নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চার দশক অতিক্রম করেছে। অতীতে বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় যারা এসেছেন, সবাই চীনকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রাথমিক অবস্থায় চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ধরনটা কূটনৈতিক ও সামরিক বিষয়কেন্দ্রিক হলেও পরবর্তীতে সম্প্রসারিত হয়ে প্রাধান্য পেয়েছে অর্থনীতি-বাণিজ্য। অন্যদিকে ধীরে ধীরে চীনও বিশ্বে একটি অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফর করেন। গত ৩০ বছরে উচ্চপর্যায়ের কোনো চীনা নেতার এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪১তম বার্ষিকীও উদযাপিত হয়েছে সম্প্রতি। সঙ্গত কারণে চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফর আমাদের জন্য যেমন গৌরবের তেমনি দেশের সমৃদ্ধির স্বার্থেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যমতে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। আর এ বৈঠককে ঘিরে শুধু বাংলাদেশের জনগণই নয়, বরং বলা যেতে পারে বিশ্ববাসীরও দৃষ্টি ছিল। কেননা, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন এক উচ্চতায় পৌছেছে এরই মধ্যে। চীনের তৈরি পণ্য শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যায়। জনবহুল একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও চীন কীভাবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হয়ে উঠল, বর্তমান বিশ্বে তা যেমন আলোচনার বিষয়, তেমনিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কও স্মরণ করার মতো। আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠী রয়েছে, এই জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে চীনের কাছ থেকে শেখার রয়েছে অনেক কিছু। জানা গেছে, চীনা প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কর্ণফুলী ট্যানেল নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ-চীনের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে 'নতুন দিগন্তের উন্মোচন' বলে অভিহিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। বলার অপেক্ষা রাখে না, চীনের মতো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী একটি দেশ বাংলাদেশের পাশে থেকে নিরন্তর সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করলে বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক শক্তি হিসেবেই বিবেচিত হবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ-চীনের এই নবতর যাত্রা শেখ হাসিনার সরকারের একটি অন্যতম সাফল্য বললেও অত্যুক্তি হয় না।
জানা যায়, 'ওয়ান-বেল্ট, ওয়ান রোড' নীতি ধরে এগিয়ে যাওয়া চীনের সহযোগিতা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে শি জিনপিংয়ের এই ঢাকা সফর। ঢাকা সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, চীন বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের 'গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার' বলে মনে করে। আর এ কারণেই চীন বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থার সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে কাজ করার জন্য প্রস্তুত। দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ককে আমরা আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে চাই_চীনা প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যের যথার্থতা প্রতিফলিত হয়েছে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশ যখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিল্পায়ন আর বিনিয়োগের জন্য মুখিয়ে আছে; এমনই এক সময়ে চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফর এবং সহযোগিতা নিঃসন্দেহে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বলাই বাহুল্য, চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে গত চার দশকে গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে। অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা স্মরণ না করলেই নয়। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, চীনের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়নি কেউ। বাংলাদেশ একটি দুর্বল অবকাঠামোর দেশ। এখানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিনিয়োগ। অবকাঠামো ও শিল্পায়নের জন্য আগামী ১০ বছরে বিভিন্ন খাতে আমাদের প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখন চীনের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ফলে আমরা মনে করি, চীনা প্রেসিডেন্টের এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় ভিত্তি পাবে। বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, যোগাযোগব্যবস্থা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা, ক্রীড়া প্রতিটি ক্ষেত্রেই চীনের সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সরকার কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.