আমার শখ : ১

১৫ ই আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৫

আজকের বিষয় “শখ”।

না প্লিজ নড়ে-চড়ে বসার কোন কারন নাই, এ শখ আমাদের হাল মডেল জগতের হার্টথ্রুব মডেল “শখ” না।তার কোন নতুন কীর্তি নিয়ে ও কথা বলার খায়েশ আমার নাই। আমি অতি ভদ্র পোলা……

কেউ যদি শখড (Shocked) হয়ে থাকেন, তাইলে সরি।

আমি বলতে চাই মানুষের শখ নিয়ে।শখ হল মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সৌখিন মনের প্রতিবিম্ব।শখের বশবর্তী হয়ে মানুষ কত হরেক রকমের উদ্দেশ্যহীন কাজই না করে।কোন শখ আবার কারো নেশাই পরিনত হই।বুদ হয়ে থাকে তাই সেই নির্দিষ্ট বিষয়টির মধ্যে।এটা আসলে মানুষের নিজেস্ব চিন্তাকর্ষ্ক নির্মল চিত্তবিনোদনের খোরাক মাত্র।ঢালাও ভাবে সকল শখকে উদ্দেশ্যহীন বলা বোধহয় ভুল হয়ে গেল।অন্যের কাছে উদ্দেশ্যহীন হলেও যার শখ সেই বোঝে তার মর্ম।

আবার কিছু শখ আছে সর্বজনগ্রাহ্য,যেমন “বই পড়া” এটাকে আর যাই হোক কেউ উদ্দেশ্যহীন শখ বলতে পারবে না,কিন্তু সবাই এটাকে ১নং শখের তালিকাই নিতেও পারবে না।শখের যেন কোন শেষ নাই।

মাছধরা(নট মাগুরমাছ),বাগান করা,গান শোনা থেকে গাওয়া পর্যন্ত,ভ্রমন, বিদেশী মুদ্রা সংগ্রহ, ডাকটিকিট সংগ্রহ,মুভি দেখা, এরকম হাজারটা শখ খুজলে বের করা যাবে।

তবে শখেরও মনে হয় একটা বয়স থাকে, সব বয়সে সব শখ থাকে না। এটা বেশ পরিবর্তনশীল।শখ না থাকলেও সেই শখের বিষয়টি থেকে মনে হয় ভালোবাসা লোপ পাই না কখনো, কেবল সেই পাগলামী লোপ পাই মাত্র।ভালোবাসাটা যেন থেকেই যাই অমলিন……।।

এত কথা বলার প্রয়োজন ছিল না, কেন যেন বলে ফেল্লাম।আমি আসলে আমার শখ নিয়ে বলতে লিখতে বসেছিলাম।কত রকমের শখই না লালন করেছি। স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতে মন চাইছে সেই স্মৃতিময় শখ গুলাকে।এ পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন বিষয় মাথাই চেপেছে শখ হিসাবে, সে গুলা কম বেশী পুরণও করেছি।



শুরু করা যাক একদম শুরু থেকে(যতদূর মনে পড়ে)।আমার শখ গুলো অবশ্য বেশ আজব আর ফালতু টাইপের ছিল (হাসি আসলে মনে মনে হাসুন……প্লিজ দাত বের করবেন না)

যখন অনেক ছোট, মানে 2/3 তে পড়ি তখন আমার ছিল স্টিকার জমানোর শখ, সহপাঠী অনেকেই এটা করত তবে আমার মত পাগ্ল কেউ ছিল বলে মনে পড়ে না।প্রচুর টাকা খুয়েছি এই স্টিকারের পিছনে। প্রথমদিকে ফল,ফুল,পশু,পাখি,কার্টুন কিছুই বাদ যেত না, পড়ে অবশ্য ক্রিকেটারদের ছবিই বেশি প্রাধান্য পেত।রীতিমত কম্পিটিশ্ন জুড়ে দিতাম বন্ধুদের সাথে।“আমার এটা আছে, তোর এটা নাই……”

একটা প্যাডে আবার স্টিকারগুলাকে লাগিয়ে ও রাখতাম…………………সব স্টিকার সহ সেই প্যাডটি অবশ্য হারিয়ে গেছে কালের অতলে, কিন্তু সেই স্মৃতি আজো আছে আমার মনের কোণে……

স্টিকারের প্রতি ভালোবাসাটা কিন্তু রইয়েই গেল…………।।

এরপর শুরু হল প্যাড জমানোর শখ।সময়টা ঠিক সঠিক করে বলতে পারব না কারন এটা যে কবে কিভাবে শুরু হয়েছিল তা নির্দিষ্ট করা কঠিন।এর প্রভাব এখনো আমার মধ্যে আছে………

দিক-বিদিক বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর হরেক রকমের প্যাড আমার সংগ্রহে আছে।সেগুলো আর ব্যবহার করতে পারিনি।পারবও না।যদিও বুঝি, কী মূল্যহীন এ প্যাডগুলো,তবুও এখনও নতুন একটা প্যাড দেখলে মন পেতে চাই।

মাঝে কিছু দিন কলম ও সংগ্রহ করতাম।এখনো ঘরে আমার ডেস্ক খুজলে বিভিন্ন style এর কলম পাওয়া যাবে।

কী সব উদ্ভট উদ্ভট শখ রে বাবা………নিজেরই হাসি পাচ্ছে,আপনাদের কথা আর কী বলব।দন্ত বের করেই হাসেন

আসল শখের কথা তো এখনো শুরুই করিনি,যেটা সবার সাথে শেয়ার করার জন্য লিখতে বসা।সেটা হল আমার ডাকটিকিট সংগ্রহের শখ।আমি সবচেয়ে বেশী সময় ও শ্রম দিয়েছি যে শখটির পিছনে সেটা হল এই “স্ট্যাম্প কালেকশন”।ক্লাস ফাইভ থেকে শুরু করে নাইন পর্যন্ত আমি বুদ হয়ে ছিলাম এর সাথে।তবে ক্লাস সিক্স-সেভেনই ছিল সবচেয়ে ব্যস্ততম সময় এই ডাকটিকিট সংগ্রহের জন্য। আমার সংগ্রহের ৮০% স্ট্যাম্পই এই সময়ে সংগ্রহ করা।

কত টাকা যে নষ্ট করেছি সেই বয়সে, তার ইয়াত্তা নেই।স্কুলে হেটে যেয়ে,টিফিনের টাকা বাচিয়ে পর্যন্ত ঢেলেছি এই স্ট্যাম্পের পিছনে……।।মাঝখানে কিছুদিন বিদেশী মুদ্রাতে ও ঝুকেছিলাম কিন্তু কেন যেন জমেনি।

অনেক অনেক স্মৃতি আছে আমার এই ডাকটিকিট সংগ্রহের শখের পিছনে।সেগুলাই রোমন্থনের আশাই এ ব্লগ লেখা।ব্লগে স্ট্যাম্প নিয়ে তেমন কোন লেখা পাইনি তাই আমার স্ট্যাম্প গুলোনিয়েই কোন্ রকমে একটাকিছু দাড় করাতে চাচ্ছিলাম।এটাকে ফটোব্লগ বলা যাবে কিনা জানি না, তবে আমার স্মৃতির একটা ডায়েরী হয়ে থাকবে।

প্রথমে হরহামেশাই সংগ্রহ শুরু করলেও আমার সংগ্রহের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের সংখ্যা ভিত্তিক।প্রায় ১৪০টা দেশের স্ট্যাম্প রয়েছে আমার সংগ্রহে।

সাথে রয়েছে বাংলাদেশের অজস্র স্ট্যাম্প।আরো গপ্প পরে মারা যাবে........



তো চলুন ঘুরে আসা যাক আমার স্মৃতির ডাকটিকিটের জগত থেকে........

৬ টি +০/-০