নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্ত্রক

আমি আমার দেশের জন্যে

মন্ত্রক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ: গুরু বনাম লঘু ও ধর্মনিরপেক্ষতা

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি দেশ। যেখানে ৫৫১২৬ বর্গ মাইলের মধ্যে ১৬ কোটির বেশি মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে। এখানে হিন্দু (৮.৫%), মুসলিম (৯১%), বৌদ্ধ (০.৬%), খ্রিস্টান (০.৪%), ইত্যাদি অন্য ধর্মাবলম্বী যাদের মধ্যে আবার অধিকাংশ বাঙালি (৯৯%), আর বাকিরা মারমা, তৈনচংগা, লুসাই, চাকমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারো, ইত্যাদি নৃগোষ্ঠীর লোক বংশপরস্পরায় বসবাস করে আসছে। ফলে আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃজাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, আচার-আচারণ, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি মিলেমিশে বাঙালি সংস্কৃতির সৃষ্টি ও সমৃদ্ধি হয়েছে। তাই আমরা শুনে থাকি, 'ধর্ম যার যার উৎসব (আনন্দ) সবার'। ঈদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন ও অন্যান্য ধর্মীয় উৎসব; বাংলা নববর্ষ, বিজু ও শারদীয় উৎসব আবহমান বাঙালি অনুষ্ঠানমালা, একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চ এসব জাতীয় দিবসে এবং বিয়েশাদির সময়ের গাঁয়ে হলুদসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে অনেক সামাজিক আচার-আচারণ কালের পরিক্রমায় আমাদের সংস্কৃতিতে একাকার হয়ে গেছে। আমরা জানি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা- জাতির মন ও মানসিকতা এবং জাতিগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই অন্যভাবে বলা যায়, এসব আচার-আচারণ আর অনুষ্ঠানাদি আমাদের জাতিগঠনের প্রক্রিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকও বটে। সুতরাং জাতিকে আরও সমৃদ্ধশালী ও শক্তিশালী করতে এ ভূখ-ের সব কিছুকে (ভালো জিনিসগুলোকে) গ্রহণ করে একক সত্ত্বায় মিলে যাওয়ার এই অন্তর্মুখী প্রবণতাকে আরও জোরদার ও সংহত করা প্রয়োজন। তা অবশ্যই কোনো ধর্মাবলম্বীর অনুভূতিতে আঘাত কিংবা বিশ্বাস পরিপন্থী কিছু করে নয়। জাতিগঠনের এই উপাদান অর্থাৎ সংস্কৃতির ধারাকে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের যথা রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, সমাজ বিজ্ঞানী, গবেষক, সামাজিক এবং মানবাধিকার সংস্থা ও কর্মী, সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইত্যাদি সবাইকে আরও গভীর ও নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করা প্রয়োজন। সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেকটি সংস্থার পাশাপাশি দায়িত্বশীল সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষকদের বিষয়টিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ (গবেষণা) করে সঠিক মূল্যায়ন এবং প্রত্যেকের করণীয়গুলোকে নির্মোহভাবে চিহ্নিত করে দিতে হবে। তারপর আমরা সবাই যদি নিজস্ব অবস্থানে থেকে যার যা করণীয় তা নিয়ে সর্বোচ্চ সততার মাধ্যমে কাজ করি তবে একদিকে আমাদের জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় হবে অন্যদিকে জাতিগঠন প্রক্রিয়া শক্তিশালী ও ত্বরান্বিত হবে। তখন সমাজে একদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সুখ-শান্তি বিরাজ করবে, অন্যদিকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ সব অনাসৃষ্টি হ্রাস পাবে।
কিন্তু বাস্তবে আমরা কী দেখতে পাই? জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টির গঠনমূলক শাশ্বত ধারার পাশাপাশি বিভিন্ন শক্তি আর উপশক্তি (দেশীয় ও আন্তর্জাতিক) তা নষ্ট করার চেষ্টাও অনবরতভাবে করে চলেছে। ফলে আমাদের সমাজেও মারামারি, হানাহানি এমনকি মাঝেমধ্যে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা এবং সহিংসতাও দেখা যায়। উদাহরণ হিসেবে ২০১২ সালে রামুর বিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, অক্টোবর ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাসিরনগরে মন্দিরে ভাংচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, কিংবা ৬ নভেম্বর ২০১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জে (গাইবান্ধা) রংপুর চিনিকলের জমি দখলমুক্ত করার নামে সাঁওতালদের ওপর হামলা ও বাড়িঘরে আগুন লাগানো ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে। রামু (উত্তম বড়ুয়া) আর নাসিরনগরে (রসরাজ দাস) পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘুগোষ্ঠীর ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক পোস্ট প্রদানের মাধ্যমে ঘটনা দুটি ঘটানো হয়। উভয় ঘটনায়ই সংখ্যাগুরুদের একাংশের মনে সাম্প্রদায়িক উসকানি সৃষ্টির মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করে তাদের সহায়-সম্পত্তিতে ভাগ বসানোর প্রবণতা লক্ষণীয়। অন্যদিকে গোবিন্দগঞ্জের ঘটনাকেও প্রথমদিকে সম্প্রদায়িক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হলেও আলজাজিরা টেলিভিশনে প্রদর্শিত ভিডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাঁওতালদের বাড়িতে আগুন লাগানোর কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। অর্থাৎ এই তিনটি ঘটনাসহ আমাদের দেশের অধিকাংশ (দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) তথাকথিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গার স্থানীয় কিছু দুষ্ট লোকের ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের চক্রান্তের ফল। আবার অনেক সময় স্থানীয় প্রশাসনও এসব কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সেখানে শুধু সাম্প্রদায়িক উপাদান নয় বরং বৈষয়িকসহ অন্যান্য কারণই বেশি কাজ করে থাকে। পরে তবে ১৯৬৪ সালে ঢাকা দাঙ্গা এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও নৃশংসতাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উদাহরণ হিসেবে নেয়া যেতে পারে। আমাদের দেশে এরকম দাঙ্গা-হাঙ্গামা আবার একই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও (হিন্দু বনাম হিন্দু এবং মুসলমান বনাম মুসলমান) অহরহ হয়ে থাকে। তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সময়ও মাঝেমধ্যে (ভূষণছড়া, মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি, মেরুন, দুরছড়ি, বাঘাইহাট ইত্যাদি স্থানে) এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতিটি ঘটনাই স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠিত এবং সবকটির পিছনে কিছু মানুষের বৈষয়িক স্বার্থ জড়িত বিধায় সাম্প্রদায়িক ইস্যু একটা তাৎক্ষণিক অছিলা মাত্র। তাই সবকিছু বিচার করে বলা যায়, আমাদের সমাজে এখনো সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে বড় ধরনের কোনো ফাটল নেই। পাশাপাশি এ বিষয়টিও মনে মনে রাখতে হবে যে রামু ও নাসিরনগরের মতো সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করার ঘটনা অতীতেও যেমন ঘটেছে, ভবিষ্যতেও (বিভিন্ন মাত্রায়) ঘটতে পারে। তাই সর্বস্তরের রাষ্ট্রযন্ত্র (প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী, স্থানীয় সংস্থা ইত্যাদি), রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের এ ব্যাপারে সর্বদা সজাগ থাকতে এবং পর্যাপ্ত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী, গবেষক ও সমাজ বিজ্ঞানীসহ অন্যদের মানুষ ও সমাজের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার সম্ভাব্য কারণগুলো চিহ্নিত করে তা প্রতিকারের বিষয় নিয়ে অনবরত কাজ করতে হবে। আর এসব কিছুর জন্য প্রথম প্রয়োজন যোগ্য ও দৃঢ় নেতৃত্ব এবং উন্নতমানের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং মানুষের মধ্যে স্বচ্ছ মানবতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের চর্চা।
একটা জনগোষ্ঠীতে কিংবা একটা সমাজে কিংবা একটা দেশ সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু জনগণ থাকাটা কিন্তু স্বাভাবিক নিয়ম। সমাজের মধ্যে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর বিষয়টি নৃতাত্তি্বক পরিচয়, রাজনৈতিক মতবাদ আর বিশ্বাস, সামাজিক আচার-আচরণ, ধর্মীয় অবস্থান ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। অনেক সময় কুসংস্কারের কারণেও এ ধরনের সামাজিক বিন্যাস ঘটতে পারে। আমাদের রাষ্ট্রীয় সমাজও (বাংলাদেশি/বাঙালি সমাজ) তার ব্যতিক্রম নহে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টির আরও গভীরে যাওয়ার জন্য এবং সমাজব্যবস্থার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করার জন্য আমাদের সাধারণভাবে গত শতাব্দীর ৪০ দশকের সময়ের অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের জনসাধারণের আর নির্দিষ্টভাবে তখন বৃহত্তর বাঙালি ভাষাভাষীদের বসবাস ও বিন্যাস সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, এ অঞ্চলের সম্পদ, সহজ-সরল মানুষ এবং ধর্মীয় সহিষ্ণুতাসহ আরও অনেক কারণে সেই প্রাচীনকাল থেকেই আরব-রোমান, অনারব, ইংরেজ, গ্রিক ও পর্তুগিজসহ অনেক জাতির আগমন ঘটেছে। মুসলমান ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মতো বড় ধর্মের আগমনও তাদের মাধ্যমেই হয়েছে। পরে তাদের কেউ কেউ দেশে ফিরে গেলেও অধিকাংশই এ দেশে থেকে গেছেন। কালের পরিক্রমায় তারা এ দেশের বৃহত্তর সমাজের সঙ্গে মিলেও গেছেন। তাই ইতিহাসবিদরা আমাদের বৃহত্তর ভারতীয় সমাজকে 'জাতিসমূহের জাদুঘর' বলে থাকেন। পাশাপাশি হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ ও জৈনসহ অনেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উৎপত্তিও এ অঞ্চলেই হয়েছে। অন্যদিকে মুসলমানদের মধ্যে যেমন শিয়া ও সুনি্ন কিংবা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষত্রীয়, ব্রাহ্মণ ও নমশূদ্র ইত্যাদি মতাবলম্বী লোক আছে তেমনি অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাসের লোকের মধ্যেও অনেক ধরনের মতবাদ বিদ্যমান। প্রকৃতপক্ষে বৃহত্তর বাঙালি ভাষাভাষীদের মধ্যেও বহুমতের এই প্রবণতা কার্যকর। একই শ্রেণি কিংবা একই সম্প্রদায়ের মধ্যে এরকম মতভিন্নতাও অনেক সময় সমাজে বড় ধরনের ফাটল ধরাতে পারে। বর্তমান আরব বিশ্বে শিয়া ও সুনি্ন মতবাদের ওপর বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী দিনগুলোতে আরব তথা মুসলিম সভ্যতাকে নির্মমভাবে প্রভাবিত করবে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের সমাজ বিন্যাসে উলি্লখিত উপাদানগুলোর কারণে বড় ধরনের কোনো অশান্তি কিংবা ফাটল সৃষ্টির সম্ভাবনা একেবারেই নেই।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের (শুধু একটা নির্দিষ্ট সময়ের প্রেক্ষাপট বোঝানোর জন্য) দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় এবং বার্মার (মিয়ানমারের) আরাকান (রাখাইন) অঞ্চলসহ বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত ভূখ-ে বৃহত্তর বঙ্গীয় সমাজের অর্থাৎ বাংলা ভাষাভাষীর মানুষের বসবাস ছিল। ধর্মের দিক দিয়ে তারা প্রধানত মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক হলেও বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়সহ অন্যান্য ধর্মালম্বীর লোকও তখন এ এলাকায় বসবাস করত। নৃতাত্তি্বকভাবেও তাদের মধ্যে আরও অনেক বেশি বৈচিত্র্য ছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে শ্রেণিভেদ থাকলেও সব সময়ই অনেক বেশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান ছিল। তবে ইদানীং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কিংবা সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার কথা বারবার শোনা যায়। অর্থাৎ ইতোমধ্যে আমাদের সমাজে মৌলিক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে অতিরাজনীতি এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশের কূটনৈতিক চাপসহ হুমকি-ধমকিও আসে। অথচ ওইসব দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সব ধরনের অত্যাচার আর বৈষম্য বিদ্যমান যা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের আবেগ আর অনুভূতিতে আঘাত করে। তাছাড়া দেশের মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মতো কিছু সংগঠনও অনেক সোচ্চার। তারা অনেক সময় ছোটখাটো ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে একদিকে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, অন্যদিকে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করে। পাশাপাশি কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন তারাও প্রকাশ্যে এমন বিবৃতি-বক্তৃতা দেন যা দেশের জন্য ক্ষতিকর। এসব কারণে আমাদের সমাজে ছোটখাটো অস্থিরতার ঘটনাও ব্যাপক প্রচার পাচ্ছে যা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে আর আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের ভাবমূর্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অথচ এসব ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চেয়েও আর্থ-সামাজিক ও ঐতিহাসিক কারণই বেশি কাজ করে। আমাদের সমাজে এ ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি সৃষ্টির অন্য একটি অন্যতম কারণ হলো মানুষের দেশত্যাগের প্রবণতা। তবে দেশত্যাগের প্রবণতা কিন্তু হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মের লোকদের জন্যই প্রযোজ্য। বাংলাদেশ থেকে অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশে চলে গেছে। আবার অনেক মুসলমান পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছে। উপমহাদেশের বিশেষ সম্প্রদায়ের লোকদের দেশ ত্যাগের এই প্রবণতার সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক কারণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ঐতিহাসিক কারণও আছে। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের সময় মানব ইতিহাসের অন্যতম বড় একটা মাইগ্রেশন হয়েছিল। টঘঐঈজ-এর তথ্যমতে তখন সংগঠিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে প্রায় ১৪ মিলিয়ন লোক (হিন্দু, শিখ এবং মুসলিম) বাস্তুচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়। অসংখ্য লোক হত্যা আর নির্যাতনের (নারী অপহরণ ও ধর্ষণসহ) শিকার হয়। তখন থেকেই বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলে এই মাইগ্রেশনের প্রবণতার শুরু। ১৯৫১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতের ২% লোক ছিল শরণার্থী (১.৩% পশ্চিম পাকিস্তান এবং .৭% পূর্বপাকিস্তান-বাংলাদেশ থেকে)। তখন ভারত থেকে পাকিস্তানে আসা মুসলিম শরণার্থীদের দ্বিতীয় বৃহত্তর সংখ্যা ৬৯৯১০০ (৯.৭%) আসে বাংলাদেশে যার ৬৬.৬৯% পশ্চিমবঙ্গ, ১৪.৫০% বিহার এবং ১১.৮৪ আসাম থেকে এসেছিল। আইএলওর প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ৫ লাখ ভারতীয় মুসলিম পূর্বপাকিস্তানে আগমন করে। উল্লেখ্য, ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন তার দ্বিতীয় মেয়াদের সময় তখনকার ভারত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ প্রশাসনিক ইউনিট বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিকে বিভক্ত করেন। ইতিহাসে যা বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। মুসলিম প্রধান অঞ্চল পূর্ব বেঙ্গল ও আসামকে নিয়ে এক ইউনিট এবং হিন্দুপ্রধান অঞ্চল মূলত পশ্চিমবঙ্গকে (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড ও ওড়িষ্যা) নিয়ে অন্য একটি ইউনিট গঠন করেন। অর্থাৎ ১৯০৬ সাল কিংবা তারও পূর্ব থেকে ভারতের আসাম আর মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশ মুসলিমপ্রধান অঞ্চলই ছিল। কিন্তু মূলত কৃত্রিমভাবে রাষ্ট্রীয় সীমানা নির্ধারণের ফলে সৃষ্টি দেশত্যাগের প্রবণতা থেকে কালের পরিক্রমায় আসাম ও আরাকান রাজ্যে মুসলিমরা আজ সংখ্যালঘু। পাশাপাশি অবশিষ্ট যারা আছেন তারা প্রতিনিয়ত গণহত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণসহ নানা ধরনের অত্যাচার এমনকি জাতিগত নিধনেরও শিকার। অর্থাৎ হিন্দু বা মুসলমানদের দেশত্যাগের প্রবণতা কিংবা আন্তঃসাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা উপমহাদেশের ইতিহাসেরই অংশ। তাই শুধু বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয় কথাটা এককভাবে কখনই সত্যি নয়। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার, ভারত, শ্রীলংকা ও নেপালসহ অন্যান্য দেশেও একই চিত্র (বরং অনেক বেশি) দেখা যায়। বিষয়টি একদিকে এই অঞ্চলের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ অন্যদিকে এখন তা মূলত ব্যক্তি বা স্থানীয় পর্যায়ের বৈষয়িক স্বার্থ ও কর্মকান্ডেরই বহির্প্রকাশ।
অধিকতর উন্নত ও নিরাপদ জীবনের আশায় দেশত্যাগের প্রবণতা মানবসভ্যতার মতোই প্রাচীন। তবে সাধারণভাবে ১৯০০ সালের (বঙ্গভঙ্গের সময়) থেকে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে অন্যান্য কারণের সঙ্গে ধর্মীয় কারণে দেশত্যাগের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে যা ১৯৪৭ সালের দিকে ভয়াবহ মাত্রা লাভ করে। প্রকৃতপক্ষে তখন মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ মাইগ্রেশন সংগঠিত হলেও দেশত্যাগের এই ধারা পরবর্তীতেও অব্যাহত থাকে। উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় ইংরেজ কর্তৃক অন্যায় ও কৃত্রিমভাবে সীমানা ও জনগোষ্ঠীর বিভাজন এই উপমহাদেশের মানুষের দেশত্যাগ আর সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টির একটা অন্যতম কারণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলাকে ভারতে এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ খুলনা ও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্বত্য চট্টগ্রামকে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের (বাংলাদেশের) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যা মানুষের দেশত্যাগের প্রবণতা বৃদ্ধি ও তাৎক্ষণিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কারণ হিসেব কাজ করেছে। ১৯৫১ সালের পরিসংখ্যান মতে ২.৫২৩ মিলিয়ন শরণার্থী পূর্বপাকিস্তান থেকে ভারতে গমন করে যায় ২.০৬১ মিলিয়ন পশ্চিমবঙ্গ এবং বাকিরা আসাম, ত্রিপুরা এবং অন্যান্য প্রদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে। ১৯৭৩ সালে এই সংখ্যা ছয় মিলিয়নে উন্নীত হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের এবং ভারত ও মিয়ানমার থেকে মুসলমানদের মাইগ্রেশন প্রধানত ঐতিহাসিক কারণের ধারাবাহিকতা যা উভয় দেশে স্থানীয় প্রভাবশালী ও স্বার্থপর ব্যক্তিদের বৈষয়িক কারণে প্রভাবিত হয়। পাশাপাশি উন্নত ও নিরাপদ জীবনের হাতছানি এবং সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক এই ধারাকে আরও বেগবান করে। উন্নত ও নিরাপদ জীবনের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েও প্রতিদিন হাজার হাজার বাংলাদেশি মালয়েশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডার মতো উন্নত দেশে চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ (হংকং ফিঙ্গাপুর ও মালটার মতো শহরকেন্দ্রিক কিছু দেশ ছাড়া) থেকে মানুষের মাইগ্রেশন করা অনেকটা প্রাকৃতিক নিয়মেরই অংশ যাকে কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মোড়কে দেখা ঠিক হবে না।
এটাই স্বাভাবিক যে, আমাদের সমাজে ফাটল সৃষ্টি করার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের অপশক্তি তাদের অপকর্ম অব্যাহত রাখবে। তবে কিছু বিবেচনা করে বলা যায়, আমাদের সমাজে এখনো বড় ধরনের কোনো ফাটল নেই (যা ইতোমধ্যে ব্যাখ্যা করা হয়েছে) ছোটখাটো চ্যুতি ছাড়া আমরা সবাই মিলে এখনো একটি উদার এবং অসাম্প্রদায়িক সমাজ ধরে রাখতে পেরেছি। কিন্তু শত্রুরা তো আর বসে নেই। তারা অনবরতভাবে আমাদের সমাজে ফাটল সৃষ্টির জন্য চেষ্টা করে চলেছে। তাই আমাদের জানতে হবে, ভবিষ্যতে কোন বিষয়ের কারণে আমাদের সমাজে বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি হতে পারে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আমাদের খুঁজে দেখা প্রয়োজন। আমার মতে বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দুটি ক্ষেত্রকে সম্ভাব্য ফাটল সৃষ্টির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। তাহলো সন্ত্রাসবাদ আর ধর্মনিরেক্ষতা। সন্ত্রাসবাদের সস্নোগানও একপর্যায়ে আমাদের সমাজে কাজ করবে না। কেননা আমাদের সমাজের যে বিন্যাস অর্থাৎ শতভাগ লোক (হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ইত্যাদি) ধর্মপ্রাণ (সকল ধর্মই ভালো শিক্ষা দিয়ে থাকে), প্রায় শতভাগ লোক এক ভাষাভাষী, ৯০% ওপরের লোক একই ধর্মাবলম্বী এবং তাদের অধিকাংশই সুনি্ন মুসলমান ইত্যাদি তাতে ধর্মীয় অথবা সাম্প্রদায়িক লাইনে ছোটখাটো অসন্তোষ কিংবা দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও আপাতত বড় ধরনের কোনো অসন্তোষ বা ফাটল সৃষ্টি করা সম্ভব হবে না। তাই শত্রুরা অন্য কোনোভাবে আমাদের সমাজে ফাটল সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। এখন বাকি থাকল ধর্মনিরপেক্ষতা। আমার মনে হয় যদি ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি আমরা যথাযথভাবে হ্যান্ডেল করতে না পারি তবে আজ থেকে ১৫-২০ বছর পরে বা তারও আগে অথবা পরে এই ইস্যুতে আমাদের সমাজে (আজকের আরব বিশ্বের মতো) বড় ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে। ধর্মনিরেপক্ষতা মানে হলো সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। কিন্তু উগ্র ধর্মবাদীদের (যারা সব কিছুতেই ধর্ম খুঁজতে থাকেন) পাশাপাশি তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন (যারা সব কিছুর মধ্যে ধর্মের গন্ধ পান) তারা ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে ধর্মবিরোধী কাজ করেন। তারা আমাদের সমাজে অনেক দৃশ্যমান হলেও সংখ্যায় খুবই নগণ্য। তাদের কথাবার্তা উঁচু মহলে দ্রুত প্রচারিত ও প্রভাবিত হলেও সাধারণ মানুষের কাছে তেমন কোনো গুরুত্ব পায় না। তবে পশ্চিমা যে কোনো গণমাধ্যমে তাদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়। এ ধরনের লোক কিংবা তাদের অনুসারীরা যখন সংখ্যায় আরও বেশি হবে (২০%-২৫% ভাগ) তখন আমাদের সমাজে বড় ধরনের ফাটল ধরার সম্ভাবনা দেখা দেবে। তাই এখনই আমাদের সংবিধানে উলি্লখিত ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের ধর্ম, সমাজ ও বাস্তবতার আলোকে সংজ্ঞায়িত করে দিতে হবে। আমরা সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালনে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারি। কিন্তু পবিত্র কোরআন শরিফে উলি্লখিত বিষয়গুলোর পরিপন্থী কোনো আইন তো আমাদের দেশে করা যেতে পারে না। তাই ইউরোপসহ অন্যান্য দেশের মতো আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা মানে তো আর সমলিঙ্গে বিবাহ, ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা করা, হারাম-হালালের বাছ-বিচার না করা, প্রকাশ্যে মদ খাওয়া কিংবা হিজাব পরা নিষেধ ইত্যাদি হতে পারে না। ঈদ, দুর্গাপূজার আর বড়দিনে রাষ্ট্রীয় ছুটি থাকায় কোনো আপত্তি নেই। কোনো অনুষ্ঠান পবিত্র কোরআন শরিফ, ভগবত গীতা আর বাইবেল পড়ে শুরু করতেও আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু ধর্মের নামে গরু জবাই নিষেধ করায় আপত্তি অবশ্যই আছে। তবে উপরোলি্লখিত (তথা কথিত ধর্মনিরপেক্ষ) অনেকের এ ধরনের কাজে কোনো আপত্তি নেই। তারা বিষয়গুলোকে মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার আওতায় ফেলতে চায়। তাদের অনেকে পশ্চিমা সমাজ থেকে পরামর্শ, বৃত্তি কিংবা এ ধরনের ব্যক্তি পর্যায়ের ছোটখাটো লাভের জন্য অনেক সময় দেশ ও সমাজবিরোধী কাজও করে থাকেন। আমাদের সমাজবিন্যাস এবং ধর্মীয়সহ আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ইত্যাদির আলোকে আমাদের তা কি মেনে নেয়া উচিত বিষয়টি আমাদের অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এ দেশে সবাই তাদের জান ও মালের পূর্ণ নিরাপত্তা এবং ধর্ম পালনে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করবে। কোনো নাগরিকই অন্যের ধর্ম পালনে (শান্তিপূর্ণভাবে) বাধা দিতে পারবে না। সবাই সর্বোচ্চ সহনশীলতা এবং অন্যের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতাসহকারে নিজ নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে।
দেশে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন কিংবা দাঙ্গা-হাঙ্গামা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। এ ধরনের সব সম্ভাবনাকে প্রতিহত করার জন্য রাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বদা সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে এবং ছোটখাটো ঘটনাকেও যথাযথ গুরুত্ব প্রদানপূর্বক দৃষ্টান্তমূলকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ ও বাইরে থেকে কোনো অশুভশক্তি যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্যও কাজ করতে হবে।
এ ধরনের ছোটখাটো ঘটনাকেও যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কঠোরভাবে দমন এবং সব ধরনের প্রতিকারমূলকব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের মূল্যবোধের আলোকে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে দিতে হবে। আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা আর পশ্চিম বিশ্বের ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা কখনই হুবহু এক হতে পারে না।
আমরা যদি আর্থ-সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংজ্ঞায়িত করে সে মোতাবেক চলতে পারি তাহলে বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবেই পরিচিতি পাবে। আমরা তথাকথিত জঙ্গিবাদের হাত থেকেও রক্ষা পাব। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্য ও সংহতি আরও বেশি দৃঢ় হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই লক্ষ্যে কাজ করি।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


গরুর রচনা?

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

কানিজ রিনা বলেছেন: আপনার লেখার বিষয় বস্তু সমতার জয়
হোক। কিন্তু তা কি হবার যা বাংলাদেশ
স্বাধীন হওয়ার পড়েই হওয়ার কথা ছিল।
এই ভারত উপমহাদেশ আশে পাশের রাষ্ট্র
বাংলাদেশ পাকিস্তান মায়ানমার ধর্মীয় উগ্র-
নীতি সকল সময়ই বিরাজমান। ভারতের আর
আমাদের দেশের উগ্রবাদীরা সবই নিজ নিজ
ধর্মে অশিক্ষিত। নিজ নিজ ধর্ম শিক্ষায়
শিক্ষানীতি অনুসরন করত তাহলে উগ্রবাদীতা
বন্ধ হত।
এপ্রেক্ষাপটে দেখা যায় অশিক্ষিত উগ্রবাদীদের
পিছনে আন্তরজাতীক জ্ঞান পাপীরা মূলধন
যোগায় প্রতিটা দেশে অশান্তি সৃষ্টি লক্ষে।
উগ্রবাদীরা ধর্মীয় ভাবে কেউ শিক্ষিত না।
এ বিষয় ধর্মীয় পন্ডিতদের নিয়ে রাজনৈতিক
আলাপ আলচনা চালিয়ে যেতে হবে।
ধন্যবাদ,

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২৮

জল্লু ঘোড়া বলেছেন: লেখাটা আরো সংক্ষিপ্ত হলে ভালো হতো। আপনার লেখার বিষয়বস্তুর সঙ্গে আমি একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.