![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটই বড় হইয়া দেখা দিয়াছে। এই সংকট বা সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ ধৈর্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিতেছে। ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশ যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার অসহায় শরণার্থীদের জন্য দরজা বন্ধ করিয়া দিতেছে, তখন বাংলাদেশ একটি ক্ষুদ্র আয়তনের উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তাহার সীমান্ত খুলিয়া দিয়াছে। এই ভূমিকার জন্য বিশেষ করিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বত্র প্রশংসিত হইতেছেন। কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যে আবেগময় ও দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ দেন, তাহার কেন্দ্রমূলেও ছিল এই রোহিঙ্গা সংকট। এই সমস্যা বা সংকটের স্থায়ী সমাধানে তাহার উত্থাপিত পাঁচ দফার মাধ্যমে তিনি নিঃসন্দেহে প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির পরিচয় দিয়াছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁহার ভাষণে শান্তি, অর্থনৈতিক উন্নতি ও মানবকল্যাণের পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করিয়াছেন। তিনি সকল ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নিন্দা জানাইয়া এই ব্যাপারে তাহার সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথাও বলিয়াছেন অকপটে। জাতিসংঘ শান্তিবিনির্মাণ তহবিলে এক লক্ষ মার্কিন ডলারের প্রতীকী অনুদান প্রদানের ঘোষণাসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অংশ হিসাবে সন্ত্রাস দমনে তিনি উপস্থাপন করিয়াছেন তিনটি ফর্মুলা। তাহা হইল—সন্ত্রাসীদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করা এবং আন্তর্জাতিক বিবাদ মীমাংসা করা শান্তিপূর্ণ উপায়ে। এভাবে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব অশান্তির মূলেই কুঠারাঘাত করিয়াছেন। তিনি যৌন নিপীড়ন বন্ধসহ সাইবার হুমকি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলিয়াছেন। জানাইয়াছেন জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করিতে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নের দাবিও।
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে চার লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়াছে। তাহারা মিয়ানমারের উগ্র জাতীয়তাবাদীদের নৃশংস নির্যাতন ও জাতিগত নিধনযজ্ঞের মুখেই এই দেশে পালাইয়া আসিতে বাধ্য হইয়াছেন। আমরা মনে করি, এই নৃশংসতার সহিত ধর্মের কোনো সম্পর্ক নাই। গৌতম বুদ্ধের মূল বাণীই হইল অহিংসা পরম ধর্ম। কিন্তু উগ্রবাদীরা নৃতাত্ত্বিকভাবে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সহ্য করিতে পারিতেছে না। ইহার সহিত জড়িত থাকিতে পারে ভূ-রাজনীতিও। কিন্তু ইহার জন্য কোনোভাবেই একটি ধর্ম ও তাহার প্রতি নিষ্ঠাবান মানুষদের দোষারোপ করা যায় না। উদভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন নিঃসন্দেহে। তবে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়াই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করিতে হইবে। আমরা ইহাও মনে করি যে, রোহিঙ্গারা রোহিঙ্গাই। শত শত বত্সর ধরিয়া মিয়ানমারে বসবাসের কারণে সকল প্রকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করা তাহাদের জন্মগত অধিকার। কিন্তু সামরিক জান্তার প্রভাবাধীন বর্তমান মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ ও শরণার্থীদের ফিরাইয়া নেওয়ার ক্ষেত্রে যে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করিতেছে তাহা নিন্দনীয়। আমরা আশা করি, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত পাঁচ দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিশ্বনেতারা জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৭
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩২
রাখালছেলে বলেছেন: চামচামি ভাল হইছে । জয় বাংলা