![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক
ফুলহ্যাম স্টেশনে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় এগারটা বেজে গেল। একটু রাত বাড়লেই এলাকাটা কেমন নিশ্চুপ হয়ে যায়, অচেনা মনে হয়। অথচ এখানে আমি প্রায় প্রতিদিনই আসি। আর্লস কোর্ট অডিটোরিয়ামকে হাতের ডানে রেখে মিনেট বিশেক সোজা হেঁটে গেল ছোট যে স্ট্রিট-মার্কেটটি পড়ে, ওখানে একটি দোকানে কাজ করি আমি; অনেকদিন ধরেই কাজ করছি সেখানে। আমি দিনে ছাত্র, রাতে দোকানী। ক্লাস শেষে নাকে-মুখে কিছু গুজেই ফুলহ্যামে আসতে হয় আমাকে। গ্রীষ্মে, শীতে, আর যে দুই-একদিন লণ্ডনে তুষার পড়ে সে সময়েও আমি ডিস্ট্রিকলাইন ট্রেনের অবধারিত যাত্রী। এই আসা-যাওয়ার পথে কারো কারো মুখ চেনা হয়েছি, কিছু মুখ চিনেছি। হাঁসের সাথে পানির সম্পর্ক যেমন- স্পর্শ করে, কিন্তু কোন দাগ রাখেনা, এ পরিচয়গুলো তেমনই। ব্রাডলি সালটনের সাথে আমার এমনই জলদ আর হংসের সম্পর্ক ছিল।
আমি স্টেশনে ঢুকেই দেখলাম ব্রাডলি দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে, ঝিমুচ্ছে। লক্ষ্য করলাম- স্টেশন মাস্টারের চেয়ারটি ফাঁকা; তার মানে আজ ভিতরে ঢুকতে আধবুড়ো লোকটির কোন সমস্যা হয়নি। আমি ঢিলে হয়ে যাওয়া জুতোর ফিতেয় শক্ত গেড়ো দিতে দিতে তাকে বললাম, 'আজ ভিক্ষের খবর কি?' ব্রাডলি আমার দিকে না তাকিয়েই চোখ বুজে মুখস্ত উত্তর দিল, 'আমি বাস্কার, গান গাই; ভিক্ষে করিনা।'
- 'কোনদিনতো গাইতে শুনলাম না! গীটারে কয়টা তার থাকে জানো?'
- 'গীটারের তার গুনে গাধারা। ওটি তোমার কাজ।'
- 'তারপর?'
- 'আমার স্যাণ্ডউইচ দাও।'
- 'দাম দিতে হবে কিন্তু!'
- 'আমার সামনে পয়সা পয়সা কোরো না, ওটি ছোটলোকদের কাজ।'
- 'খাবারের জন্য রোজ রোজ হাত পাতো, লজ্জা করেনা?'
- 'খুব খিদে পেয়েছে, স্যাণ্ডউইচ দাও। খেতে খেতে পেট পুরে লজ্জা পাওয়া যাবে।'
আমি ব্যাগ থেকে স্যাণ্ডউইচ বের করে ব্রাডলির হাতে দেই, সেটি উল্টে পাল্টে দেখে সে। তারপর চোখ কুচকে কপট রাগের ভান করে বলে, 'মাত্র ঊনিশ পেন্সের স্যাণ্ডউইচ খাওয়াচ্ছো আমাকে?' আমি বলি, 'এই পচা স্যাণ্ডউইচ খেয়েই আল্লাহর কাছে শোকর করো।' আধবুড়ো ইংরেজটা প্যাকেট খুলে স্যাণ্ডউইচে কামড় বসায়। এক কণা চিজ রুটির গুড়োর সাথে মিশে তার বড় বড় গোঁফের সাথে ঝুলে থাকে। ব্রাডলি আমার দিকে কাঙালের মতো তাকিয়ে বলে, 'খিদেতো বেড়ে গেল মনে হচ্ছে!' 'এবার পেট ভরে পানি খাও', আমি সমাধান দেই। 'দেখ না বাপ, আর কিছু খাবার আছে কি-না ব্যাগে?' ব্রাডলি জিজ্ঞেস করে। আমি ডানে বামে মাথা ঝাঁকাই, 'না নেই। আল্লাহ তোমার জন্য ঠিক ঊনিশ পয়সার খাবারই বরাদ্দ রেখেছে আজ।' কাঁচা-পাকা দাড়ি-গোঁফের ফোকর দিয়ে ব্রাডলি বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ওল্টায়, বলে, 'তোমার আল্লাহ খুব কড়া মনে হচ্ছে!' কথা বলতে বলতে সে পাশের পাবে ছুটে যায়। আমি হই হই করি। ব্রাডলি ছুটতে ছুটতে বলে, 'মদ না, পানি খেতে যাচ্ছি।' যে খাবারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে একটু পরেই, সেগুলো দোকান বন্ধ করার আগে নামমাত্র দামে বিক্রি করে সুপার মার্কেটগুলো। মাঝে মাঝে হাতে পয়সা থাকলে তেমনি এক দোকান থেকে ব্রাডলির জন্য আমি খাবার কিনি। একদিন ডাস্টবিনে খাবার খুঁজতে দেখে জোয়ান-মর্দ এই লোককে আমি স্যাণ্ডউইচ কিনে খাইয়েছিলাম, এরপর থেকে আমাকে দেখলেই তার স্যাণ্ডউইচের খাওয়ার সাধ জাগে।
ব্রাডলির সাথে আমার পরিচয় মাস ছয়েকের। কাজ শেষে আমি যখন ঘরে ফেরার ট্রেন ধরি, সেও একই ট্রেনে বাড়ী ফেরে। আমাদের গন্তব্যও একই- হোয়াইটচ্যাপল, পূর্ব লণ্ডনের বাঙালী পাড়া- ব্রিক লেনের গা ঘেষে গড়ে ওঠা বাংলাদেশী অভিবাসীদের বসতি। ব্রাডলি হোয়াইটচ্যাপলকে বলে 'সিলেট'। সে কারো কাছে সিলেট শহরটির নাম শুনেছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে সে তেমন কিছুই জানেনা; জানার কোন আগ্রহও নেই। অবশ্য জগতের কোনো বিষয়ে তার আগ্রহ আছে বলে আমার মনে হয়না। পরিচয়ের প্রথমদিন সে নিজেকে 'বাস্কার' বলে পরিচয় দিয়েছে, যদিও আমি তাকে কোনদিন গান গাইতে শুনিনি। সে ফুলহ্যাম স্টেশনের বাইরে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকে, তারছেঁড়া একটা গিটার, আর একটা টুপি উল্টো করে সামনে পেতে রাখে, আসা-যাওয়ার পথে কেউ কারো খুচরো পয়সা ছুড়ে দেয়ার অপেক্ষায় থাকে। আর রাতে, বাড়ী ফেরার সময় কোনো যাত্রীর কাছ থেকে টিকেট ভিক্ষে চায়। কপাল ভালো হলে টিকেট জোটে, আর না হলে রেলের লোকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্টেশনে ঢুকে যায়। আর যেদিন কপাল খুবই খারাপ থাকে, সেদিন পয়সা দিয়ে টিকেট কেনে।
ট্রেন আসার সময় হয়ে যাচ্ছে, ব্রাডলি পাব থেকে ফিরছে না। ব্যাটা নিশ্চয় মদ গিলছে। আমি দ্রুত রাস্তা পার হয়ে মদের দোকানটিতে উঁকি দেই এবং বুঝে যাই- ফুলহ্যামের কথিত বাস্কার সেখানে গোল পাকিয়েছে। আমাকে দেখেই ব্রাডলি ছুটে আসে, বলে, 'বেজন্মাগুলোর মুখে পেচ্ছাব করে দাও। স্টেশনের গেটে জলত্যাগের কাজটি করে ফেলেছি বলে হারামজাদাদের মুখ এখনো শুকনো আছে। বলে কিনা, পয়সা দিয়ে পানি খেতে হবে!' আমি কিছু বলার আগেই পাবের বাউন্সার তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় বের করে দেয়। ব্রাডলি সিকিউরিটির লোকটির দিকে তেড়ে যায়। আমি পেছন থেকে তার ময়লা জ্যাকেটটি টেনে ধরি, বলি, 'এই বুড়োকালে মারামারি করছো, লজ্জা করেনা!' ব্রাডলি আমার কথায় কান দেয়না, রাস্তা পার হতে হতে পাবের লোকদের গুষ্ঠি উদ্ধার করে। আমি বিরক্ত হই।
একসময় ট্রেন আসে। ব্রাডলি মুখ ভোতা করে ট্রেনে ওঠে, পাতাল রেলের অন্ধকার সুড়ঙ্গের দিকে চেয়ে থাকে। তারপর ট্রেনটি আর্লস কোর্টে এলে আমরা সেখানে নেমে পড়ি; আপমিনিস্টারের রেলের জন্য আমরা অপেক্ষা করি। কাজ শেষে ঘরে ফেরা পূর্ব লণ্ডনের মানুষেরা ঘুম ঘুম চোখে সাদা রেলগাড়িটির জন্য স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। নানা রং-এর জ্যাকেটের গলা জড়িয়ে টেসকো, সেইন্সবারি, ম্যাকডোনাল্ডসের শার্টগুলো উঁকিমারে। বড় সুপার মার্কেট আর খাবারের দোকানগুলোই লণ্ডনে বিদেশী ছাত্রদের টিকিয়ে রেখেছে।
আমি ব্রাডলিকে বলি, 'ফুলহ্যামে তোমার ভিক্ষে করা এবার বন্ধ হলো।' ব্রাডলি আমার দিকে তাকায়, তারপর বলে, 'শব্দটি ফুল-হ্যাম নয়, ফুল্যাম।' আমি বলি, 'মাঝরাতে ধ্বণীতত্ত্ব শেখাচ্ছ যে!' ব্রাডলি আমার কথায় পাত্তা দেয়না। সে পিঠের জন্মসঙ্গী ব্যাগটিকে ধপাস করে স্টেশনের মেঝেতে ফেলে দিয়ে তার ওপর বসে পড়ে, নোংরা আঙ্গুলে নাক খুঁটে, শব্দ করে থুথু ফেলে এবং এক পর্যায়ে স্টেশনের মেঝেতে চিত হয়ে শুয়ে পড়ে; এরপর কী হয়- দেখার জন্য কেউ কেউ তার দিকে তাকিয়ে থাকে। আবার কয়েকজন কিছুই হয়নি, কিছুই দেখেনি ভাব নিয়ে দেয়ালে সাটানো পোষ্টার পড়ে। আমি ব্রাডলিকে বলি, 'ঢং কোরোনা, পুলিশ আসার আগেই উঠে পড়ো।' ব্রাডলি শুয়ে শুয়েই বলে, 'কারবার দেখো, ছাদ দিয়ে আকাশ ঢেকে দিয়েছে।' ব্রাডলির কথা শুনে কয়েকজন স্টেশনের ছাদের দিকে তাকায়; তারা ছাদ দেখে, না-কি আকাশ খোঁজে- জানিনা, তবে আধবুড়ো লোকটি হো হো করে হেসে উঠলে- দেয়ালের ঘুলঘুলিতে বসে থাকা কয়েকটা পায়রা এদিক ওদিক উড়াল দেয়। আমি বলি, 'অনেক নাটক হয়েছে, এবার ওঠো!' স্টেশনের দু’জন অ্যাটেনডেণ্ট প্লাট ফর্মে কী হচ্ছে এক নজর দেখে যায়। ব্রাডলি শুয়েই থাকে, আমি দাঁত চেপে তাকে বলি, 'এই মূহুর্তে তামাশা বাদ না দিলে- তোমার সাথে আমি আর নেই।' স্যাণ্ডউইচের লোভেই হোক, ত্যাজ্য করার হুমকিতেই হোক, আমার কথা শেষ না হতেই সে উঠে বসে। তারপর, খুব মজা হয়েছে- এমন ভাব নিয়ে বলে, 'তিনটে টুনা মাছ ধরলাম, বিশ্বাস করবে না এত্তো বড় বড়!' ব্রাডলি দুই হাত ছড়িয়ে মাছগুলো কত বড় ছিল দেখায়। আশেপাশের কিছু মানুষ, যারা সবসময় মজা খোঁজে, তাদের একজন জানায়- ব্রাডলির মাছ শিকারের সে প্রত্যক্ষদর্শী। আমি লোকটির ফাজলামোতে অবাক হই, মাঝরাতে পাগল ক্ষ্যাপানোর কোন মানে হয়না।
স্টেশনে গাড়ী এসে দাঁড়িয়েছে। হুড়মুড় করে লোকজন এ কামরায় ও কামরায় উঠে পড়ে, সবারই বসবার জায়গা চাই। শুধু শনিবার রাতে- ক্লাব শেষে ঘরে ফেরা ছেলে-মেয়েদের খালি সীটের লোভ থাকেনা, তারা সঙ্গীদের গায়ে লেপ্টে লণ্ডনের পূর্ব-পশ্চিমে পাড়ি দেয়। যারা ক্লাবের নাচুনেদের খাবার দিতে দিতে হয়রান হয়েছে সারা সন্ধ্যা, তাদের যেন বসতেই হবে কোথাও। প্রবাসের দিনযাপনে এটুকু না পেলে তাদের মন খারাপের পাল্লায় আরেকটু অভিমান যোগ হয়। আমি ব্রাডলিকে টানতে টানতে ট্রেনে উঠি। সে চেচায়, 'এতো তাড়া কিসের?' 'আমি তোমার মতো হোমলেস না, আমার ঘরে ফেরার তাড়া আছে', আমিও গলা ফাটাই।
- 'কারা ঘরে ফেরে জানো?'
- 'যাদের ঘর আছে, যারা তোমার মতো উদবাস্তু না- তারাই ঘরে ফেরে।'
- 'উহু, যাদের মাথার ওপর আকাশ নেই, ছাদ আছে- তারা।'
- 'বুদ্ধিমানদের আকাশ থাকে খোলা মাঠে; আর তোমার মতো উজবুকদের থাকে শোবার বিছানায়।'
আমার কথা শুনে ব্রাডলি হাসে, বলে, 'এইতো কথা ফুটছে!' কথা বলতে বলতেই সে তার বড় বড় নখের ভেতরে আটকে থাকা ময়লা পরিষ্কারে মন দেয়। দৃশ্যটি অরুচিকর। ব্রাডলিকে কয়েকবার কথাটি আমি বলেছি; কিন্তু কে শোনে কার কথা!
লণ্ডনে ব্রাডলির স্থায়ী কোন ঠিকানা নেই; আজ এখানে, কাল ওখানে রাত কাটায়। বেশ কিছুদিন ধরে হোয়াইটচ্যাপেল আণ্ডারগ্রাউণ্ড স্টেশনে ঘুমাচ্ছে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে স্টেশনের উল্টো দিকে হাসপাতালের বারান্দায় ঘুমাতে যায়। হাসপাতালের বারান্দা- মরা মানুষ, আর পুলিশদের দখলে থাকে বলে ওখানে শান্তি নেই। একটু ঝামেলা হলেই পুলিশ নাকি ধরে ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠায়। কথাটি শুনে আমি ব্রাডলিকে বলেছিলাম, 'অমন আশ্রয়কেন্দ্রইতো ভালো, থাকা খাওয়ার ঝামেলা নেই!'
- 'ওখানে কারা যায় জানো? যাদের মস্তিষ্কে ঘিলুর বদলে পাকস্থলি আছে- তারা যায়।'
- 'তোমার ঘিলুতো তোমাকে ফুলহ্যামে ভিক্ষে করাচ্ছে, হোয়াইটচ্যাপেলের রাস্তায় ঘুম পাড়াচ্ছে!'
- 'তাতে সমস্যাটা কোথায়? আমি রাণী এলিজাবেথের বংশবদ নই। ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্র ব্রিটেনের রাণী, আর ক্ষুধার্তদের জন্য বানানো হয়েছে; আমি ওখানে শান্তি পাইনা।'
- 'হোমলেসদের ব্যাপার-স্যাপার বেশ উচ্চ-মার্গীয় মনে হচ্ছে!'
আমার কথা শুনে ব্রাডলি হেসে উঠেছিল। তারপর জিজ্ঞেস করেছিল, 'ব্যাংকে তোমার কোনো ঋণ আছে? ক্রেডিট কার্ড আছে?' আমি মাথা নেড়ে- হ্যাঁ বলেছিলাম। লণ্ডনে আসার সময় বাবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন আমার জন্য, কলেজের বেতন যোগানোর জন্য ক্রেডিট কার্ডের টাকা খরচ করেছি। 'তোমার দেনা আরো বাড়বে। তারপর এসবের কারণে একদিন হাসপাতালে ভর্তি হবে', আমার দিকে তাকিয়ে ব্রাডলি আরো বলেছিল, 'তুমি যে হাসপাতালে যাবে আমি তার বারান্দায় নাক ডেকে ঘুমাবো।' জীবনের অনিরাপদ অনুষঙ্গ অনেকের মতো আমিও বাদ দিতে পারিনা। একথা সত্য আমার ঋণ আছে, ভবিষ্যতে তা বাড়তেও পারে। তাই বলে ভিখেরী কিংবা সাধুসন্তের মতো গৃহত্যাগী হতে হবে- একথা আমি মানতে পারিনা। তবে, ব্রাডলির কথা শুনে আমি বেশ চমকে গিয়েছিলাম। তার কথাটিও চট করে ফেলে দেয়া যায়না।
আমি জেনে আশ্চর্য হয়েছিলাম, ব্রাডলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছে। একটা ব্যাংকে নাকি বছর কয়েক চাকরীও করেছে। উচ্চশিক্ষিত কোনো লোক চাকরী-বাকরী, ঘর-সংসার ছেড়ে স্টেশনে স্টেশনে ভিক্ষে করে বেড়াচ্ছে- ব্রাডলিকে না দেখলে আমি বিশ্বাস করতাম না। অবশ্য ব্রাডলি সংক্রান্ত বিস্ময় কেটে গেছে আমার। রোজ রোজ দেখা হলে অদ্ভুত মানুষেরাও সাধারণ হয়ে ওঠে একদিন।
- 'তুমি ব্যাংকে চাকুরী করতে!'
- 'আরেক জন্মে করতাম; ইউনিভার্সিটি শেষ করেই ব্যাংকের কাজে ঢুকে ছিলাম।'
- 'ছাড়লে কেন?'
- 'ভালো লাগেনি।'
- 'মানে?'
- 'ময়লা টাকা গুনতে গুনতে নিজেকে কুষ্ঠরোগী মনে হতো। চাকুরী করার কোনো মানে হয়না; আর ব্যাংকে কাজ করাতো রীতিমত অপরাধ।'
একসময় ম্যাকডোনাল্ডসে ম্যাক-চিকেন ভাজতে ভাজতে, সুপার মার্কেটের ক্যাশিয়ারের কাজকে স্বপ্নের চাকুরী মনে হয়েছে আমার। আর এই লোক বলে কি-না ব্যাংকে কাজ করা অপরাধ! আমি আমার স্বজনদের ফেলে হাজার মাইল দূরে পড়তে এসেছি- যাতে দেশে ফিরে ভালো কোনো চাকুরী পাই। আমি অবিশ্বাস নিয়ে ব্রাডলির দিকে তাকিয়ে থাকি; বলে কী লোকটা! আমি ঠাট্টা করে বলি, 'অফিস থেকে তোমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়নিতো?' আমার কথা শুনে ব্রাডলি শরীর দুলিয়ে হাসে, বলে, 'তুমি এসবের বাইরে কিছুই চিন্তা করতে পারো না, তাইনা? তোমার দোষ নেই, অধিকাংশ মানুষই জীবনকে আয়-ব্যয়ের ছকে দেখে শান্তি পায়।'
- 'ব্যাংকের কাজ পছন্দ না হোক, অন্য কাজ করতে?'
- 'দূর, সব কাজই এক, জেনে-শুনে কুষ্ঠরোগী হওয়া আর-কি!'
- 'তাহলে সবাই মিলে ভিক্ষুক হয়ে যাওয়াই ভাল, কি বল! তোমাদের রাণী ওয়েস্টমিনিস্টার স্টেশনে ভিক্ষে করছে, প্রধানমন্ত্রী আর্লস কোর্টে, তুমি ফুলহ্যামে- কী মজা!'
- 'তোমার রসবোধ অত্যন্ত নিম্নমানের, তা জানো?'
এবার শরীর দুলিয়ে আমার হাসার পালা। আমি ব্রাডলির বারোমেসে জ্যাকেটে চাপর দিই, তারপর হাতে ময়লা লেগে গেছে এমন ভাব করে নিজের প্যাণ্টে হাত মুছি। ব্রাডলি আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, ঠোঁট কামড়ে ধরে ডানে-বায়ে মাথা নাড়ে, তারপর বলে, 'তুমিও অধিকাংশ মানুষের মতোই মূর্খ।'
ব্রাডলির সাথে আমার পরিচয়ের দিনটি বেশ মজার। শুরুতে তাকে আমি ভয় পেতাম। আমি আশংকায় থাকতাম- এমন নীরব স্টেশনে একলা পেয়ে ব্যাটা হয়তো একদিন ছিনতাই-টিনতাই করবে। অন্ততঃ তার পোশাক আর চেহারা দেখে এমন আশংকা যে কারোরই হতে পারে। কাঁধ অব্দি চুল, পোড়া তামাকে হলদে হওয়া দশাসই গোঁফ, একমুখ কাচা-পাকা দাড়ি, চওড়া কপাল, আর রুক্ষ লালচে মুখ দেখে- আমার মতো যে কেউ তাকে দেখে ভড়কে যেতে পারে। 'শুভ সন্ধ্যা; জনাবের কি হোয়াইটচ্যাপল থাকা হয়?', প্রথমদিন ব্রাডলি ভাববাচ্যে আমাকে সম্বোধন করে কাছে এগিয়ে এসেছিল, আমি ভয় পেয়েছিলাম। আমি পকেটে যা আছে, ইংরেজ দুবৃত্তের হাতে তুলে দেবার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। উজবুকের দল দু'শ বছর আমাদের দেশে ডাকাতি করেছে, এখন ছিনতাই করবে- তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, আমি স্বর্বশান্ত হওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলি। লোকটি তার দশাসই ডান হাতটি আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো, 'অধমের নাম ব্রাডলি সালটন। আমি কি আপনার নাম জানতে পারি?' ততোক্ষণে পকেটে থাকা পাঁচ পাউণ্ডের নোটটি আমার হাতে চলে এসেছে; সেটি আমি তার দিকে বাড়িয়ে দিতেই সে বলেছিল, 'জনাব কি আমাকে ভিক্ষুক ভেবেছেন? না-কি আপনার নাম- পাঁচ পাউণ্ড? যাহোক, আপনার সাথে পরিচিত হয়ে খুশি হলাম। পাঁচ পাউণ্ড নামটি সুন্দর। স্যার, 'ফিফটি সেণ্ট' কি আপনার আত্মীয়?' ব্রাডলির রসিকতা, আর নিজের বোকামীতে সেদিন লজ্জা পেয়েছিলাম; আমতা আমতা করে বলেছিলাম, 'পাঁচ পাউণ্ডের খুচরো হবে?'
এরপরে দেখা হলে আমি তার কুশল জিজ্ঞেস করতাম। সে থেকেই আলাপ। ব্রাডলি কথায় কথায় মজা করে। আমি তাকে ঠেস দিয়ে কথা বলি। ব্রাডলি তাতে মজা পায়, পাল্টা ঠেস মারে, কথার প্যাঁচে ফেলে। ট্রেনে আমরা যখন গল্প করি, আশেপাশের লোকজন তাকিয়ে থাকে, ভাবে এই লাগল বলে! ব্রাডলি আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকা লোকদেরও বোকা বানানোর চেষ্টা করে; বলে, 'ফিফটি সেণ্টকে চেনো? ওই যে, হিপহপ গায়ক; এককালের গ্যাংস্টার', তারপর আমার দিকে ইশারা করে বলে, 'ইনি ফিফটি সেণ্টের বড়ভাই, জনাব ফাইভ কুইড, ওরফে পাঁচ পাউণ্ড।' মাঝরাতে কাজ শেষে ঘরে ফেরা মানুষেরা ফিফটি সেণ্ট, কিংবা পাঁচ পাউণ্ডকে নিয়ে মাথা ঘামাতে চায় না, তারা ট্রেনের মেঝেতে পড়ে থাকা মেট্রো পত্রিকা হাতে তুলে নেয়, পাতা ওল্টায়।
হোয়াইটচ্যাপল আণ্ডারগ্রাইণ্ড থেকে বেরিয়ে আমি ব্রাডলিকে বলি, 'আগামী দু'দিন তোমার স্যাণ্ডউইচ বন্ধ থাকবে।' ব্রাডলি আমার কথা শুনে হায় হায় করে বলে, 'আর্লস কোর্টে তুচ্ছ মাছ ধরার অপরাধে এত বড় শাস্তি দেবে!' ব্রাডলির কথায় নাটকিয়তা থাকে, আর থাকে লাগসই রস। আমি হাসতে হাসতে তাকে জানাই, 'থিসিসের কাজে ব্রাইটন যেতে হবে। ব্রাইটন সী-বিচে আমি যখন আপেল পাতায় লজ্জা লুকানো ইভকে দেখবো, তুমি তখন আর্লস কোর্টে টুনা শিকার কোরো।' আমি ব্রাইটন যাচ্ছি শুনে ব্রাডলির চোখ চকচক করে।
- 'ওটাতো আমার শহর! আমার মা থাকে ওখানে।'
- 'তোমার মতো বুড়ো-দামড়ার আবার মাও আছে!'
- 'কী আশ্চর্য, মা থাকবে না কেন?'
- 'তোমার মা বেঁচে আছে?'
- 'নিশ্চয় আছে।'
- 'সেও কি তোমার মতো স্টেশনের মৎস্য শিকারী?'
- 'আমার মাকে নিয়ে বাজে কথা বলোনা।'
পৃথিবীর সব দেশের মানুষই মা সংক্রান্ত আলোচনায় কিছুটা স্পর্শকাতর। অন্যের মায়ের শ্রাদ্ধ করলেও, নিজের মাকে নিয়ে নিরীহ ঠাট্টাও সহ্য হয়না; এমন কি মায়ে খেদানোদেরও না।
আমি জিজ্ঞেস করি, 'শেষ কবে মাকে দেখেছো?' আমার কথা শুনে ব্রাডলি মাথা চুলকায়, তারপর আস্তে আস্তে বলে, 'বছর দশেক হলো মাকে দেখিনি।' আমি অবাক হই তার কথা শুনে, 'এমন কী রাজকর্ম করছো যে, এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে মাকে দেখে আসা যায়না!' বাক্যবাগিশ মাঝবয়সী লোকটি কী বলবে ভেবে পায়না। আমি তাকে বলি, 'ঠিক এগারটার সময় ভিক্টোরয়া স্টেশনে থেকো, দেরী হয়না যেন, আমি কিন্তু তোমার জন্য অপেক্ষা করব না।' আমার কথা শুনে ব্রাডলি একগাল হাসে, তারপর কাঁধের ব্যাগটিকে মাটিতে ছুড়ে দিয়ে বলে, 'আজ রাতে আমার ঘুম হবেনা।'
দুই
ভিক্টোরিয়া রেল স্টেশনে আমি অপেক্ষা করছি। বেলা এগারটায় ব্রাডলির এখানে থাকার কথা; এখন প্রায় একটা বাজে, অথচ আধবুড়োটার কোন দেখা নেই। আর অপেক্ষা করার মানে হয়না, ছন্নছাড়াটা আসবে না, আমি দক্ষিণমুখী ব্রাইটনের ট্রেনে উঠে বসি। লিভারপুল স্টেশন পেরিয়ে ট্রেনটি ক্রলির পথ ধরে। শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছে গাছগুলো, পাতা ঝরা শুরু হয়েছে তাদের। হলদে পাতার ফাঁকে ন্যাড়া ডালগুলো উঁকি দিচ্ছে, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ভিজছে খামারের গরুগুলো, কয়েকটি ঘোড়া আর একপাল রাজহাঁস। আমি লণ্ডনে এসেছি বছর তিনেক, তবুও এখানকার এই বৃষ্ট এই ঠাণ্ডা আবহাওয়ার সাথে তাল দিতে পারিনা। শার্টের নীচে দুটো গেঞ্জী, উপরে মোটা পুলওভার, তার উপরে ভারী জ্যাকেট চাপিয়েও আমার শীত যায়না; শীতের শুরুতেই আমি ঠক ঠক করে কাঁপি- বিরক্ত লাগে। আসছে গ্রীষ্মের আগেই আমি ডেজারটেশন পেপার জমা দিচ্ছি, লণ্ডনের পাট তাড়াতাড়িই চুকে যাচ্ছে- এ ভাবনাতেই যা একটু উষ্ণতা পাই। ট্রেনটি আরেকটি স্টেশনে থামে, কয়েকজন যাত্রী ট্রেন ছাড়ে, কয়েকটি নতুন মুখ যোগ হয় এ কামরায়। একজন বৃদ্ধ আমার পাশের খালি সীটে বসেন। আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসি, তিনিও হাসি ফিরিয়ে দেন, কিন্তু কোন কথা হয়না। কখনো কখনো মানুষে-মানুষে সম্পর্ক ট্রেনের কামরার সহযাত্রীদের মতো; মুখোমুখি কিংবা পাশাপাশি বসে থাকা, তবুও কিছুই তাদের স্পর্শ করেনা। এদের চোখ পড়ে থাকে হারিয়ে যাওয়া মেঘেরও ওপারে, কিংবা মেঘ ছাড়িয়েও আরো দূরে, ভুল করে ফেলে আসা কারো ঠিকানায়।
ব্রাইটন স্টেশনে নেমেই দেখি ঝুম বৃষ্টি। বুদ্ধিমানেরা বৃষ্টির সাথে ছাতাবাজি করে, ব্যস্তরা বৃষ্টি মাথায় রাস্তায় ছোটে; আমার ছাতা নেই, তাড়াহুড়ো নেই- আমি স্টেশন গেটে দাঁড়িয়ে থাকি। 'এই যে ভদ্রলোক, কয়টা বাজে!, কে একজন আমার কাছে জানতে চায়, না-কি আমার দেরী দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে- বুঝতে পারিনা। আমি ঘড়ি দেখি, তারপর লোকটির মুখের দিকে তাকাই এবং অবাক হয়ে আবিষ্কার করি- আমার সামনে ব্রাডলি দাঁড়িয়ে আছে; ছোট করে চুল ছাঁটা, দাড়ি-গোঁফহীন চকচকে চেহারার মাঝ বয়সী রোগা একজন মানুষ। 'তুমি! এখানে কী করছো?', আমি বিস্ময় চেপে রাখতে পারিনা।
- 'আগে আগে চলে এলাম।'
- 'তাতো দেখতেই পাচ্ছি। কোথায় ধরা খেয়েছিলে, দাড়ি কই?'
- 'ফেলে দিলাম।'
- 'পয়সা পেলে কোথায়?'
'তোমার বুদ্ধি যে নীচু স্তরের, তা তোমার প্রশ্ন শুনলেই বোঝা যায়। খালি পয়সা পয়সা করো! এখন বলো, কেমন লাগছে?', ব্রাডলি আমাকে তার হাতের আঙ্গুলও দেখায়, নখও কেটেছে সে।
- 'শপ-লিফটারদের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে, চুরি করে ধরা পড়েছিলে; লোকজন মাথা ন্যাড়া করে ছেড়ে দিয়েছে।'
আমার কথা শুনে ব্রাডলি গলা ফাটিয়ে হাসে; ছাতা মাথায় দেয়া লোকগুলো ঘাড় উঁচু করে আমাদের দেখে, কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি টোকা দেয় তাদের অন্যমনস্ক গালে। হাসি থামলে ব্রাডলি বলে, 'মার কাছে যাচ্ছিনা!' আমি বলি, 'মায়ের কাছে ফিরলেই বুঝি মানুষ হতে হয়?' ব্রাডলির নতুন চেহারা নিয়ে আমি ঠাট্টা করে যাই, সেও আমাকে কথার প্যাঁচে নক-আউট করার চেষ্টা করে। মায়ের কাছে ফেরার উছিলায় কেউ যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে, আমি খুশি হব।
এক সময় বৃষ্টি কমে। 'ইংল্যাণ্ডের বৃষ্টি থামার জন্য অপেক্ষা করলে, সারা জীবন ঘরে বসে থাকতে হবে', কথা বলতে বলতে ব্রাডলি রাস্তায় নেমে পড়ে, সাথে আমিও।
'হঠাৎ মানুষ হওয়ার সুমতি হলো যে!', আমি ব্রাডলিকে জিজ্ঞেস করি। সে একই উত্তর দেয়, 'বললাম না, মার কাছে যাচ্ছি!' আমি আবার বলি, 'খোলস বদলের কারণ কি? তুমি যে আশেপাশে মানুষদের নিয়ে ভাবিত, তা তো মনে হয়না।'
আমরা ব্রাইটন সী-বিচের গা ঘেঁষে হাঁটতে থাকি। এখনো প্যাঁচপ্যাচে বৃষ্টি পড়ছে। সী-বিচ পায়ারটিতে কেউ নেই এখন; শুধু কয়েকজন চায়নিজ না-কি জাপানী সমুদ্রকে পেছনে রেখে, হাসি মুখ আর বুজে থাকা চোখের ছবি তুলছে। আমি ব্রাডলিকে জিজ্ঞেস করি, 'বাড়ীর পথ চেনোতো?' 'মুখস্থ পথ', সে সংক্ষিপ্ত উত্তর দেয়। আমি বলি, 'রাতে ঠিকানা মুখস্থ করেছো বুঝি?' ব্রাডলি সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, 'এ শহরে আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি, এর প্রত্যেকটা গলির ল্যাম্পপোষ্ট আমার চেনা। ঐ যে সামনে হোটেলটা দেখছো, ওটার পাশ ঘেঁষে চোখ বন্ধ করে দশ মিনিট হাঁটলেই আমাদের বাড়ী।' ব্রাডলি আবার নিশ্চুপ হয়; আমি রাস্তার পাশে দোকানগুলো দেখি, মাথায় হুড আর হাতে ভারী ব্যাগ নিয়ে ছুটতে থাকা একজন তরুণীকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, দোকানে ঝুলানো বিজ্ঞাপন পড়ি, হঠাৎ করে বলার মতো কোনো কথা খুঁজে পাইনা।
ব্রাডলির- চোখ বন্ধ করে দশ মিনিট হাটার পথ ফুরিয়েছে অনেক্ষণ, তবুও তার বাড়ীর দেখা পাইনি আমরা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আর হাঁটতে ইচ্ছে করছেনা। আমি অধৈর্য হই, বলি, 'আর কতদূর?' ব্রাডলি উত্তর দেয়না, আমার কথা শুনতেই যেন পায়নি সে। 'মনে হয় তোমার দশ মনিট আজ আর ফুরোবে না। আমার খিদে পেয়েছে, আর হাটতে পারব না', আমি আবার বলি। ব্রাডলি বলে, 'তুমি খাও।'
- 'তুমি খাবে না?'
- 'খিদে নেই।'
- 'পয়সা নিয়ে ভেবোনা, আমি বিল দেব।'
ব্রাডলি আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর বলে, 'তুমি টাকা গোনা কুষ্ঠরোগীদের মতো কথা বলছো।' আমি কথা বাড়াই না, খ্যাপার পেছন পেছন হাঁটতে থাকি। সময় পেরোয়, দূরে কোথাও থেকে বিকেল চারটের ঘণ্টা বাজে। আমরা ঘুরে ফিরে একই জায়গায় হাঁটছি। আমি বিরক্ত, ব্রাডলি চুপচাপ। সে একটা বাড়ীর সামনে থামে, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বাড়ীটাকে দেখে। লাল ইটের দেয়াল, বাড়ির সামনে আগাছা ভরা এক টুকরো বাগান, টালির ছাদের এক কোণায় সাদা চিমনি- এমন বাড়ী সারা ইংল্যাণ্ড জুড়েই ছড়িয়ে আছে। 'তোমার মা কি এখানেই থাকে?' ব্রাডলি ঘাড় নাড়ে, দীর্ঘ বিরতি নিয়ে সংক্ষিপ্ততম উত্তর দেয়, 'না', তারপর আবার হাঁটতে থাকে।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা আবার সমুদ্রের পাড়ে ফিরে আসি। কয়েকজন পথ হারানো ট্যুরিষ্ট সাল্ডিনে কিভাবে যেতে হয়, জিজ্ঞেস করে ব্রাডলিকে। ব্রাডলি চুপ করে থাকে, আমিও। লোকগুলো অজানা কী এক ভাষায় নিজেদের সাথে কথা বলে, সামনে এগিয়ে যায়। ব্রাডলি রাস্তার পাশে জমে থাকা পানিতে থুথু ফেলে, অন্যমনস্ক ভঙ্গীতে মাথা চুলাকায়, নাক খুঁটে। আমি তার দিকে আড়চোখে তাকাই; সে অপ্রস্তুতভাবে হাসে, বলে, 'অভ্যাস।' আমি বলি, 'অভ্যাস না, বদ খাসলত। তোমার চেহারা তেলতেলে করতে পারো, কিন্তু স্বভাবের তেলচিটে ভাব ছাড়তে পারবে না।' আমার কথা শুনে সে আবার শব্দ করে হাসে, তারপর আবার চুপ হয়ে যায়।
বৃষ্টি থেমে গেছে। আসলে এদেশে বৃষ্টি থামেনা, দু'বার ঝরার মাঝে বিরতী নেয় মাত্র। 'না গেলে কেমন হয়?', ব্রাডলি আবার কথা শুরু করে। 'কোথায়?', আমি জিজ্ঞাসা করি। ব্রাডলি নিরুত্তর। আমার কথার উত্তর না দিয়ে সে মনোযোগ দিয়েছে কান পরিস্কারে, কড়ে-আঙ্গুলে অ্যাক্রোব্যাট চালাচ্ছে কানের দুর্গম সুরঙ্গে; আমি না দেখার ভান করি।
- 'বললে না, কোথায় যেতে চাইছো না?'
- 'মার কাছে।'
- 'কেন?'
- 'জানিনা।'
- 'সমস্যাটা কোথায়?'
- 'বছরের পর বছর মাকে দেখিনি। আমি তাকে যখন শেষবার দেখেছিলাম, তখন তার চুলে সবে পাক ধরেছে। আর দেখো, এখন আমারই চুল পেকে গেছে অর্ধেক।'
ব্রাডলি থামে, আকাশের দিকে তাকায়, যেখানে ধূসর মেঘ দল পাকাচ্ছে আবার বর্ষণের। আমি বলি, 'বুড়ো মাকে না দেখেই ফিরে যাবে?' ব্রাডলি বলে, 'আমি যখন ব্যাংকে কাজ করতাম, সে সময় আমার বাবা অসুখে পড়েছিলেন। নানান ধরনের অসুখ ছিল তার। বিছানায় পড়ে থাকতে থাকতে বাবার শরীরে পচন ধরে ছিল। সে সময় পচা মাংশের দুর্গন্ধে আমরা ঘরে ঢুকতে পারতাম না। অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়ে ছিল যে, বাবার সামনেই আমাদের প্রতিবেশীরা তার মৃত্যু প্রার্থনা করত; আমিও করতাম। শরীরে অমন পচন নিয়েও বাবা কয়েক বছর বেঁচে ছিলেন। ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করে মা চুপ করে বাবার পাশে বসে থাকত, প্রতিবেশীদের যন্ত্রণায় সে ওগুলো খোলারও সাহস করত না।' ব্রাডলি কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে শেষ করে নাক কুচকে বাতাসে কী যেন শুকে। আবার ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। ব্রাডলি হা করে আকাশের দিকে মুখ তুলে রাখে, একটু পরে বলে, 'ওল্ড ম্যান এণ্ড দ্য সি'র সেই বুড়ো সান্তিয়াগোর গল্প জানো?' আমি ব্রাডলির কথার উত্তর দেইনা, সে আবার শুরু করে, 'বুড়ো জেলে সমুদ্রে বরশি ফেলে মাছের জন্য অপেক্ষা করত, অন্তহীন সময় ধরে অপেক্ষা করতেই থাকত; আর ঘুমালে সে স্বপ্ন দেখত সমুদ্র তীরে ঘুরে বেড়ানো সিংহের। আমার মাও বুড়ো সান্তিয়াগোর মতো বাবার বিছানার পাশে বসে বসে ভাবত- আবার একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।' ব্রাডলি থামে, তারপর অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে উঠে, 'রাস্তায় শুয়ে শুয়ে বৃষ্টির পানি খেয়েছো কখনো?' আমি বলি, 'তারপর?' আমি তার মায়ের কথা শুনতে চাই। ব্রাডলি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে, এরপর বা হাতে মাছি তাড়ানোর ভঙ্গী করে বলে, 'আমি ওই সময়েই বাড়ী ছেড়ে ছিলাম, কাজ ছেড়ে ছিলাম। সবকিছু অর্থহীন মনে হতো তখন। মনে হতো, আমরা সবাই বুড়ো হেমিংওয়ের বরশি হাতে নিয়ে বসে আছি কারো শিয়রে, মৃত্যুর প্রতিক্ষায়।' ব্রাডলি কথা থামায়, ইংলিশ চ্যানেলের নীল পানির দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বলে, 'আমি কী চাই জানো! চাই, মা বাবার পঁচে যাওয়া শরীরটা নিয়ে বসে থাকুক, আর অপেক্ষা করুক আমার জন্য।' ব্রাডলি গলা নামায়, খুব গোপন কথা বলছে এমন ভঙ্গীতে ফিসফিস করে বলে, 'ফিরে আসার কোনো মানে হয়না, কী বলো!'
একটা গাড়ী আমাদের গায়ে পানি ছিটিয়ে হুস করে বেড়িয়ে যায়, কালো কয়েকটা ছেলে নিতম্বেরও নীচে প্যাণ্টটাকে কোনমতে আটকে রেখে রাস্তা পার হয়, স্কুল শেষে ঘরে ফেরা শিশুরা সবাইকে চমকে দিয়ে ফুটপাতে দৌড়ায়, একজন বৃদ্ধ যাত্রীছাউনিতে বাসের জন্য অপেক্ষা করে, আর আমার সামনে হেমিংওয়ের বরশি হাতে এক মধ্যবয়সী মানুষ আকাশের দিকে মুখ তুলে রাখে, যে ফিরবে বলেও ফিরে আসেনা, যে সামনে সাগর রেখে পথে দাঁড়িয়ে থাকে।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৩৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আপনাদের গ্রুপ ব্লগের জন্য শুভ কামনা রইল।
২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:০৮
রাশেদ বলেছেন: আইজকাই পড়ুম।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৩৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: কেমন লাগল জানাবেন।
৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:১৬
শফিউল আলম ইমন বলেছেন: রাশেদ মিয়া খালি আইজকা পড়ুম কাইলকা পড়ুম কই।
রিপন ভাই গল্প ভালো লেগেছে। তবে, আপনার অন্যান্য গল্পের মতো ভালো লাগেনি। এটা হতে পারে খুব বেশি লম্বা হয়ে যাওয়ার কারণে, অথবা অনেকদিন পরে সা.ইনে আসছি বলে হয়তো।
ভালো থাকুন।
বাই দ্যা ওয়ে, আমিও কিন্তু আপনার কাছাকাছিই থাকি।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৩৬
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: হায় হায়, আমি লণ্ডনে থাকি না-কি?
৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৪০
রাশেদ বলেছেন: ফুলহ্যাম নিয়ে আরেকটা গপ্প লিখেছিলেন নাকি?
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ফুলার রোডের কথা বলছেন? নেশা শিরনামে একটা গল্প লিখেছিলাম, ওখানে ইস্ট লণ্ড্নের প্রসঙ্গ ছিল।
৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৩
বিডি আইডল বলেছেন: ভালো লাগলো..অনুবাদ টি আপনার করা..অন্য কোথাও শেয়ার করা যাবে এটি?
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫১
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: অনুবাদ!? গল্পটি খাঁটি বাংলায়, বাংলাভাষী ব্লগার কর্তৃক লিখিত এবং প্রকাশিত।
কোথায় শেয়ারের কথা বলছেন?
৬| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৯
রাশেদ বলেছেন: পড়লাম ভালো লাগছে।
ভালো লাগছে। আপনি হালকা কিসিমের লেখাও তাইলে লেখেন! হি হি!
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: হালকা! কয় কী!
অনেকদিন পরে রাশেদ ভাইয়ের প্রসংশা পেয়ে ব্যাপক খুশি হয়েছি। (ব্যাপক খুশির একটা ইমোটিকন থাকলে ভালো হইত।)
৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫০
রাশেদ বলেছেন: সমালোচনা করার তেমন কিছু পাই নাই।
লাস্ট প্যারাটা সবচেয়ে ভালো লাগছে।
-----------
ফুলহ্যাম স্টেশন বা এটার কাছাকাছি নামে এ জায়গার কথা কারো গল্পে পড়েছিলাম মনে হয়। সেইজন্য জিজ্ঞাসা করেছিলাম।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: গল্পটা লিখতে ম্যালা সময় দিয়েছি; কিন্তু লিখে শান্তি পাইনি। মনে হচ্ছে- দ্রুত শেষ করে দিয়েছি গল্পটা। তারপরেও আপনার প্রশংসা পেয়ে উৎসাহিত হচ্ছি।
৮| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৩
বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: এখন পর্তারুম না । শোকেসে রাইখা দিলাম পরে পড়ুম
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আরে বিমা যে, আমার ব্লগে! কী সৌভাগ্য আমার!
৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৪
বিডি আইডল বলেছেন: ও..আমি ভাবলাম আর্নেস্ট হেমিংওয়ের কোন গল্প এটি..
অন্যান্য ব্লগে..
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৩৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: অন্য ব্লগে? লেখাটি সা.ইনেই থাকুক না!
১০| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৪
শিমুল বলেছেন: অসুবিধা নাই মুছেন পারলে আমার নামটিও মুছেন!
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৩৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: কার নাম কে মুছে শিমুল! (ব্রাকেটে বলি, আপনার লেখার হাত ভাল।)
১১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৭
রাশেদ বলেছেন: খিক খিক! মেলাদিন পরে এতক্ষণ ধরে ব্লগে আছি।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৩৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: তাইতো দেখলাম। (একে একে সবাই চলে যাচ্ছে )
১২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:০২
রাশেদ বলেছেন: প্রথম প্যারার আগের সেই বিরক্তিটা আর লাগে না, এইটাই সবচেয়ে ভালো লাগে।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৪০
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: হয় বিরক্ত হতে হতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন, নয়তো আমিই প্রথম প্যারা বাদ দিয়ে লেখা শুরু করেছি।
১৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:২৮
আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
যথারীতি দুর্দান্ত ।
শব্দ খুঁজে পাই না । আর কি বলা যায় !
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৪২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: শিপন ভাই, খুশি হয়েছি।
১৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:৩০
রাজর্ষী বলেছেন: ভালো লাগলো।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৪৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ধন্যবাদ রাজর্ষী।
১৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:৩৯
আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
'খুব খিদে পেয়েছে, স্যাণ্ডউইচ দাও। খেতে খেতে পেট পুরে লজ্জা পাওয়া যাবে।'
এই লাইনটিতে "ক্ষুধা আর লজ্জার'এক মহাকাব্যকে যেন পাই আমরা ।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৪৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: 'ক্ষুধা আর লজ্জার মহাকাব্য'- কথাটি অসাধারণ! বাড়িয়ে বলছি না, আসলেই। (এত বড় প্রশংসা নেবার শক্তি আমার নেই, শিপন ভাই।)
১৬| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৭:০২
ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: খুব ভোরে ঘুম ভেঙেই আপনার গল্প পেলাম। পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল একটা ছায়াছবির দৃশ্য দেখছি। নিজের ছদ্মনামটা দেখলে আরো কেমন করে উঠলো। শেষটুকুতে এসে যেরকম আশা করছিলাম- অতৃপ্তি থেকে গেলো!
প্রশংসাবাচক উপমাগুলো মনে পড়ছে না। বুঝে নেন আমার দারুন লাগছে!
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আমি 'ছন্নছাড়া' শব্দটি লিখতে লিখতে আপনার কথা ভাবছিলাম। (উল্লেখযোগ্য পরিমানে ছন্নছাড়া হয়ে উঠুন।)
বুঝে নিলাম উপমাগুলো।
১৭| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:০০
আলী আরাফাত শান্ত বলেছেন: ঘুম থেকে উঠে পড়ে ফেললাম।
যথারীতি চমৎকার!
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন:
ছেলেটির নেই কিছুতে সাত্বনা,
দূরন্ত সে শান্ত না...
ভাল থাকুন শান্ত।
১৮| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫১
নুশেরা বলেছেন: অসাধারণ!
শেষ প্যারাটা কয়েকবার পড়লাম; অতৃপ্তি রয়ে গেল। সার্থক ছোটগল্প বোধহয় এমনই হয়...
ভাল থাকুন, রিপন ভাই।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:০২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: নুশেরা, 'হেমিংওয়ের বরশি' কথাটি আমার মাথার মধ্যে কী করে যেন ঢুকে গেল! নাম ঠিক করে গল্পের পেছনে ছুটেছি।
আপনার মন্তব্য পেয়ে খুশি হলাম।
১৯| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫৫
প্রণব আচার্য্য বলেছেন: কেমন আছেন রিপন?
তুলে রাখলাম; সময় করে পড়বো
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:০৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: প্রণব, আছি ভাল। অনেকদিন পরে গল্প লিখলাম। ব্লগেও অনেক সময় কাটালাম, ভাল লাগছে। (গল্পটি কেমন লাগল জানাতে ভুলবেন না, প্লিজ।)
২০| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৫৭
'প্রবাল গ্রুপ' বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম। ভালো লাগলো।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:০৫
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: শুভাশিষ জানুন।
২১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:১২
নুশেরা বলেছেন: রিপনভাই, আমি প্রথম মন্তব্যে বলিনি, কিন্তু শুরু থেকেই মনে হচ্ছিল একটা কথা, আপনার কথার ফেরে প্রশ্নটা করেই ফেলছি-- বড়শি সান্তিয়াগোর নয় কেন? কেন হেমিংওয়ের?
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:২৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: তাইতো! কার বরশি কে বাইছে?
আসলে 'বরশি' কথাটি হেমিংওয়ের 'ফিলোসফি' বোঝাতে ব্যবহার করেছি। (এবার ভাবুন, কত ধানে কত চাল! কত চালে কত উট মার্কা ঢেঊ টিন।)
২২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:৩০
নুশেরা বলেছেন: বিভূতিভূষণ কাকে যেন পথের পাঁচালী উপহার দিয়েছিলেন "অপু" নামটা স্বাক্ষর করে। স্রেফ কৌতুহল; হেমিংওয়ে সান্তিয়াগো হয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন কখনো?
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:৩৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: হায় হায়, এইবার কোথায় পালাই!
২৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৩
প্রণব আচার্য্য বলেছেন: আপনার লেখাগুলো পড়লে নিজেরর এরকম লিখতে ইচ্ছে করে; কিন্তু আমি জানি এটা আমার দ্বারা সম্ভব নয়;
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:২৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ওহে কবি, ভাল লিখেন বলেই জানেন কী করে লজ্জা দিতে হয়।
২৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২৩
পারভেজ বলেছেন: ছোট গল্প হিসাবে একটু দীর্ঘ লাগলো। স্থানের বর্ণনাগুলি হয়তো এর জন্য দায়ী। বড় লেখা হলেও পাঠ একবারেই করা যায়। সেই টানটুকু আছে। আপনার অন্যান্য লেখাগুলির সাথে এর ভাষার বুননটা ভিন্ন। ভাল লাগলো।
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৩১
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ধন্যবাদ পারভেজ ভাই। (নাহি বর্ণনার ছটা...)
২৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৯:১৯
লিপিকার বলেছেন: ভালো লেগেছে......শোকেসে রেখে দিলাম.....
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৩২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: শুভাশিস রইল।
২৬| ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:২৬
ফারহান দাউদ বলেছেন: 'ব্যাংকে তোমার কোনো ঋণ আছে? ক্রেডিট কার্ড আছে?' আমি মাথা নেড়ে- হ্যাঁ বলেছিলাম। লণ্ডনে আসার সময় বাবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন আমার জন্য, কলেজের বেতন যোগানোর জন্য ক্রেডিট কার্ডের টাকা খরচ করেছি। 'তোমার দেনা আরো বাড়বে। তারপর এসবের কারণে একদিন হাসপাতালে ভর্তি হবে',
শুনে এখনকার অর্থনৈতিক সংকটের কথা মনে পড়লো। আর শেষ করে মনে হলো,কি এক অর্থহীন গ্যাস বেলুনের মাথায় চড়ে আমরা উড়ে বেড়াচ্ছি,কোনদিন যে আশার বেলুনটা ফুটো হয়ে যায় কে জানে,তখন বৃত্তের পরিধিতে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে হয়তো দেখবো যে শূন্যের চারপাশেই শুধু ঘুরে গেলাম।
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:৪১
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আপনার কথাটি শুনলে ব্রাডলি হয়তো উত্তর দিতো, 'অর্থনীতি হচ্ছে রাষ্ট্রের কুষ্ঠরোগ বিদ্যা।'
ফারহান ভাই, বেলুনটিতো ফুটো-ই! কিন্তু সেটি শুধু পরিধিতেই ঘুরে না, কেন্দ্রমুখিও হয় কখনো কখনো। শুধু- ফিরে আসা অর্থহীন জেনেই সমুদ্রকে সামনে রেখে পথে দাঁড়িয়ে থাকে, হয়তো পরিধিরই কাছাকাছি।
২৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৬:২২
কোলাহল বলেছেন: পড়তে পড়তে একটু... লাগছিলো। পুরোটা পরিনি।
শেষ না করে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১১:৩৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন:
মন্তব্য চাই, কোলাহল। আপনার পর্যবেক্ষণগুলো জানালে প্রীত হব।
২৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৩১
সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন: অসাধারন........
খুব ভালো লাগলো............
গল্পটা পড়ে সেদিনের কথা মনে পড়লো .........যেদিন
'ওল্ড ম্যান এণ্ড দ্য সি' পড়েছিলাম........ সান্তিয়াগোর সমুদ্রে বরশি ফেলে মাছের জন্য অপেক্ষা করত আর অন্তহীন সময় ধরে অপেক্ষা করতেই থাকত.......।
পরীক্ষায় সম্ভবতঃ সান্তিয়াগোর চরিত্র লিখতে হয়েছিলো।
তখন রিপনের এই গল্প পড়া থাকলে একটা প্যারালাল কিছু লেখা যেতো।
মানুষকে এমন গভীরভাবে দেখতে ক'জনই বা পারি.....!
আমি শুধু ভাবি রিপনের এত অসাধারন গল্পগুলোর বই কবে বের হবে......
অনেক অনেক শুভকামনা।
লেখা চলুক......
পড়বার জন্য রইলাম।
১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৭:৪৫
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: সাজি আপা, আপনার মন্তব্যে দারুণ অনুপ্রাণিত হলাম।
২৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১০:৫৯
যীশূ বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার লেখা পেলাম। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়লাম। দারুন! অসাধারণ!
১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: যীশূ, ব্যস্ততার জন্য ব্লগে সময় দেয়া একটু কমে গেছে। আপনার মন্তব্য আশা করছিলাম। খুশি হয়েছি আপনাকে পেয়ে।
৩০| ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ২:২৪
এরশাদ বাদশা বলেছেন: মনে হচ্ছে এর আগেরটাই বেশি ইন্টারেস্টিং হবে। যাই হোক, মিস করছিনা কোনটাই। দুটোই মন দিয়ে পড়তে হবে। আপাতত সময় নাই। ভালো থাকবেন রিপন ভাই।
১৭ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:৩৬
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: বাদশা ভাই, কেমন লাগল জানাবেন প্লিজ।
৩১| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২২
বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: আজকে পড়লাম ।
পরিপূর্ন ছোট গল্প । দারুন লাগলো পড়ে ।
২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:২২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: গানওয়ালা, খুশি হয়েছি মন্তব্যে। আপনাদের ওদিকে তুষার পড়ছে? রূপালী চুলের মেয়েরা মাথায় স্কার্ফ বেঁধে ক্লাসে আসে এখন?
৩২| ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:৫৩
বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: এখনো শুরু হয় নাই । নভেম্বরের শেষ নাগাদ পুরাদমে শুরু হয়ে যাবে আশা করি । আপাতত রূপালী চুলের মেয়েরা হালকা জ্যাকেট পরে ঘোরাঘুরি করে .. আর ক্লাসে এসে জ্যাকেট সরিয়ে টি-সার্ট গায়ে চেয়ারে বসে কলম নাড়ে ।
২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৬:৩৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন:
সুনীলের 'রূপালী মানবী'র কথা মনে পড়ছে-
'রূপালী মানবী, সন্ধ্যায় আজি শ্রাবণধারায় ভিজিয়ো না মুখ, রূপালী চক্ষু, বরং বারান্দায় উঠে এসো...।'
৩৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৫৭
মাজুল হাসান বলেছেন: এইটা কি অনুবাদ?
যদি না হয়, তবে ডায়লোগের সিনট্যাক্স নিয়া একটু আপত্তি আছে।
বাকিসব ঠিক।
ভাল থাকুন।
২৩ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:০৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: মাজুল ভাই, এটা অনুবাদ না, আমার লেখা। 'ডায়লোগের সিনট্যাক্স' নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণটা জানালে খুশি হব।
(ঘটনার স্থান, মূল চরিত্রে নিষ্পৃহতা যোগ করতে সংলাপগুলোকে কিছুটা চাঁছাছোলা বানিয়েছি।)
৩৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৮:০৮
আশমএরশাদ বলেছেন: পরবাসে বসে গলপটি পড়ে খুব ভাল লাগল।আমাকে উষ্কে দিয়েছে পুরানা homeless হওয়ার আগ্রহে .ইচ্ছা করছে ব্রাডলি হতে ।ভাল লইন গুলা তুলে রাখলাম মনের খাতায়-"হাঁসের সাথে পানির সম্পর্ক যেমন- স্পর্শ করে, কিন্তু কোন দাগ রাখেনা, এ পরিচয়গুলো তেমনই। রোজ রোজ দেখা হলে অদ্ভুত মানুষেরাও সাধারণ হয়ে ওঠে একদিন।'বুদ্ধিমানদের আকাশ থাকে খোলা মাঠে; আর তোমার মতো উজবুকদের থাকে শোবার বিছানায়।' এদের চোখ পড়ে থাকে হারিয়ে যাওয়া মেঘেরও ওপারে, কিংবা মেঘ ছাড়িয়েও আরো দূরে, ভুল করে ফেলে আসা কারো ঠিকানায়।অধিকাংশ মানুষই জীবনকে আয়-ব্যয়ের ছকে দেখে শান্তি পায়।''বললাম না, মার কাছে যাচ্ছি!'
২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১০:৩৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: হোমলেস হবার সাধ জাগছে! হায় হায়!
এরশাদ ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে খুশি হয়েছি। আরো খুশি হয়েছি আপনার সাথে পরিচিত হয়ে। ভাল থাকুন।
৩৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:৫৮
ফাহমিম বলেছেন: আগেই পড়া হয়েছে।তখন অভ্র ট্রাবল দিচ্ছিলো বলে কমেন্ট করা হয়নি।
হেমিংওয়ের বড়শি আমার পড়া সর্বকালের সবচে' চমৎকার ছোটগল্পগুলোর অন্যতম।আমি অনেক ছোটগল্প পড়েছি,বাংলাইয়,ইংরেজিতে, প্রচুর ক্লাসিক,কিন্তু এটার মতো নাড়া দিয়েছে খুব কম লেখাই।
০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:৪১
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ফাহমিম, আপনার মন্তব্যের জবাবে...কী বলব..., খুশি হয়েছি...
৩৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৮:৫৫
মাজুল হাসান বলেছেন: - 'যাদের ঘর আছে, যারা তোমার মতো উদবাস্তু না- তারাই ঘরে ফেরে।'-
'ওটাতো আমার শহর! আমার মা থাকে ওখানে।''
তোমার বুদ্ধি যে নীচু স্তরের, তা তোমার প্রশ্ন শুনলেই বোঝা যায়। খালি পয়সা পয়সা করো! এখন বলো, কেমন লাগছে?'
kemon jani... poetic, suddhobadi-suddhobadi mone hoy,
vasar unpolished dikta na thakle kemon ketaby mone hoy. Eta obosso amer nijesso mot. ja hok...
apner golpor Plot kintu valo.
valo thakben.
subeccha.
০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:৫৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: মাজুল ভাই, উত্তর দিতে খুব দেরী করে ফেললাম, অপরাধ বোধ হচ্ছে। আপনার পর্যবেক্ষণগুলো বেশ। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সংলাপে খুব শুদ্ধবাদী ভাব আছে। লেখার সময় বিষয়টা টের পাইনি; বরং এভাবে লিখেই মজা পাচ্ছিলাম।
৩৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:৪৮
মুকুল বলেছেন: সময় নিয়ে পড়তে হবে। শুধু শেষ প্যারা পড়লাম এখন। ফিনিশিংটা দারুণ লেগেছে। +
০৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:০৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আরে মুকুল ভাই! অধমের ব্লগে! গল্পটি কেমন লাগল জানাবেন প্লিজ।
৩৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:২৪
আকাশচুরি বলেছেন: জাদুকর, কেমন আছেন?
০৯ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: তারেক ভাই, কেমন যে আছি... বুঝতে পারছিনা...। কেবল দুঃসংবাদ শুনি...
৩৯| ১১ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ২:১৩
বাপ্পাদিত্য বলেছেন: অসাধারণ!!! এক কথায় এর চেয়ে ভালোভাবে বলা যায় রিপন ভাই? আমি জানি না-- না জানিয়েই যে আপনি অনেক দূরে চলে গেছেন!! আরো কিছুটা দিন আপনার সাহচর্য পেলে হয়তো জানা হতো আরো কত কিছু...
শুধু গল্পটিই না, অতিশয় আনন্দে সবগুলো মন্তব্যও পড়লাম, বুঝলাম এমন আরো অনেক গল্প লুকিয়ে আছে এখানে... 'খিদেতো বেড়ে গেল মনে হচ্ছে!'
রিপন ভাই!!!!!!!!!!!!!!!!!
কী যে ভালো লাগছে এখানে আপনাকে পেয়ে... ...
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০২
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: বাপ্পাদিত্য, তোমার লেখার জবাব দিতে খুব দেরী করলাম। ব্যস্ত ছিলাম, আলসেমীও ছিল। তোমার লেখাগুলো পড়েছি। (চিত্রলেখা!!??... মেয়েটা কে?) তোমাকেও ব্লগে দেখে খুশি হয়েছি।
৪০| ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৪
প্রণব আচার্য্য বলেছেন: ???
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০৫
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: কবি, কেমন কাটছে? (প্রণব, গুনে দেখুন, কমপক্ষে একটা 'ক' আছে।)
৪১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:১০
নুশেরা বলেছেন: রিপনভাই, কেমন আছেন? অনেকদিন পর দেখছি আপনাকে। নতুন লেখা দিচ্ছেন না, এসে খুঁজে যাই...
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১১
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: নুশেরা, যারা বুড়োকালে স্কুলে যাওয়ার কথা ভাবছে, তারা আমাকে দেখে এ কথা জানবে যে, বার্ধ্যকে বাল্যশিক্ষা বেমানান।
৪২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১৭
নুশেরা বলেছেন: ভালই বলেছেন, বার্ধক্যে বাল্যশিক্ষা। আমাদেরও তাই চলছে
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:২৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: আমি স্কুলে যাই, আমার কন্যা স্কুলে যায়, আমার স্ত্রী স্কুলে যাইত। জ্ঞান হইবার পূর্ব হইতেই জ্ঞানী হইয়া উঠিবার চেষ্টায় অদ্যাবধি আমরা সপরিবারে মত্ত আছি।
৪৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৩৬
একরামুল হক শামীম বলেছেন: গত অক্টোবরের পরে নতুন কোন পোস্ট নাই।
মোস্তাফিজ রিপন ভাই কেমন আছেন?
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: শামীম ভাই, কয়েকটা লেখা পোষ্ট করব করব করে পোষ্ট করিনি। ভাল লাগেনি লেখাগুলো। সময়ের অভাবে ওগুলোকে মানুষও করতে পারছিনা। ক্রিসমাসের বন্ধে-- দেখি কিছু হয় কিনা।
৪৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:০১
প্রণব আচার্য্য বলেছেন: নতুন গল্প কবে পাচ্ছি...
কমপক্ষে: (+++)
যদি সহসা না পাই তবে কমপক্ষে (---)
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: প্রণব দা, মাইনাসগুলো জমা রাখুন। কাজে লাগবে।
৪৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:০৯
আকাশচুরি বলেছেন: জাদুকর রিপন ভাই, প্রায় দু'মাস হতে যাচ্ছে... কোন পোস্ট নায়!!
ভালো আছেন??
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:২৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: তারিক ভাই, আমার তো মাত্র দু'মাস, আপনার যে অর্ধবছর হয়ে গেল! (এইসব আলসেমী আপনাকে দেখেই শেখা। দেখা যাক, আলসেবাজি বিদ্যায় আপনার মতো গুরুকে মারতে পারি কিনা!)
৪৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৩১
প্রণব আচার্য্য বলেছেন: গল্প কৈ?
(আমার বইয়ের কাজ চলছে)
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৮
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: প্রণব দা, খুব খুশি হলাম খবরটা জেনে। এখন নিশ্চয় দারুণ সময় কাটছে আপনার! নিজের বই, প্রতিটা শব্দ যত্ন নিয়ে বড় করে তোলা আত্মজের মতো। এইতো শুরু। আমার কথা বিশ্বাস করুন, আপনাকে পেছনে তাকাতে হবে না। খুব সফল হবেন জীবনে। আমি জানি।
শুভ কামনা রইল।
৪৭| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০২
রাশেদ বলেছেন: ঈদ মোবারক!
১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:২৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: রাশেদ ভাই, ঈদ মোবারক।
৪৮| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৪৭
বাপ্পাদিত্য বলেছেন: রিপন ভাই...
ঈদ মোবারক... আপনাকে ও আপনার পরিবার কে।
নতুন লিখা চাই।
মিষ্টি কবে খাওয়াবেন??? এত্তো গুলো লিখা সেরা লেখার মনোনয়নে!!!
১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:২৫
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: বাপ্পাদিত্য, তোমাকেও ঈদের শুভেচ্ছা। কোনটা বেশী পছন্দ- ম্যালামাইন নাকি ফরমালিন দেয়া মিষ্টি?
৪৯| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১৩
আকাশচুরি বলেছেন: রিপন ভাই, কোলাকুলি জানবেন!!
ভালো থেকেন
১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:২৭
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: তারেক ভাই, কোলাকুলি জানলাম। কেমন কাটল ঈদ?
৫০| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৩৫
ফারহান দাউদ বলেছেন: ঈদ মোবারক। জেগে আছেন তো?
১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:৩৬
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ফারহান ভাই, ঈদের শুভেচ্ছা। খালি ঘুম পায়, জেগে থাকাই মুশকিল।
৫১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ ভোর ৪:৪৮
রন্টি চৌধুরী বলেছেন: এই গল্পটা অনেকদিন পড়া হয়নি, মন্তব্যগুলো অনেক আগে পড়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু সেভিংস একাউন্টের টাকার মত গল্পটাকে জমিয়ে রাখতে ইচ্ছে হল কেন জানি। আজকে পড়ে ফেললাম। প্রতিক্রিয়ায় কিচ্ছু বলব না। অনেকেই বলে দিয়েছেন। আপনার আরো কটি গল্প পড়া বাকি আছে আমার।
আমার গল্প পড়া চক্রে রেসেশন আসবে না কখনও।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৪৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: রণ্টি ভাই, উত্তর দিতে দেরী করলাম, খুব আলসেমীতে ধরেছে। আপনার মন্তব্য সবসময়ই আমাকে প্রাণিত করে।
৫২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১:২৭
ব্রিগেড সিক্সটিন বলেছেন: আপনাকে একটি আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। সামহোয়্যারইন ব্লগে নিবন্ধিত হয়েছিলেন যে ইমেইল ঠিকানায়, সেটি চেক করবেন, প্লিজ।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৩
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: অধমের আলস্য মার্জনীয়...; আশাকরি, শীঘ্রই খুব অ্যাক্টিভ হয়ে উঠব।
৫৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫৮
কোলাহল বলেছেন: পুরোটাই পড়লাম এবার। ভালো লাগল। ব্রাডলিকে অনুসরণ করলাম আগাগোড়াই। মাঝখানে এক যায়গায় একটু একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছিলাম তবে শেষে বুঝলাম, না ঠিকই আছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৪
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: কোলাহল, প্রীতি জানুন।
৫৪| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৪৫
মুনশিয়ানা বলেছেন: প্রথম আপনার লিখা পড়লাম। ভাল লাগলো আপনার লিখা।
আজকাল লেখালেখির আকার বড় হয়ে গেলেই সবাই আপত্তি জানায়, বড় আকারের লিখা কেউ পড়তেই চায় না। আমাদের গল্প সাহিত্যের ভবিষ্যত কি? বিশাল উপন্যাসের দিন তবে শেষ?
আপনার মতামত কি?
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০৯
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: যে আপত্তির কথাটি বললেন, সেটি ব্লগের পাঠকদের। মেইন স্ট্রিমের পাঠকদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটি বিবেচনা করা যায় কিনা- আলোচনা হতে পারে। আর বাংলা সাহিত্যে, শুরু থেকেই দীর্ঘ উপন্যাসের সংখ্যা নগন্য।
আমাদের দেশে বিশাল উপন্যাসের প্রশংসা করা হয়, কিন্তু ব্যাপক পাঠ তেমন একটা হয়না, হয়নি।
৫৫| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:০২
ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: Click This Link
রিপন ভাই, একটা গল্প লিখেছিলাম। সময় করে দেখেন!
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১০
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: ওহে ছন্ন, আজই পড়ব।
৫৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৮:১৯
আমি ও আমরা বলেছেন: দারুন লাগল। ব্লগে আসলে আমি খুব কম গল্প পড়ি। কিন্তু বেশকিছুদিন ধরে গল্প পড়ার তাগিদ ভেতর থেকে অনুভব করছি।
তাই আপনাকে আকাশ্চুরি কে আর সুমন রহমান কেই বেছে নিলাম আপাতত।
এইটা আমার কাছে দারুন লাগছে।
শুভেচ্ছা রইল।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৩০
মোস্তাফিজ রিপন বলেছেন: বাপী ভাই, শুভেচ্ছা জানবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ৩:৫৩
সাংবাদিক বলেছেন: খুব বিশাল পোস্ট।

নতুন গ্রুপ 'সাংবাদিক' - মুক্ত মনের প্রতিচ্ছবি
হাটি হাটি পা করে চলতে শুরু করেছে নতুন গ্রুপ 'সাংবাদিক'। সুচিন্তিত , সাহসী ও বস্তুনিষ্ঠ মতামত প্রকাশকারী ব্লগারদের এই গ্রুপে স্বাগতম জানাই। সত্যের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম চালাতে আমরা দ্বিধাবোধ করি না। আমরা যা দেখি তাই লেখি কারণ আমাদের চোখ সবসময় প্রস্তুত সত্য উদঘাটনে আর আমাদের হাত সব সময় প্রস্তুত সত্য প্রকাশে। তো আর দেরী কেন? যদি হোন সাহসী সাংবাদিক কিংবা লেখক, এক্ষুণিই ঐক্যবদ্ধ হোন আমাদের সাথে। সদস্যপদ গ্রহণ করুন আমরা তো আছিই আপনার সাথে। শুভ হোক আপনাদের প্রতিটি ক্ষণ।
ক্লিক করুন :
http://www.somewhereinblog.net/group/Sangbadik