিজবুত তাহরির থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের নিষিদ্ধ মৌলবাদী সংগঠনের শাখা-প্রশাখা রয়েছে। পোশাক-পরিচ্ছেদ, চলাফেরা এবং দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে বাংলাদেশে মুক্তমনা লোকজন ছিলেন। কিন্তু তারা লন্ডন ও বার্মিংহামসহ বিদেশে পড়াশুনা করে দেশে ফিরে এসে কট্টরপন্থি এবং মৌলবাদী ভাবধারায় জীবন-যাপন শুরু করে। তাদের সবকিছুতেই ভয়াবহ পরিণতি লক্ষ্য করা যায়।
লন্ডন হচ্ছে মৌলবাদী সংগঠন সৃষ্টি করার একটি আধুনিক কারখানা। উচ্চ পর্যায়ে জঙ্গিবাদ ইউরোপ এবং ফ্রান্সে দেখা যায়। উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে ফরাসি ঔপনিবেশ ছিল। ঔপনিবেশ হওয়ার কারণে আমাদের সাথে যেমন লন্ডনের সম্পর্ক রয়েছে, তেমনি ফ্রান্সের সাথে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর সম্পর্কও বিদ্যমান। সেখান থেকে ঐতিহাসিকভাবে উত্তর আফ্রিকার লোকজন ফ্রান্সে এসেছে। এদের মধ্যে এখনও বেকারত্বের হার শতকরা ৫০ ভাগ এবং তারা ফরাসিদের থেকে নিম্নমানের জীবন-যাপন করে। কাজেই অধিকার বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি কিন্তু সেখানেও রয়েছে। এসব কারণে অঞ্চলভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ হওয়া স্বাভাবিক বিষয়।
আমাদের দেশে মতাদর্শকে জোর করে চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা কম নয়। ব্রিটিশ আমল থেকে নকশাল মাওবাদী চরমপন্থিরা মানুষ হত্যা করে শ্রেণি শত্রু দমনের নামে একটি সাম্যবাদী সমাজতান্ত্রিক তথা কমিউনিস্ট ধ্যান-ধারণা কায়েম করার জন্য কাজ করে আসছিল। সমসাময়িক ইতিহাসে দেখা যায়, পাকিস্তান আমলের চরমপন্থি তোহা, মতিসহ অনেকে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে ছিল। তারা মনে করতো স্বাধীনতার যুদ্ধ হচ্ছে দুই কুকুরের মধ্যে কামড়াকামড়ি। চীন যেহেতু পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল। এ কারণেই স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হয়। সেগুলো দক্ষিণাঞ্চলে আশির দশক পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। এখনও লাল পতাকা বাহিনীসহ নানা নামে তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়। মানুষ হত্যা করে শ্রেণি শত্রু দমনের নামে এসব সংগঠন এখন নিজেরাই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। সাম্যবাদী বিশ্ব গঠনের যে স্বপ্ন তারা দেখেছিল তা ব্যর্থ হয়েছে। তারা ধর্ম বিশ্বাস করত না। তাদের মতে ধর্ম বলে কিছুই নেই। কিন্তু এখন যারা জঙ্গিবাদে নিয়োজিত তারা ধর্মে বিশ্বাসী। তাদের কাছে ধর্মই সব। এই গোষ্ঠী ঠিক ওই গোষ্ঠীর বিপরীত। এরা একই পন্থা অবলম্বন করেছে। জঙ্গিরা ধর্মের নামে অস্ত্রের জোরে মতাদর্শকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, অস্ত্রের জোরে চাপিয়ে দেয়া মতাদর্শ কখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
মতাদর্শ জোর করে চাপিয়ে দেয়ার কারণেই ধর্মবিদ্বেষী, ধর্মবিরোধী এবং ধর্মহীন সংগঠনগুলো ব্যর্থ হয়েছে। ধর্মের নামে নতুন করে অস্ত্র নিয়ে সংগঠিত এসব জঙ্গিগোষ্ঠীর পরিণতিও ঠিক একই হবে। যাদেরকে আজ আমরা আইএস বলছি, তারা একটি খেলাফত কায়েম করতে চাচ্ছে। এই ইসলামি খেলাফতের বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে তাদেরকে তারা নির্মূল করবে। মধ্যপ্রাচ্য, আরব, ইউরোপ এবং বিভিন্ন দেশে ইসলামে শিয়া এবং ইয়াজিদিসহ কতকগুলো ভাগ রয়েছে। জঙ্গিগোষ্ঠী তাদের মতাদর্শবিরোধীদের শত্রু হিসেবে গণ্য করে নির্মূলের চেষ্টা করছে। এ কারণেই মুসলমানদের মধ্যেও সংঘাত দেখা যাচ্ছে। অথচ ইসলামি খেলাফতের স্বর্ণযুগের দিকে তাকালে দেখা যায়, অস্ত্র দিয়ে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সে সময় ইসলাম শিল্প, সাহিত্য, স্থপতি, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। উদাহরণ হিসেবে এলজেবরা বিজ্ঞানের একটি বড় আবিষ্কার। চিকিত্সা শাস্ত্রেও ইসলামের অবদান রয়েছে। মুসলমানরা গ্রিকদের জ্ঞান আরবিতে ভাষান্তর করে এবং ইউরোপীয়রা সেটিকে আবার ইংরেজিতে রূপান্তরিত করে। বর্তমান জঙ্গিগোষ্ঠী জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনুশীলন না করে অন্যের অস্ত্রের উপর নির্ভর করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। আর এসব অস্ত্রের বেশি ভাগই আমেরিকার তৈরি- যেমন এম সিক্সটিন। কিন্তু আইএসদের হাতে যারা অস্ত্র তুলে দিয়েছিল তারা আবার বিমান হামলা করে সেসব অস্ত্রধারীদের মারতে যাচ্ছে। এসব ঘটনা অত্যন্ত সাময়িক। ধর্মীয় জঙ্গিবাদের নামে জোর করে মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা ক্ষণিকের উত্তেজনা মাত্র।
একথা ঠিক যে, মতাদর্শগত কারণেই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে। কেবল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে এই জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শক্তিশালী সামাজিক প্রতিরোধ দরকার। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য প্রতিরোধ শক্তির কোনো বিকল্প নেই। বুলগেরিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমার বক্তব্য ছিল, সন্ত্রাসীদের উত্স কোথায়? তারা কোথা থেকে আসে? আত্মঘাতী বোমা নিক্ষেপ করার লোকটিই বা কে? তাকে খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে দেখা গেছে, আত্মঘাতী বোমা নিক্ষেপকারীদের অধিকাংশ গরিব এবং ছিন্নমূল। এরা এতিমখানায় লালিত-পালিত। এদের সাথে পরিবার তথা মা-বাবার কোনো সম্পর্ক নেই। মগজ ধোলাই করে তাদেরকে এমন কাজে অনুপ্রাণিত করা হয়। তাদেরকে বলা হয়, আত্মঘাতী বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে সে সহজে বেহেস্তে যাবে। আর বেহেস্তে গেলেই সুখের শেষ নেই। আর এসব অনুপ্রেরণায় তারা বোমা নিক্ষেপের প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু তাদের পরিবার, বাবা-মা থাকলে বশ করা যেত না। এই কাজ করার আগে তাদের মাথায় পরিবারের চিন্তা আসতো। এ কাজের জন্য তার মা-বাবার কী হবে। কাজেই এক্ষেত্রে শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে পথশিশুদের সংখ্যা বাড়ছে। বাবা-মা হারানোসহ নানা কারণে শিশুরা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। এসব শিশুর অধিকাংশেরই এতিমখানায় স্থান হয়। পাক-ভারত উপমহাদেশে এতিমখানাগুলো ঐতিহাসিকভাবে ধর্মীয় সংগঠনগুলোর দখলে। এতিমখানায় আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। এতিম শিশুদের রাষ্ট্র কর্তৃক আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা হলে জঙ্গিবাদ তথা মৌলবাদী সমস্যার একটি সমাধান হতে পারে। মানুষ সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ পেলে বঞ্চনাবোধ কমে আসবে। এছাড়াও একজন মানুষ যদি আর্থিকভাবে সচ্ছল হয় তাহলে তাকে কোনোভাবেই জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত করা যাবে না। কাজেই পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য শিশুর শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত মানসম্মত জীবন-যাপনের অধিকার সংরক্ষণ করা উচিত।
সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হলো মসজিদ। ইসলামি ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন যাবত্ ইমাম প্রশিক্ষণ নামে একটি কর্মসূচি চালাচ্ছে।
অনুভূতি হলো বিশ্বাসের একটি প্রাথমিক পর্যায়। কতকগুলো ধাপ অতিক্রম করে সর্বশেষ হলো মানুষের বিশ্বাস। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অনুভূতি হলো সেনসেশন। এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে যেমন- আল্লাহর কোনো আকার নেই, এটি আমার দৃঢ় বিশ্বাস। যদি কেউ বলে আল্লাহর আকার আছে, তাকে দেখা যায়। এ অবস্থায় যেহেতু আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ নিরাকার, তাকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কাজেই এ কথা আমাদের অনুভূতিতে লাগার কোনো কারণ নেই। আমরা মনে করি, যাদের বিশ্বাস দুর্বল তাদের অনুভূতি বেশি সূক্ষ্ম থাকে। যাদের বিশ্বাস যত বেশি দৃঢ় তাদের অনুভূতিও ততটা কার্যকর থাকে না। যারা অনুভূতিতে আঘাতের নামে মানুষকে মারতে আসে তাদের বিশ্বাসে সমস্যা রয়েছে। বেহেস্ত পাওয়ার জন্য আত্মঘাতি বোমা মারা—ইসলাম নির্দেশিত হতে পারে না। এসব কাজের মাধ্যমে বেহেস্ত পাওয়া তো দূরের কথা উল্টো সে দোজখে যাবে। একজন মানুষ হত্যা করা মানে সমস্ত মানব জাতিকে হত্যা করা। মদিনা সনদ এবং বিদায় হজের ভাষণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সব ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যকলাপ থেকে বিরত এবং নানাধর্মের মানুষদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামি জীবন বিধান সকল ধরনের সন্ত্রাসকে হারাম ঘোষণা করেছে। এসব কথা যদি মসজিদের ইমামগণ খোতবার সময় বলেন তাহলে মানুষ সচেতন হবে। এক্ষেত্রে মসজিদের ইমামদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। যাতে তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের মতো জাতীয় কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখতে পারেন। এর বিপরীতে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে কেউ যাতে উগ্রবাদী কথাবার্তা তথা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উস্কে না দেয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। সমাজে অন্যায়, অত্যাচার ব্যভিচার, রাহাজানি, সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদসহ সকল অপকর্ম দূর করার লক্ষ্যে ইমামদের উচিত মানুষকে ভালো কথা বলা, সুপথে পরিচালিত করা। সামাজিক প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রতিটি মসজিদে কমিটি গঠন করতে হবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কেবল বাইরে রাজনীতি করলেই হবে না বরং মসজিদেও যেতে হবে। কেউ যাতে ধর্মভীরু লোকদের বিভ্রান্ত করতে না পারেন- সে দিকে নজর রাখতে হবে। মসজিদের মাইক ব্যবহারে নির্দেশনা থাকা উচিত। কেবল আজান দেয়া ছাড়া মসজিদের মাইক আর কোনো কাজে লাগানো যাবে না। আমাদের সমাজের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে জঙ্গিবাদ দমনে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানব সভ্যতার ইতিহাস বলে, সভ্যতা কখনো পিছনের দিকে যাবে না, শত বাধা-বিপত্তি পেড়িয়ে সভ্যতা সামনের দিকে অগ্রসর হবে। জঙ্গিদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের মূল লক্ষ্য হলো দেশকে পিছনে নিয়ে যাওয়া তা কখনোই সম্ভবপর হবে না। ড. মীজানূর রহমান, ভিসি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩১
হোসেন মালিক বলেছেন: ওই ব্যাটা আর কত চামচামি করব? তবে ট্যাকা পয়সা ভালো এমাউন্টের দিলে ঠিক আছে চালায়া যা