![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণত গল্প লেখি, কবিতা আর তেমন মনে আসে না। এক কথায় গল্প নিয়ে আমার বসবাস। নিজের মত জোরালোভাবে প্রকাশের চেষ্টা করি। দেশকে ভালোবাসি, প্রেমকে শ্রদ্ধা করি।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, ব্যবসা ভিত্তিক ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টিকারি পাখি ড্রেস আগ্রাসন বন্ধের দাবি তে আলমডাঙ্গায় এক মানববন্ধন কর্ম সূচী পালিত হয়েছে। আলমডাঙ্গা রাইটার্স ফোরাম, আলমডাঙ্গা জার্নালিস্ট ফোরাম ও সাম্প্রতিকী ডট কম শুক্রবার বেলা ৩ টায় স্বাধীনতা স্তম্ভ-৭১’র পাদদেশে (আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা) ওই কর্মসূচীর আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, ইনডিয়ার স্টার জলসা চ্যানেলে “বোঝেনা সে বোঝেনা” নামক সিরিয়ালের প্রধান চরিত্রের নাম পাখি। সে নাটকে যে পোশাক পরে সেই ধরনের থ্রি পিসকে বাংলাদেশে পাখি থ্রিপিস বলা হয়। পাখি থ্রি পিসের জন্য খুলনার পাইকগাছায় স্ত্রী কর্তৃক স্বামী তালাক, আত্মহত্যার মত নানা অনা কাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও পারিবারিক অশান্তি দেখা দিয়েছে।
এ মানববন্ধনের একজন সংগঠক হয়ে আমি লজ্জিত নই, আমি গর্বিত
২০১৪, বিদেশী একটি সিরিয়াল নাটকের জন্য আত্মহত্যা , তালাকের মত ঘটনা ঘটে গেল আমাদের দেশে। আর আমরা চুপ, নিশ্চুপ! ঘটনাগুলোকে অনেকে ব্যক্তিগত ভুল অথবা অবলা নারীর ভুল হিসেবে চালিয়ে দিতে চায়। কেউ কেউ আছে যারা বলতে চায়, নারীরা সারাদিন সারারাত কি করবে? ওদেরতো কোন কাজ নেই।
আবার কেউ কেউ বলতে চায়, আমাদের বিনোদনের লেভেলতো ভালো না, ওরাতো অনেক উপরে, ওদের বিনোদন খেলে দোষের কী!
আমার মতে এগুলো অতিশয় মেকি এবং আত্মঘাতী কথা। কেননা, আপনি কি ভেবে দেখেছেন, পাখিড্রেস বাদেও আরো অনেক কারণে এদেশের মানুষ লাশ হতে পারে, যার উৎসারক হতে পারে ওরকম সিরিয়াল।
এটা স্বীকার না করার উপায় নেই যে, এটা গ্লোবালাইজেশনের যুগ। এ যুগে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হবেই। এটা মনে রাখতে হবে, একটা গোষ্ঠী যখন শুধু দেয় অথচ নিতে অস্বীকৃতি জানায় তবে বুঝতে হবে এতে ঘাপলা আছে।
ভারতীয় বাংলা সিরিয়ালগুলো কোন সমাজের উপর নির্মিত তা ভাবতে হবে। এই সিরিয়ালগুলো মূলত নির্মিত নস্টালজিক কলকাতার সমাজের উপর। যার ভিতর কলকাতার স্বাভাবিক নস্টালজিক সমাজের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। যাতে প্রকাশ পেয়েছে নারীদের একচ্ছত্র আধিপত্য, অস্বাভাবিক তীব্র সামাজিক দ্বন্দ্ব, সামাজিক সমস্যাগুলোর অসামাজিক সমাধান ইত্যাদি। কলকাতার সমাজ যে নস্টালজিতে ভরপুর তা কিছুদিন আগে কলকাতার এক বাঙালের কাছ থেকে জানতে পারলাম। এছাড়া তাদের নস্টালজিক আর্ট ফিল্মও সেরকম নির্দেশ করে। তাদের বিনোদন যে বাংলা সংস্কৃতি বর্জন করে পাশ্চাত্যের সাথে হ্যান্ডশেক করছে, তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।
যেমনভাবে পর্ন মুভিগুলো যুব সমাজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে তেমনি এই সিরিয়ালগুলোও যে আমাদের সমাজের উপর খারাপ প্রভাব ফেলছে তা পাগলের মত কিছু মানুষ বলে এসেছে অনেক আগে থেকে, তবে কেউ তাদের কথায় কান দেয় নি। তাই আজ দেখতে হচ্ছে লাশ কিংবা সামাজিক অশান্তি।
আপনারা কি কেউ ভেবে দেখেছেন, কয়েকবছর আগে আমাদের সমাজের নারীরা কতটা দায়িত্ববোধ সম্পন্ন ছিল। সেই নারীরা এখন স্বামীকে খেতে না দিয়ে সিরিয়ালে মশগুল থাকে। বাচ্চাদের সাথে আলোচনা করে কলকাতার নষ্টা সমাজের নানা ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে।
এইতো ক’বছর আগেও বাংলাদেশের শুধুমাত্র কিছু মেমসাহেব গোছের নারী হিন্দী সিরিয়ালের প্রতি এডিক্ট ছিল। অথচ এখন বাংলা সিরিয়াল চ্যানেল আসায় পুরো বাংলাদেশের নারীরা এই এডিকশনের স্বীকার। যা স্পষ্টভাবে নারীদের অলস করে তুলেছে। এছাড়া এর ফলে নারীরা নানা অসামাজিক কাজকে সামাজিক ভাবতে শুরু করেছে। সামাজিক কুটিলতা বিদ্যাও তারা রপ্ত করেছে।
আজকে যদি বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ভারতের চ্যানেলগুলোর মত সামাজিক দ্বন্দ্ব সৃস্টিকারী সিরিয়াল তৈরী করত, তাহলে আজ আমি বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর বিপক্ষে থাকতাম। তাছাড়া যারা বারবার বাংলাদেশের নাটক সম্পর্কে কথা বলেন তারা একটু ভেবে বলুন, বাংলাদেশের একটি নাটক আপনাকে বেশী বিনোদন দিতে পারে, নাকি ভারতের? শতভাগ নিশ্চিত বাংলাদেশের। বাংলাদেশের নাট্য সমাজকে এভাবে অসম্মান করার কিছু নেই। খুজে দেখুন, বাংলা নাটকের নায়ক বলতে দুই বাংলায় জাহিদ হাসান, মোশাররফ করিম কিংবা চঞ্চল ছাড়া কে আছে?
আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভারতীয় বাংলা সিরিয়াল চ্যানেলগুলো বন্ধ হলে, এই বাংলার নারী সমাজ আবার আমাদের মাটির নাটকে ফিরে আসবে। আমাদের এক্টর থেকে শুরু করে ডিরেক্টর পর্যন্ত নড়ে চড়ে আরো বেশী বেশী নাটক তৈরী করবে। আমাদের ভাবতে হবে, শুধু তরুন ও প্রবাসীরা ছাড়া আর কেউ তেমন বাংলাদেশের নাটক এখন দেখে না। যখন দর্শক বাড়বে তখন আরো বেশী নাটক অবশ্যই হবে।
বাংলাদেশের নাটককে স্থান করে দেওয়া আমাদের একান্ত দায়িত্ব। আমাদের নাট্য সমাজ আমাদের দিকে চেয়ে আছে, আর আমরা কিনা, তাদের কটাক্ষ করি। আমি বলি, ওদের কি আছে সিদ্দিক কিংবা সজলের মত নাট্য অভিনেতা?
শেষ কথা, বাংলাদেশে যদি একটা পর্ন ধাচের চ্যানেল চালু থাকে তবে তা যুবকরা দেখবেই। আবার সেই চ্যানেল বন্ধ করলে কিছু দুষ্টু তরুন মাইন্ড করবেই, দু’চারটা গালি দিয়ে দেবে। তেমনি সিরিয়াল চ্যানেল থাকলে তা সব নারীরা দেখবেই, তবে বন্ধ করলে একমাস এর রেশ থাকবে, তারপর সবাই ফিরে আসবে বাংলাদেশের মাটির নাটকে। তখন বাংলাদেশের নাটক ফিরে পাবে তার জৌলুস।
আমরা কি তা চাই নাকি চাই না, এর উত্তর প্রদানের সময় হয়েছে।
আমরা কি চাই না সেই বিনোদন থেকে বেরিয়ে আসতে, যে বিনোদন কয়েকবছরের মধ্যে আমাদের রক্ত খাওয়া শুরু করেছে!
তাই আবারো আমার জোর দাবি, ভারতের সিরিয়াল ভিত্তিক সকল টিভি চ্যানেল বন্ধ হোক। যদি না বন্ধ করা হয় অদূর ভবিষ্যতে আমাদের সমাজে এর অস্বাভাবিক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে যা কল্পনাতীত নয়।
আর একটা কথা, গত ২৫ জুলাই, ঢাকার প্রেসক্লাবে নয়, আলমডাঙ্গার স্তম্ভ ‘৭১ চত্বরে ৩০ মিনিট ৩০ জনের সঙ্গী হয়ে আমি লজ্জিত নই, আমি গর্বিত। বরং লজ্জিত হওয়া উচিৎ তাদের যারা অবুঝের মত ভারতীয় টিভি সিরিয়ালকে বাংলাদেশের ধারাবাহিকের চেয়ে আপার লেভেল ভাবে।
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩০
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপনার পোষ্ট ভালো লাগল। পাশাপাশি কমেন্টে ব্লগার রাজিব যা বলেছেন, তার সাথেও সহমত জানাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০৪
রাজিব বলেছেন: ২০১৪ সালে এসে বিদেশী চ্যানেল বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। তবে বাংলাদেশ সরকার একটা কাজ করতে পারে। যে পদ্ধতিতে ভারত সেখানে আমাদের চ্যানেল বন্ধ করে রাখতে সমর্থ হয়েছে ঠিক সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা। সরকার নিয়ম করে দেবে যে ভারতীয় চ্যানেল গুলো বাংলাদেশ থেকে কোন বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে পারবে না। বরং বাংলাদেশে কর দিয়ে তাদের চ্যানেল চালাতে হবে।
আর আপনারা যারা ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের জন্য মানব বন্ধন করেছেন দয়া করে আপনাদের সময়, শ্রম ও অর্থ বাংলাদেশের নায়ক নায়িকাদের প্রচারে ব্যবহার করুন।