বন্ধুদের কিছু কবিতা : পর্ব -১

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৪৮

প্রিয় বন্ধুরা, আজকে একটু ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট। আজকের পোস্টে আমি চেষ্টা করেছি ব্লগের বাইরে যারা কবিতা চর্চা করছেন ( ব্লগের বাইরে বলতে সামহোয়্যার ব্লগের কথাই বোঝাচ্ছি) যেমন অন্য ব্লগ, ফেসবুকে নিজের ওয়ালে কিংবা গ্রুপগুলোতে তাদের কিছু পছন্দের লেখা শেয়ার করতে। সেই ভাবনা থেকেই এই পোস্ট। কবিদের নাম পরিচয় মূলক দুচারটি লাইন আগে দিয়ে নিচ্ছি এর পরে কবিতা। শুরু করা যাক। কবিক্রম বজায় রাখা হল সিনিয়রিটির উর্ধক্রম অনুসারে।



সরোয়ার জাহান



তরুণ কবি সরোয়ার জাহান মূলত আমার কাছে পরিচিত তার ই পত্রিকা মুক্তডানার জন্যে। মুক্তডানার প্রতিটি সংখ্যাতেই আগের সংখ্যার থেকে উন্নতির চেষ্টা লক্ষ্য করে প্রীত হয়েছি। উনার লেখনী এবং পত্রিকা দুটোই আরো এগিয়ে যাক, এ প্রত্যাশা রইল



তোমার আকাশের নীল হৃদয়ে



কেশবতী কন্যা একবার এসো এই বাংলার নীলে, শুধু একবার !

দেখাব নীল আছে ঢের গঙ্গাফড়িং তারও বুক জুরে!

ভ্রান্তি বিলাস মিশিয়ে সীমাহীন নীলিমায়

এখানে কিছু নেই অন্ধকার

নেই অরণ্যে পন্থ হীনতা

নেই স্বপ্নে কেঁপে কেঁপে ওঠা !

আছে কিছু কবিতার তীব্র আঁচ,

আঁচে ফুটতে থাকে খইয়ের মতো অন্তহীন রোদ্দুর !



কেশবতী একবার এসো, এসো এই নীল হৃদয়ে

অনেক কাল হোল ত পার

এখন নেই কোন চিহ্ন জীবনে,

নেই খবর কোন

টুকরো টুকরো ভেঙ্গে যাওয়া হৃদয়ের ,

দু’চোখে গভীর ঘুম তবু জেগে রই

হৃদয়ের তৃষ্ণায় নিশীথের অন্ধকারে

তৃপ্তির নেশায় আকণ্ঠ করি পান

তোমারই চোখের রক্ষিত অশ্রুজল!



ও আমার প্রিয়তমা,

আর একবার এসো এই বাংলার নীলে সবুজের দেশে

আমিও রেখেছি,রেখেছি তুলে ক’ফুটা অশ্রুজল

কাঁচের ফ্রেমে বেঁধে সময় পেলে

নিয়ে যেও যুগল ঠোঁট ছুঁয়ে !



তাহলে ঠিকই এনে দেব প্রিয়তমা বধূ আমার,

এনে দেব গ্রীবার ছিন্ন ভিন্ন ইতিহাস

এনে দেব জনারণ্যে অতৃপ্তির জ্বালা

নির্জনতার নীল থেকে অন্তহীন হাওয়ায়

ফিরিয়ে দেব নীল সমুদ্র তোমার দু’চোখে!



শুধু একবার এসো এই বাংলার নীলে

তোমারই আকাশের নীল হৃদয়ে

দপ করে জ্বলে ওঠা হৃৎপিণ্ডের জংধরা বারুদের বক্ষে ,

আর একবার ফিরে এসো প্রতীক্ষার প্রতিরোধ ভেঙ্গে

বাহু থেকে শীতের উত্তাপ নিয়ে

দু’ই উৎসুক চোখের মিলনে

ফিরে এসো প্রিয়া আমার

একাকীত্বের হাওয়ায় শিহরন জাগিয়ে

ফিরে আসার বার্তা নিয়ে এই বাংলার নীলে ,

নীল সন্ধ্যায় তোমার আকাশের নীল হৃদয়ে !



চৌধুরী ফাহাদ



আমি যখন এই ব্যক্তিকে এ্যাড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম তখন আমি ভেবেছিলাম এ বুঝি সামু ব্লগের ফাহাদ চৌধুরী ভাইয়া। পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছি উনি তা নন। তবে তাতে খুব বেশি আশাহত হই নি এই কারণে যে এই ফাহাদ ও বেশ লিখছেন। উনার ফেসবুকে আপলোড করা নোট সংখ্যা প্রায় ৩০০। আশা করছি সামনে উনি আরো গভীরতায় ডুবে যাবেন কবিতার



তুমি শুধু আমাকে ভালবেসো



রাতকে ভালবাসতে যেও না,

অন্ধকারে আলাদা কিছু রাখা নেই।

তুমি শিশির ভালবাসতে যেও না,

তুমি দূর্বাঘাস ভালবাসতে যেও না,

ভালবাসতে যেও না সোনালীমিহির,

কাশফুল, কলকল নদী জল,

পাতার পরে পাতার গুঞ্জন-

বৃষ্টির শিহরণ।



তুমি দিন ভালবাসতে যেও না,

তুমি সূর্যরাঙা রোদ ভালবাসতে যেও না,

ভালবাসতে যেও না গোধূলির লাজ,

বিকেলের সাজ,

প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া হিম হিম সুখ।

তুমি ভালবাসতে যেও না নীড়ে ফেরা আকাশীমন,

ওখানে রাখা নেই আলাদা কিছু।



তুমি আকাশ ভালবাসতে যেও না,

তুমি জোছনা ভালবাসতে যেও না,

ভালবাসতে যেও না নিশিবাতির রূপ,

নিমগ্ন স্বরের অনুরন, মৌনতার কথোপকথন,

জলের নিচে জলের ছায়া।

তুমি ভালবাসতে যেও না

গ্রীষ্ম-বর্ষা-শরত,

হেমন্তের গানে ফাগুন আবরণে

বসন্তের মাতাল উচাটন।

সবখানে রঙ আছে, সব ভিড়ে মন;

আলাদা কিছু রাখা নেই।



তুমি ভালবাসতে যেও না আলাদা কিছু,

ভালবাসতে যেও না যত ভালোবাসাবাসি_

তুমি শুধু আমাকেই ভালবেসো;

তুমি শুধু আমাতেই ভালবেসো;

আমার মাঝে পাবে আলোর ঐকতান,

রাতের বিলাস, ভোরের আহ্বান;

আমার মাঝে পাবে দৈনন্দিন দিনযাপন।

আমার মাঝে আছে সব,

আমার মাঝে পাবে সব,

তুমি শুধু আমাতেই ভালবেসো;

তুমি শুধু আমাকেই ভালবেসো...



জুবীন ঘোষ



পশ্চিমের কবি জুবীন ঘোষ, ক্ষেপচুরিয়াস গ্রুপের এ্যাডমিন। বেশ ভাল লেখেন তা তার জনপ্রিয়তাই প্রমাণ করে। উনার কবিতায় শব্দের ব্যবহারে চমৎকারীত্ব আছে





১.

অসভ্য হওয়াটাই যদি দোষের হয়, তবে আমি নিশ্চিন্ত অসভ্য

আসলে তোমার বিশ্বস্ত ভ্যাক্সিন লোমকূপের নবীনত্ব বোঝে না

একশ্বাসে মাধুরী

অলক্ষ্যে খাই দিতে দিতে - হীরের মাঠ

কেন আমার অলীক হাত , কেবল

মুগ্ধ হয়ে ফিরে যায়



প্রতিটি সম্ভাবনায় আমার চোখ খুঁজে বেড়ায় সেই পৌরুষ

যার অহম্‌ যার হাত পেছন থেকে আমার চোখ ঢাকা দিয়ে বলে -

উড়িয়ে দাও অনুশীলন , উড়িয়ে দাও সঙ্ঘ

এই চোখের পালক এক ফুঁ-এ , যাবতীয়,

তারপর চোখ বন্ধ কোরে দেখো তোমার অনন্ত ভূস্বামী

আমিও কারফিউ উত্তেজনায় তার বুকে খুঁজে বেড়াই সেইসব অর্বাচীন গ্রামীণ তন্তু ...



আহ চুমু , এমন চুমুটাই ধরতে গিয়ে বুঝি

দেশলাই পাচ্ছি না,

আর পাখিরা ফিরে যাচ্ছে যে যার পালকে

আমার একটা সিগারেট সেই কবে থেকে জ্বলে যাচ্ছে বারণের অপেক্ষায়...



বি.দ্র : উনার এই কবিতার কোন নাম দেয়া হয়নি।



মেঘ অদিতি



বইমেলায় মেঘদির সাথে যখন পরিচয় তখন আমি স্বপ্নেও ভাবিনি উনি এত সিনিয়র। পরে তো খেলাম ভীষণ টাশকি। যা হোক কবি মেঘ অদিতির মুক্তগদ্য ধারার লেখার বই বেড়িয়েছে ২০১১ সালে যার নাম জলডুমুরের ঘুম। বইটি আমার বেশ লেগেছে। উনার সাম্প্রতিক ইন্টারেস্ট লক্ষ্য করেছি টুকরো কবিতায়



এমন বৃষ্টি ভালো



এমন বৃষ্টি ভালো

আবছা আলো পড়ছে টেরাকোটায়

টানা বৃষ্টির আহীর ভৈরব

আজ হাওয়া ওড়াবার দিন



ওখানে কোনো চিহ্ন ছিলো না

অথচ আমরা সবাই দেখছি

তুমি হাঁটছো এঘর থেকে ওঘর

মেলছো সতর্ক চোখ

বর্ষাতির

আধভেজা মনে



এমন বৃষ্টি ভালো

আর ওড়ানো হাওয়া...

...আর যারা এসেছিলো ভালবাসতে



শাকিলা তুবা



নারী কবিদের মধ্যে যাদের নাম আমার মনে আসে তাদের মধ্যে প্রথমেই থাকবে শাকিলা তুবা আপু। উনি যদিও এই ব্লগে মাঝেমাঝে কবিতা শেয়ার দেন তথাপি না দেবার মতই। যাই হোক কবির কবিতায় সবচেয়ে যেটা ভাল দিক সেটা হল খুব সহজ ভাষায় গূঢ় তত্ব প্রকাশের একটা চেষ্টা।



আবৃতি



তোমার রজনীগন্ধা হাতে আমার ঘর

নিবিড় উপত্যকা দিয়েছ বেঁধে

ছুঁয়ে দাও, তুমি ছুঁয়ে দাও শূন্যতা

নির্বাণ আসুক পুনর্জন্মে

এক ধ্যানে কেটে যাক যুগান্তকারী মানব জীবন।



তুমি রাতজাগা পাখি, ঘুমশিশির

আঁচল উড়ানো দস্যি বাতাস

তোমায় রেখে দিই ছাদের কার্নিশে, সিঁড়ির রেলিংয়ে

এ মনের ভেতর তুমিই ল্যুভ'র জাদুঘর

ফ্রেমে বাঁধানো বিখ্যাত মোনালিসা হাসি।



তুমি চাইলে দিতে পারি সাগর পাড়ি

তুমি চাইলে হতে পারি স্মরণের ঘুম

শুধু ছুঁয়ে দাও হাত, কৌশলে ছোঁও মন

সহমরণে যাব আমি শোনো সহযোদ্ধা

তুমি শুধু এঁকে দাও ছবি, তুলির আঁচড়ে রঙ আমি ফোটাব।





রত্নদীপা দে ঘোষ



পশ্চিমের আরেকজন প্রিয় কবি হলেন রত্না দি। উনার লেখাও বেশ ঝরঝরে। দৃশ্যগুলো খুব সুন্দর ফুটে ওঠে কবিতায়। দিদির আরেকটি জিনিস ভাল লাগে সেটা হল উনি খুবই অমায়িক। ইচ্ছে দেয়াল গ্রুপের এ্যাডমিন এই দিদি আরো ভাল ভাল লেখা উপহার দিন এই আশাই করছি।



লাইটার



সে আর নেই ... এই খবরটা জানা সত্ত্বেও আমরা হাসপাতালের ইমারজেন্সিতে ভিড় করি



তার নিঃশ্বাস আর জীবিত নেই , গতরাতের বাসি একটু আধটু লুকিয়ে থাকলেও থাকতে পারে চুলের ফাঁকে , নখের কোণে । আমরা অত্যধিক বিষণ্ণ হয়ে পড়ি । তারপর উৎকণ্ঠিত । আর তারপর নিজের নিজের নিঃশ্বাসের গায়ে হাত রাখি ।



সে নেই জেনেও আমরা হাসপাতালে ভিড় করি । একে অপরকে সান্ত্বনা দিই । আমাদের মধ্যেই কেউ বলে এই তো কাল সন্ধেবেলাতেই কতো কথা হোলো একজন বললো রাত দশটায় তার সাথে শেষ ফোন । দীর্ঘশ্বাস ... কেন এমন অসময়ে চলে যাওয়া



সে থাকলে আমরা এখন যে যার ডেস্কে , নিঃশ্বাস মাপার সময় নেই

রোদ গুটিয়ে নিচ্ছে মনিটর আর আমাদের খেয়ালই নেই



সে থাকলে আমরা যে কেউ এতক্ষণে এগিয়ে দিতাম ... লাইটার



সরসিজ আলীম



এক সময় বহু খুনসুটি, আর দুষ্টুমিতে লিপ্ত হয়েছি এই কবির সাথে, এখনো হই মাঝে মাঝে অবশ্য। নব্বই দশকের কবি সরসিজ আলীম সাম্প্রতিক সময়ে হাত খুলে লিখছেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমার মনে হচ্ছে কবি ফর্মের টপে আছেন। এটাতে যতদিন কেউ থাকে তার উচিত ক্রমাগত লিখে যাওয়া। উনি তা করছেন দেখে আমি খুবই শান্তি পাচ্ছি। যা হোক এই ব্লগে উনার নিক থাকলেও তেমন একটিভ নন। উনার এ যাবত পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে।



বরফকুঁচি



একজন কবি কবর থেকে একটি হাড় তুলে এনে

ঊর্ধ্বাকাশে ছুঁড়ে দিলে ঢিলটি কবুতর হয়ে উড়ে গিয়েছিলো।

সেই কবুতরটিই এখন আমার জানালার পাশে শাদা ঘোড়া,

বাতাসের উপর দাঁড়িয়ে লেজ নাড়াচ্ছে আর হ্রেষা ছড়াচ্ছে।

তখন আঙুলের ডগার উপর বরফকুঁচি রাখলে, সেটা থেকে

আলো ছড়িয়ে বের হয়ে এলো অল্প বয়সী একটা মেয়ে।

আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়ালে তার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াতে

গেলেই আপত্তি করে বললো, ‘একজন বয়স্ক পুরুষের

সাথেই কেবল প্রথম যৌন মিলনে আগ্রহী, তোমার বয়স

তদনুরূপ নয় বলেই অনুমান করা যায়!’

মেয়েটি ঘোড়ার পিঠে গিয়ে উঠেই বাতাসে মিশে গেলো।



এবার দাঁড়িয়ে সেই কবুতরটি, আমার আঙুলের ডগায়

বরফকুঁচি, একটি ঘূর্ণি বাতাসের ভেতর দিয়ে বের হয়ে

একটি রমণী আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়ালো,

আমি তার কোমরে হাত রাখতে চাইলাম, তারও আপত্তি,

‘আমি কেবল একজন আনাড়ি বালকের শরীরের সাথেই

শত পুরুষের নীল বিষে ভরা আমার শরীরকে ভাসিয়ে

দিয়ে নতুন ফুলে ভরিয়ে তুলতে চাই, তুমি নিশ্চয় আনাড়ি নও!’

কবুতরের ডানায় চড়ে রমণীটিও বাতাসে হাত নেড়ে গেলো।



ত্রিশাখ জলদাস



নাজমুল ভাই এর সাথে আমার প্রথম দেখা বইমেলায়। অস্থির রকম ভীড়ে সুস্থির এই মানুষটি দাঁড়িয়েছিলেন পাশে কে যেন ছিল চেনা পরিচিত। উনার সবচেয়ে ভাল দিক উনার সুস্থির বিবেচনাবোধ। এই দিকটি আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হেল্প করেছে যদিও সেই বিষয়টি সম্পর্কে উনার সাথে কিছু আলাপই করিনি। তার পরেও ওই বিষয়টির জন্য উনাকে ধন্যবাদ। কবিতায় সূক্ষ্মতার সন্ধান কারী এই কবির কবিতা পাঠ বেশ আনন্দদায়ক। ইতিমধ্যে জনান্তিক থেকে বাজারে এসেছে কবির বই জড়তুল্য পাথর।



বিমূর্ত স্বর



১।



জেলের নৌকায় বসে তুমি উড়ন্ত মাছের খেলা দেখ,

আর কাঁকর বিছানো পথে একটি বেড়াল দৌড়ে যাচ্ছে-



এই দৃশ্য দুটি আমি পাশাপাশি

এঁকে যাচ্ছি ক্যানভাসে,

বারবার বদলে যায় আদল।



প্রতিটি প্রাণের ভেতরে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে বিনাশ।



২।



অনন্তের নিসর্গ কন্যারা শুয়ে আছে নক্ষত্রের বনে

আর একটি অন্ধকার দীর্ঘায়িত হচ্ছে সমর্পিত

ছায়ার ভেতর।



এসবই নির্ণীত খোলসা-বৃত

এবং দৃশ্যমান

ক্রমাগত ক্রিয়াশীল প্রাণে ও উদ্ভিদে।



দ্বিধান্বিত মানুষেরা ভীতু ও সাহসী-

বৃক্ষের শেকড়ে জমা থাকে জলজ আখ্যান।



৩।



শাদা মৃত্যুর ভেতর একাকী নিঃসঙ্গতা, অনিশ্চিত রাত্রি-

কি নিপুণ ছায়া বিকশিত হচ্ছে এক খণ্ড ঘুমে;

আর আস্ত একটি আকাশ শুয়ে আছে সমর্পিত ফ্রাই-পেন।



শাদা মৃত্যুর ভেতর সমর্পণ,

উড়ন্ত পাখপাখালি।

চারিদিকে ছড়ানো ছিটানো প্রসন্নতা;

হাওয়ার ভেতর ঘুরছে জল কল,

খণ্ড খণ্ড নদী ভারী হয় স্নান ঘরে।



শাদা মৃত্যুর ভেতর শঙ্খচূড়, বিষাক্ত ময়াল-

ক্রমাগত দৃশ্যমান ছায়া-অন্ধ মানুষের জিভ।



সরদার ফারুক



ধানসিঁড়ি তীরের কবি সরদার ফারুকের ২য় বইটি আমি কিনেছিলাম। এক ফর্মার এই বইটি পড়ে আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছিল। সেই থেকেই কবির সাথে পরিচয়। কবির কবিতায় এক ভিন্ন নান্দনিকতার ছোঁয়া পেয়েছি যা আমাকে অন্যরকম এক আনন্দ দিয়েছিল।





অজ্ঞাতবাসের দিন



অজ্ঞাতবাসের দিন দীর্ঘতর হলে

পাখা ছেঁড়া প্রজাপতি অভিশাপ দেবে ।

তবে কি সামর্থ্য নেই , সম্ভাবনা নেই ?

তরুণীর গোপন জড়ুল মনোযোগী হতে বলে ।



যে হাতে ছুঁয়েছি জন্মদাগ

সে হাতে কি করে ছুঁই নশ্বরতা অভিশপ্ত ব্যাধি

আঙুলের ফাঁক গলে রত্নরাজি ঝরে ঝরে পড়ে ।



কীর্তিমান হে ভীষক , অবলেহ অরিষ্ট মোদকে

আমাকে অমৃত করো বিনষ্টির কালে ।



আশা করছি ভাল লাগল কবিতাগুলো। আগামীতে এরকম করতেও পারি।



উৎসর্গ : কবিতা গুলো যাদের লেখা, তাদের বেশিরভাগই জানেন না পোস্টটা দিচ্ছি। তাদের সকলকে জানাই ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা।

৭৪ টি +১৫/-০