নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মুহাম্মদ নুরুল হুদা দানিয়াল, পেশায় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার,আমি একজন তলেবে এলেম(কোরআন ও হাদিসের ছাত্র) ।

আল্লাহ আমাদের দেখছেন

আল্লাহ আমাদের দেখছেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুমিনগণ আল্লাহর ওলি

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯

মুমিনগণ আল্লাহর ওলি
وَالْمُؤْمِنُونَ كُلُّهُمْ أَوْلِيَاءُ الرَّحْمَنِ وَأَكْرَمُهُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَطْوَعُهُمْ وَأَتْبَعُهُمْ لِلْقُرْآنِ
অনুবাদ : আর ঈমানদারগণ সবাই পরম দয়ালু আল্লাহ তায়ালার ওলি। তাদের মধ্যে সেই আল্লাহর সৰ্বাধিক সম্মানিত যিনি তাক্ওয়া ও মারিফাতের মাধ্যমে তার অধিকতর অনুগত ও কোরআন শরিফের সর্বাধিক অনুসারী। (আকিদাতুত তহাবি, মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য আকিদার কিতাব, এই আকিদাগুলোকে তিনি ইমাম আবু হানিফা ও তার দুই মহান ছাত্র এর আকিদা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন)
All believers are allies of the Most Merciful and the noblest of them to Allah are those who are most obedient and who best adhere to the Quran.

অর্থাৎ, সমস্ত মূমিনগণ আল্লাহর ওলি, এই গুণের মধ্যে সব মুমিন সমান। যেমন আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন,

اَللّٰہُ وَلِیُّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۙ یُخۡرِجُہُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ۬ؕ وَالَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَوۡلِیٰٓـُٔہُمُ الطَّاغُوۡتُ ۙ یُخۡرِجُوۡنَہُمۡ مِّنَ النُّوۡرِ اِلَی الظُّلُمٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ٪

“আল্লাহ তায়ালা মূমিনদের ওলি, তিনি তাদের অন্ধকার (কুফর) থেকে আলোর (ঈমানের) দিকে বের করেছেন আর যারা কুফরী করে তাগূত তাদের অভিভাবক, এরা তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারে নিয়ে যায় তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে”।(আল-বাকারাহ ২:২৫৭)
অন্য আয়াতে বলেছেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕ وَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّاَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যারা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ্‌র ভালবাসার মতই পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহ্‌কে সর্বাধিক ভালবাসে । আর যারা যুলুম করেছে যদি তারা আযাব দেখতে পেত (তবে তারা নিশ্চিত হত যে,) সমস্ত শক্তি আল্লাহ্‌রই। আর নিশ্চয় আল্লাহ্‌ শাস্তি দানে কঠোর।(আল-বাকারাহ ২:১৬৫)

ওপরযুক্ত আয়াতদ্বয় সুস্পষ্ট প্রমাণ দিচ্ছে, মূমিনগণ আল্লাহর ওলি এবং আল্লাহ মুমিনগণের ওলি। ইমাম ত্বহাবির ওপরোল্লিখিত এবারতের দ্বারা উদ্দেশ্য একথা বোঝানো, মুমিনগণ সবাই মুল বেলায়েতের মধ্যে সমান, কিন্তু বেলায়েতের স্তরসমূহের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে অনেক প্রভেদ ও পার্থক্য রয়েছে। যেভাবে মুমিনগণ ঈমানের মূল বিষয়ে সবাই সমান, কিন্তু ঈমানের স্তরসমূহের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে প্রভেদ ও পার্থক্য হয়ে থাকে ৷ অতএব আল্লাহর ওলিদের মধ্যে কেউ পরিপূর্ণ ওলি, আবার কেউ অসম্পূর্ণ ওলি ৷ তবে আল্লাহর ওলিগণের মধ্যে উভয় জাহানে সবচেয়ে অধিক সম্মানিত ওই ব্যক্তি যিনি তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয়-ভীতি ও মারিফাতের ব্যাপারে অধিক আনুগত্যশীল এবং কোরআনের অনুসারী ।

যেমন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,

یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ وَّاُنۡثٰی وَجَعَلۡنٰکُمۡ شُعُوۡبًا وَّقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوۡا ؕ اِنَّ اَکۡرَمَکُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ اَتۡقٰکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ

হে মানুষ! আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে [১], আর তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমারা একে অন্যের সাথে পরিচিত হতে পার [২]। আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সমচেয়ে বেশি সম্মানিত ওই ব্যক্তি, যে সবচেয়ে বেশি আল্লাহকে ভয় করে ৷ নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। (আল-হুজরাত ৪৯:১৩)

অন্য আয়াতে বলেছেন,

اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَلَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ۚۖ

জেনে রাখ! আল্লাহ্‌র বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না [১]। (ইউনুস ১০:৬২)

তাফসিরঃআয়াতে উল্লেখিত ‘আওলিয়া’ শব্দটি অলী শব্দের বহুবচন। আরবী ভাষায় অলী অর্থ ‘নিকটবর্তী’ও হয় এবং দোস্ত-বন্ধু’ও হয়। শরীআতের পরিভাষায় অলী বলতে বুঝায়ঃ যার মধ্যে দুটি গুণ আছেঃ ঈমান এবং তাকওয়া।
এখানে আরও একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর অলীগণ অন্যান্য মানুষদের থেকে প্রকাশ্যে কোন পোষাক বা বেশ-ভূষা দ্বারা বিশেষভাবে পরিচিত হন না। বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাতের মধ্যে প্রকাশ্য বিদ'আতকারী ও অন্যায়কারী ছাড়া সর্বস্তরে আল্লাহর অলীগণের অস্তিত্ব বিদ্যমান। তাদের অস্তিত্ব রয়েছে কুরআনের ধারক-বাহকদের মাঝে, জ্ঞানী-আলেমদের মাঝে, জিহাদকারী ও তরবারী-ধারকদের মাঝে, ব্যবসায়ী, কারিগর ও কৃষকের মাঝে।

আল্লাহর অলীগণের মধ্যে নবী-রাসূলগণ ছাড়া আর কেউ নিষ্পাপ নন, তাছাড়া কোন অলীই গায়েব জানেনা, সৃষ্টি বা রিজিক প্রদানে তাদের কোন প্রভাবও নেই। তারা নিজেদেরকে সম্মান করতে অথবা কোন ধন-সম্পদ তাদের উদ্দেশ্যে ব্যয় করতে মানুষদেরকে আহবান করেন না। যদি কেউ এমন কিছু করে তাহলে সে আল্লাহর অলী হতে পারে না, বরং মিথ্যাবাদী, অপবাদ আরোপকারী, শয়তানের আলী হিসাবে বিবেচিত হবে।

আল্লাহর অলী হওয়ার জন্য একটিই উপায় রয়েছে, আর তা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রঙে রঞ্জিত হওয়া, তার সুন্নাতের হুবহু অনুসরণ করা। যারা এ ধরনের অনুসরণ করতে পেরেছেন তাদের মর্যাদাই আলাদা।

الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَکَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ؕ

যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করত। (ইউনুস ১০:৬৩)

لَہُمُ الۡبُشۡرٰی فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَفِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ؕ

তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে ।, আল্লাহ্‌র বাণীর কোন পরিবর্তন নেই সেটাই মহাসাফল্য। (ইউনুস ১০:৬৪)

ওপরযুক্ত আয়াতদ্বয় থেকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, আল্লাহর ওলিগণের মধ্যে উভয় জগতে সবচেয়ে অধিক সম্মানিত হলেন ওই ব্যক্তি, যিনি সর্বাবস্থায় আল্লাহকে করেন এবং কোরআন-সুন্নাহর সর্বাধিক অনুসারী হন৷

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.