![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটি ইউথাইরয়েড ব্লগ। হাইপো/হাইপারথাইরয়েডরা নিজ দায়িত্বে বিচরন করবেন।
(প্রথমেই বলে নিই, এইটা একটা চরম ডাক্তারবাদী পোস্ট এবং শুধুমাত্র ইউথাইরয়েড দের জন্য। নন-ডাক্তার এবং হাইপো/হাইপারথাইরয়েডগণ নিজ দায়িত্বে পড়বেন।)
একটি এন,জি,ও প্রতিষ্ঠানে আমি চাকরী করি প্রায় একমাস হতে চলল। সকালে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে এবং রাস্তায় জমে থাকা পানিতে বাইক-সাতার দিয়া অফিসে পৌছুলাম। অফিসে ঢুকে মাত্র রেইনকোট খুলে ভেজা কাপড়ে ফ্যানের নিচে দাড়ালাম, আর শুনতে পেলাম দুইজনের উত্তপ্ত উষ্মা। আমাদের সাথের এক কলিগ আপু (যিনি জাপান থেকে পি,এইচ,ডি করা) এবং একাউন্টসের একজন ভাই। ভাইজান আমাকে এসে জিজ্ঞেস করলেন, কোন ডাক্তারের ভিজিট কি ১২০০ টাকা হওয়া উচিত? আমি হাসতে হাসতে বললাম, হু, অনেক কষ্ট কইরা যে ৪-৫ টা ডিগ্রী নিতে পারে তার হইতেই পারে। ভাইজান জবাব দিলেন, বাকিরা তো আর কষ্ট কইরা টাকা কামায় না, আঙুল চুইষা টাকা আসে। জবাবে আমি একটু হাসলাম। কাহিনী এইখানেই শেষ হইতে পারত। কিন্তু হইল না। পি,এইচ,ডি আপু আমার উপ্রে চড়াও হইলেন, কেন হবে? যাই হোক, তার আরো হাজারটা অসন্তোষ। আমার সাথে যুক্তিতে না পাইরা কিছুক্ষন চিল্লাফাল্লা কইরা থামলেন এবং দিনের বাকি সময় আমার সাথে আর কোন কথাই বললেন না। (ভবিষ্যতে আর বলবেন বইলা মনেও হয় নয়া।)
প্রঃ কেন হবে ১২০০টাকা?
ঊঃ এইটার উত্তর আমাদের অর্থমন্ত্রীর মত দেওয়া যায়। (দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়া বলছিলেন- বাজারে যাওয়া বন্ধ করেন, জিনিসপত্রের দাম এমনেই কমবে)। যাইয়েন না তার কাছে, ১০০ টাকা ভিজিটের অনেক ডাক্তার আছে, তাদের কাছে যান। ১০ লাখ টাকার টয়োটা গাড়িও পাওয়া যায়, আবার কোটি টাকা দামের ফেরারীও পাওয়া যায়। আপনে কি ফেরারী গাড়ির শোরুমে যাইয়া কইতে পারবেন, এইটার দাম এত কেন?
প্রত‘ত্তরঃ কবি নীরব।
প্রঃ নিচ্ছে নিক, সময় দিবে না কেন?
ঊঃ যেই লোক ৪-৫টা ডিগ্রী নিয়া বসছে সেও তো আঙুল চুষে না। আপনার মত হাজার রোগী সে দেইখা আসছে। তার যতটুকু সময় লাগবে ডায়াগনোসিস করতে সেই ভাল জানে। আপনার দরকার ভাল হওয়া নাকি ডাক্তারের সাথে ঘন্টা হিসাবে গল্প করা? দ্বিতীয়টা হইলে বেস্ট অপশন কোন সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাওয়া, তারা ঘন্টা হিসাবে গল্প করার ডাক্তার।
প্রতিঊত্তরঃ নাই। কবির কাব্যখাতা শুন্য।
প্রঃ ক্যান্সারের রোগী কেমো নিয়া ভাল হইসে। কিছুদিন পর তার আবার ক্যান্সার হইছে, রেডিওথেরাপী নাকি ভুল যায়গায় দিছে। পরে সে ইন্ডিয়া যাইয়া কোন মতে জীবন বাচাইছে।
ঊঃ আমি যতটুকু জানি রেডিওথেরাপী দেয় টেকনোলজিস্ট। ডাক্তারের ভুল হইল কোন যায়গায়? আর এতই যদি ইন্ডিয়া প্রীতি তাইলে আগেই যাইতেন।
পঃ ডাক্তাররা ভুল করবে কেন? তারা কি ভাত খাইয়া ডাক্তার হয় নাই?
উত্তরঃ উত্তর দেওয়া হইছে। আর ডাক্তাররা তো ঈশ্বর না। মানুষের ভুল হইতেই পারে। আর কি খাইয়া ডাক্তার হইছে সেইটা অবশ্য চিন্তার বিষয়। ইন্টার্ন করার সময় দুপুরের খাওয়া একদিনও সময়মত খাইতে পারি নাই। আর গাইনী এডমিশনে টানা ডিউটি কইরা প্রায় দেড় দিন ভাত না খাইয়া ছিলাম।
প্রতিউত্তরঃ নাই।
প্রঃ ডাক্তাররা সব কমার্সিয়াল।
উঃ কিছু হইতে পারে। যারা কমার্সিয়াল তাদের কাছে যান কেন? আমি ৬৩৮০৪ নং ডাক্তার। এদের মধ্যে কতজন কমার্সিয়াল? সংখ্যাটা গুনে বের করেন। আপনার সিপ্লল পাতলা হাগুর জন্য যদি ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিনের ডিপার্টমেন্টাল হেড কে লাগে তাইলে সবচে বড় কমার্সিয়াল তো আপ্নে। আপ্নেরই তো চকমকা, ফকফকা চেম্বার ছাড়া, ৮-১০টা ডিগ্রী ছাড়া ডাক্তার মনে ধরে না।
প্রতিঊত্তরঃ (যেই চাহনীটা দিলেন, চোখে চশমা না থাকলে মনে হয় রেডিয়েশন হ্যাজার্ডে অন্ধ হইয়া যাইতাম)
এরপর অভিযোগঃ ডাক্তার হয় মানুষের সেবার জন্য। তারা কেন এত টাকা নিবে?
উত্তরঃ শিক্ষকরাও তো মানুষ গড়ার কারিগর। দেশের ভবিষ্যত বানায়। তাদের কাছে পোলাপাইনরে যখন হাজার হাজার টাকা দিয়া প্রাইভেট পরান আর মডেল টেস্ট দেওয়ান তখন মনে হয় না এই কথা?
প্রতিউত্তরঃ (মনে হইতেছিল কিছুক্ষনের মধ্যেই হিরোশিমা-নাগাসাকি র মত কোন ঘটনা ঘটতে পারে। রুম থিকা বাইর হইয়া গেলাম)
শেষ করি একটা কৌতুক দিয়া। তিন ব্যাচেলর বন্ধু ঢাকায় আসছে পড়ালেখার জন্য। কিন্তু সমস্যা হইল কোথাও বাসা ভাড়া পাইতেছে না। ব্যাচেলর ভাড়া দিবে না। ব্যাচেলররা খারাপ ইত্যাদি। শেষ বাসাটায়ও একি কথা শুইনা হতাশ হয়া এক বন্ধু বাড়িওয়ালারে কইলঃ আঙ্কেল, ব্যাচেলররা তো অনেক খারাপ। আপনার মেয়েরে কোন ব্যাচেলরের সাথে বিয়া দিয়েন না।
ডাক্তার রা অনেক খারাপ। আসেন সকাল বিকাল এদের জুতা মারি। আর নিজের পোলা/মাইয়া এইবার এইচ,এস,সি পাশ করছে। তারে উপদেশ দেই, ভাল মত পড় বাবা, তোরে সরকারী মেডিকেলে চান্স পাইতেই হইব। মাইয়ার/পোলার বিয়া দিমু, দেইখেন তো খলিল সাহেব, আপ্নের ভাইস্তার/ভাস্তিও জন্য একটা ডাক্তার পোলা/মাইয়া পান কিনা, তয় সি¤পল এম,বি,বি,এস না কিন্তু। এফ,সি,পি,এস থাকন লাগব। নাইলে বিয়া কইরা খাওয়াইব কি?
সবশেষ, ঈশপের একটা গল্প ছিল, আঙুর ফল খাইতে না পারলে টক। রাইত অনেক হইছে, ঘুমাই। কাল সকালে আবার অফিস আছে।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২২
মরফিন বলেছেন: আমাদের মেডিকেল সিস্টেমে আছে ব্যপক গলদ। গলদ আছে আমাদের মানুষদের চিন্তাধারাতেও। একজন পি,এইচ,ডি ডিগ্রীধারী যদি এভাবে চিন্তা করেন তাহলে সাধারন মানুষের কথা বলে আর কি লাভ?
২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২
আমিনুর রহমান বলেছেন:
ভালো লিখেছেন।
ব্লগে আরো একজন ডাক্তার পাইলাম ভালোই হইলো অসুখ-বিসুখ হইলে
ভিজিট ছাড়া দেখাইতে পারমু
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৬
মরফিন বলেছেন: তা না হয় দেখাইবেন। কিন্তু গাইল তো আবার ঠিকই দিবেন।
৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২২
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: আমিও ফিস দিবার পারুম না
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৯
মরফিন বলেছেন: তাই? ফিস লাগব না। চিকস হইলেও চলপে কবিসাব।
৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০
পথহারা সৈকত বলেছেন: আসুন আমরা ঘড়ে ঘড়ে ডাক্তার গড়ে তুলি.............. তোমাদের যার যার আন্ডা বাচ্চা আছে সবাই কে মেডিকেল কলেজে পাঠাও.... মনে রাখবেন, ডাক্তারযখন বািনয়েছি...... ডাক্তার আরও বানাব ...... তবুও ঘরে ঘরে ডাক্তার বানিয়েই ছারব.......ইনশাল্লাহ্ ............
আমার ঘড়ে অবশ্য একটা রেডিমেড ডাক্তার আসিতেছে...........
আপনারাও শুরু করেন....
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৪
মরফিন বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৪
ডঃ আলম বলেছেন: এমবিবিএস থেকে কনসালটেন্ট, এই চেইন টা মানা দরকার, হুট করেই কনসালটেন্ট বা প্রফেসর দেখানোর মানসিকতা চেন্জও করা দরকার। এমবিবিএস বা জিপি রেফার করলেই কনসালটেন্ট বা প্রফেসর দেখানো উচিত।