![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বার্থপর মানুষ
২৮ মার্চ ২০১৪ শুক্রবার রাত্র ১১:৫৩ ময়ূর ভিলা মোহাম্মদপুর ঢাকা-১২০৭
প্রিয় মৃন্ময়ী,
শাহনাজ আন্টি আম্মুর বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের বান্ধবী। এখন পর্যন্ত তাদের বন্ধুত্ব অটুট। মূলত শাহনাজ আন্টির আহ্বানেই আমরা ময়ূর ভিলার একটি ফ্ল্যাট কিনি। তিনি ষষ্ঠতলায় কিনেছেন, আমরা তৃতীয়তলায়।
শাহনাজ আন্টির দুই ছেলেমেয়ে। অ্যানি ভাই এবং তানি। অ্যানি ভাই বুয়েট থেকে কম্পিউটার সায়েন্স পড়েছেন। ভীষণ মেধাবি ছাত্র। ফার্স্ট ক্লাশ সেকন্ড। বর্তমানে বুয়েটের শিক্ষক হিশেবে কর্মরত। গত বছর বিয়ে করেছেন। অ্যাফেয়ার ম্যারেজ। ভাবি ডেন্টিস্ট। আগামি পহেলা মে অ্যানি ভাই ও ভাবি কানাডা যাবেন। অ্যানি ভাই কানাডার ওয়াটার লু ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করার জন্য স্কলারশিপ পেয়েছেন।
বোধকরি অ্যানি ভাইর কানাডা যাওয়াকে কেন্দ্র করেই তড়িঘড়ি করে তানির বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। দিনকয়েক আগে ভোরবেলা শাহনাজ আন্টি নিজে এসে বিয়ের কার্ড দিয়ে গেলেন। অ্যানি ভাই ফোন করে গতকালকে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল আমি যেন একটু ফটোগ্রাফি করি (ডিএসএলআর থাকার সুবাদে কাজটি মাঝেমধ্যে করতে হয়।)
২.
অফিস থেকে দ্রুত বের হলাম। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার মধ্যেই বাসায় পৌঁছলাম। মিম প্রস্তুত হলো। জাফর, মিম ও আমি ছাদে গেলাম। তখনি অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিপর্ব চলছিল। সবাই আসতে লাগল। এক সময় বেশ জমে উঠল অনুষ্ঠান। গায়ে হলুদ পর্ব শেষ করে সবার শেষে ছিল গান ও নাচ। শাহনাজ আন্টির বোনরা বিয়ের গান গাইলেন। তাদের গান শ্রুতিমধুর ছিল না। অনেকেরই বিরক্তিকর লেগেছে। তবে আমি লক্ষ্য করছিলাম অন্য একটি বিষয়। তারা গাইছিলেন মনের গভীর আবেগ থেকে, তাদের চোখ ছলছল করছিল। প্রথম গানটি শেষ হবার পর কেউ হাততালি দেয়নি, প্রশংসা দূরে থাক। তবে আমি বললাম দারুণ হয়েছে। আরো শুনতে চাই। ওয়ান মোর। দেখলাম তারা বেশ আনন্দিত হলেন। শুরু করলেন আবারো গান। শাহনাজ আন্টির একজন বৃদ্ধবোন উঠে তো রীতিমত নাচতে শুরু করলেন। পরে অবশ্য অনেকেই নেচেছে। সবার শেষ পারফরম্যান্স ছিল আমাদের জাফরের। জাফর নেচে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সব্বাইকে। খাবারের আয়োজনও ভালোই ছিল। বিরানি ও ছালাদ।
৩.
অনেক দিন পর এরকম একটি পারিবারিক আবহে কোনো অনুষ্ঠান হলো। বেশ উপভোগ করছিলাম সব কিছু। আন্টিরা সবাই সেজেগুজে এসেছিলেন। বেশ চমৎকার লাগছিল সবাইকে।
নিচে কয়েকটি ছবি দিলাম।
৪.
আজ বিয়ে অনুষ্ঠিত হল তানির। গ্রিনরোডের রূপসী কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছেলে ব্যাঙ্কার। বেশ লম্বা, গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা। খাবারের আয়োজন ভালো ছিল। মিম, জাফর ও আমি প্রথমে রবীন্দ্রসরোবরে যাই। সেখান কিছুক্ষণ বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেট খেলা দেখি। বাংলাদেশ ভালোই ব্যাটিং করছিল। চারপাশে তুমুল করতালি আর হৈচৈতে ভালোই লাগছিল। বাঙালি জাতি ক্রিকেট-পাগল জাতি। কিছু পাকিস্তানপ্রেমিক ছাড়া বাকি সবাই ক্রিকেট নিয়ে ঐক্যবদ্ধ। শুধু অতিরিক্ত পাকিস্তানপ্রেমিকদেরই দেখলাম বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানকে সমর্থন জানাতে! এদের দেশত্ববোধের মাত্রা দেখে হাসিও পায়, প্রচন্ড রাগও লাগে। যাই হোক, দুয়েক ওভার খেলা দেখেই মুরগি মনিরকে সাথে নিয়ে হেঁটে কমিউনিটি সেন্টারে যাই।
আর হ্যাঁ, বাসায় এসে দেখি আমাদেরকে হতাশ করে ভারত জয়ী হয়েছে।
©somewhere in net ltd.