নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর বুকে ছাঁপ রেখে যেতে চাই।

মোস্তারিক

পৃথিবীটা হোক কাব্যময়।

মোস্তারিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোহার গরাদ

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪৭

হাবলু প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে বিছানা থেকে উঠে এক নিশ্বাসে পানির বোতলটা শেষ করে। জানলা খুলতেই দমকা হওয়া তার শরীর কাঁপিয়ে দেয়। ক্ষুধা সে একদম সহ্য করতে পারেনা।

হাবলুর ঢাকা শহরে কোন স্থায়ী বাসস্তান নেই। তবে সে এখন তার দূর সম্পর্কের এক খালার বসার পাহাড়াদার হিসেবে আছে। তার খালা স্বপরিবারে আজমীর শরীফ গেছেন। রান্না ঘর ও ফ্রিজ খুজে সে দুটো শুকনা আলু ছারা কোন খাবার আবিষ্কার করতে ব্যার্থ হয়।

একটা পাতিলে আলু দুটো সিদ্ধ চড়িয়ে সে বাকি দিনের একটা ছক কল্পনা করে - তার কাজ কি কি?
সবচেয়ে বড় সমস্যা হাবলুর পকেট শূন্য। তবুও তাকে বাড়ি থেকে বেরুতেই হবে।

হাবলু খুব যত্ন করে লম্বা চুলে চিরুনী চালায় ও প্রিয় ফতুয়া গায়ে চড়িয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে লক্ষ করে খোঁচা খোঁচা দাড়িতে তাকে মন্দ লাগছে না। আলু দুটো খুব ধীরে ধীরে পেটে চালান করে তৃপ্তির ডেকুর তুলে বাড়ি থেকে বেড় হয়।

হাবলু শূন্য পকেটে হাটতে হাটতে উওরায় "মাসিক চারুলতা" পত্রিকা অফিসে পৌছায় তখন ৯টা ৩০। চারুলতার আফিসে সম্পদ বলতে গেলে এক জোড়া টেবিল-চেয়ার, একটা টেলিফোন ও একটা পুরাতন টাইপ রাইটার।

হাবলুকে দেখে পত্রিকাকার সম্পাদক হাসি মুখে বলেন- আপনি ঠিক সময়ে এসে গেছেন। হাবলু এক মাস যাবত দৈনিক ১০০ টাকা বেতনে চাকড়িটা পেয়েছে। তার কাজ সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পযন্ত। এই ৬ ঘন্টা তাকে অফিসের সবকিছু করতে হয়। গাড়ি ভাড়ার আভাবে ৫ মিনিটের পথ তাকে ২ ঘন্টা পায়ে হেটে আসতে হয়েছে। তার ক্ষুধাটা আরার ফিরে এসেছে। দুটো সিদ্ধ আলু আর কতক্ষন শক্তি যোগাতে পারে?

সম্পাদক সাহেব আবার বল্লেন আনেক দিন গরম সিঙ্গারা খাওয়া হয়না। নিচের রেষ্টুরেন্ট থেকে দুটা কলিজার সিঙ্গারা আর ১ মগ কফি আনেন, খাওয়া শেষ করে কাজ শুরু করা যাক। হাবলু বাংলা ২য় বর্ষের ছাএ। সিঙ্গারা কফি বহন তার জন্য মোটেও আনন্দদায়ক নয়, সে তবুও সিঙ্গারা কফি নিয়ে ফেরে। নিশ্চিত দুটি সিঙ্গারার একটা সে পাবে। সিঙ্গারা-কফি সম্পাদেক টেবিলে রখে - টাইপ রাইটারে আবিরাম টাইপ করতে শুরু করে।

সম্পাদক আতি তৃপ্তির সাথে ১ম সিঙ্গারা ভক্ষন করে কফি মগে চুমুক দিয়ে বল্লেন আসাধারণ সিঙ্গারা। হাবলু আপেক্ষায় আছে সম্পাদক সাহেব কখন বলবেন, আপনার সিঙ্গারাটা শেষ করে আবার টাইপ শুরু করুন। ক্ষুধায় সে চোখে শরিষা ফুল দেখা শুরু করে।

সে ১টায় সম্পাদক সাহেবকে জানায় - ৩ টায় তার একটা ক্লাশ পরীক্ষা আছে, যেতে হবে। সম্পাদক তাকে সাথে সাথে পরীক্ষায় যাবার আনুমতি দিলেন, সাথে আরও কিছু পরিক্ষা বিষয়ক কিছু উপদেশ দিলেন। হাবুল নিম্ন স্বরে বলল স্যার আমার ১০০ টাকা? কথা শেষ করার আগেই সম্পাদক উওর দিলেন- ১০০ টাকা খুচরা নেই। আগামি কাল ২০০ নিয়েন। এই বলে ২য় সিঙ্গারাটয় কামড় বসালেন।

হাবলু পথে হাটা ধরে। ক্ষুধা পেটে সে যখন পরিক্ষা কক্ষে পৌছায় তখন পরিক্ষার বাকি মাত্র ৫ মিনিট । পরীক্ষা শেষে কলেজ ক্যান্টিনের জানালার পাশে হেলান দিয়ে আধাশোয়া হয়ে রইল। তার আশা কোন সহপাটি হয়তো তাকে নাস্তার জন্য ডাকবে। হাবলুর ঘুম ভাঙ্গে এক মায়াময় হাতের ছোয়ায়। হাতটা হাবলুর লম্বা চুলে বিলি কাটছে ! চোখ মেলে দেখে কোথাও কেউ নেই ! সে কচ্ছপ গতিতে খালার বাড়ির দিকে হাটা শুরু করে। তার পা চলছেনা, শরীর তার বিরুদ্ধে বিদ্রহের ঘোষনা করেছে। প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ শক্তি চায়।

হটাৎ একটা মানব লাইন হাবলুর চোখে পরে। তার বুঝতে বিলম্ব হয়না এটা কঙ্গালী ভোজের লাইন। সে তার ফতুয়া খুলে কোমরে বেঁধে লাইনে দাঁড়িয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্য একটা প্রমান সাইজ খাবারের থলে হাতে পেয়ে প্রায় আলোর গতিতে বাড়ি পৌছায়। খাবারের থলের থেকে ভেসে আসা ঘ্রাণ তার মস্তিষ্কে সুখময় সংকেত পাঠাচ্ছে খাবার প্রস্তুুত।

হাবলু খাবারের থলিটা টেবিলে রেখে গোসলে য়ায়। গোসল শেষে টেবিলের কাছে গিয়ে দেখে খাবারের থলেটা নেই! সে দাড়িয়ে দখে -একটা বিড়াল খাবারের থলিটা ছিঁড়ে তার দুই সন্তানের সাথে মহা আনন্দে ভাগ করে খাচ্ছে। বিড়াল গুলো আর হাবলুর মাঝে ব্যারধান শুধু জানালার এক সারি লোহার গরাদ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:১১

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

ভুল বানান কমপক্ষে ২০ টি রয়েছে
গল্পটি ভাল হলেও ভুল বানানের কারনে লেখকের পড়া পড়তে যথেষ্ট বিরক্তি ও অনিহা তৈরি হয়েছে। আশা করি শুধরে নেবেন।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:১৪

মোস্তারিক বলেছেন: চেষ্টা করছি। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.