নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দ্বৈতসত্তা

পরিচয় দেবার মত কোন অবস্থান এখনো তৈরী করতে পারিনি তবে মরীচিকা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোই লাগে ...

মরীচিকা আমি

মরীচিকা আমি › বিস্তারিত পোস্টঃ

পদ্ম পাতার জল

২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

ছেলেটি ছিল বোকা, মেয়েটি বুদ্ধিমতী। দেখা হত বছরান্তে তিন চারবার বা পাঁচ ছবার। ভালোবাসি কথাটিই একজন আরেকজনকে বলতে পারেনি; অথচ দুজন দুজনের চোখের ভাষা, মনের কথা সহজেই বুঝতে পারত। ছেলেটি বাউন্ডুলে, মেয়েটি বাস্তববাদী। ছেলেটি মেয়েটির নাম দিয়েছিল আনমনা, মেয়েটি ছেলেটির নাম দিয়েছিল অপূর্ব। পারিপার্শিক প্রেক্ষাপটে যে সকল অনুষঙ্গ থাকলে একটি সফল প্রেমের কাহিনী গড়ে ওঠে তার সবই ছিল তাদের অনুকূলে। ছেলেটি সংকুচিত, মেয়েটি সাবলীল। মেয়েটি রক্ষনশীলা আধুনিক, ছেলেটি নিয়মাবর্তিত সংস্কৃতিমনা। প্রথম দেখায়ই একটা হাস্যকর ব্যাপার ঘটে যায়। ছেলেদের বাড়ীতে মেয়েটির সাথে প্রথম দেখা হবার পর ছেলেটি তার বড় বোনের কানে কানে বলল, “বড়পা, মেয়েটির সালোয়ার ছেড়া”। আপা বলল,“ আরে বোকা, ওটাকে ডিভাইন বলে, বর্তমানের চলতি ফ্যাশন”। এরপর নদীর জল অনেকদূর গড়ালো। রেললাইনের পাতের মত চলতে থাকলো একটি অঘোষিত প্রেমাপখ্যান। মেয়েটি আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বড় পরিবার। ছেলেটি আর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী ও ছোট পরিবার। চিঠি যোগাযোগ হত মাঝে মাঝে। এভাবেই এগিয়ে চলল বছর চারেক। মেয়েটি পড়ুয়া ভালোছাত্রী, ছেলেটি মেধাবী অনিয়মিত ছাত্র। মেয়েটি চাইত সম্পর্কের কথা সবাই জানুক – ছেলেটি অনাগ্রহী। দুজনের অধিকাংশ কথা হত রুমের মধ্যে। রাস্তার পাশের রুম, জানালা খোলা, হাস্নাহেনা গন্ধরাজের সুবাস। কথা চলত রাজনীতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, খেলাধূলা, চলচিত্র নিয়ে। কিন্তু কোন প্রেমালাপও নয়, পাঠ্যপুস্তক সংবলিতও নয়। জনান্তিকে মেয়েটির চোখের ভাষা ছেলেটি না বুঝার ভান করত। যখন মেয়েটির জন্য ভালো ভালো বিয়ের প্রস্তাব আস্তে থাকলো মেয়েটি চিকিৎসার কথা বলে ৬০কিঃমিঃ দূরের শহরে যেয়ে দেখা করত। মেয়েটির দৃঢ়তায় প্রস্তাব আসা বন্ধ হল। রিক্সায় চড়া হয়েছে তিন/চারবার কিন্তু হাত ধরা হয়নি। মেয়েটি বেঁধে রাখতে চাইত কিন্তু ছেলেটির দর্শন ছিল তুমি যাকে ভালোবাসো তাকে মুক্ত করে দাও, সে যদি ফিরে আসে তবে সে তোমারই। আর যদি ফিরে না আসে তবে সে কোনদিনও তোমার ছিলনা। ছেলেটির দর্শন তীরে কি নির্মমভাবেই সে বিঁধল! শেষ যেদিন ছেলেটির সাথে মেয়েটির ফোনে কথা হল, শেষ কটি কথন ছিল –

ছেলেঃ আমি জানি তুমি আমার কাছে মিথ্যা বলোনা। আজ একটি প্রশ্নের সত্যি উত্তর দেবে?

মেয়েঃ বল ?

ছেলেঃ তুমি কি সুখী?

প্রায় ৪৫ সেকেন্ড পরে ফোনের ওপাশ থেকে হালকা দীর্ঘনিঃশ্বাসের সাথে মেয়েটির উত্তর, “হ্যাঁ, আমি সুখী”।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.