![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যেকোনো বিচারেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচকগুলো আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় অনেকটাই আকর্ষণীয়। সে কারণে বাংলাদেশকে যখন স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তখন মনে হয় আমরা আমাদের সার্বিক অর্থনৈতিক অর্জনের প্রতি সুবিচার করছি না। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল তিনটি কারণে যেকোনো দেশকে স্বল্পোন্নত বলে থাকে। এই তিনটি সূচক হচ্ছে আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা (‘ভালনারেবিলিটি’)। মাথাপিছু আয়ের পরিমাপ বাদে বাকি দুটি সূচকের পরিমাপ করা হয় একাধিক উপসূচক মিলিয়ে।
বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পদের পরিমাণ, রপ্তানি আয়ের প্রবণতা হিসেবে নিলে অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার বদলে স্থিতিশীলতাই বেশি করে বোঝায়। আর মানবসম্পদ উন্নয়নেও বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালে প্রচুর সাফল্য দেখিয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সম্পদের প্রবাহ বাড়িয়েছে। একেবারে তৃণমূলের মানুষকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার যেসব সৃজনশীল উদ্যোগ সরকার ও সামাজিক উদ্যোক্তারা গ্রহণ করেছে সেসবের সুফল আমরা পেতে শুরু করেছি। সাক্ষরতার হার, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার ব্যাপকভাবে কমে এসেছে। হালে দক্ষতা বৃদ্ধির দিকেও নজর দিচ্ছে সরকার। তাই বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ বলে বিবেচনা করার কোনো কারণ নেই। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশকে আধা-কোটিরও অনেক কম মানুষের দেশ ভুটান, কঙ্গো, জাম্বিয়ার সঙ্গে দলভুক্ত করা আসলেই অযৌক্তিক। একইভাবে কেনিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তানের মতো নিম্নপর্যায়ের মানবসম্পদের দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ওপরে। অথচ এগুলো স্বল্পোন্নত দেশ নয়। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের প্রফেসর মাইকেল পোর্টারের সামাজিক অগ্রগতি সূচকেও বাংলাদেশ ভারত, কেনিয়া, ক্যামেরুন, পাকিস্তানের চেয়ে ঢের এগিয়ে। এমনকি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বিশ্ব প্রতিযোগিতা সূচকেও বাংলাদেশের অবস্থান স্বল্পোন্নত নয় এ রকম অনেক দেশ (যেমন ঘানা, ক্যামেরুন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুইয়ে) থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
সে কারণে আমরা আর স্বল্পোন্নত দেশের পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই না। এরই মধ্যে আমরা বিশ্বব্যাংকের নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া। এই সাফল্যও আমরা অর্জন করার সামর্থ্য রাখি বলে প্রতীয়মান। তবে সে জন্য আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশেরও বেশি ও বিনিয়োগের হার জিডিপির ৩৪ শতাংশ করতে হবে। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়নের গতি আরো বাড়াতে হবে। আরো শক্ত করতে হবে রাজস্ব আহরণ, বাণিজ্যের বহুমুখীকরণ, আর্থিক খাত, ভূমিবাজার, ব্যবসা করার খরচ, জলবায়ু পরবির্তন ও নগরায়ণ সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী ও জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক করতে পারলে বাংলাদেশের উন্নয়ন আরো গুণমানের হবে। অর্থনৈতিক বৈষম্য, সুশাসন ও নাগরিকদের প্রতি ন্যায়ভিত্তিক আচরণের যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে এসব মোকাবিলা করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। শাসনব্যবস্থাকে আরো আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করাও এ সময়ের এক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রে সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে। কিন্তু এসবের বাস্তবায়নের গতি আরো বাড়াতে হবে। এ সবই সম্ভব যদি আমরা সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একযোগ কাজ করতে পারি। তাদের সৃজনশীলতাকে যদি উৎসাহিত করে যেতে পারি, তাহলে কাঙ্ক্ষিত মানের সংস্কার ও আধুনিকায়ন নিঃসন্দেহে সম্ভব। তবে প্রশাসনের সর্বস্তরে পরিবর্তনের পক্ষে নেতৃত্ব তৈরি করা খুবই জরুরি।
বিগত সাড়ে চার দশকে বাংলাদেশের ম্যাক্রো অর্থনীতির রূপান্তর, এককথায় বিস্ময়কর। ধীরে ধীরে এই পরিবর্তনের পর্দা স্তরে স্তরে উন্মোচিত হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, বাংলাদেশের অর্থনীতির তিনটি খাত (শিল্প, সেবা ও কৃষি) একই লয়ে পাশাপাশি বেড়ে চলেছে। সচরাচর এমনটি ঘটে না। একটি বাড়লে আরেকটি থমকে থাকে বা খুব ধীরে বাড়ে। কিন্তু বাংলাদেশ যেন ব্যতিক্রমী এক দেশ। এখানে সব খাত একযোগে বাড়ছে। আরো অবাক বিষয় হলো, গণতান্ত্রিক পরিবেশে কম খরচের শিল্পায়নের উড্ডয়নে (টেক-অফ) এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে বাংলাদেশ। আর এমন এক সময়ে এই উড্ডয়ন ঘটছে, যখন সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার খুবই দুর্বল। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এটি যেন এক লুকানো গুপ্তধন। তাই নানা ঝুঁকি সত্ত্বেও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দিন দিনই বাড়ছে।
অর্থনীতির সব সূচকে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণসহ সব ক্ষেত্রেই দিন দিনই উন্নতি হচ্ছে। সরকারের বাজেটীয় উদ্যোগগুলোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ব্যাংককেই অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে ব্রতী করেছে। ফলে কৃষি ও খুদে খাতে প্রচুর অর্থায়ন ঘটেছে। এর ফলে দেশীয় চাহিদা ও বাজার যেমন বেড়েছে, তেমনি সরবরাহও বেড়েছে। দেশের মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি বরাবরই দৃশ্যমান। মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা হলেও গত এক যুগ ধরে গড়ে ৬.১৪ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন দৃঢ়তাই প্রমাণ করে। গত আটটি অর্থবছরের গড় প্রবৃদ্ধি আরো ভালো, প্রায় ৬.৩ শতাংশ। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ শতাংশ, সেখানে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি পৌঁছে গেছে ৭-এর ঘরে (৭.১১ শতাংশ)। এটি আমাদের জন্য সুসংবাদ।
অতি দারিদ্র্যের হার কমানোর ক্ষেত্রেও আমরা এখন বেশ এগিয়ে। এই হার প্রায় ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এটিকে ৭ শতাংশে ও ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি অর্জনে মাথাপিছু আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই। সে জন্য অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। এবং এসডিজি বাস্তবায়নের যে রোডম্যাপ আমরা তৈরি করেছি, তার আলোকে সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত জাতীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। নিজস্ব সম্পদ আহরণে আরো মনোযোগী হতে হবে।
বাড়তি মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের বড় শত্রু। এর মধ্যেই এই মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে। ২০১১ সালের পর থেকে মূল্যস্ফীতির হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি কমে নভেম্বর ২০১৬ শেষে ৫.৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ধারা এখনো ক্রম হ্রাসমান। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আমদানি ব্যয় হয়েছিল ২২.৫ বিলিয়ন ডলার, সেখানে গত অর্থবছরে হয়েছে ৪২.৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এই আট বছরের ব্যবধানে আমদানি বেড়েছে ৯১ শতাংশ। রপ্তানি ১১৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৪.২ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স ৫৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৪.৯ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চার গুণের বেশি বেড়ে এখন ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে দেশের ৯ মাসের মতো আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। টাকার মূল্যমান দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ও উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের মুদ্রার তুলনায় অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ও জোরালো অবস্থানে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবমতে, ডলার-টাকার গড় বিনিময় হার এখন ৭৮.৭২ টাকা। এই বিনিময় হার কয়েক বছর ধরে এর আশপাশেই রয়েছে। আজ বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৬৬ ডলার। আগের বছর ছিল এক হাজার ৩১৬ ডলার। আর ১৯৭২ সালে তা ছিল ১০০ ডলারের মতো। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এরই মধ্যে স্থিতিশীল হয়ে এসেছে। তার মানে মাথাপিছু আয় বাড়ার হার ভবিষ্যতে আরো বেশি হবে। অর্থনীতির এসব অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে আমাদের প্রবৃদ্ধির চালক কৃষি, রেমিট্যান্স ও তৈরি পোশাকশিল্পের সমান্তরাল প্রসারের কারণে। একই সঙ্গে ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তাদের নিরলস প্রচেষ্টাকেও সাধুবাদ জানাতেই হবে। তাদের অবদান অবিস্মরণীয়।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের এক ঐতিহাসিক যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যক্তি খাতের নেতৃত্বে রপ্তানিমুখী শিল্পনির্ভর দ্রুত অগ্রসরমাণ এক অর্থনীতির নাম বাংলাদেশ। এ দেশের প্রবৃদ্ধি সহায়ক উপাদানগুলোর প্রধান খাত হচ্ছে রপ্তানি আয়, যার ৮১ শতাংশই আসে শ্রমঘন গার্মেন্ট খাত থেকে। গার্মেন্ট খাত দ্রুত উন্নতি করছে। রানা প্লাজা ও তাজরীন ট্র্যাজেডির পর গার্মেন্ট খাত আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসা খাত অনেক উন্নতি করেছে। বেসরকারি খাতে অনেক ফার্মাসিউটিক্যালস ও হাসপাতাল হয়েছে। এ দেশের ওষুধ এখন যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৭০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এপিআই পার্ক চালু হলে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলেই বিশ্বাস। এ শিল্পের শাখা এখন বিদেশেও স্থাপন করতে শুরু করেছে উদ্যোক্তারা। চামড়া খাতে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিদ্যুৎ খাতে আমাদের অগ্রগতি ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এখন প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের ‘ভিশন-২০২১’ জনগণের মৌলিক চাওয়াকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছে। ব্যক্তি খাতের প্রাধান্য, উদারীকরণ ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি সংস্কার, বড় বড় অবকাঠামো গড়ার উদ্যোগ, দেশব্যাপী ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসার ও মার্কেটের সঙ্গে অধিক হারে সংযুক্তির কৌশলের ওপর ভিত্তি করে এই দীর্ঘমেয়াদি কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমান সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মতো প্রমাণিত কৌশলগুলোকে প্রয়োগ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। অর্থনীতি ও সৃজনশীলতা একসঙ্গে দেশের দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, প্রবাসী ও এর বাইরেও সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এ জন্য সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে নীতি-কৌশল প্রণয়ন ও এর আওতায় বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করছে। সরকারের এসব অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থসামাজিক উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে সংগতি রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কৃষি, খুদে, মাঝারি, নারী উদ্যোক্তা ও পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়ন বাড়ানোর কৌশল ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবৃদ্ধির নতুন ধাপে আমরা মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেতে চাই। তাই বিগত সময়ের শিক্ষাকে মাথায় রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্নটি জাতিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন তার মূলে রয়েছে সাম্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও অর্থনীতি। একাত্তর-পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে মূলত কৃষিনির্ভর একটি ক্ষুদ্র টানাপড়েনের অর্থনীতি নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। মাত্র ৪৫ বছরে আমাদের শহরের মানুষ বেড়েছে ১০ গুণ। নগরায়ণ যেভাবে বাড়ছে তাতে এই উড্ডয়নে প্রচুর টেনশন হওয়ার কথা। হচ্ছেও। গণতান্ত্রিক পরিবেশেই শুধু এসব টেনশন মোকাবিলা করা সম্ভব। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এই টেনশন মোকাবিলায় যথেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছে। গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, সামাজিক সংগঠনগুলো প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও বহু মতামতভিত্তিক সমাজ গঠনে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে চলেছে। অর্থায়নকে অন্তর্ভুক্তি করার ক্ষেত্রে এ সবকিছুই ইতিবাচক সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে আজ ২০টির মতো ব্যাংক সরাসরি অথবা তাদের সাবসিডিয়ারির মাধ্যমে মোবাইল আর্থিকসেবা দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সাড়ে তিন কোটি মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয়েছে। দেড় কোটির মতো হিসাব খুবই সচল। মাসে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা এর মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশই এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আর্থিকসেবা দেওয়ার দাবিদার। আমাদের এই কর্মসূচিটিকে এখন ভারতসহ অনেক দেশ অনুসরণ করছে। তবে এর ঝুঁকি বিষয়েও অনেকেই নজর রাখছেন। খেয়াল রাখতে হবে এজেন্টদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভূমিকার দায় যেন গ্রাহকদের ঘাড়ে না পড়ে। বরং কী করে গ্রাহকদের, বিশেষ করে খুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের লেনদেনের এই ব্যবস্থাটিকে আরো ঝুঁকিমুক্তভাবে সহজে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেওয়া যায় সেদিকে নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সব মিলে আমাদের সর্বদাই খেয়াল রাখতে হবে বাড়ন্ত এই অর্থনীতির হিসসা যেন সবার ভাগ্যেই জোটে। কতিপয়তন্ত্রের শিকড় যাতে শক্তিশালী না হয়, সেদিকটা সর্বক্ষণ নজরে রাখতে হবে। তবেই না আমাদের অর্থনীতির এই গতিময়তার সুফল সব পর্যায়ের দেশবাসী ভোগ করতে পারবে।
মূল লেখা: ড. আতিউর রহমান
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:২৬
প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: ধারের টাকা দিয়ে রাজা শোধে ধারের টাকা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৩
রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: সব মিলে আমাদের সর্বদাই খেয়াল রাখতে হবে বাড়ন্ত এই অর্থনীতির হিসসা যেন সবার ভাগ্যেই জোটে।-এটাই এখন একমাত্র চাওয়া।